আপনার জীবনটা বস হিসেবে পার করবেন এটা কি একটি স্বাধীনতা না? আপনার কি মনে হয়? আপনি কি নিজেকে কখনো একজন উদ্যোক্তা হিসেবে দেখেছেন। নাকি ভেবেছেন আপনাকে দিয়ে হবেনা। উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পড়ুন।
একজন উদ্যোক্তা হচ্ছেন তিনি যারা নতুন কোন জিনিস তৈরি করে। উদ্যোক্তা যারা নিজের বানানো শর্তে জীবন যাপন করেন। উদ্যোক্তা হচ্ছে তারা যাদের কোন একটি সমস্যার সমাধান দেয়ার জন্য নতুন নতুন বিষয় অনুসন্ধান করতে থাকে প্রতিনিয়ত।
একজন উদ্যোক্তা এবং একটি সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। একজন সাধারন মানুষ থেকে একজন উদ্যোক্তার চিন্তাধারা এবং বৈশিষ্ট্য অনেক ভিন্ন হয়।
একজন উদ্যোক্তার মধ্যে কিছু লক্ষণ আগে থেকেই পরিলক্ষিত করা যায় সেই লক্ষণ গুলো নিয়েই ব্লগটিতে আলচোনা করবো।
আপনার আইডিয়া কে এক্সিকিউট করতে পারেন
বিজনেস করতে গেলে আইডিয়া খুবই প্রয়োজন। আপনি হয়তো খুবই ব্রিলিয়েন্ট আইডিয়া জেনারেট করতে পারছেন। কিন্তু সেটার এক্সিকিউশন খুবই খারাপ ভাবে করছেন বা করতে পারছেন না সঠিক ভাবে। তাহলে কি শুধু ভালো আইডিয়া দিয়েই কি বিজনেস করা সম্ভব হবে? আপনি যদি সেই আইডিয়াকে কার্যকর করতে না পারেন তাহলে আপনি একজন উদ্যোক্তা হতে পারবেন না।
একজন তার প্ল্যান ভালো ভাবে এক্সিকিউট করতে পারে এটা একজন উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষণ। এক্সিকিউশন হচ্ছে এমন একটা বিষয় যেটা আসলে নির্ধারণ করবে আপনার বিজনেসের সাফল্য কিনবা ব্যর্থতা। একবার আইডিয়া বের হয়ে গেলে আপনাকে দেখতে হবে খুব এটা কিভাবে কাজ করে। একটি বিজনেস মডেল এ বলা হয়েছিলো একটি আইডিয়া যতই সাধারণ হোক কিন্তু তার উপর কাজ করা উচিৎ।
একজন উদ্যোক্তা জানেন তার আইডিয়া গুলোকে কিভাবে সে পারফেক্ট ভাবে এক্সিকিউট করবেন। এক্সিকিউশন খুবই বড় একটা পার্ট।
আপনি কি করছেন এবং আপনি কি করবেন তা সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত
এটা হচ্ছে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষণ। একজন উদ্যোক্তা জানেন তিনি কি করছেন এবং তিনি কি করতে চাচ্ছেন। আপনার লক্ষ্য সম্পর্কে আপনার নিশ্চিত থাকতে হবে। আপনি যদি নিজে আপনার কাজ নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকেন তাহলে সেটা কখনো সফল হবেনা। এবং আপনি ঠিক ভাবে করতেও পারবেন না।
অন্যেরা জানেনা আপনি কি চিন্তা করেছেন। তাই অনেকে অনেক মতামত দিবে। তখন যদি আপনি বিভ্রান্তিতে পড়ে যান এর মানে আপনি নিজে কি করছেন তা সম্পর্কে নিশ্চিত না। আপনি যদি নিশ্চিত থাকে যে যাই বলুক আপনার লক্ষ্য আপনি অটল থাকতেন।
যারা সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন তাদের মধ্যে এই লক্ষণটি পরিলক্ষিত হয়েছে। তারা কারও কথায় বিভ্রান্তিতে পড়েনি। তারা নিজেদের গোল সম্পর্কে এবং কাজ সম্পর্কে জানতো।
আপনি লাইফে এবং বিজনেসে ব্যর্থতাকে কাঁটিয়ে উঠতে পারেন
