কাস্টমার সার্ভিস স্কিলস ইম্প্রোভ করার ৭টি টিপস

কাস্টমার সার্ভিস স্কিলস ইম্প্রোভ করার ৭টি টিপস
Share This Post

কাস্টমার সার্ভিস হল বিজনেস সুদুরপ্রসারি করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ। কাস্টমারই আপনার বিজনেস এর লক্ষ্য, আপনার প্রোফিট এর উৎস। তাই কাস্টমার সন্তুষ্ট করতে, একটা ওয়েল স্ট্র্যাকচারড কাস্টমার সার্ভিস প্রোভাইড করার কোনো বিকল্প নেই। তবে হ্যাঁ, শুরুতেই কেউ ভাল কাস্টমার সার্ভিস স্কিল নিয়ে আসে না। হয়ত আপনার কমিউনিকেশন ভাল তবে কাস্টমার সার্ভিস, স্যটািসফেকশন নিশ্চিতকরণ সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন বিষয়। 

কাস্টমার সার্ভিস স্কিলস ইম্প্রোভ করার ৭টি টিপস

কিন্তু কাস্টমারকে সন্তুষ্ট করতে, তাদের ডিমান্ড ফুলফিল করতে ও একটা ভাল কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স নিশ্চিত করতে কি কি দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ? এবং কীভাবে আপনি, আপনার টিম এই স্কিল ইমপ্রুভ করে, আপনাদের ব্যবসা বা ক্যারিয়ারকে পরবর্তী লেভেলে নিয়ে যাবেন? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতেই এখানে ৭ টি কাস্টমার সার্ভিস স্কিল ও কিভাবে এদের প্রত্যেকটি উন্নত করা যায় তার বিস্তারিত আলোচনা রইলো-

কাস্টমার সার্ভিস স্কিলস ইম্প্রোভ করার ৭টি টিপস :

১. আপনার আচরণে সহানুভূতি বিকাশ করুন :

ড্যানিয়েল পিঙ্কের, ” A whole new mind” বই অনুসারে,
“সহানুভূতি হল অন্যের জুতোয় দাঁড়ানো, তার হৃদয় দিয়ে অনুভব করা, তার চোখ দিয়ে দেখা।” 

আচরণে সহানুভূতি আসলে আমাদের নিজস্ব নয় বরং এটা অন্যদের দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি অনুভব করার ক্ষমতা। 

আপনার আচরণে সহানুভূতি বিকাশ করুন

কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট হিসেবে আপনার কথায় ও আচরণে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্কিল হল empathy বা সহানুভূতি। কারণ আপনার কাস্টমার চায় আপনি তাদের বুঝুন, সম্মান করুন এবং সমর্থন করুন৷ আর সহানুভূতির মাধ্যমেই কিন্তু এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা সম্ভব।  

সহানুভূতি বিকাশের বা ইম্প্রুভ এর স্টেপস-

  • ভিন্ন মানসিকতার লোকের সাথে সময় কাটান :
    বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির লোকেদের কাছে নিজেদের পরিচিত করা, তাদের সাথে একমত না হলেও তাদের সমর্থন করা, সহানুভূতিপূর্ণ মনোভাব ডেভেলপ করতে সাহায্য করে। এটা প্র্যাকটিস করতে চাইলে,আপনি হয়ত বিরোধী রাজনীতির সাথে বন্ধুর সাথে মতামত শেয়ার করতে পারেন। অথবা, কর্মক্ষেত্রে ডিফারেন্ট সেক্টর বা স্কিলের কারো সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন।  
  • আপনার ইমোশনাল বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা করুন (EQ) :
    UC বার্কলে-এর গ্রেটার গুড সায়েন্স সেন্টার, একটি ছোট অনলাইন কুইজ তৈরি করেছে, যাতে আপনি মুখের অভিব্যক্তির মাধ্যমে অন্য মানুষের আবেগ কতটা ভালোভাবে পড়েন তা পরিমাপ করতে পারবেন। এতে করে আপনি মানুষের ইমোশন বুঝতে এবং সহজেই তাদের সাথে সহানুভূতি পূর্ণ আচরণ করতে পারবেন। 

২. একটিভ লিসেনিং প্র্যাকটিস :

আগে শুনবেন, তবেই জানবেন। অর্থাৎ, আপনার কাস্টমার এর সমস্যা কি? দাবি কি?  এগুলো যত মনোযোগ সহকারে শুনবেন তত ইফেক্টিভলি সমাধান করতে পারবেন।  

