আপনি কি টুইটারের মাধ্যমে এনগেজমেন্ট বাড়াতে এবং লিড তৈরি করতে চাইছেন? অথবা সম্ভবত আপনি আপনার ব্র্যান্ড রেপুটেশন বাড়াতে টুইটার অ্যালগরিদম নেভিগেট করাকে বেশ চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন।
আপনার লক্ষ্য যেটাই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ফিল্ডে টুইটার অ্যালগরিদম বোঝা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফার্স্ট স্টেপ। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ডায়নামিক পরিমন্ডলে, টুইটার অ্যালগরিদম আয়ত্ত করা প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার চাবিকাঠি। টুইটার অ্যালগরিদম ব্যবহারকারীর পছন্দ, এনগেজমেন্ট এবং নতুনত্বের উপর ভিত্তি করে কনটেন্ট কিউরেট করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
আজকের আর্টিকেল এ ব্যাখ্যা করবো যে, কীভাবে টুইটার অ্যালগরিদম আপনার ফিডে প্রোডাক্টের র্যাঙ্কিংকে প্রভাবিত করে। তাছাড়া, টুইটার অ্যালগরিদমকে ইফেক্টিভ ভাবে ইউটিলাইজ করতে আপনাকে সাহায্য করার জন্য অ্যাকশনেবল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি গুলোও তুলে ধরবো।
টুইটার অ্যালগরিদম কি?
টুইটার অ্যালগরিদম হল একটি জটিল সিস্টেম যেটা আপনার টাইমলাইনে টুইটের র্যাঙ্কিং নির্ধারণ করে। এই অ্যালগরিদম ইউজার এর ব্যক্তিগত আগ্রহ, অবস্থান, নতুনত্ব এবং ভাইরালিটি সহ বিভিন্ন কারণের উপর ভিত্তি করে কনটেন্ট কিউরেট করে। টুইটার অ্যালগরিদমটি ইউজার ফিডকে আরো বেশি পার্সোনালাইজড করতে এবং প্ল্যাটফর্মে আপনার ইনসাইট গুলোর সাথে প্রাসঙ্গিক প্রোডাক্ট সাপ্লাই করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে ৷
আরেকটু সহজ কথায় বলতে গেলে, টুইটার অ্যালগরিদম ইউজার এর শেয়ার করা বিভিন্ন ডাটা, লাইক, শেয়ার, তাদের ইন্টারেস্ট ইত্যাদি ডিটেক্ট করে এবং সিম্পলি তাদের সামনে তাদের পছন্দের সাথে রিলেভ্যান্ট প্রোডাক্ট শো করে। টুইটার অ্যালগরিদমের এই কৌশলকে কাজে লাগিয়ে মার্কেটাররা দারুন সব এডভান্টেজ নিচ্ছে।
টুইটার অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে?
টুইটারের অ্যালগরিদম ইউজারদের এমন সব টুইট গুলো দেখানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যা তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি রিলেভ্যান্ট। টাইমলাইন কিউরেট করার জন্য এখানে এনগেজমেন্ট, নতুনত্ব এবং ইউজারের আগ্রহের মতো বিষয়গুলি বিবেচনা করা হয় । জনপ্রিয় টুইট, মোস্ট Followed অ্যাকাউন্টের কনটেন্ট এবং আপনি ফলো করেন এমন, অন্যদের সর্বাধিক পছন্দ করা টুইট গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। যেটা একটা পার্সোনালাইজড এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করে৷
