ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং – টার্গেট অডিয়েন্স রিসার্চ করে সেলস এন্ড মার্কেটিং করার মোস্ট সাকসেসফুল স্ট্র্যাটেজি। একুশ শতকের মার্কেটিং সেক্টর অধিকাংশই এখন ডাটা নির্ভর। বিশেষ করে অনলাইন মার্কেটিং মানেই কাস্টমারের ডাটা পার্সোনালাইজেশন। তাদের পছন্দ অপছন্দ এনালাইসিস করে চলছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষ সব কিছু শেয়ার করছে অনলাইনে। পছন্দের কনটেন্ট এ লাইক কমেন্ট করছে, কিংবা মেনশন চলছে। আর এডভান্স এই মাইক্রো ইন্টেলিজেন্স ডিটেক্ট করে ফেলছে কাস্টমারের বিহেভিয়ার। ট্র্যাক করে ফেলছে কাস্টমার কি চায়! ফলে ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কল্যানে বিজনেস প্রোমোশন হয়ে গেছে আরো সহজ। একজন উদ্দোক্তা, বিজনেসম্যান কিংবা বিগিনার মার্কেটার এর জন্য ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ আছে অসংখ্য সম্ভবনা। এর ভবিষ্যৎ আরো এডভান্স।
ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: অপর্চুনিটি ও সম্ভবনা
আপনি যে পজিশন থেকেই বা যেই পারপাজ থেকে ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং এর সাহায্য নিচ্ছেন, আপনার জন্য এখানে হিউজ অপর্চুনিটি ওপেন আছে। সাথে সাকসেসফুলি মার্কেটিং পরিচালনা করার অসংখ্য সম্ভাবনা –
১. টার্গেটেড এনগেজমেন্ট এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ:
ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং এর মোস্ট ইফেক্টিভ অপর্চুনিটি হচ্ছে ইউজার ডাটা এনালাইসিস ও টেইলরড কনটেন্ট তৈরি করা। অর্থাৎ, এখানে আপনাকে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কে এনগেজড করার সুযোগ পাওয়া যায়। আর তাদের পছন্দ অপছন্দ ডিটেক্ট করে সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
সহজ ভাষায়, ধরুন আপনার একটি হ্যান্ড পেইন্ট পোশাকের বিজনেস আছে। আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স হচ্ছে হ্যান্ড পেইন্টেড পোশাক পছন্দকারীরা। এখন তাদের ফেসবুক লাইফ, কমেন্ট, রিভিউ ডিটেক্ট করে জানা গেল অধিকাংশই ফ্লোরাল ডিজাইন বেশি পছন্দ করছে। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার বিজনেস ওই ভাবে আগানো শুরু করবেন। অর্থাৎ, টার্গেটেড অডিয়েন্স এর পছন্দ অনুযায়ী বিজনেস এর সিদ্ধান্ত নিবেন।
এটাই ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর অন্যতম বড় অপর্চুনিটি। তাছাড়া, ডেমোগ্রাফিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর মাধ্যমে প্রোমোশনের ইফেক্ট সর্বাধিক করার সম্ভবনা আছে এখানে।
২. পার্সোনালাইজেশন অপর্চুনিটি ও ইফেক্ট :
ইতোমধ্যে জেনেছি, ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং মানেই পার্সোনালাইজেশন করার হিউজ অপর্চুনিটি। যার ফলে, কাস্টমারের নিডস ট্র্যাক করা ও সেই পন্য তাদের সামনে তুলে ধরা, রেগুলার মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি এর থেকে অনেক বেশি ইফেক্টিভ।
হাবস্পট এর একটি স্টাডি তে দেখা যায় পার্সোনালাইজড ডাটা ইউজ করার কারণে পণ্যের ক্লিক-থ্রু রেট ৫৮% বৃদ্ধি পায়।
৩. প্রিসাইজ এডভার্টাইজ টার্গেটিং:
টার্গেটেড এডভার্টাইজিং – অর্থাৎ আপনার প্রয়োজনীয় ওই অডিয়েন্স দের জন্য শুধু এডভার্টাইজিং করা। তাদের সামনেই বিজ্ঞাপন গুলো তুলে ধরা। ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং এ আপনি এই ইন্টারেস্টিং অপর্চুনিটি টা পাবেন। ফলে শুধু মাত্র সুনির্দিষ্ট অডিয়েন্স এর পেছনে আপনাকে বিনিয়োগ করতে হবে। এবং বিনিময়ে হাই ROI এর সম্ভবনা থাকবে।
স্ট্যাটিস্টা রিপোর্ট এ দেখা যায়, ২০২৩ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটেড বিজ্ঞাপনে ৯৪.৬ বিলিয়ন স্পেন্ড করা হয়েছে। বিনিময়ে, ৫৮ শতাংশ বেশি কনভার্সন রেট বৃদ্ধি পেয়েছে।
৪. মার্কেটিং এর কার্যকারিতা পরিমাপ:
ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং এ আপনি কেপিআই ট্র্যাকিংয়ের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালিটিক্স এর বিভিন্ন টুল এর অপশন পাবেন। যেগুলো অফলাইন মার্কেটিং কিংবা রেন্ডম মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তে পাবেন না।
স্প্রাউট সোশ্যাল সার্ভে: ৭৩% মার্কেটার ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালাইসিস টুলস ব্যবহার করে তাদের স্ট্র্যাটেজি ও স্ট্যাটাস মনিটরিং করেন। এবং অন্যান্য মেথড এর থেকে ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিংকে বেশি কার্যকরী বলে মনে করেন৷ এছাড়াও ডেলয়েট রিপোর্ট এ দেখা যায় ডেটা অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে অর্গানাইজেশন গুলোর লাভ তাদের কম্পিটিটর দের কেও ছাড়িয়ে যায়৷
৫. ইনসাইটের মাধ্যমে রিয়েল-টাইম এডাপশন:
ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং এর কল্যানে ভোক্তাদের সোশ্যাল মিডিয়া কথোপকথন নিরীক্ষণ করে তাদের পছন্দ অপছন্দ ট্র্যাক করে রিয়েল টাইম ডাটা কালেকশন করা সম্ভব হচ্ছে। এবং সেই অনুযায়ী বিভিন্ন স্টেজে নতুন নতুন মোডিফিকেশন ও এডাপশন করা সম্ভব হচ্ছে।
ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ:
অলরেডি Data driven মার্কেটিং কিন্তু ব্র্যান্ড রেপুটেশন বৃদ্ধি ও প্রোডাক্ট প্রমোশন এ অবিশ্বাস্য সাফল্য নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন রিসার্চ, জার্নাল ও বিশেষজ্ঞ প্রেডিকশন মতে ডাটা ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর আছে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ।
১. পার্সোনালাইজেশন সার্চ:
যেহেতু, ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগতকৃত বিষয়বস্তুর উপর ফোকাস করবে। স্টাডিজ এ দেখা যায় যে পার্সোনালাইজড সামগ্রীর ফলে বিক্রয় প্রায় বিশ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে (সূত্র: এভারগেজ)।
২. AI এর উত্থান এবং ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিশ্লেষণ:
এআই-চালিত টুলস গুলো ভবিষ্যতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে৷ ২০২৪ সালের মধ্যে, এটি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে ৪০ শতাংশ ডিজিটাল কনভার্সন ইনিশিয়েটিভ AI দ্বারা সমর্থিত হবে। (সূত্র: IDC)
৩. ভিডিও ডমিন্যান্স:
ধারনা করা হচ্ছে, কয়েক বছর পর থেকেই ডাটা-ড্রাইভেন ভিডিও কনটেন্ট এর আধিপত্য থাকবে। Cisco অনুমান করে যে ২০২৫ সালের মধ্যে, অনলাইন ভিডিও গুলি সমস্ত ভোক্তা ইন্টারনেট ট্রাফিকের ৮২ ভাগ এরও বেশি কভার করবে।
4. সোশ্যাল কমার্স :
Data-driven ইনসাইটের উত্থানের সাথে, সোশ্যাল কমার্সে রিভোলিউশন আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্ট্যাটিস্টা ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে ২০২৫ সালের মধ্যে, সোশ্যাল কমার্সে জড়িত সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ১.৭ বিলিয়নে পৌঁছাবে।
5. মাইক্রো-ইনফ্লুয়েন্সার ইমপ্যাক্ট:
ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং এ মাইক্রো-ইনফ্লুয়েন্সাররা বেশি প্রাধান্য পাবে। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং হাবের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ফলোয়ার সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ইনস্টাগ্রামে এনগেজমেন্ট হার কমে যায়। মাইক্রো-প্রভাবকদের এনগেজমেন্ট হার ১০০,০০০ এর বেশি ফলোয়ারের ইনফ্লুয়েন্সার তুলনায় ৬.৭% বেশি।
উপসংহারে, ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইতিমধ্যে মার্কেটিং ফিল্ড কে একটা এডভান্স ও স্ট্যাবল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। মার্কেটার রা অডিয়েন্সের সাথে আরো বেশি কানেক্টেড হতে পারছে। শুধু মাত্র মাসিক অনলাইন শপিং ই বিশ্বব্যাপী ