যেকোনো ব্র্যান্ড বা বিজনেস শুরু করার আগে আপনাকে অবশ্যই বিজনেস টার্গেট অডিয়েন্স নির্ধারণ করতে হবে,সার্ভিস এবং প্রোডাক্টগুলির সেল বৃদ্ধি করার জন্য। কারা আপনার প্রোডাক্টের উপযুক্ত কাস্টমার, কোথায় প্রোডাক্টসের সেল অপরচুনিটি বেশি, এগুলি আইডেন্টিফাই করা সেলিং প্রসেসের ফার্স্ট স্টেপ। কেননা, যদি টার্গেটেড অডিয়েন্স-ই আইডেন্টিফাই করতে ভুল করেন, তাহলে অনেক সেল অপরচুনিটি মিস হয়ে যায়, যেটা সাক্সেস্ফুল বিজনেসের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু স্টেপ ফলো করতে হবে, যে স্টেপগুলিকে ন্যাচারালি একটা সেল অটোমেশন স্ট্র্যাটেজি বলা হয়। এই ব্লগে আপনাদের সাথে সাতটি টিপস শেয়ার করবো, যেগুলি আপনার বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করতে অনেক হেল্পফুল হবে।
“বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই টিপস”
এক্সিস্টিং কাস্টমার সেগমেন্টেশন
বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করার একটা বেস্ট ওয়ে হচ্ছে কারা অলরেডি আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস কিনেছে সে সম্পর্কে রিসার্চ করা। তারা কোন প্রোডাক্ট/সার্ভিস কিনেছে, কতোদিন ধরে ব্যবহার করছে, উপকার পাচ্ছে কিনা, তাদের বয়স কতো এবং তাদের কিসে ইন্টারেস্ট।
![কাস্টমার সেগমেন্টেশন](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/12/এক্সিস্টিং-কাস্টমার-সেগমেন্টেশন-1024x683.png)
অবশ্যই সব কাস্টমারের চাহিদা একরকম হবেনা, এজন্য ব্র্যান্ড এবং প্রোডাক্টসের বর্তমানে যে কাস্টমার রয়েছে তাদের আলাদা আলাদা সেগমেন্ট করুন তাদের চাহিদা এবং ইন্টারেস্ট অনুযায়ী। কোন কাস্টমারগুলি কোন সার্ভিসের প্রতি ইন্টারেস্টেড সেই অনুযায়ী সেগমেন্ট করা হলে খুব সহজেই আপনি আপনার প্রোডাক্টের জন্য টার্গেট অডিয়েন্স পেয়ে যাচ্ছেন।
বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স নিয়ে মার্কেট রিসার্চ
বর্তমান মার্কেট সম্পর্কে ভালো করে রিসার্চ করুন। মার্কেটে কোন প্রোডাক্টসের চাহিদা কেমন, বেশি চাহিদা আছে কোন প্রোডাক্টের সেই প্রোডাক্টসের ফিচার সম্পর্কে জানুন। মার্কেটে আপনার বিজনেসের কম্পিটিটর সম্পর্কে জানুন, তাদের গ্যাপ কোথায় যেটা আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ফিল-আপ করতে পারবে সেটা আইডেন্টিফাই করে সেই অনুযায়ী স্টেপ নিন, মার্কেটিং করুন।
![বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স নিয়ে মার্কেট রিসার্চ](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/12/মার্কেট-রিসার্চ-1024x683.png)
আপনার প্রোডাক্টের কম্পিটিটর অন্য প্রোডাক্টসের ট্রেন্ড গুলিও চেক করুন, তারা কোন বিষয় গুলি ফোকাস করতে এফোর্ট দিচ্ছে সেগুলি ফলো করুন এবং এর চেয়েও ইউনিক ওয়েতে ট্রেন্ডে অংশ নিন। মার্কেট অ্যানালাইসিস ঠিক ভাবে করলে আপনার অনেক গুলো কাজ একসাথে হয়ে যাবে।
কম্পিটিটর এনালাইসিস
মার্কেটে আপনার কম্পিটিটরদের সম্পর্কে রিসার্চ করেই আপনি অনেক কিছু শিখতে পারেন, যেমন তারা নরমালি কাদের কাছে প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস সেল করছে, তারা অডিয়েন্স কে কিভাবে রিচ করছে। তারা অফলাইন মার্কেটিং অথবা অনলাইন মার্কেটিং কোনটা কে বেশি প্রায়োরিটি দিচ্ছে। কিভাবে ক্যাম্পেইন করছে, কি পরিমাণ সেল হচ্ছে এসব এনালাইসিস করা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করার জন্য।
![কম্পিটিটর এনালাইসিস](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/12/কম্পিটিটর-এনালাইজ-1024x683.png)
যখন আপনার কম্পিটিটরদের মার্কেটিং থেকে ভালো আইডিয়া পাবেন তখন ওই আইডিয়া গুলিকে গ্রুমিং করে আপনি আরো বেটার আইডিয়া জেনারেট করতে পারবেন। একটা বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, “Business is all about marketing“। যখন আপনি কম্পিটিটরদের থেকেও প্রোপার ওয়েতে মার্কেটিং করতে পারবেন, আপনার প্রোডাক্টস কেন অন্যান্য ব্র্যান্ডের থেকেও ভালো এটা বুঝাতে পারবেন তখন টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করতে পারবেন খুব সহজেই।
বায়ার্স সার্ভে
![বায়ার্স সার্ভে](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/12/বায়ার্স-সার্ভে-1024x683.png)