মার্কেটিং অ্যাডভান্টেজের জন্য টুইটার অ্যালগরিদম এর ইউজ :
১. কম্পেইলিং বা আকর্ষক কন্টেন্ট তৈরি করা :
কনটেন্ট এর কোয়ালিটি টুইটারে সর্বোচ্চ রাজত্ব করে। তাই একজন মার্কেটার হিসেবে বা উদ্দোক্তা হিসেবে টুইটার এর অ্যালগরিদমে এগিয়ে থাকার প্রথম শর্ত একটি পাওয়ারফুল ও মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করা। এক্ষেত্রে কম্পেইলিং ভিজ্যুয়াল, শর্ট কপি, এবং স্ট্র্যাটেজিক হ্যাশট্যাগ দিয়ে আপনার অডিয়েন্সকে আকর্ষিত করে এমন সব ক্রাফট টুইট তৈরিতে ফোকাস করুন।
কারণ, অ্যালগরিদম সব সময়ে হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট ও প্রোডাক্ট এর ফেভার এ থাকে। ফলে এগুলো ইউজার দের ফিডে প্রদর্শিত হওয়ার সম্ভাবনা ও বেশি থাকে।
২. রেলেভেন্স হল মূল :
একটি রিলেভ্যান্ট ও কন্সিস্টেন্ট কনটেন্ট ছাড়া ইউজারদের কাছে পৌছানো সম্ভব নয়। কারণ আপনার কনটেন্ট কোয়ালিটি ভাল হলেও এটি যদি আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স এর সাথে রিলেটেড না হয় তাহলে কোনো ভাবেই এগুলো তাদের টুইটার ফিড পর্যন্ত রিচ করবে না।
সহজ কথায়, আপনি কাজ করছেন বই নিয়ে, আপনার অডিয়েন্স এর আগ্রহ সেদিকে। কিন্তু আপনার কনটেন্ট পাবলিশ করলেন মিউজিক নিয়ে। এতে করে কনটেন্ট কোয়ালিটি যত ভাল ই হোক না কেন অডিয়েন্স কে আকর্ষণ করতে পারবে না। পাশাপাশি অডিয়েন্স টু কাস্টমার কনভার্সন রেট ও কমে যাবে।
একটি রিলেভ্যান্ট ও নিয়মিত পোস্টিং শুধুমাত্র ভিজিবিলিটি-ই বজায় রাখে না পাশাপাশি একটা বিশ্বস্ত অডিয়েন্স তৈরিতেও অবদান রাখে। টুইটার অ্যালগরিদম সেই সব অ্যাকাউন্টগুলিকে রিওয়ার্ড করে যা ধারাবাহিকভাবে রিলেভেন্ট কনটেন্ট বা প্রোডাক্ট সাপ্লাই করে।
৩. হ্যাশট্যাগের স্ট্র্যাটেজিক ব্যবহার :
হ্যাশট্যাগ গুলো ডিস্কোভারেবিলিটি বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ ইউজারদের আপনার কনটেন্ট দ্রুত খুঁজে পেতে সাহায্য করে। আপনার টুইটের রিচ প্রসারিত করতে প্রাসঙ্গিক এবং ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন৷ যাইহোক, হ্যাশট্যাগ ব্যাবহারে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং অতিরিক্ত ব্যবহার এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করুন। অতিরিক্ত হ্যাশট্যাগ এর ব্যাবহার আবার আপনার প্রডাক্টের আপীলকে কমিয়ে ফেলতে পারে।
অর্থাৎ কনটেন্ট এর রিচ বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করলে, কনটেন্ট এর রিচ বাড়লেও নির্ধারিত প্রোডাক্টের ওপর থেকে ফোকাস সরে যাবে। তাই শুধুমাত্র প্রাসঙ্গিক হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহারের মনোযোগী হতে হবে।
৪. একটিভ এনগেজমেন্ট :
ইউজার বা ফলোয়ারদের করা কমেন্ট এ রিপ্লাই দিয়ে, রিটুইট করে এবং কনভার্সন-এ অংশগ্রহণ করে আপনি আপনার অডিয়েন্সদের সাথে কানেক্টেড থাকার চেষ্টা করুন।
