আজকের এই ডিজিটালাইজেশন এর যুগে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর বাটেজ অপ্টিমাইজ করা কম্পিটিশনে এগিয়ে থাকার জন্য অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ। বিজনেস এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটা consistency ধরে রাখার জন্য, টার্গেটেড অডিয়েন্স কে রিচ করার জন্য ও পার্ফেক্টলি বিজনেস গোল ফুলফিল করার জন্য বাজেট অপ্টিমাইজেশন অপরিহার্য।
তবে ম্যাক্সিমাম ROI নিশ্চিত করতে, কনভার্সন রেইট বাড়াতে একটা স্ট্র্যাটেজিক প্লানিং ও রিসোর্স প্রয়োজন। বাজেট অপ্টিমাইজেশন এর জন্য শুরুতেই একটা আউটলাইন করে নিতে হবে। বুদ্ধিমত্তার সাথে ডিসাইড করতে হবে কোনটা প্রায়োরিটি পাবে, কোথায় খরচ করতে হবে। আজকের আলোচনায় ডিজিটাল মার্কেটিং বাজেট অপটিমাইজ করার একটা পরিপূর্ণ গাইডলাইন তুলে ধরছি।
ডিজিটাল মার্কেটিং বাজেট অপ্টিমাইজেশন :
বাজেট অপ্টিমাইজেশন মূলত একটা সিস্টেমেটিক ওয়ে-তে কমপ্লিট করা হয়। অর্থাৎ এটা একটা স্টেপ বাই স্টেপ জার্নি। সফল ভাবে বাজেট অপটিমাইজ করতে –
১. গোল এবং অবজেক্টিভ সেট করুন :
আপনার লক্ষ্য কি? এবং এর পেছনে আলটিমেট উদ্দেশ্য কি? এটা যত ক্লিয়ারলি ডিফাইন করতে পারবেন, বাজেট অপ্টিমাইজেশন তত বেশি সহজ ও ইফেক্টিভ হবে। আরেকটু সহজে বলতে, আপনি বাজেট সেট করছেন কোন কাজের জন্য, আপনি সবশেষে কি আউটপুট চাচ্ছেন সেটা সেট করুন।
হতে পারে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং করার উদ্দেশ্য অল্প সময়ে অনেক বেশি রিচ বৃদ্ধি করা। অথবা, একটা কনসিটেন্ট সেলস ধরে রাখা। দুই ক্ষেত্রে মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি, বাজেটিং ভিন্ন ভিন্ন হবে। তাই বাজেট অপ্টিমাইজেশন এর শুরুতেই গোলস গুলোর একটা আউটলাইন তৈরী করুন। এক্ষেত্রে গ্যাপ এনালাইসিস ও একটা ইফেক্টিভ পদ্ধতি। আপনার কাছে কি আছে, আপনার বিজনেস কোন অবস্থানে আছে এবং আপনি কোথায় নিতে চাচ্ছেন এই দুটো বিষয়ের গ্যাপ গুলোই আপনার লক্ষের একেকটা স্টেপ।
২. অডিয়েন্স কে বুঝুন :
ডিজিটাল মার্কেটিং পুরোটাই নির্ভর করছে টার্গেটেড অডিয়েন্স এর ওপর। এটা অফলাইন মার্কেটিং নয় যেখানে উন্মুক্ত সকলের জন্য মার্কেটিং হবে। এখানে অবশ্যই আপনাকে একটা নিদিষ্ট কমিউনিটির দর্শক কে টার্গেট করতে হবে। যারা আপনার বিজনেস, প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে কানেক্টেড বা রিলেটেবল।
বাজেট কে সাশ্রয়ী এবং কার্যকর রাখতে শুধুমাত্র এই স্পেসিফিক অডিয়েন্সদেরই টার্গেট করুন। তাদের পছন্দ-অপছন্দ এনালাইসিস করে মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি যাচাই করুন। যেহেতু একেক রকম অডিয়েন্স এর জন্য মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি আলাদা হবে। খরচেও ধরনেও ভিন্নতা থাকবে। যেহেতু, আপনার মার্কেটিং পেইড হতে যাচ্ছে, তাই আগেই অডিয়েন্স বুঝে এরপর বাজেট তৈরি করুন।
৩. কম্পিটিটিভ এনালাইসিস করুন:
মার্কেটে আপনার বিজনেস কম্পিটিটরদের মার্কেটিং কৌশল গুলো খুঁজে বের করুন। তারা কি কি উপায় অবলম্বন করছে, সেখানে সম্ভাব্য খরচ কি রকম তার একটা আইডিয়া নিন। অর্থাৎ আপনার রিলেটেড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে আনুমানিক খরচ এর ইনফরমেশন যোগাড় করুন৷ এতে আপনার বাজেট ব্যলেন্স করতে, কোন খাতে কতটুকু খরচ করতে হবে তা নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
বর্তমানে আপনার কম্পিটিটর রিসার্চ করার জন্য, মার্কেটিং কৌশল গুলো সম্পর্কে ইনফরমেশন দেয়ার জন্য রয়েছে বিশেষ টুলস এবং সফটওয়্যার। তাই ডিজিটাল উপায়ে কম্পিটিটর রিসার্চ করে এরপর বাজেট তৈরি করুন।
৪. সঠিক ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল চুজ করুন :
সোশ্যাল মিডিয়া পুরোটাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য উপযুক্ত প্লাটফর্ম, তবে সব চ্যানেল সব ধরনের অডিয়েন্স এর জন্য নয়। সব ধরনের প্রোডাক্ট এর জন্যও নয়৷ প্রতিটি প্লাটফর্মের অডিয়েন্স, তাদের পছন্দ, বয়স, ডিমান্ড ইত্যাদি ভ্যারি করে। তাই এদের জন্য মার্কেটিং কৌশল, বাজেট দুটোই ভিন্ন হবে।
তাছাড়া আলাদা আলাদা প্লাটফর্মের জন্য মার্কেটিং কস্ট ও ভিন্ন হয় থাকে। ফেসবুকে যেই খরচে আপনি মার্কেটিং করবেন। ইউটিউবে সেটা নাও হতে পারে। তাই আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কোথায় বেশি সময় দিচ্ছে, তার পছন্দের প্লাটফর্ম কোনটি সেটি খুঁজে বের করুন এবং সেই প্লাটফর্মকে ফোকাস করে, সেখানকার খরচ আপনার বাজেটে ইনক্লুড করুন। তবে আমি বলবো শুধু একটা প্লাটফর্মে পড়ে না থেকে, মেইন একটা প্লাটফর্মের পাশাপাশি বেশ কিছু সোশ্যাল চ্যানেলেও পরিচিতি ধরে রাখুন।
৫. বুদ্ধিমত্তার সাথে বাজেট অ্যালোকেট করুন :
কোন প্লাটফর্ম থেকে আপনি সর্বোচ্চ ROI পাবেন? কনভার্সন রেট কোথায় বেশি। কোন সেক্টরে কাজ করলে, সময় ও টাকা ইনভেস্ট করলে রিটার্ন এর পরিমাণ সর্বাধিক হবে? এটা খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে খুঁজে বের করুন এবং সেই অনুযায়ী বাজেটের প্রায়োরিটি লিস্ট তৈরি করুন। এক্ষেত্রে আপনি পূর্বের ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স এর প্রেফারেবল চ্যানেল, প্রায়োরিটি খুঁজে বের করুন।
এতে করে অপ্রয়োজনীয় খাতে অতিরিক্ত খরচ হওয়া থেকে নিজের বিজনেস কে সেইভ করতে পারবেন। পাশাপাশি বাজেট লিমিটেশন এর মত ভোগান্তিতে পড়তে হবে না। তাই ওয়াইজলি চুজ করুন আপনার প্রায়োরিটি।
৬. টেস্ট এবং এক্সপেরিমেন্ট:
বাজেট আউটলাইন তৈরী করেই আপনার দায়িত্ব শেষ নয়। বাজেট সব সময় কনসিটেন্ট থাকতে হবে এমনটি নয়৷ বাজেট এলোকেশন ইফেক্টিভ কিনা, কোন পদ্ধতিটি বেশি ইফেক্টিভ তা খুঁজে বের করতে হলে নিয়মিত টেস্ট এবং এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে যেতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি ফেসবুককে টার্গেট করে মার্কেটিং করছেন৷ তবে আপনাকেও এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে হবে ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব বা অন্য চ্যানেলে পারফরম্যান্স কেমন আসছ। কম্পেয়ার করার মাধ্যমেই আপনি খুঁজে পাবেন কোন প্লাটফর্মটি আপনাকে সর্বোচ্চ রিটার্ন এনে দিবে। তাই নিয়মিত নতুন নতুন স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে উপযুক্ত কৌশলটা খুঁজে বের করুন এবং পরবর্তীতে বাজেট অপ্টিমাইজেশনে সেখানে ফোকাস করুন।
৭. ফ্লেক্সিবল থাকুন ও এডাপটেশনের মনোভাব রাখুন :
নিয়মিত মনিটর করুন কোন প্লাটফর্মে আপনার মার্কেটিং এর কার্যকরীতা বেশি। সেই অনুযায়ী যেকোনো সময়ে মার্কেটিং কৌশল পরিবর্তন ও অন্য স্ট্র্যাটেজিতে সুইচ করার মত মন মানসিকতা রাখুন। মোট কথা, মার্কেটিং বাজেট এর ক্ষেত্রে অবশ্যই ফ্লেক্সিবল হতে হবে এবং নতুন নতুন কৌশল এডাপটেশন এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এতে করে আপনার বাজেট allocation আরো বেশি এডভান্স এবং ইফেক্টিভ হবে।
উপসংহারে,
ডিজিটাল মার্কেটিং সফল ও ইফেক্ট ভাবে করতে চাইলে সর্বপ্রথম এর বাজেট এ ফোকাস করতে হবে। বাজেটই নির্ধারণ করবে এর কোয়ালিটি কেমন হবে,রিচ কেমন হবে। একটা ওয়াইজ বাজেট অপ্টিমাইজেশন এর মাধ্যমে আপনার কাছে আপনার টোটাল বিজনেস গোল এর একটা আউটলাইন থাকবে। আপনার কাছে থাকবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটা প্রোপার ওয়ার্ক প্লান। ঝুকিঁ থাকবে না অপ্রয়োজনীয় খরচ কিংবা বাজেট লিমিটেশন এর। তাই একটা আপনার এক্সপেরিয়েন্স, এনালাইসিস, এডাপটেশন এবিলিটি ও ইন্টেলিজেন্স দিয়ে একটা ওয়েল ডিফাইনড বাজেট অপ্টিমাইজেশন করুন।