সোশ্যাল মিডিয়া ইউজারদের কাছে একটা খুব পরিচিত এবং কমন সাইন হল হ্যাশট্যাগ (#)। যখনই আমরা কোনো কি ওয়ার্ড, কোনো মেসেজ বা নামের আগে এই সাইনটা ব্যবহার করি তখন অনলাইনে থাকা ওই রিলেটেড সব কিছু আমাদের সামনে চলে আসে। এখানেই সোশ্যাল মিডিয়া hashtag এর মূল significance প্রকাশ পায়। অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়া হল হিউজ অডিয়েন্স বেইজ এর একটি প্লাটফর্ম। এখানে অসংখ্য দর্শকের উপস্থিতি মার্কেটিং, জনপ্রিয়তা ও ট্রেন্ডিং হওয়ার জন্য একটা বেস্ট ওয়ে।
তবে যেকোনো কয়েকটি শব্দের সাথে হ্যাশট্যাগ সাইন জুড়ে দিলেই হচ্ছে না। একে কার্যকর ভাবে ইউজ করতে হলে মানতে হবে কিছু সিম্পল রুলস। সেগুলো নিয়েই থাকছে আজকের আলোচনা।
হ্যাশট্যাগ কি?
Hashtag কে মূলত ‘#’ (হ্যাশ) চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। Hashtag হল একটা মেটাডাটা ট্যাগ।

সহজ কথায়, আপনি যখন কোনো শব্দ অথবা phrase এর আগে ‘#’ (হ্যাশ) চিহ্নটি অ্যাড করে দেন, তাহলে আপনার শব্দ বা phrase গুলো নীল রঙে পরিণত হবে। এখানে আসলে শব্দটা নীল রঙে পরিণত হয়ে একটা ইন্টারনেট ওয়েবলিংক এ পরিণত হয়ে যায়। যেমন: ধরুন,
#digital_marketing, #facebook, #make_money ইত্যাদি।
বিষয়টি আরেকটু ক্লিয়ার করে বললে, আপনি যেই শব্দে হ্যাশট্যাগ ইউজ করেছেন সেই একই শব্দে hashtag ব্যবহার করে যারা ইনফরমেশন শেয়ার করেছেন বা পোস্ট করেছেন সেই সকল তথ্য গুলো একটা ওয়েবপেইজ আকারে একসাথে পাওয়া যাবে। দারুণ না বিষয় টা?
প্রথমদিকে Hashtag, Internet Relay Chat (IRC) রিলেটেড মেসেজ এবং ইনফরমেশন গুলো লিস্ট করতে ব্যবহৃত হত। এরপর ২০০৭ সালের দিকে Twitter এ সেগুলোর ব্যবহার শুরু হয়। আর তারপর থেকে এর সোশ্যাল মিডিয়ার অলমোস্ট সব ক্ষেত্রে এমনকি আমাদের দৈনন্দিন পোস্ট, কমেন্ট সবজায়গায় হ্যাশট্যাগ ছড়িয়ে পড়ে।
লোকজন এখন কথায় জোর দিতে, বিদ্রুপ প্রকাশ করতে , টপিক changer হিসাবে বা অভিবাদন (যেমন -“হ্যাশট্যাগ!”) রূপেও মৌখিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা শুরু করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাশট্যাগ কিভাবে তৈরি করতে হয়?

১। প্রথমত যেই ওয়ার্ডে হ্যাশট্যাগ ইউজ করতে চান সেই শব্দটার আগে হ্যাশ ‘#’ সাইন দিতে হবে।
২। আপনার দেয়া হ্যাশট্যাগ আর শব্দটির মাঝে কোনো স্পেস বা ফাঁকা জায়গা রাখবেন না।
৩। একের বেশি শব্দ নিয়ে হ্যাশট্যাগ তৈরি করতে চাইলে শব্দগুলোর মাঝে কোনো স্পেস রাখবেন না। এক্ষেত্রে স্পেস ছাড়াই হাইফেন দিয়ে আলাদা করতে পারেন।
৪। শুধু নম্বর ব্যবহার করে হ্যাশট্যাগ ক্রিয়েট করা যায় না। তাই সংখ্যার সাথে ক্যারেক্টারও ব্যবহার করতে হবে।
এভাবে হ্যাশট্যাগ ক্রিয়েট করার পর শব্দটি নীল রঙে পরিণত হবে এবং যথাযথভাবে একটি ওয়েবলিংক তৈরি হবে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে কার্যকরভাবে হ্যাশট্যাগ ইউজ:
১. সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও কম্পিটিটরদের মনিটর করুন :
হ্যাশটাগ রিসার্চের শুরুটা করুন কম্পিটিটর ও ইনফ্লুয়েন্সার মনিটর করার মাধ্যমে। আপনার ব্র্যান্ড নিশের সাথে রিলেটেবল এমন কম্পিটিটর ও influencer দের আগে খুঁজে বের করুন।

তারা কি কি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে, পার পোস্ট এ কত গুলো ইউজ করে সেগুলো নোট করুন। এতে করে আপনি সহজেই আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কে খুঁজে পাবেন এবং তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করার মত রিলেটেবল hashtag কি-ওয়ার্ড খুঁজে পাবেন।
২. কোন হ্যাশট্যাগগুলো ট্রেন্ডিং সেটা জানুন :
আপনার কনটেন্ট এর সাথে সম্পর্কিত যেসব হ্যাশট্যাগগুলো এই মুহূর্তে ট্রেন্ডিং এ আছে সেগুলো সার্চ করুন। ট্রেন্ডি hashtag আপনাকে সাহায্য করে খুব দ্রুত অডিয়েন্স রিচ করতে এবং কনভারশন রেট বাড়াতে। ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ খুঁজে পাওয়ার একটি ইফেক্টিভ ওয়ে হল ট্রেন্ড জেনারেটর টুলস ব্যবহার করা। যেমন ধরুন, RiteTag, গুগল কি ওয়ার্ড অ্যানালাইটিক্স ইত্যাদি।

৩. সোশ্যাল মিডিয়া লিসেনিং টুলস এর সাহায্য নিন :
কোন নেটওয়ার্ক এর জন্য কোন ট্যাগ ইফেক্টিভ? কোন প্লাটফর্মে কোনটি ইউজ করতে হবে? এ বিষয়ে আইডিয়া নেয়ার জন্য ব্যবহার করুন সোশ্যাল মিডিয়ার লিসেনিং টুলস গুলো প্লাটফর্ম ভিত্তিক ট্যাগ খুঁজে পেতে সাহায্য করে। এছাড়াও Hootsuite এর মত টুলস গুলো আপনাকে, প্লাটফর্ম ও নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিস এর পাশাপাশি ট্রেন্ডি ট্যাগ পেতেও সাহায্য করে।

৪. রিলেটেড hashtag গুলো খুঁজুন :
আপনি যখন আপনার কাঙ্ক্ষিত হ্যাশট্যাগ টা পেয়ে যাবেন তখন এর সাথে রিলেটেড আরো হ্যাশট্যাগ খুঁজে বের করুন। যেমন ধরুন, আপনি ফুড নিশে কাজ করছেন৷ আপনি হ্যাশট্যাগে #food, #tasty_food, #home_made_food
ইত্যাদি ট্যাগ ইউজ করতে পারেন। এই ট্রিকস টা আপনাকে আরো বেশি অডিয়েন্স রিচ করতে হেল্প করবে।

৫. আগের পোস্টে কোন হ্যাশটাগগুলো ইফেক্টিভ ছিল খুঁজুন:
আপনি আগে কোন হ্যাশট্যাগ ইউজ করেছেন সেগুলো ট্র্যাক করুন। অ্যানালাইসিস করুন কোন ট্যাগের পোস্টগুলো বেশি রিচ করেছে বা কোন গুলো ট্রেন্ডিং ছিল। সেই বিষয় গুলো সামঞ্জস্য রেখে আবারও হ্যাশট্যাগ তৈরি করুন।
৬. Hashtag জেনারেটর ব্যবহার করুন:
নিজে থেকে ট্যাগ জেনারেট করার ঝামেলা নিতে না চাইলে ট্যাগ জেনারেটর এর সাহায্য নিন। আপনি যখন Hootsuite বা Composer এর মত জেনারেটরগুলোতে পোস্ট ক্রিয়েট করবেন, তখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে অটোমেটিক্যালি রিলেটেবল ও ট্রেন্ডি ট্যাগ চলে আসবে। অত্যন্ত বিজি শিডিউল ও বড় বিজনেস এর ক্ষেত্রে হ্যাশট্যাগ জেনারেটর ইউজ করা বুদ্ধিমানের কাজ।

৭. সহজ ও শর্ট hashtag ব্যবহার করুন:
হ্যাশট্যাগ ইফেক্টিভ হওয়ার একটা সিম্পল কিন্তু কার্যকর টিপস হল, একে যথাসম্ভব শর্ট রাখা। এবং এমন শব্দ ব্যবহার করা যেগুলো মানুষ সহজে বুঝতে পারে এবং আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সরা যেটার সাথে পরিচিত।

অনলাইন, সোশ্যাল মিডিয়া, মোট কথা ডিজিটাল প্লাটফর্ম dominating এই যুগে চলতে হবে ট্রেন্ডি বিষয়ে তাল মিলিয়ে। হ্যাশট্যাগও বর্তমানে একটি ট্রেন্ডি এবং মোস্ট ইউজড সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ট্রিকস। তাই সঠিক সময়ে, সঠিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে পৌঁছে যান আরো বেশি অডিয়েন্স এর কাছে। এগিয়ে থাকুন কম্পিটিটরদের থেকে।