বর্তমান কাস্টমারদের কাছে কি ইম্পর্ট্যান্ট, তারা কোন প্রোডাক্ট, সার্ভিস কে বেশি প্রায়োরিটি দিচ্ছে এসব জানতে চান? একটা সিম্পল সার্ভের মাধ্যমে আপনি এসব কিছুই জানতে পারবেন, এবং প্রোডাক্টসের জন্য টার্গেটেড অডিয়েন্সেও পেয়ে যাবেন। তবে, একই টাইমে অনেক গুলি প্রশ্ন করবেন না, বেটার হয় দুই থেকে তিনটা প্রশ্নের মধ্যেই সার্ভে শেষ করা। যেমনঃ বর্তমানে তারা কোন প্রোডাক্টসের প্রতি ইন্টারেস্টেড, কোন সার্ভিসটা তাদের জন্য বেশি ইম্পর্ট্যান্ট এরকম। এছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইভ হোস্ট করেও সবার মতামত নিতে পারেন এবং ফিডব্যাক দিতে পারেন। এতে করে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করতে পারবেন সহজেই।
ট্রেন্ড রিভিউ
সারা বিশ্বেই এখন মানুষ কম বেশি ট্রেন্ডে গা ভাসাতে পছন্দ করেন। সে-ই সুযোগটাই এখন অনেক ব্র্যান্ড মালিক কাজে লাগাচ্ছেন। সিজনাল যে ট্রেন্ডগুলি আছে, ওই ট্রেন্ডগুলি ফলো করুন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম (Facebook, Tiktok, YouTube, Instagram, LinkedIn) গুলিতে অলওয়েজ ট্রেন্ড অনুযায়ী প্রোডাক্টের মার্কেটিং করুন, অফার দিন।
![ট্রেন্ড রিভিউ](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/12/ট্রেন্ড-রিভিউ-1024x683.png)
পপুলার কোনো ইনফ্লুয়েন্সার কে দিয়ে আপনার প্রোডাক্ট প্রমোট করান। বর্তমানে ট্রেন্ড ফলো করা যেকোনো বিজনেসের জন্যই অনেক ইফেক্টিভ। কারণ, ট্রেন্ডের মাধ্যমেই অনেক কম সময়ের মধ্যে অনেক বেশি অডিয়েন্স রিচ করা যায়। ওই অডিয়েন্স থেকেই আপনি আপনার বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স পেয়ে যাবেন।
গুগল (Google) এনালিটিকস
![গুগল (Google) এনালিটিকস](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/12/গুগল-Google-এনালিটিকস-1024x683.png)
গুগল এনালিটিকস হলো বেস্ট একটা টুল বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করার জন্য। কেননা, এটা আপনাকে এক্সটেনসিভ ডাটা অফার করে আপনার ওয়েবসাইটে কোন কোন ইউসার ভিজিট করছে সে সম্পর্কে। ওয়েবসাইট ভিজিটরদের ইনফরমেশন যখন আপনি পেয়ে যান, সেখানে রিসার্চ করার মাধ্যমেও আপনি টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করতে পারছেন।
মেইনটেইন সোশ্যাল মিডিয়া
বর্তমান বিশ্বে মিলিয়ন মিলিয়ন সোশ্যাল মিডিয়া (Facebook,Youtube, TikTok, Instagram, LinkedIn) ইউসার রয়েছে। কেননা এমন কিছু নেই যেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যাচ্ছেনা। অডিয়েন্স তাদের প্রয়োজনীয় প্রায় সকল কিছুই পাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে, তারা প্রত্যেক ব্যাপারে আপডেট নিউজটাও এখান থেকেই পাচ্ছে। ছোট, বড় সব ধরনের ব্র্যান্ড, বিজনেস গুলি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কে গুরুত্ব দিচ্ছে তাদের টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করার জন্য
![মেইনটেইন সোশ্যাল মিডিয়া](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/12/মেইনটেইন-সোশ্যাল-মিডিয়া-1024x683.png)
আপনার বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলিতে বিজনেস প্রোফাইল মেইনটেইন করুন। প্রোডাক্ট ডেমু, ভিডিও কন্টেন্ট, ইমেজ, পজিটিভ রিভিউ শেয়ার করুন। লাইভে যান, অডিয়েন্সের সাথে গল্প করুন, তাদের কমেন্টের রিপ্লাই দিন। তাদের জন্যই প্রোডাক্ট, সার্ভিসটা ক্রিয়েট করা হয়েছে এমন মেসেজ দিন। হ্যাশট্যাগ, এডস ব্যবহার করুন। পোস্ট বুস্ট করার মাধ্যমে আরো বেশি অডিয়েন্স রিচ করতে পারবেন।
সর্বোপরি, যেকোনো বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করা হলো সর্বপ্রথম স্টেপ। প্রোডাক্টসের টার্গেট অডিয়েন্স যখন পেয়ে যাবেন ঠিক তখনই প্রোপারলি মার্কেটিং করতে পারবেন, সেল বাড়াতে পারবেন। যদি আপনি না-ই জানেন কারা আপনার প্রোডাক্টের জন্য টার্গেট কাস্টমার তাহলে অনেক সময় দেখা যায় ভুল অডিয়েন্সের কাছে প্রোডাক্ট মার্কেটিং করে ফেলেন, যার কারণে টাইম অপচয় হয় এবং বিজনেসের রিচ-ও কমে যায়।
এজন্য, ভালো করে রিসার্চ করুন, উপরের স্টেপগুলো ফলো করুন, তাহলেই বিজনেসে টার্গেট অডিয়েন্স আইডেন্টিফাই করতে পারবেন, সেল ও বাড়বে।