বিজনেস হচ্ছে এক প্রকার আর্ট, এবং আর্টে সবাই মাস্টার হতে পারে না। একজন সফল উদ্যোক্তা একটি সক্ষম আর্টিস্টের মতো। কিছু মানুষ জন্মগতভাবে সফল উদ্যোক্তার গুণ নিয়ে আসে এবং কিছু জিনিস কাজের মাধ্যমে এই গুন অর্জন করতে হয়। উল্লেখিত কিছু গুণাবলী রয়েছে যা কিনা আপনার সাথে হয়তো খাপ খেয়ে যেতে পারে, কিন্তু সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে নিজেকে সবসময় উদ্যোক্তা হবার সফল গুণগুলো দিয়ে তরান্বিত করা।
বিশেষ ৫টি গুণাবলী যা একজন সফল উদ্যোক্তার মধ্যে থাকা প্রয়োজনঃ
১. আত্ম-নিয়ন্ত্রন
ইহা একটি সফল উদ্যোক্তার চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি একজন উদ্যোক্তা তার প্রয়োজনীয় সকল কাজ করতে পারে তাহলেই সে সফলতা দেখতে পাবে। আসলে বলতে গেলে সেলফ ডিসিপ্লিন হচ্ছে নিজের সত্ত্বাকে নিয়ন্ত্রনে রাখা এবং ভিতরের ইমোশনকে সেন্স অফ রেস্পন্সিবিলিটি দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা।
২. ঝুঁকি নেয়ার ক্ষমতা
উদ্যোক্তার আরেক নাম হচ্ছে ঝুঁকি নেয়া। উদ্যোক্তার সফল হবার জন্য সবচেয়ে বড় একটি গুণ হচ্ছে ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা। কিন্তু সকল ঝুঁকি নেয়া উদ্যোক্তারা সফল হতে পারে না। একজন সফল উদ্যোক্তা জানেন যে কখন ঝুঁকি নিতে হয় এবং কী ধরনের ঝুঁকি কোম্পানী বা নিজের জন্য লাভজনক ও ক্ষতিকর হতে পারে তার একটি ধারনা থাকা।
৩. ক্রিয়েটিভ থিঙ্কিং
একজন সফল উদ্যোক্তার মাথায় সবসময় ক্রিয়েটিভ চিন্তা ধারনা দিয়ে পরিপূর্ণ থাকা উচিত। বিস্তৃত নতুন আইডিয়া চিন্তা করার এই কঠোর ক্ষমতা একজন উদ্যোক্তাকে একটি অনন্য, সৃজনশীল উপায়ে বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা শুরু করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ক্রিয়েটিভ চিন্তা চেতনা আপনাকে প্রতিযোগিতার বাজারে সম্পূর্ণভাবে নিজেকে আলাদাভাবে প্রকাশেও সাহায্য করে থাকে।
৪. সততা
সমস্ত সফল উদ্যোক্তাদের অবশ্যকীয় বৈশিষ্ট্য হ’ল সততা। সম্ভবত আপনি সবচেয়ে মূল্যবান এবং সম্মানিত গুণটি বিকাশ করতে পারেন যা হচ্ছে সততা। আপনি যা কিছু করেন এবং প্রতিটি লেনদেন ক্রিয়াকলাপে পুরোপুরি সৎ হন। কখনও আপনার সততা নিয়ে আপোষ করবেন না। মনে রাখবেন যে আপনার সততার উপরই নির্ভর করছে আপনার প্রতিষ্ঠানের সকল কাজ যা আপনাকে সুনাম এনে দিতে সাহায্য করবে। সমস্ত সফল ব্যবসা বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই সততাই আপনার বিশ্বাসের চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচিত হবে।
৫. নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা ও অটুট রাখা
সফল উদ্যোক্তা হবার জন্য সর্বশেষ বৈশিষ্ট্য হ’ল নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং তা অটুট রাখতে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা। আজকের দিনে বহুল প্রতিযোগিতা এবং দ্রুত পরিবর্তনের কারণে নিজ এবং প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তাদের মধ্য দিনের পর দিন অপারেটিং কমে গেছে। এটি সফল ব্যবসায়ীদের গুণাবলী নয়। আপনার নিজের এবং আপনার ব্যবসায়ের প্রতিটি অংশের জন্য আপনাকে স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে, আপনার লোকদের কাছে সম্ভবত আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হ’ল তাদের কাজের ক্ষেত্রে তাদের একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া।
“একজন মানুষের নির্ধারিত লক্ষ্য তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিনতম পথেও এগিয়ে নিয়ে যায় অপরদিকে একজন লক্ষ্যহীন ব্যক্তি সবচেয়ে সহজতম পথেও কোন অগ্রগতির দেখা পায় না” -থমাস কার্লেল
সফল উদ্যোক্তারা বেশিরভাগ সময় তাদের লক্ষ্যর কথা ভেবে থাকে। যার ফলাফল তারা প্রতিনিয়ত তাদের লক্ষ্যর দিকের এগোতে থাকে এবং লক্ষ্যে তাদের দিকে এগিয়ে আসে।
পরিশেষে বলা যায় যে, একজন সফল উদ্যোক্তা হবার জন্য শুধুমাত্র গুণাবলী নয় সাথে তা কার্যকর হবার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ প্রয়োজন। এছাড়াও প্রতিটি কাজের উপর নজরদারী রাখা, সাথে ভুল হলে কী ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া যায় তা প্রতিটি সদ্যসের সাথে বসে আলোচনা করা। আপনাকে অনেকাংশে সফল উদ্যোক্তার বৈশিষ্ট্যর দিকে ধাবিত করে। নিজেকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মধ্যে রাখা একজন সফল উদ্যোক্তার বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়।