একটি বিজনেস প্ল্যান শুধু একটি ডকুমেন্ট না! এটা আপনাকে সাহায্য করবে আপনার বিজনেসের আউটলাইন রেডি করতে এবং আপনার টার্গেট গোল পর্যন্ত পৌঁছাতে। এটি থাকলে আপনি আপনার কাজের রেজাল্ট অ্যানালাইসিস করতে পারবেন। এটার উপর ভিত্তি করে আপনি বিভিন্ন কৌশলগত ডিসিশন নিতে পারবেন।
বিজনেস আইডিয়া সিলেক্ট করার পরের স্টেপই হচ্ছে একটি প্ল্যান করা। এটা আপনি সঠিক উপায়ে করলে আপনার বিজনেসের সামনের কাজ গুলো অনেক সহজ হয়ে যাবে। এবং আপনার সাকসেস হওয়ার চান্সও অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
এছাড়াও আপনার বিজনেস এর জন্য কোন ইনভেস্টর চাইলে আপনার প্ল্যান ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে তার কাছে। আপনি যদি ঠিক ভাবে প্ল্যান না করে রাখেন আপনি ইনভেস্টরকে এপ্রোচ করতে পারবেন না।
এই প্ল্যান করা এতোটা কঠিন নয়। স্টেপ বাই স্টেপ কিভাবে আপনি খুব সহজ ভাবে ইউনিক প্ল্যান করতে পারবেন তাই আজকে দেখাবো।
মার্কেট রিসার্চ করতে হবে
মার্কেট রিসার্চ হচ্ছে একধরণের কৌশল যেটা দিয়ে আপনি টার্গেট কাস্টমার, আপনার কম্পিটিটর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাবেন। মার্কেট রিসার্চ করে আপনি জানতে পারবেন আপনার কম্পিটিটর কারা কোন অবস্থায় আছে। তারা কি কি কৌশল অবলম্বন করছেন। আপনার কাস্টমারদের বিহেভিওর কেমন। বা তারা কোন সার্ভিস বা প্রোডাক্ট বেশি বেশি ব্যবহার করছে। তারা কোথায় প্রবলেম ফেইস করছে তাদের কোথায় সলিউশন দরকার, বা আপনি সেই বিজনেসে শুরু করলে আপনার কেমন রিস্ক থাকছে এগুলো সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় মার্কেট অ্যানালাইসিস করে। মার্কেট অ্যানালাইসিস আপনার প্ল্যানের খুবই গুরত্বপূর্ণ ধাপ।
বিজনেস অ্যানালাইসিস করুন
বিজনেসকে অ্যানালাইসিস খুবই জরুরি একটি ধাপ আপনার পরিকল্পনার। আপনার বিজনেসে কি প্রবলেম আছে তা কিভাবে সলিউশন করতে হবে। কোন কোন পয়েন্ট বিজনেসে অ্যাড করলে আপনার বিজনেসটি স্ট্রং হয়ে যাবে। বিজনেস অ্যানালাইসিস অনেক গুলো বিষয় আমাদের কাছে ক্লিয়ার করে দেয়। যেমন বিজনেস থেকে আমরা কি কি সুবিধা পেতে পারি। কোন কোন খরচ গুলো আমরা এড়িয়ে চলতে পারি। বিজনেসে অনেক ধরণের সুযোগ থাকে। কোন কোন সুযোগ গুলো আমরা কাজে লাগাতে পারি বা নতুন নতুন সুযোগ গুলো খুঁজে বের করা।
আপনার কাস্টমার সিলেক্ট করুন
একটি প্ল্যান করতে গেলে অনেকেই জানেনা তাদের কাস্টমার কারা। তারা মনে করেন তাদের কাস্টমার সবাই। কিন্তু আপনার প্রোডাক্টের কাস্টমার সবাই হতে পারেনা। তাই আপনার কাস্টামার কারা সেয়াত আপনাকে জানতে হবে। যেমন ধরুন আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটা কোন বয়সের মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হবে। বা আপনার প্রোডাক্ট এমন কিছু নাকি যেটা শুধু মেয়েদের জন্য বা ছেলেদের জন্য। আপনার সার্ভিস / প্রোডাক্ট এর আসল কাস্টামার কারা তা আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে। যাদের কাছে আপনি প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি সেল করতে চাচ্ছেন।
