PPC বিড অপটিমাইজেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে , প্রথমে আমাদের এই বিষয়ে একটি ওভারঅল আইডিয়া নেয়া প্রয়োজন।
পেইড সার্চ মার্কেটিং বা PPC (Pay-Per-Click) হল এমন একটি নেটওয়ার্কিং মার্কেটিং প্রোসেস যেখানে কোনও বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য বিজ্ঞাপণ দাতা তাদের বিজ্ঞাপন প্রদানকারীর সাথে একটি চুক্তি স্থাপন করে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য অর্থ প্রদান করে। এই ধরনের মার্কেটিং স্ট্রাটেজির উদ্দেশ্য হ’ল কাস্টমারদের সাথে ইন্টারেকশন বাড়ানো এবং বিজ্ঞাপন দাতার প্রোডাক্টের ভিজিবিলিটি, পপুলারিটি বাড়ানো।
যেহেতু এটি একটি পেইড মার্কেটিং, সুতরাং এখানে কাজ শুরু করার আগে একটি সিস্টেমেটিক ওয়ে তে আগাতে হবে। কয়েকটি ধাপে সর্বাধিক ROI এর জন্য আপনার PPC বিড গুলো অপ্টিমাইজ করার উপায় গুলো সম্পর্কেই আজকের আলোচনা-
PPC বিড গুলি যেভাবে অপ্টিমাইজ করবেন-
১. ক্লিয়ার আইডিয়া :
সবার আগে PPC, PPC বিড সম্পর্কে একটা ক্লিয়ার আইডিয়া রাখতেই হবে। কারণ এর সাথে অর্থের একটি বিষয় কানেক্টেড রয়েছে। আমি ইতিমধ্যে আপনাদের কিছুটা আইডিয়া দিয়েও দিয়েছি। পিপিসি হচ্ছে সহজ কথায় পেইড বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে মার্কেটিং। এখানে পার ক্লিকে পে হিসেব করা হয়। তবে পিপিসি কোন প্লাটফর্মে করতে হবে, কোন অডিয়েন্স এর সামনে কোন বিজ্ঞাপন শো করতে হবে এ সকল বিষয়েও ধারণা নিয়ে পিপিসি তে ইনভেস্ট করতে হবে।
পরবর্তী বিষয় হচ্ছে ROI সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারনা রাখা। কোথায় ইনভেস্ট করলে সর্বাধিক রিটার্নের পসিবিলিটি আছে সেটা আগে খুঁজে বের করতে হবে। যেহেতু পিপিসি এর আলটিমেট গোল হচ্ছে ROI, তাই আগে এই দুটোর ভ্যালু, মিনিং ও কানেকশন নিয়ে স্টাডি করে PPC তে ইনভেস্ট করতে হবে।
২. কীওয়ার্ড রিসার্চ :
পিপিসি এর জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চ করার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এই কি-ওয়ার্ড গুলোর ওপরেই নির্ভর করছে এডস গুলোর রিচ কতটুকু হবে, এটা কতটুকু পার্সোনালাইজড হবে কাস্টোমারের জন্য। এ কারণে কি-ওয়ার্ড সিলেকশন করতে হবে মার্কেট রিসার্চ এর মাধ্যমে। তবে বর্তমানে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ এর জন্য এডাভান্স টেকনোলজিস এরও ইউজ করা হচ্ছে।
যেমন গুগল এনালাইটিক বা এই ধরনের বেশ কিছু টুলস এর মাধ্যমে আপনি চাইলে ইফেক্টিভ, স্পেসিফিক এবং কনভার্টিং কীওয়ার্ড সনাক্ত করতে পারবেন।
৩. ল্যান্ডিং পেজ অপ্টিমাইজেশন:
একটি অনলাইন বা পিপিসি এড এর মূল আকর্ষণ থাকে এর ল্যান্ডিং পেইজ। অর্থাৎ ক্লিক করার পর অডিয়েন্স প্রথমে যে পেইজে চলে যাবে। এই পেইজ টা যত বেশি আর্কর্ষনীয় ও ইউজার ফ্রেন্ডলি থাকবে কাস্টমার তত বেশি এই পেইজে স্টে করবে। এবল অডিয়েন্স টু কাস্টমারে কনভার্ট হবে। তাই PPC বিড অপটিমাইজ করতে কাস্টমারদের জন্য অ্যাট্রাক্টিভ লেন্ডিং পেজ তৈরি করুন। এবং সেগুলো যেন দ্রিত সেলিল পেইজে রুপান্তর হয়, এমন কনভার্টিং লেন্ডিং পেজ ডিজাইন করুন।
৪. বিজ্ঞাপন টেক্সট অপ্টিমাইজেশন:
আকর্ষণীয় এবং রিলেটেবল বিজ্ঞাপন টেক্সট তৈরি করার চেষ্টা করুন। যেহেতু PPC বিড এর পেছনে আলটিমেট উদ্দেশ্য হচ্ছে, কাস্টমার ইন্টারেকশন ও সেলস ড্রাইভ, তাই এডস গুলোর টেক্সট যথাসম্ভব ইন্টারেস্টিং রাখুন।
