আপনার লোকাল বিজনেসটিকে আরো অ্যাডভান্স করতে, গ্লোবালি প্রোডাক্ট সেল করা একটা গেম-চেঞ্জার হতে পারে এবং ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং কিন্তু এই পরিবর্তনের একটা গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। বিশ্বব্যাপী ২.৮ বিলিয়ন একটিভ ইউজার থাকায় ফেসবুক এখন বিরাট এক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে।সেখানে আছে লক্ষ লক্ষ অনলাইন ক্রেতা।
ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং এর মাধ্যমে, ফেসবুকের এই হিউজ ক্রাউডকে কাজে লাগিয়ে গ্লোবালি প্রোডাক্ট সেল করার প্রয়োজনীয় সব তথ্য নিয়ে আজকের আলোচনা।
Facebook এর অ্যাডভার্টাইজিং ইকোসিস্টেম ঃ
ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং এর মাধ্যমে গ্লোবালি প্রোডাক্ট সেল করার আগে এই অ্যাডভার্টাইজিং এর সিস্টেম টা বুঝতে হবে-
১. গ্লোবাল রিচ এবং টার্গেটিং অ্যাবিলিটি:
Facebook এর ব্যাপক ব্যবহারকারীর এই ফাউন্ডেশন বিভিন্ন দেশ এবং কালচার জুড়ে বিস্তৃত। এ কারণে, ফেসবুক এখন বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞাপনের জন্য একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মের অত্যাধুনিক টার্গেটিং অপশন গুলো ব্র্যান্ড গুলোকে নির্দিষ্ট পপুলেশন, আগ্রহ এবং বিহেভিয়ার রিচ করার অনুমতি দেয়। আপনি বয়স, লিঙ্গ, অবস্থান, ভাষা এবং এমনকি কেনাকাটার ইতিহাসের মতো বিহেভিয়ার ট্র্যাক করে কাস্টমার টার্গেট করতে পারেন।
২. বিজ্ঞাপন ফর্ম্যাট এবং প্লেসমেন্ট:
Facebook ইমেজ অ্যাড, ভিডিও অ্যাড, ক্যারোজোল অ্যাড, স্লাইডশো অ্যাড এবং আরও অনেক বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন ফর্ম্যাট অফার করে। ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার এবং অডিয়েন্স নেটওয়ার্ক সহ Facebook এর ইকোসিস্টেম জুড়ে এই অ্যাডস গুলো প্লেস করা যেতে পারে৷ এগুলো নিশ্চিত করে যে ব্যবহারকারীরা যেখানেই তাদের অনলাইনে সময় কাটান সেখানেই আপনার বিজ্ঞাপন তাদের কাছে পৌঁছে যায়।
৩. বাজেট এবং বিডিং:
আপনি আপনার অ্যাডস গুলোর প্রোমোশনের জন্য একটি ডেইলি বা লাইফটাইম বাজেট সেট করতে পারবেন এবং বিভিন্ন বিডিং কৌশল,যেমন – কস্ট পার ক্লিক (CPC) বা কস্ট পার ইমপ্রেশনবিশ্বব্যাপী (CPM) বেছে নিতে পারবেন। Facebook-এর অ্যালগরিদম অ্যাডস মার্কেটিংকে অটোমেটিকালি অপ্টিমাইজ করে যাতে আপনি আপনার বাজেটের মধ্যে একটা সেরা রেজাল্ট পান।
Facebook Advertising ব্যবহার করে গ্লোবালি প্রোডাক্ট সেল করার স্টেপস –
১. মার্কেট রিসার্চ এবং স্ট্র্যাটেজি ডেভেলপমেন্ট:
একটি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক শুরু করার আগে, বিভিন্ন অঞ্চলে আপনার পণ্যের চাহিদা বোঝার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ মার্কেট রিসার্চ করুন। আপনার টার্গেট মার্কেট গুলো চিহ্নিত করুন এবং প্রতিটি অঞ্চলের ইউনিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে এককেকটি স্ট্র্যাটেজি তৈরি করুন। অর্থাৎ কোন লোকালিটি-তে কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বেশি ইফেক্টিভ হবে সেটি মার্কেট রিসার্চ এর মাধ্যমে খুঁজে বের করুন এবং অ্যাপ্লাই করুন।
২. ফেসবুক বিজনেস ম্যানেজার সেট আপ:
আপনার যদি ইতিমধ্যে অ্যাকাউন্ট না থাকে তবে একটি Facebook বিজনেস ম্যানেজার অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন৷ এই টুলটি আপনাকে এক জায়গা থেকে আপনার পেইজ, বিজ্ঞাপন অ্যাকাউন্ট এবং পার্টনারদের পরিচালনা করার সুযোগ দেয়। পাশাপাশি এটাও নিশ্চিত করুন যে আপনার বিজনেস ম্যানেজার গ্লোবাল দর্শকদের জন্য একাধিক কারেন্সি এবং ভাষা ম্যানেজ করার জন্য পার্ফেক্টলি সেট আপ করা হয়েছে।
৩.আপনার ক্যাম্পেইন তৈরি করুন:
- ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য: আপনার ব্যবসার টার্গেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি উদ্দেশ্য বেছে নিন। গ্লোবালি প্রোডাক্ট সেল এর জন্য, কনভার্সন বা ক্যাটালগ সেলের মত উদ্দেশ্য বিবেচনা করতে পারেন।
- বিজ্ঞাপন সেট: আপনার টার্গেট অডিয়েন্স নির্ধারণ করুন। তাদের অবস্থান, ভাষা, জনসংখ্যা এবং আগ্রহের ভিত্তিতে আপনার দর্শকদের ভাগ করতে Facebook-এর বিস্তারিত টার্গেটিং অপশন গুলো ব্যবহার করুন।
- অ্যাড ক্রিয়েটিভ: উচ্চ মানের ভিজ্যুয়াল এবং আকর্ষক কপি দিয়ে আপনার বিজ্ঞাপন গুলোকে ডিজাইন করুন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের সাথে ম্যাচ করতে আপনার বিজ্ঞাপন ক্রিয়েটিভস গুলোকে লোকালাইজ করুন।
৪. লোকালাইজেশন এবং কালচারাল সেনসিটিভিটি:
হুবহু অ্যাডস ট্রান্সলেশন এর থেকে লোকালাইজেশন করুন তাহলে বেশি কার্যকর হবে। লোকাল অ্যাডস প্রোগ্রাম গুলোতে জয়েন হয়ে ওই দেশীয় ভাষায় সরাসরি অ্যডস জেনারেট করুন। এছাড়াও লোকালাইজেশনের সময়ে কালচারাল সেনসিটিভিটি এর দিকেও মনযোগ দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে রঙ এবং প্রতীকের বিভিন্ন অর্থ থাকতে পারে। আপনার বিজ্ঞাপন গুলো কালচারালি উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করতে লোকালাইজেশন টুলস এবং সার্ভিস ব্যবহার করতে পারেন।
৫. Facebook পিক্সেল এবং কাস্টম অডিয়েন্স ব্যবহার করা:
ফেসবুক ইউজারদের ইন্টারেকশন ট্র্যাক করতে এবং তাদের ডেটা সংগ্রহ করতে আপনার ওয়েবসাইটে Facebook পিক্সেল ইনস্টল করুন। এই তথ্যটি ক্যাম্পেইনে পুনরায় টার্গেট করার জন্য কাস্টম অডিয়েন্স তৈরি করতে সাহায্য করে অর্থাৎ যারা আপনার পণ্যে আগ্রহ দেখিয়েছেন এমন সম্ভাব্য গ্রাহকদের কনভার্ট করার জন্য এই টুলস গুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬. A/B টেস্টিং এবং অপ্টিমাইজেশান:
কোন বিজ্ঞাপন ক্রিয়েটিভ, অডিয়েন্স এবং প্লেসমেন্ট সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করে তা নির্ধারণ করতে A/B টেস্ট চালান। নিয়মিত কর্মক্ষমতা মেট্রিক্স পর্যালোচনা করুন এবং সেই অনুযায়ী আপনার ক্যাম্পেইন অপ্টিমাইজ করুন। Facebook-এর ডায়নামিক বিজ্ঞাপন গুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার দর্শকদের কাছে পৌঁছানো বেস্ট পারফর্মিং ক্রিয়েটিভস গুলো শো করে। এখান থেকে আইডিয়া নিয়ে আপনি কোন গুলো ভাল কাজ করছে, কিংবা কোথায় মোডিফিকেশন আনতে হবে এগুলো ট্র্যাক করতে পারবেন।
শেষ কথা, নিজের বিজনেস কে শুধু দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বিশ্বব্যাপী উপস্থাপন করা একটা গ্রেট আইডিয়া। আর এই আইডিয়াটি ওয়ার্ক আউট করতে একটা দারুণ অপশন হলো ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং। ফেসবুকের এই হিউজ অডিয়েন্স বেজ কে কাজে লাগিয়ে গ্লোবালি প্রোডাক্ট সেল করা এবং প্রোফিট টার্গেট পূরণ করার জন্য প্রয়োজন একটি সিস্টেমেটিক প্রোসেস। তাই ফেসবুকেুর অ্যাডভার্টাইজিং এর টার্মস এবং কন্ডিশন মেইনটেইন করে, স্টেপ বাই স্টেপ আউটলাইন ফলো করলে আপনিও আপনার নিজস্ব ব্র্যান্ডকে বিশ্বের কাছে রিপ্রেজেন্ট করতে পারবেন এবং গ্লোবালি প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন।