বাংলাদেশের প্রথম রিকমার্স প্ল্যাটফর্ম- সোয়্যাপ (swap)

swap
Share This Post

সোয়্যাপ (SWAP), বাংলাদেশের প্রথম রিকমার্স প্ল্যাটফর্ম। ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে যত্রা শুরু হওয়া এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি।

প্রযুক্তির অগ্রসর এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে যাওয়ার কারণে দিন দিন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের পরিধি বেড়েই চলেছে। তাই নতুন ডিভাইস কিনার পাশাপাশি পুরাতন বা সেকেন্ড হ্যান্ড ডিভাইস কেনার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। 

কিন্তু যখন কেনার দরকার হয় সুবিধামতো খুঁজে পাওয়া যায়না আবার পুরোনো মোবাইল বা ল্যাপটপ বিক্রি করে খুব বেশি দামও পাওয়া যায় না। এ কারণে নতুন ল্যাপটপ কিনে অনেক সময় আমরা হয়তো পুরোনোটা ফেলেই রাখি ঘরে। একটা রিসার্চ এ দেখা যায় প্রায় ২০০০০ কোটি সমমূল্যের পুরাতন ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট রয়েছে যা চাইলেই বিক্রি করে অন্য মানুষকে ব্যবহার জন্য দেয়া যেত, কিন্তু সুবিধা অনুযায়ী বিক্রি করার স্মার্ট ওয়ে না থাকার কারণে তা হচ্ছে না। এই সমস্যাগুলোর সল্যুশন নিয়েই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কাজ শুরু করে সোয়্যাপ (SWAP)। আজকে আমরা কথা বলবো বাংলাদেশের প্রথম রি-কমার্স প্লাটফর্ম সোয়্যাপ (SWAP) সম্পর্কে। 

সোয়্যাপ (SWAP) এর শুরুর দিকের গল্প এবং তাদের সার্ভিস

তরুন উদ্যোক্তা পারভেজ হোসেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি আইবিএ তে পড়াশুনা কালীন নিজের জন্যে পুরাতন ল্যাপটপ কিনতে গিয়ে বেশ সমস্যার মুখোমুখি হন ,সেই থেকে ভাবতে শুরু করেন এমন একটি সল্যুশন যদি তৈরি করা যায় যেখানে যেকোনো মানুষ যে কোনো প্রান্ত থেকে একটি প্ল্যাটফর্মে পুরাতন ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট কেনা এবং বিক্রি করার সুবিধা পাবেন। 

swap

নিজের ডিভাইস কেনার সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে হঠাৎ মনে হলো, মানুষের মধ্যে তো পুরোনো জিনিসের চাহিদা রয়েছে। তাই তখন থেকেই পুরোনো ল্যাপটপ বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি কেনাবেচার একটি ব্যবসা গড়ে তোলার চিন্তা মাথায় আসে।’এই চিন্তা থেকেই সোয়্যাপ (SWAP) এর যাত্রা শুরু। 

একদম শুরুতে রাজধানী ঢাকায়  লাইভওয়্যার নামে বেশ কিছু অফলাইন শপ বা এক্সচেঞ্জ দোকানের মাধ্যমে তিনি কাজ শুরু করেন যার সুবিধা ছিল শুধুমাত্র ঢাকা কেন্দ্রিক। বর্তমানে ২৩ টি অফলাইন শপের মাধ্যমে এই সেবা দিচ্ছেন তিনি, পরবর্তীতে প্রান্তিক পর্যায়ে এই সেবা পৌঁছে দিতেই এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এর কাজ শুরু করেন এই উদ্যোক্তা । তার কাছে মনে হয় শুধু ফোন না এমন অনেক ইউজ করা প্রোডাক্ট আছে যা আমরা বাসায় ফেলে রেখে নষ্ট করে ফেলি কিন্তু আরেকজন মানুষ চাইলে সেটা ইউজ করতে পারে। 

বাংলাদেশে প্রথমবার ই-কমার্স এবং রি-কমার্স এর সমন্বয় নিয়ে এসেছে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি। ঘরে ফেলে রাখা পুরোনো ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র ন্যায্যমূল্যে কিনে নেয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘সোয়্যাপ (SWAP)’। সেসব প্রোডাক্ট ব্যবহারের উপযোগী করে নির্দিষ্ট একটি দাম ধরে আবার অনলাইনে বিক্রিও করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এভাবে যাঁর প্রোডাক্টটি দরকার নেই, তিনি টাকা পেয়ে যান, যাঁর প্রোডাক্ট দরকার, তিনি কম দামে কিনতে পারেন। 