আপনি ব্যর্থ হওয়া মানে এইনা যে আপনি সারাজীবন ব্যর্থ থাকবেন। সফলতা আসবে ব্যর্থতা আসবে এটাই নিয়ম। ব্যর্থতা আপনাকে মেরে ফেলবেনা। কিন্তু আপনি ব্যর্থ হয়ে যদি ভয় পেয়ে থাকেন যে আর কিছু করবেননা এই ব্যর্থতার ভয় আপনাকে আপনার সাকসেস থেকে অনেক দূরে সরিয়ে দিবে।
সেই সময় আপনি আপনার সাফল্যর কথা ভাবতেই পারবেন না ব্যর্থতার ভয়ে। ব্যর্থতাকে যদি ভয় না পেয়ে অন্য ভাবে চিন্তা করি তাহলে আমাদের সামনের দিকে আগাতে সহজ হয়ে যাবে। ব্যর্থতা আসবে লাইফে এটা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। একজন উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষণ হলো কেন ব্যর্থ হলেন তা যাচাই করে বের করতে হবে। এবং সেই ভুল পরবর্তীতে আর করা যাবেনা। সাথে এই ব্যর্থতাকে কিভাবে সফলতায় নিয়ে আসা যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে। কোন কোন বিষয় গুলো আপনি রিকভার করলে সামনে আর ব্যর্থ হতে হবেনা। আপনি যদি ব্যর্থ হন এর মানে আপনি কিছু চেষ্টা করেছেন। চেষ্টা না করলে কেউ ব্যর্থ হয়না।
উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষণ হচ্ছে নতুন কিছু শিখতে সবসময় আগ্রহী
উদ্যোক্তাদের মাঝে একটি বিষয় সাধারণ ছিলো সেটা হলো নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা। কিছু শেখার জন্য বয়স কোন বিষয় না। শেখার কোন বয়স নেই।
লার্নিং হচ্ছে এমন একটা বিষয় যেটা আপনার সেলফ কনফিডেন্সকে বুস্ট করবে। আপনাকে সাহায্য করবে লাইফের উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে। কোন কিছু নতুন শিখতে থাকলে আপনার ব্রেইন অ্যাক্টিভ থাকে এবং হেলথি থাকে। বিশ্ব এখন প্রতিনিয়ত চেঞ্জ হচ্ছে। তাই অনেক ধরণের সুযোগ রয়েছে শেখার। সেটা নিজের কর্মজীবন থেকে, প্রতিষ্ঠান থেকে অথবা তার বাহিরে যে কোন কিছু থেকে। প্রত্যেক সময় উৎসাহী থাকতে হবে নতুন কিছু শেখার জন্য। নতুন নতুন স্কিল শিখলে আপনি নতুন সুযোগ পাবেন বিভিন্ন মানুষকে সাহায্য করতে পারবেন তাদের সমস্যা সমাধান করার জন্য।
আপনি রিস্ক নিতে সক্ষম
আপনি যদি রিস্ক নিতে ভয় পান তাহলে আপনি একজন উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। একজন উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষণ হচ্ছে আপনি রিস্ক নিতে ভয় পাচ্ছেন না। আপনার রিস্ক এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবেনা। আপনার চিন্তা করতে হবে রিস্ক কিভাবে কমানো যায়। সফল উদ্যোক্তারা যদি রিস্ক আছে জেনে পিছিয়ে যেত তাহলে তারা আজ সফল হতে পারতেন না। কারণ উদ্যোগ নিয়ে গেলে ধাপে ধাপে রিস্ক থাকে।
আজ রিস্ক আছে বলে আপনি একটি উদ্যোগ নিলেন না। কিন্তু ঠিক এই সুযোগটাই আরেকজন নিয়ে নিবে তাহলে। আরেকজন রিস্ক থাকার পরেও সেই উদ্যোগ নিয়ে নিবে। এবং সে আপনার থেকে এগিয়ে গেলো। তখন আপনি চিন্তা করবেন ঠিক এই আইডিয়াটাই কয়েক বছর আগে আপনার মাথায় আসছিলো কিন্তু আপনি ঠিক সময়ে উদ্যোগ নেন নাই। তাই কোন সুযোগ পেলে তা মিস করা যাবেনা। সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।