ইফেক্টিভ এবং প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং করতে গেলে খুব বেশি টাকা খরচ করার প্রয়োজন হয়না যদি আপনি এই ব্যাপারে স্কিলড্ পার্সন হন এবং কিছু টেকনিক অবলম্বন করতে পারেন। যদি আপনার অডিয়েন্স সম্পর্কে ভালো আইডিয়া থাকে, প্রোডাক্টসের জন্য রাইট অডিয়েন্স টার্গেট করার এবিলিটি থাকে তাহলে খুব সহজেই কস্ট্ ইফেক্টিভ এবং প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং করতে পারবেন এবং নতুন নতুন লিড জেনারেট করতে পারবেন, সেল বাড়াতে পারবেন।
প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং পুরোটাই টেকনিকের ব্যাপার। অডিয়েন্সের নিডস বুঝে ওই অনুযায়ী প্রোডাক্ট, সার্ভিস অফার করা যেটা অডিয়েন্সের লাইফ আরো বেটার করে তুলবে। অলমোস্ট, ৬১% অডিয়েন্স ইমেইলের মাধ্যমে কোম্পানির সাথে কানেক্ট থাকতে পছন্দ করেন। এটা আপনার বিজনেসের জন্য অবশ্যই একটা গ্রেট নিউজ, কেননা ইমেইল মার্কেটিং এ আপনি একদম প্রফেশনাল ওয়েতে অডিয়েন্সের সাথে কানেক্ট থাকতে পারছেন, যেখানে আপনাকে খুব বেশি টাকা খরচ করার ও প্রয়োজন নেই। চলুন দেখে নিই কিছু কস্ট্ ইফেক্টিভ এবং প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং টেকনিক।
প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং টেকনিক
ইন্ট্রুডাকশন ইমেইল (Introduction Email)
যখন আপনি কোনো লিংক বা ওয়েবসাইট সাবস্ক্রাইব করেন তখন সাথে সাথেই একটা ইন্ট্রুডাকশন মেইল রিসিভ করেন। টপ ব্র্যান্ড গুলি এই ইমেইল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ফলো করেন তাদের নতুন সাবস্ক্রাইবার দের কোম্পানি সম্পর্কে জানাতে।
আপনাকেও প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং এর ফার্স্ট স্টেপ হিসেবে নতুন সাবস্ক্রাইবার দের ইন্সট্যান্ট ইন্ট্রুডাকশন মেইল সেন্ড করতে হবে। এবং আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে ভালো ধারণা দিতে হবে। যেমন, আপনার ব্র্যান্ড কি প্রোডাক্ট, সার্ভিস প্রোভাইড করে, কি টাইপ কোম্পানি, আপনাদের সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ইত্যাদি।
ক্রিয়েটিভ সাবজেক্ট লাইন, লোগো
অডিয়েন্স প্রতিদিন কোনো না কোনো কোম্পানি থেকে এডভার্টাইসিং ইমেইল রিসিভ করে, এবং অনেক সময় বিরক্ত হয়েই এভয়েড করে। এজন্য ইমেইল এর ফরম্যাট,ল্যান্ডিং পেইজ এবং সাবজেক্ট যথেষ্ট ক্রিয়েটিভ হতে হবে। অডিয়েন্স যেন সাবজেক্ট দেখেই ইন্টারেস্টেড হয়, এবং পুরো ইমেইল পড়ে। আর ইমেইলের শেষে আপনার সিগনেচার, কোম্পানি লোগো, ওয়েবসাইট লিংক, কনটাক্ট ইনফরমেশন এড করতে ভুলবেন না।
ক্লিয়ার ম্যাসেজ
কি কারণে ইমেইল করেছেন, অডিয়েন্স কে কি বলতে চাচ্ছেন সেটা ক্লিয়ার করা জরুরি। ইমেইল বেশি লং করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।কেননা, অনেক সময় বেশি লং ইমেইল অডিয়েন্স পড়তে চায়না, বিরক্ত হয় এবং বুঝতেও পারেনা ইমেইলের উদ্দেশ্য। এজন্য ইমেইল রাইটিং কয়েক লাইনেই শেষ করুন এবং আপনার উদ্দেশ্য ক্লিয়ার করুন, অর্থ্যাৎ রাইট মেসেজ দিন অল্প কথায়।
ইমেইল ফ্রিকোয়েন্সি
প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তে ইমেইল ফ্রিকোয়েন্সি গুরুত্বপূর্ণ একটা স্টেপ। আপনাকে প্ল্যান করতে হবে মাসে, এবং সপ্তাহে টোটাল ক’টা মেইল সেন্ড করা হবে।
সপ্তাহে একটার বেশি মেইল সেন্ড করলে অডিয়েন্স বিরক্ত হয়ে ব্লক করে দিতে পারে, আর অতিরিক্ত মেইল সেন্ড করলে সেটা বিজনেসের উপর ব্যাড ইম্প্যাক্ট ফেলে। আবার মাসে একটা ইমেইল সেন্ড করলে অডিয়েন্সের সাথে কানেকশন তৈরি করার পসিবিলিটিও অনেক কম। এজন্য প্ল্যান করুন সপ্তাহে ক’টা মেইল যাবে এবং মাসে ক’টা। সবচেয়ে স্মার্ট স্ট্র্যাটেজি হলো প্রত্যেক সপ্তাহে একটা এবং মাসে টোটাল চারটা মেইল সেন্ড করা।
পার্সোনালাইজ মার্কেটিং
প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য প্রোপার ইমেইল লিস্ট ক্রিয়েট করা জরুরি। এবং ইমেইল প্রাপকের নাম ইমেইল মার্কেটিং লিস্টে এড করতে হবে যেনো যেকোনো ইমেইল সে পার্সোনালি রিসিভ করে। এটা অডিয়েন্সের মনে পজিটিভ ইফেক্ট ফেলে, তাদের ইউনিক এবং স্পেশাল ফিল করায়। তারা বুঝতে পারে আপনি তাদের ব্যাপারে কেয়ার করেন এবং স্মুথ একটা রিলেশন ক্রিয়েট হয়। ক্ষেত্রবিশেষে, আপনি সেন্ডার হিসেবে কোম্পানি ইমেইলের থেকে নিজের পার্সোনাল ইমেইল ও ব্যবহার করতে পারেন।
এভয়েড স্প্যাম ফিল্টারস
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস (ISPs) এর ডিফারেন্ট ডিফারেন্ট স্প্যাম ফিল্টার রয়েছে। বিভ্রান্তিকর সাবজেক্ট লাইন এবং অযথা ওয়ার্ড, ইনকমপ্লিট ইমেইল বডি এবং ইমেইল লিস্ট ক্লিন না করা এসব জিনিস আপনাকে এভয়েড করতে হবে। ইমেইলে যদি প্রোপার সাবজেক্ট না থাকে বা সাবজেক্ট মিসিং থাকে, ইমেইল বডি যদি প্রোপার না হয় তাহলে সেটা রিসিভারের স্পাম লিস্টে চলে যাবে, এবং ম্যালওয়্যার এ্যাটাক বা ফিশিংয়ের ভয়ে অডিয়েন্স সেটা খুলেও দেখবেনা।
A/B টেস্টিং
আরেকটি প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং টিপস হলো স্প্লিট টেস্টিং। স্প্লিট টেস্টের মাধ্যমে আপনি ভিন্ন ভিন্ন ল্যান্ডিং পেইজ, সাবজেক্ট লাইন এবং ইমেইলের মধ্যে কম্পেয়ার করতে পারবেন বেস্ট পারফরম্যান্স রেট ইমেইল ডিসকাভার করার জন্য।
ইমেইল অটোমেশন টুলস