এছাড়া এক্সপার্ট দের মতে এডস গুলোতে ডিসকাউন্ট, অফার কিংবা ইমোশনাল অ্যাপিল এর ব্যবহার করলে সেই PPC বিডে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৫. টার্গেটিং ও টেস্টিং:
PPC বিড অপটিমাইজেশন এর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ হল এই টার্গেটিং। অযথা সকলকে টার্গেট না করে, বরং ইফেক্টিভ টার্গেটিং বেশি কার্যকর। এ কারনে লোকেশন, ডেমোগ্রাফিক, এবং আন্তর্জাতিক টার্গেটিং কে মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি, ভাষা ও প্রোডাক্ট মাথায় রাখতে হবে।
এছাড়া এই কৌশল গুলে আদৌ ইফেক্টিভ কিনা তা যাচাই করার জন্য দরকার A/B টেস্টিং এবং প্রয়োজনে কাজের ধরনের পরিবর্তন আনার প্রস্তুতি।
৬. একুরেট প্লাটফর্ম :
আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কোথায় বেশি? কোন প্লাটফর্ম এ PPC বিড সাকসেস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি? সেটাই খুঁজে বের করুন। এবং সেই তথ্য গুলো ইউজ করে Google Ads, Facebook Ads, এবং অন্যান্য মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন।
এছাড়াও অন্য প্লাটফর্ম থেকে কাস্টমার গ্রাব করা যায় কিনা এটা যাচাই করতে মাঝেমাঝে টেস্ট করার জন্য বিভিন্ন প্লাটফর্ম এডস দিয়ে দেখতে পারেন।
৭. পর্যালোচনা এবং সার্ভিস আপগ্রেড:
প্রতিটি বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইনের সার্ভিস এবং প্রতিটি বিজ্ঞাপন চালনার পরিণাম পর্যালোচনা করুন। অর্থাৎ আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স এর কাছে পৌছাল কিনা, তারা পছন্দ করলো কিনা, আপনার উদ্দেশ্য সফল হল কিনা এগুলো পর্যালোচনা করুন।
এগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন সময়ে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করুন এবং বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইনর সার্ভিস আরে ডেভেলপ করুন।
৮. ডেটা অ্যানালাইসিস এবং মেট্রিক্স:
প্রতিটি বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইনের জন্য আলাদা করে ডেটা সংগ্রহ করুন এবং সার্ভিস প্রোভাইড করে এমন প্রতিটি মেট্রিক্স মনিটর করুন।
এছাড়াও আপনার কনভারশন রেট, ক্লিক-থ্রু রেট, এবং কেস্টপার অ্যাকিউইজিশন রেট সহ প্রতিটি মেট্রিক্স মনিটর করুন। এগুলো আপনার PPC বিড অপটিমাইজেশনে ও ইফেক্টিভ সল্যুশন এনে দিতে সাহায্য করবে।
৯. সোশ্যাল মিডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং:
সর্বোপরি PPC বিড সাকসেসফুলি রান করানোর জন্যও আপনার বিজ্ঞাপন প্রমোট করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম গুলো ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে টার্গেটিং এবং টেস্টিং এর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন অপ্টিমাইজ করুন। এতে করে এডস এর রিচ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
উপসংহার
পেইড সার্চ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে PPC একটি অতি পরিচিত এবং ইফেক্টিভ মাধ্যমে। কিন্তু এখানে যেহেতু ইনভেস্ট এর একটি বিষয় জড়িত আছে তাই খুব সাবধানে পরিকল্পনা করেই PPC বিড অপটিমাইজেশন করতে হবে। এর জন্য প্রথমেই ক্লিয়ার ধারনা, রিসার্চ, বিভিন্ন প্লাটফর্ম রিসার্চ, কম্পেইলিং কনটেন্ট তৈরি এবং প্রতিনিয়ত এনালাইসিস ও মোডিফিকেশন এর প্রিপারেশন রাখতে হবে। তবেই সাকসেসফুলি PPC বিড অপটিমাইজেশন সম্ভব হবে।