বাস্তবিক লক্ষ্য ঠিক করুন
আপনি একটি প্ল্যান করছেন আপনার অবশ্যই একটি লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। সেটা অবাস্তবিক হলে হবেনা। আপনার একটি বাস্তবিক লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। লক্ষ্য এমন ভাবে ঠিক করতে হবে যাতে আপনি আপনার টার্গেট করা সময়ের মধ্যে সেটা অর্জন না করতে পারলেও তার কাছাকাছি অত্যন্ত পৌঁছাতে পারেন।
বিভিন্ন টাইম্ফ্রেম দেখুন
টাইম্ফ্রেম দেখা হচ্ছে একটি অন্যতম ধাপ। অনেকেই এই স্টেপটি ফলো করেনা। কিন্তু একটি পারফেক্ট প্ল্যানিং এর জন্য এটার বিকল্প নেই। দেখা বলতে বুঝানো হচ্ছে মার্কেটে কোন কোন টাইমে আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড প্রোডাক্ট গুলো বেশি সেল হয়েছে। বা সেগুলো অনেক জনপ্রিয় থাকে কোন কোন সময়ে। এবং কোন সমইয়ে সেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর চাহিদা ড্রপ করে। আরও কিছু বিষয় রয়েছে যেমন একটি টাইমে হয়তো কোন এক প্রোডাক্ট বা সার্ভিস খুব জনপ্রিয় ছিলো হঠাৎ সেটার জনপ্রিয়তা কমে গেলো অন্য একটি নতুন প্রোডাক্ট এর জন্য। সেই নতুন প্রোডাক্ট টি এমন কি দিচ্ছিলো যার জন্য পুরাতন প্রোডাক্ট এর ভ্যালু কমে গেলো। এই টাইম্ফ্রেম গুলো খেয়াল রেখে আপনার পরিকল্পনা করতে হবে।
আপনার করা প্ল্যানকে রিভিউ করুন
আমরা একটি পরিকল্পনা করার সময় আমাদের কোন ভুল থাকলেও চোখে পড়েনা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেটা রিভিউ করলে ধরা পড়ে। তাই আবার বিজনেস প্ল্যানটি রিভিউ করতে হবে। রিভিউ করতে গেলে দেখবেন অনেক বিষয় পেয়ে গেছেন যোগ করার মত। আবার কিছু পেয়ে গেছেন বাদ দেয়ার মতো।
বিজনেস প্ল্যান করার জন্য কিছু টিপস
সংক্ষিপ্ত রাখুন
ডকুমেন্ট সংক্ষিপ্ত এবং ক্লিন রাখা প্রয়োজন। আপনার প্ল্যান কারও কাছে দেখাতে গেলে কেউ বিবরণ দেয়া ১০০ পেইজ পড়বেনা। এমন কি আপনি যখন নিজের প্ল্যান দেখতে যাবেন কোন কারণে তখন নিজেই এতো বড় ডকুমেন্ট দেখবেন না। তাই নিজের গোল নির্দিষ্ট রেখে সংক্ষিপ্ত ভাবে ডকুমেন্ট করা উচিৎ।
আইডিয়াকে রিভিউ করে নেয়া
প্ল্যান করার আগে নিজের আইডিয়া কে রিভিউ করে নেয়া। নাহলে পরে যদি মনে হয় না এই আইডিয়া নিয়ে কাজ করবেন না তাহলে পরবর্তীতে সম্পূর্ণ বিজনেস প্ল্যানটি বৃথা যাবে।
আতঙ্কিত না হওয়া
আপনি কি জানেন বেশিরভাগ উদ্যোক্তা এবং বিজনেসের মালিকরা বিজনেস এক্সপার্ট ছিলেন না। তাদের কাছে অনেক অনেক ডিগ্রি ছিলোনা। তারা শুধু জানতো তারা কি শুরু করতে চাচ্ছে। তারা তাদের নিজেদের আইডিয়া সম্পর্কে সিউর ছিলো। এরপর তারা শুধু বিভিন্ন অ্যানালাইসিস করে তথ্য গুলো কালেক্ট করেছিলো। সেখান থেকে তারা বিজনেস প্ল্যান করেন।