কারন টুইটার অ্যালগরিদম আপনার ব্র্যান্ডের সাথে কানেক্টেড কমিউনিটি-কে আরো আগ্রহী করতে বেশি বেশি ইন্টারঅ্যাকশনের সুযোগ করে দেয়। অর্থাৎ টুইটার নিজে থেকেই আপনার অডিয়েন্স এর সাথে আপনার যোগাযোগ ডেভেলপ করার চেষ্টা করবে। তাদের সামনে আপনার কনটেন্ট, প্রোডাক্ট গুলো নিয়ে যাবে। তাই প্রথমে একটিভ এনগেজমেন্ট এর মাধ্যমে একটা স্ট্রং অডিয়েন্স বেইজ তৈরি করে নিন।
৫. টুইটার অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করুন :
টুইটার এ আপনার স্ট্র্যাটেজি গুলো কতটুকু ইফেক্ট ফেলছে, আপনার প্রোডাক্টিভিটি কতটুকু সে সম্পর্কে ইনসাইটস পেতে টুইটার অ্যানালিটিক্সের সুবিধা নিন। হাই পারফরম্যান্স কনটেন্ট, সর্বোত্তম পোস্টিং টাইম, এবং দর্শক সংখ্যা এনালাইসিস করুন। এই ডেটা ড্রাইভেন পদ্ধতি আপনাকে টুইটারে হাইয়েস্ট ইনফ্লুয়েন্স রাখতে কি কি স্টেপ এ ফোকাস করতে হবে, কোথায় মোডিফিকেশন আনতে হবে, এগুলো ডিসকাভার করতে সাহায্য করবে।
৬. টার্গেট রিচের জন্য টুইটার বিজ্ঞাপন আনলক করা :
কৌশলগতভাবে আপনার টুইটার কনটেন্ট এর রিচ প্রসারিত করতে চাইলে টুইটার এর পেইড বিজ্ঞাপন গুলোতে ইনভেস্ট করুন। নির্দিষ্ট পপুলেশন, ইন্টারেস্ট বা লোকেশন কে টার্গেট করার জন্য প্ল্যাটফর্মের অ্যাডস ফিচার গুলো ব্যবহার করুন৷ এই পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত করতে পারবেন যে আপনার কনটেন্ট টি সবচেয়ে বেশি রিলেভ্যান্ট দর্শকদের কাছে পৌঁছেছে।
৭. কোলাবোরেট করুন এবং অংশগ্রহণ করুন :
ইনফ্লুয়েন্সার, ইন্ডাস্ট্রি জায়ান্ট ও নেতাদের সাথে কানেক্টেড থাকুন এবং প্রাসঙ্গিক কনভার্সনে একটিভলি অংশগ্রহণ করুন। ট্রেন্ডি বিষয়গুলিতে কোলাবোরেশান এবং অংশগ্রহণ আপনার রিচকে আরো বৃদ্ধি করতে পারে এবং আপনার ব্র্যান্ডের ভিজিবিলিটি বাড়াতেও সাহায্য করতে পারে।
৮. ভিজ্যুয়াল কন্টেন্টের আধিপত্য :
টুইটার অ্যালগরিদম সবসময়ে ভিজ্যুয়াল টুইটকে বেশি ফেভার করে। আপনার কনটেন্ট ভিজুয়ালি আকর্ষণীয় এবং শেয়ারযোগ্য করতে ছবি, GIF এবং ভিডিও এড করুন৷ কারণ ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট গুলো কেবল নজর কাড়ে না বরং হায়ার এনগেজমেন্টে অবদান রাখে।
উপসংহার :
মনে রাখবেন, টুইটার অ্যালগরিদমটি সব ইউজারদের সেরা এক্সপেরিয়েন্স দেওয়ার জন্য তৈরী করা হয়েছে। তাই আপনার প্রোডাক্ট যেন অবশ্যই এই এক্সপেরিয়েন্সে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে পারে। টুইটার অ্যালগরিদম নেভিগেট করতে এবং প্ল্যাটফর্মে আপনার ভিজিবিলিটি বাড়াতে আপনার অডিয়েন্স কে বুঝুন এবং তাদের পছন্দগুলি বুঝুন।
পাশাপাশি সততা, কোয়ালিটি, এবং অ্যাকচুয়াল ইন্টারঅ্যকশনের মাধ্যমে টুইটার অ্যালগরিদমকে ইউটিলাইজ করুন সফল ভাবে।