বিজনেসে ভালো সাকসেস রেশিও পাওয়ার জন্য নেটওয়ার্কিং কেন ইম্পরট্যান্ট

বিজনেসে ভালো সাকসেস রেশিও পাওয়ার জন্য নেটওয়ার্কিং কেন ইম্পরট্যান্ট
Share This Post

বর্তমান সময়ে বিজনেসে সাকসেস পাওয়ার জন্য অনেকগুলো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হলো নেটওয়ার্কিং। নেটওয়ার্কিং বলতে আমরা বুঝি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা, সম্পর্ক গড়া, এবং সেই সম্পর্কের মাধ্যমে বিজনেসের উন্নতি করা। এটি নতুন ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়া, ব্যবসার প্রসার ঘটানো, নতুন আইডিয়া পাওয়া এবং ব্যবসায়ের জন্য মূল্যবান পরামর্শ পাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। 

মোট কথা আপনার কানেকশন, নেটওয়ার্কিং যত বেশি হবে, আপনি তত বেশি আপনার ব্র্যান্ড রেপুটেশন বৃদ্ধি করতে পারবেন, কাস্টমার অ্যাট্র্যাক্ট করতে পারবেন এবং সর্বোপরি আপনার টার্গেটেড সেলস গোল অ্যাচিভ করতে পারবেন।  আজকে বিজনেসের সাকসেস রেশিও বৃদ্ধি করার গুরুত্ব, কিভাবে করবেন কি ট্রিক্স অবলম্বন করবেন সে বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

সাকসেস রেশিও বাড়াতে নেটওয়ার্কিং এর প্রয়োজনীয়তা:

১. ক্লায়েন্ট এবং কাস্টমার খুঁজে পাওয়া:

নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে নতুন ক্লায়েন্ট বা কাস্টমার খুঁজে পাওয়া যায়। একজন ব্যবসায়ী বিভিন্ন ইভেন্ট, কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ, বা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। এভাবে তারা নিজের বিজনেসের কথা তুলে ধরতে পারেন এবং আগ্রহী কাস্টমার বা ক্লায়েন্টকে নিজের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানাতে পারেন। এটি এক ধরনের সরাসরি মার্কেটিং, যা অত্যন্ত কার্যকরী।

ক্লায়েন্ট এবং কাস্টমার খুঁজে পাওয়া

২. নতুন বিজনেস অপর্চুনিটি খুঁজে পাওয়া: 

নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে নতুন বিজনেস অপর্চুনিটি খুঁজে পাওয়া যায়। অনেক সময় এক ব্যক্তি অন্য একজনকে বিজনেসের জন্য ভালো কোনো অপর্চুনিটির কথা জানায়। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো ব্যক্তি জানেন যে একটি বড় কোম্পানি নতুন কোনো সাপ্লায়ার খুঁজছে, তাহলে তিনি সেই তথ্যটি তার নেটওয়ার্কের মধ্যে শেয়ার করতে পারেন। এভাবে একজন ব্যবসায়ী নতুন ক্লায়েন্ট পেতে পারেন।

নতুন বিজনেস অপর্চুনিটি খুঁজে পাওয়া

৩. দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধির সুযোগ:

নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে একজন ব্যবসায়ী বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। বিভিন্ন ইভেন্টে বা কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করার সময় একজন ব্যক্তি বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এবং তাদের কাছ থেকে মূল্যবান পরামর্শ নিতে পারেন। এভাবে তারা নতুন আইডিয়া এবং কৌশল শিখতে পারেন যা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে উন্নত করতে সাহায্য করে।

দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধির সুযোগ

 ৪. ব্র্যান্ডের প্রচার:

নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্র্যান্ডের প্রচার করতে পারেন। বিভিন্ন ইভেন্ট বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের ব্যবসার কথা তুলে ধরা এবং পরিচিত মানুষদের সঙ্গে শেয়ার করা হলে, সেই ব্যবসার প্রসার ঘটে। এটি বিশেষ করে নতুন ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন ব্যবসা শুরু করার সময়, ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং তাদের মাধ্যমে প্রচার করা খুবই কার্যকরী।

ব্র্যান্ডের প্রচার

৫. রেফারেন্স এবং রেকমেন্ডেশন পাওয়া:

নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা রেফারেন্স এবং রেকমেন্ডেশন পেতে পারেন। একজন সন্তুষ্ট ক্লায়েন্ট বা পার্টনার যখন অন্যদেরকে আপনার ব্যবসার কথা জানান বা সুপারিশ করেন, তখন তা অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে। অনেক সময় একটি ভালো রেফারেন্স একজন নতুন ক্লায়েন্টকে আনার জন্য যথেষ্ট হয়। 

রেফারেন্স এবং রেকমেন্ডেশন পাওয়া

সাকসেস রেশিও বাড়াতে কিভাবে নেটওয়ার্কিং করবেন:

নেটওয়ার্কিং করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট কৌশল আছে যা অনুসরণ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এখানে কয়েকটি কৌশল তুলে ধরা হলো:

১. একটিভলি অংশগ্রহণ করুন:

নেটওয়ার্কিং করার জন্য প্রথমে আপনাকে সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিজনেস কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে আপনি বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন।

একটিভলি অংশগ্রহণ করুন

২. নিজের কথা বলুন:

নেটওয়ার্কিং-এর সময় নিজের কথা বলতে হবে। আপনি কে, আপনার ব্যবসা কি, আপনি কি ধরণের পণ্য বা সেবা প্রদান করেন – এসব বিষয় নিয়ে পরিষ্কারভাবে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু মনে রাখবেন, অতিরিক্ত আত্মপ্রচার যেন না হয়। 

নিজের কথা বলুন

৩. অন্যদের কথা শুনুন:

শুধু নিজের কথা বললেই হবে না, অন্যদের কথাও শুনতে হবে। একজন ভালো শ্রোতা হওয়া নেটওয়ার্কিং-এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদের প্রয়োজন এবং আগ্রহ সম্পর্কে জানার জন্য মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনুন। 

অন্যদের কথা শুনুন

৪. সাকসেস রেশিও বাড়াতে ফলো-আপ করুন:

নেটওয়ার্কিং-এর সময় বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর, তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। ইমেইল বা ফোন কলের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে আপনার সম্পর্ক গাঢ় হবে। 

সাকসেস রেশিও বাড়াতে ফলো-আপ করুন

৫. সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার:

বর্তমান ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কিং-এর জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম। লিঙ্কডইন, ফেসবুক, টুইটার এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার

নেটওয়ার্কিং-এর চ্যালেঞ্জ:

সাকসেস রেশিও বাড়ানোর জন্য নেটওয়ার্কিং করা এতটাও সহজ নয়, এতে কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যেমন:

১. সময়ের অভাব:

অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন তাদের নেটওয়ার্কিং-এর জন্য সময় নেই। কিন্তু সফল হতে হলে সময় বের করতে হবে। 

২. বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করা:

প্রথমেই সবাই আপনার ওপর বিশ্বাস করবে না। বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে সময় লাগে এবং এর জন্য সত্যনিষ্ঠ ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

৩. প্রাথমিক সঙ্কোচ:

অনেকেই নতুন লোকের সাথে কথা বলতে সঙ্কোচ বোধ করেন। এটি কাটিয়ে উঠতে হলে নিয়মিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং মনোযোগ দিতে হবে।

শেষ কথা,

সাকসেস রেশিও বৃদ্ধি করে সফল ব্যবসায়ী হওয়ার পেছনে নেটওয়ার্কিং-এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শুধুমাত্র নতুন ক্লায়েন্ট বা কাস্টমার খুঁজে পাওয়ার জন্য নয়, ব্যবসার ওভারঅল উন্নতির জন্যও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দক্ষতা বৃদ্ধি, নতুন অপর্চুনিটি খুঁজে পাওয়া, এবং ব্র্যান্ডের প্রচারের জন্য নেটওয়ার্কিং অত্যন্ত কার্যকর একটি কৌশল। সুতরাং, আপনার ব্যবসার সাকসেস রেশিও বৃদ্ধি করার জন্য নেটওয়ার্কিং-এ মনোযোগ দিন এবং সক্রিয়ভাবে এটি চর্চা করুন। আপনার ব্যবসায়িক সাফল্য নির্ভর করবে আপনার নেটওয়ার্কের উপর।

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
ক্যাম্পেইন ট্র্যাক করার লক্ষ্যে ৭টি এসেনশিয়াল ডিজিটাল মার্কেটিং KPI
Marketing

ক্যাম্পেইন ট্র্যাক করার লক্ষ্যে ৭টি এসেনশিয়াল ডিজিটাল মার্কেটিং KPI

ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই হিউজ ল্যান্ডস্কেপ এ ক্যাম্পেইন ট্র্যাক করা, সাকসেস পরিমাপের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। Key Performance Indicators (KPI) গুলো কিন্তু আপনাকে এই ক্যাম্পেইন

কিভাবে আপনার স্টার্টআপ বিজনেসের মার্কেটিং শুরু করবেন
Marketing

কিভাবে আপনার স্টার্টআপ বিজনেসের মার্কেটিং শুরু করবেন

একটা স্টার্টআপ বিজনেস শুরু করা একদিকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। আবার এর অন্যদিকে আছে সাফল্যের হাতছানি, অসংখ্য অপরচুনিটির সম্ভাবনা। মোট কথা স্টার্টআপের টোটাল পার্ট একটা  উত্তেজনাপূর্ণ যাত্রা।