ওভার-অল একটা বিজনেস রান করা অনেক সময়ের ব্যাপার। এতো এতো ডিফারেন্ট প্ল্যান, স্ট্র্যাটেজি, মার্কেটিং, ওয়েবিনার হোস্ট এসব কিছু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। অনেক সময় দেখা যায় টাইম টু টাইম ইমেইল সেন্ড করা পসিবল হচ্ছে না, যার কারণে অডিয়েন্সের সাথে কমিউনিকেশন গ্যাপ পড়ে যাচ্ছে যেটা বিজনেসের জন্য হার্মফুল।
এক্ষেত্রে ইমেইল অটোমেশন টুলস বেশ কার্যকরী। বেশ কিছু ইমেইল মার্কেটিং টুলস রয়েছে যেগুলির মাধ্যমে আপনি হিউজ পরিমাণ ইমেইল একেবারে শিডিউল করতে পারবেন যেগুলি টাইম টু টাইম অটোমেটিক ভাবে সেন্ড হবে। শুধু তাই নয় এই টুলস গুলির মাধ্যমে আপনি ইউনিক ইমেইল টেমপ্লেট ক্রিয়েট করতে পারবেন, রেজিষ্ট্রেশন ফর্ম ক্রিয়েট করতে পারবেন এবং ওয়েবিনারে জয়েন লিংক, ওয়েবসাইট লিংক ও এড করতে পারবেন।এতে করে সময় বাঁচবে খরচ বাঁচবে এবং অডিয়েন্সের সাথে কমিউনিকেশন গ্যাপ পড়ে যাওয়ার চান্স কমে যায়।
ইমেইল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি
যেকোনো বিজনেসের মার্কেটিং শুরু করার আগে স্ট্র্যাটেজি ক্রিয়েট করা জরুরি। প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং এর সর্বশেষ স্টেপ হিসেবে উপরে উল্লেখিত টিপস গুলির কম্বিনেশন করে স্ট্র্যাটেজি ক্রিয়েট করে ফেলুন। ইমেইল মার্কেটিং বা ক্যাম্পেইন এর জন্য আপনাকে মাল্টিপল স্ট্র্যাটেজি প্ল্যান করতে হবে। স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী ইমেইল মার্কেটিং করতে পারলে অবশ্যই সাক্সেস্ফুল হবেন। মনে রাখবেন কখনোই অতিরিক্ত ইমেইল সেন্ড করে অডিয়েন্স কে বিরক্ত করবেন না। অতিরিক্ত মেইল সেন্ড করলে অনেক সময় উল্টো রিয়্যাকশন হতে পারে। মাল্টিপল স্ট্র্যাটেজি ক্রিয়েট করে স্টেপ বাই স্টেপ ইমেইল মার্কেটিং করুন। প্ল্যান A কাজ না করলে প্ল্যান B ফলো করুন।
উপসংহার,
বর্তমানে কোনো বিজনেস ইমেইল ছাড়া কল্পনা-ই করা যায়না। ইমেইল মার্কেটিং যেকোনো বিজনেস কে তাদের সেল বাড়াতে হেল্প করে, কাস্টমার বেজ ক্রিয়েট করতে হেল্প করে৷ আর সবচেয়ে বড় এডভান্টেজ হলো এখানে খরচ একেবারেই কম এবং একদম প্রফেশনালি অডিয়েন্সের সাথে কানেক্ট থাকা যাচ্ছে। কিন্তু প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং এ প্রোপার নলেজ না থাকলে এবং এই ব্যাপারে আপনার স্কিল না থাকলে কখনোই ইফেক্টিভ ওয়েতে মার্কেটিং করতে পারবেন না। উপরের লিখাটি পড়ে যদি প্রোপার ওয়েতে স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে পারেন তাহলে হোপফুলি ইফেক্টিভলি প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটিং করতে পারবেন যা আপনার অনেক মার্কেটিং কস্ট্ কমাতে হেল্প করবে।