বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং গাইডলাইন

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন
Share This Post

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর এক অন্যতম পাওয়ারফুল টুলস। ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে মার্কেটিং যত সহজ হয়েছে, কম্পিটিশন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিউজ কম্পিটিটরদের মধ্যে থেকে আলাদা করে নিজের অডিয়েন্স কে সনাক্ত করা এবং তাদের টার্গেট করা কম চ্যালেঞ্জিং নয়।  

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন

তবে বিগিনার মার্কেটারদের জন্য কিংবা উদ্দোক্তাদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং হিউজ অডিয়েন্স আকর্ষণ করার সবচেয়ে সহজ প্লাটফর্ম। কারণ, ফেসবুক এ আছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক একটিভ ইউজার। যা, প্রায় ৪ বিলিয়নের কাছাকাছি। এই ম্যাসিভ অডিয়েন্স এর আবার একটি বড় অংশই অনলাইন ক্রেতা। তাই আপনি যদি একজন বিগিনার হয়ে থাকেন এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্র্যাকটিস করতে চান, তাহলে ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং হবে আপনার জন্য বেস্ট ডিসিশন।  

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং কি?

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, হচ্ছে একটি মার্কেটিং  কৌশল যেখানে একটা টার্গেটেড দর্শকদের কাছে আপনার কনটেন্ট পৌঁছানোর জন্য Facebook প্ল্যাটফর্ম বিজ্ঞাপন তৈরি করে এবং উপযুক্ত স্থানে প্লেস করে। অর্থাৎ আপনার সিলেক্টেড অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছে দেয়। বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের প্রোডাক্ট গুলো প্রোমোশনের জন্য নির্দিষ্ট দর্শক, তাদের আগ্রহ  এবং বিহেভিয়ার কে ডিফাইন করে থাকেন এবং সেই অনুযায়ী তাদের সামনে এডভার্টাইজিং করবে। এই বিজ্ঞাপন গুলো বিভিন্ন ফর্ম্যাটে ব্রডকাস্ট হতে পারে, যেমন ছবি বা ভিডিও পোস্ট, ক্যারোজেল বিজ্ঞাপন বা একটা গল্প৷

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং কি?

ব্র্যান্ড রেপুটেশন, ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক বা লিড জেনারেশনের মতো যেকোনো একটা ক্যাম্পেইন অবজেক্টিভ সিলেকশনের মাধ্যমে  ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং এর প্রোসেসটা শুরু হয়। বিজ্ঞাপনদাতারা তারপরে তাদের লক্ষ্য দর্শক, বাজেট এবং টাইমিং নির্দিষ্ট করে বিজ্ঞাপনের সেট তৈরি করে। 

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, Potential গ্রাহকদের সাথে কানেকশন তৈরি করতে, ট্রাফিক ড্রাইভ করতে এবং টার্গেট মার্কেটিং গোল অ্যাচিভ করার জন্য মার্কেটারও উদ্দোক্তাদের একটা মাল্টিভার্স এবং শক্তিশালী টুল অফার করে।

বিগিনারদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং কমপ্লিট গাইডলাইন:

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, অন্যান্য মার্কেটিং স্ট্রাটেজি গুলোর থেকে তুলনামূলক সহজ এবং ফলপ্রসূ। অর্থাৎ এখানে অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানো ডিফিকাল্ট কিছু নয়। তবে একটি সিস্টেমেটিক ওয়ে তে আগালে বিগিনার হিসেবে খুব দ্রুত সফলভাবে ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং করা সম্ভব। 

১. ফেসবুক বিজনেস পেইজ তৈরী করুন :

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, শুরু করার আগে প্রথম ধাপ হচ্ছে একটা ডেডিকেটেড ফেসবুক বিজনেস পেইজ তৈরী করা। এটা হচ্ছে আপনার ব্রান্ড এর ফেসবুক আইডেন্টিটি। এখানেই আপনি আপনার ফেইসবুক অ্যাডস গুলো ম্যানেজ করবেন এবং অনলাইন অডিয়েন্স এর সাথে কানেকশন বিল্ড করবেন। তবে একটা জিনিস নিশ্চিত করতে হবে আপনার ফেসবুক বিজনেস পেইজ টি আপনার বিজনেস কে সত্যিকার অর্থে রিপ্রেজেন্ট করে। 

ফেসবুক বিজনেস পেইজ তৈরী করুন

অর্থাৎ বিজনেস পেইজটি অবশ্যই ব্র্যান্ডের অবজেক্টিভ এর সাথে প্রাসঙ্গিক হতে হবে। নতুবা ফেসবুক অ্যালগরিদম যথাযথ ভাবে অ্যাডভার্টাইজিং এর জন্য অডিয়েন্স ডিটেক্ট করতে পারবে না এবং অ্যাড প্লেস করতেও ব্যার্থ হবে। 

২. অ্যাডভার্টাইজিং এর অবজেক্টিভ বা উদ্দেশ্য ডিফাইন করুন :

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং কেন করছেন এর একটা ক্লিয়ার অবজেক্টিভ ডিফাইন করা জরুরি। আপনি কি লিড জেনারেশান করতে চাচ্ছেন, অথবা সেলস ড্রাইভ করতে চাচ্ছেন? নাকি শুধু ব্র্যান্ড রেপুটেশন বৃদ্ধি করতে চাচ্ছেন? প্রতিটি সেক্টরের জন্য অ্যাডভার্টাইজিং এর প্লেস, টাইমিং, রিচ সবকিছু ফেসবুক ভিন্নভাবে সেট করে থাকে। 

অ্যাডভার্টাইজিং এর অবজেক্টিভ বা উদ্দেশ্য ডিফাইন করুন 

তাই আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী মার্কেটিং সফল করতে চাইলে আগে ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, করার অবজেক্টিভটা আইডেন্টিফাই করুন। 

৩. টার্গেট অডিয়েন্স কে বুঝুন :

ফেইসবুকে অনেক সোফিস্টিকেটেড টার্গেটিং অপশন থাকে। এগুলোকে ইউটিলাইজ করুন এবং আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কে বোঝার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে অডিয়েন্স ডেমোগ্রাফি, ইন্টারেস্ট, বিহেভিয়ার, রেসপন্স ইত্যাদি বিষয়ে ফোকাস করুন। আপনি যত ডিপলি আপনার অডিয়েন্স ডিমান্ড বুঝতে পারবেন, আপনার বিজ্ঞাপন তত ইফেক্টিভলি আউটকাম দেবে। 

টার্গেট অডিয়েন্স কে বুঝুন

ফেইসবুক ও প্রাসঙ্গিক অডিয়েন্স দ্রুত খুঁজে পেতে অডিয়েন্স এনগেজমেন্টকে অ্যানালাইসিস করে এবং সেই অনুযায়ী অ্যাডস গুলো প্লেস করে। তাই সর্বাধিক রিচ পেতে আগে আপনার অডিয়েন্সকে বুঝুন। 

৪. কম্পেইলিং কনটেন্ট তৈরি করুন :

আপনার ফেইসবুক অ্যাডস এর কনটেন্ট যেন একঘেয়ে, অপ্রাসঙ্গিক এবং লো-কোয়ালিটি না হয়। কারন, আপনি ওপরের সব গুলো ধাপ সঠিক ভাবে কমপ্লিট করার পর আপনার এডস গুলো টার্গেটেড অডিয়েন্স এর কাছে নিয়ে যাবেন। কিন্তু সেই এডস এর কনটেন্ট ই যদি প্রাসঙ্গিক ও আকর্ষণীয় না হয় তাহলে আপনি কোনভাবেই অডিয়েন্স কে আকৃষ্ট করতে কিংবা ধরে রাখতে পারবেন না।

কম্পেইলিং কনটেন্ট তৈরি করুন 

তাই আপনার কনটেন্ট হতে হবে ইন্টারেস্টিং, রেলেভ্যান্ট, অডিয়েন্স এর সাথে ইমোশনালি ও নিডস এর দিক থেকে কানেক্টেড। তবেই আপনার অডিয়েন্সকে কাস্টমারে কনভার্ট করার পসিবিলিটি বৃদ্ধি পাবে।  

৫. অ্যাড প্লেসমেন্টে মনোযোগী হন :

আপনার অ্যাডস গুলো কোথায় appear হবে? অর্থাৎ কোন প্লাটফর্ম এ এগুলো শো করবে? ফেসবুকের অ্যাডস গুলো কিন্তু শুধু ফেসবুকে নয়, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা সম্ভব। 

অ্যাড প্লেসমেন্টে মনোযোগী হন

যেহেতু প্রতিটি প্লাটফর্মের অডিয়েন্স বেস আলাদা সেহেতু আপনাকে সেই অনুযায়ী এডস এর প্লেসমেন্ট সিলেক্ট করতে হবে। যেহেতু অ্যাডস গুলোর পেছনে আপনাকে অর্থ খরচ করতে হবে, সেহেতু আপনার অডিয়েন্স নেই বা কম আছে এমন প্লাটফর্মের পেছনে সময় নষ্ট না করা উত্তম। যদি অল্প সময়ে রিচ বৃদ্ধি করতে চান তাহলে ফেসবুক কিংবা ইউটিউব এর মত প্লাটফর্ম এ সীমাবদ্ধ থাকতে পারেন। তবে, আপনার যদি ইয়াং ও টিনএজ অডিয়েন্স বেশি হয়, আপনি এগুলো আপনার Instagram কিংবা টিকটকেও নিয়ে যেতে পারে। মোটকথা, টার্গেটেড অডিয়েন্স এর উপস্থিতি অনুযায়ী অ্যাডস প্লেসমেন্ট করুন। 

৬. অ্যাড বাজেট ও শিডিউল নির্ধারণ করুন :

অ্যাডস গুলো যেহেতু অর্থের বিনিময়ে পাবলিশ করা হচ্ছে, সেহেতু একটা স্মার্ট বাজেটিং প্যাকেজ সিলেক্ট করুন। এবং এর শিডিউল নির্ধারণ করুন। ডেইলি, ইয়ারলি, মান্থলি কিংবা লাইফটাইম শিডিউল এর অপশন থাকলেও আপনি আপনার প্রোমোশনাল ক্যাম্পেইনের ওপর নির্ভর করে প্যাকেজ সিলেক্ট করুন। 

অ্যাড বাজেট ও শিডিউল নির্ধারণ করুন 

তবে যেই সময়টাতে আপনার অডিয়েন্সরা সবচেয়ে বেশি একটিভ থাকে, আপনার অ্যাডস এর টাইম গুলো ওইভাবে সিলেক্ট করুন। অডিয়েন্স এর বয়স, জিওগ্রাফিকাল লোকোশন, সেক্স, পছন্দ অপছন্দ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করেও একটিভিটি তে প্রভাব পরে। তাই অডিয়েন্স এর ম্যাক্সিমাম একটিভিটির টাইমে ক্যাম্পেইন কন্টিনিউ করুন। 

শেষ কথা, 

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, আপনার মার্কেটিং ক্যাম্পেইনকে করতে পারে আরো বেশি অ্যাডভান্স, পার্সোনালাইড ও ইফেক্টিভ। ডিজিটাল মার্কেটিং এর চরম কম্পিটিশন এর যুগে একটা ক্লিয়ার কল টু অ্যাকশন, রিলেভ্যান্ট ও কোয়ালিটি কনটেন্ট সম্পন্ন বিজ্ঞাপন আপনার ব্র্যান্ডের রেপুটেশন কে বৃদ্ধি করতে পারে কয়েকগুণ। তাই লিড জেনারেশান, সেলস ড্রাইভ কিংবা ব্র্যান্ড রিচ বৃদ্ধি, যে উদ্দেশ্যই থাকুক না কেন, প্লাটফর্ম পলিসি, অডিয়েন্স শিডিউল মেনে কোয়ালিটি কনটেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করুন। নিঃসন্দেহে একজন বিগিনার হয়েও আপনার ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং জার্নিতে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হবে না।  

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্টের ৭টি উপায়
Marketing

বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ৭টি উপায়

একজন উদ্দোক্তার ক্ষেত্রেও তাই। সময়ের সঠিক ব্যবহার ছাড়া, অর্থাৎ একটা প্রোপার টাইম ম্যানেজমেন্ট ছাড়া সফল হওয়া অসম্ভব। একটা সুনির্দিষ্ট ওয়ার্কিং শিডিউল ছাড়া কখনই বিজনেস গোল

মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? - ৭টি টিপস
Marketing

মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? – ৭টি টিপস

মা’কে ভালবাসার জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু প্রতিদিনই কি মাকে ভালবাসি বলা হয়? কিংবা অতটা প্যাম্পার করা হয় যতটা সে ডিজার্ব করে?  আসলে,