একটিভ লিসেনিং প্র্যাকটিস

লিসেনিং প্র্যাকটিস করার জন্য –

  • প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট সময় নিজেকে দিন। এসময়ে চুপ থেকে নিজের মন ও মস্তিষ্ক কে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ প্রথমে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেকে চুপ রাখা শিখুন। 
  • প্রতিদিন এমন কিছু শোনার প্র্যাকটিস করুন যেটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু কম ইন্টারেস্টিং এবং সব শেষে যাচাই করুন ওই টপিক টা আপনি কতটুকু বুঝলেন। 
  • আপনার মুখভঙ্গি পরিবর্তন করুন৷ আপনি যে কাস্টমারের কথা শুনছেন সেটা শুধু আপনি জানলেই হবে না। তাদের কথা সায় দিয়ে, মুখভঙ্গি ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজে পজিটিভলি বুঝিয়ে দিন তাদের কথা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ৷ 

৩. কিউরিওসিটি বিল্ডিং স্কিল  :

কিউরিওসিটি বা আগ্রহ কাস্টমার সার্ভিস ইমপ্রুভমেন্ট এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার কাস্টমার এর সমস্যা বেঝা, সমাধান করা এবং তাদের ওপর মনোযোগ ধরে রাখার জন্য আপনার মধ্যে কিউরিওসিটি থাকা জরুরি।

কিউরিওসিটি বিল্ডিং স্কিল 

কারণ, কৌতুহলী লোকেরা যুক্তিসংগত প্রশ্ন করতে, বিষয়বস্তুর গভীরে পৌঁছাতে এবং কঠিন সমস্যার সমাধান করতে বেশি পারদর্শী। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস রিসার্চ ও রিভিউ বিভাগ ঠিক এমনটাই বলে। 

আপনার কৌতুহল বাড়ানোর জন্য –

  • বেশি বেশি প্রশ্ন করুন। যত বেশি প্রশ্ন করবেন, উত্তর পাবেন, ইনফরমেশন পেতে থাকবেন, আপনি তত বেশি জানতে পারবেন। এবং এটাই আপনার কিউরিওসিটি ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
  • সবসময় হ্যাঁ/না উত্তরে থেমে থাকবেন না। ‘কেন’, ‘কিভাবে’ এইসব প্রশ্নের মাধ্যমে বিষয়বস্তুর গভীরে পৌঁছাতে চেষ্টা করুন। 
  • তবে সহানুভূতির সাথে প্রশ্ন করুন, প্রশ্নের মধ্যে আগ্রহ ফুটিয়ে তুলুন৷ প্রশ্ন শুনে যেন কৈফিয়ত বা জেরা মনে না হয়। 

৪. প্র্যাকটিসিং  সিম্পলিসিটি :

আপনি আপনার কাস্টমারের থেকে সুপিরিয়র নন!  হ্যাঁ আপনার কাছে অনেক ধরনের, পেশার, বয়সের কাস্টমার আসবে। তবে তাদের সবার সামনে আপনাকে হতে হবে একজন সাধারণ এবং হাম্বেল একজন মানুষ। আপনার attitude এমন হওয়া চলবে না যে কাস্টমার আপনার সাথে কথা বলতে ডিসকম্ফোর্ট ফিল করে।  

প্র্যাকটিসিং  সিম্পলিসিটি

এজন্য আপনার অবশ্যই প্র্যাকটিস করতে হবে-

  • বিনয়ী হওয়া। আপনার কথায় বিনয় রাখার অনুশীলন করুন। কথার মধ্যে পজিটিভ ইম্প্রেশন রাখুন। 
  • কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে ছোট বড়, পেশা, বয়স নির্বিশেষে সব স্তরের মানুষের সাথে পরিচয় ও সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করুন। এতে আপনি সাধারণ কিন্তু বিনয়ী আচরণ ধরে রাখতে সফল হবেন। 

৫. বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন :

কাস্টমার সার্ভিস দেয়ার উদ্দেশ্য কি? কাস্টমার এর বিশ্বাস অর্জন, তাকে ধরে রাখা৷ তাই নয় কি? তবে কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট এর ব্যবহার, কথা ও আচরণের ওপরও নির্ভর করে কাস্টমাররা কোম্পানির ওপর কতটুকু ভরসা করবে? 

বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন

বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হলে-

  • অবশ্যই সঠিক তথ্য দিন। আপনার সততা, বিবেক ও মনুষ্যত্ব বোধ থেকেই কাস্টমারের সাথে লয়াল থাকুন। কথা ও কাজে মিল রাখুন। ক্রেডিবিলিটি নিশ্চিত করার এটাই প্রথম ধাপ। 
  • কথার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ। অর্থাৎ আপনার প্রতিটি কথা পজিটিভ ওয়েতে বলার চেষ্টা করুন৷ মোট কথা কাস্টমারকে আপনার সাথে কম্ফোর্ট হওয়ার সুযোগ করে দিন।

৬. সীমাহীন ধৈর্য্য :

কাস্টমার সার্ভিস মোটেও সহজ কাজ নয়। কখনও কখনও, গ্রাহকরা আপনার উপর রাগান্বিত হবে। সমস্যা যাই হোক না কেন, আপনি এই পরিস্থিতিতে যে কোনও ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ কাজটি করতে পারেন তা হল আপনার ধৈর্য্য হারানো। 

সীমাহীন ধৈর্য্য

ধৈর্য বাড়াতে এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে

  • কাস্টমারের আচরণ, রাগ, ক্ষোভ ও অভিযোগের পেছনের কারন গুলো খুঁজে বের করুণ। অর্থাৎ একটা পজিটিভ ধারণা রাখুন, যে নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো কারন আছে এবং এটি সমাধানের চেষ্টা করুন 
  • ধৈর্য্যহারা বা রাগান্বিত অবস্থায় আপনি কেমন ব্যবহার করেন? এই এটিটিউড টাই চেইঞ্জ করে ফেলতে হবে। ধীরে ধীরে এই বিহেভিয়ার গুলো নিয়ন্ত্রণ করুন। 
  • সেল্ফ টক কন্ট্রোল করুন। অর্থাৎ যেই মুহুর্তে ধৈর্য্য হারা হওয়ার আশংকা আছে, সেই মুহুর্তে চুপ থাকার চেষ্টা করুন এবং কাস্টমারের কথা শুনুন। 

৭. আত্মবিশ্বাস :

কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট এর সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আপনি যদি কাস্টমার কে ভরসাই দিতে না পারেন, সে কেন আসবে আপনার প্রোডাক্ট কিনতে? কেন আসবে আপনার কাছে সমস্যা সমাধান করতে? 

তবে রাতারাতি কখনও আত্মবিশ্বাস বাড়ানো সম্ভব নয়, তাই প্র্যাকটিস করুন –

  • কাস্টমার রিসার্চ ও বিহেভিয়ার এনালাইসিস। বিভিন্ন ধরনের কাস্টমার, তাদের আচরন, তাদের সেনসিটিটিভিটি, তাদের কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হয় সেটা আগে আয়ত্ত করুন। এতে করেই আপনার আরো বেশি কাস্টমার কে ডিল করার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
  • জ্ঞান অর্জন – আপনি যে নিশ নিয়ে কাজ করছেন, এর খুটিনাটি সব বিষয়, আমি আবারও বলছি এই রিলেটেড সব বিষয় আপনার নখদর্পনে রাখুন। যাতে কাস্টমার সমস্যা বলতে শুরু করলেই আপনি পুরোটা বুঝে যান। এই নলেজ ই আপানর আত্মবিশ্বাসকে কয়েক ধাপ ওপরে নিয়ে যাবে। 
  • স্পিকিং প্র্যাকটিস। যত পারুন বিভিন্ন বিষয়  নিয়ে জানুন ও কথা বলুন। এতে করে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি যেমন উন্নত হবে তেমনি আপনার জড়তাও কেটে যাবে। 
আত্মবিশ্বাস

 উপসংহারে, 

কাস্টমার সার্ভিস একটা ধৈর্য্য, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কাজ। এর ওপর নির্ভর করে ব্রান্ডের রেপুটেশন, সেলস ও বিশ্বাসযোগ্যতা। তাই সফলভাবে কাস্টমার সার্ভিস প্রোভাইড করার জন্য আয়ত্ত করুন ধৈর্যশীলতা,সিমপ্লিসিটি সহানুভূতি, বিনয়,আত্মবিশ্বাস এর মত কমিউনিকেশন স্কিল এবং আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালুকে ডেভেলপ করুন আরো কয়েক ধাপ।  

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
কাস্টমার সার্ভিস স্কিল ইম্প্রোভ করার ৭টি টিপস
Marketing

কাস্টমার সার্ভিস স্কিল ইম্প্রোভ করার ৭টি টিপস

কাস্টমার সার্ভিস আজকের ব্যবসার জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ভালো কাস্টমার সার্ভিস দেওয়ার মানে হলো কাস্টমারদের সন্তুষ্ট রাখা, যা পরবর্তীতে ব্যবসার উন্নতিতে সাহায্য করে। ভালো কাস্টমার

কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে হ্যাশট্যাগ কার্যকরভাবে ইউজ করবেন
Marketing

কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে হ্যাশট্যাগ কার্যকরভাবে ইউজ করবেন

সোশ্যাল মিডিয়া ইউজারদের কাছে একটা খুব পরিচিত এবং কমন সাইন হল হ্যাশট্যাগ (#)। যখনই আমরা কোনো কি ওয়ার্ড, কোনো মেসেজ বা নামের আগে এই সাইনটা