ফলে অব্যবহৃত যন্ত্রটি পরিবেশদূষণের কারণ হয় না। এভাবে পুরোনো পণ্য কেনাবেচার মাধ্যমে  সফলতা পেয়েছে সোয়্যাপ (SWAP)। মোবাইল ও ল্যাপটপের পাশাপাশি মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে গাড়িও সংযুক্ত করেছে এই ডিজিটাল বিজনেসটি। 

মাত্র ২০ মাস বয়সী এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কাজ করছেন ৬০ জন ইমপ্লোয়ি। প্রথমআলোর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী মাত্র ২০ মাসে প্রায় ৫০ গুণ বড় হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কাজ করছেনন স্যামসাং, হুয়াওয়ে, অ্যাপল, বাজাজের মতো লিডিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

প্লাটফর্মটির ফাউন্ডার পারভেজ হোসাইন এর মতে , গত বছরের শেষের দিকে একটা গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে মানুষের বাসাবাড়িতে যে পরিমাণ পুরোনো অব্যবহৃত মোবাইল, ল্যাপটপ বা টেলিভিশন পড়ে আছে, তার অবচয়মূল্য বিবেচনা করলে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য ঘরে পড়ে আছে। অথচ এই পণ্যগুলো বিক্রি করলে টাকাটা অর্থনীতিতে যুক্ত হতো।’

সোয়্যাপ (SWAP) এর যাত্রা শুরু হয়েছিল স্যামসাং মোবাইলের একটি অদলবদলের ক্যাম্পেইন দিয়ে।’ওই ক্যাম্পেইনের কারণে খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায় এই প্লাটফর্মটি। মাঝে প্যান্ডেমিক সময়ে যখন ইলেকট্রনিক ডিভাইস এর প্রয়োজনীতা অনেক বেশি বাড়ে তখন খুব দ্রুতই প্লাটফর্মটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে শুরু করে। 

এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষকে এই বিজনেস এর সাথে কানেক্ট করেছে সোয়্যাপ (SWAP)। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্টার্ড গ্রাহক এর সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। সাড়ে পাঁচ লাখ এরও বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে তাদের এপ্সটি। একদম প্রথম মাসে মাত্র ১৭ লাখ টাকা আয় হলেও গত নভেম্বর মাসে সোয়্যাপ (SWAP)ের আয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ কোটি টাকায় এবং প্রতি মাসে প্ল্যাটফর্মটির সেল বাড়ছে প্রায় ১০ শতাংশ। 

২০২৫ সালের মধ্যে ই- ওয়েস্ট 4.5 মিলিয়ন টন পৌঁছাবে। ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস ফেলে রেখে পরিবেশ দূষনের কারণ না করে সোয়্যাপ (SWAP) ১১০০ টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করেছে পাশাপাশি কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে এবং বাংলাদেশে 65 টনেরও বেশি ই-বর্জ্য সংরক্ষণ করেছে। 

সোয়্যাপ (SWAP) এর ফান্ডিং

চলতি বছরের শুরুতে সিঙ্গাপুরে এক্সিলারেটিং এশিয়া প্রতিযোগিতায় নতুন উদ্যোগ হিসেবে শীর্ষ দশে জায়গা করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে প্রথমবারের মতো $ ১.২৫ মিলিয়ন ইনভেস্টমেন্ট কালেক্ট করেছে সোয়্যাপ (SWAP)। 2021 সালের শুরুতে সোয়্যাপ (SWAP) এর মার্কেট ভালুয়েশন ছিল ৫২ কোটি টাকা। যা বছর শেষে ছাড়িয়ে গেছে ১০০ কোটির টাকারো বেশি।

শেষ কথা

পুরো লেখাটি কেমন লাগলো, তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে সত্যিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

যদি মনে হয় লেখাটি নতুন উদ্যোক্তাদের সাহায্য করবে পরবর্তী দিক নির্দেশনা পেতে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।

এই ধরনের আরও অনেক ইনফো কনটেন্ট এর জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? - ৭টি টিপস
Marketing

মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? – ৭টি টিপস

মা’কে ভালবাসার জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু প্রতিদিনই কি মাকে ভালবাসি বলা হয়? কিংবা অতটা প্যাম্পার করা হয় যতটা সে ডিজার্ব করে?  আসলে,

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন
Marketing

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং গাইডলাইন

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর এক অন্যতম পাওয়ারফুল টুলস। ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে মার্কেটিং যত সহজ হয়েছে, কম্পিটিশন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিউজ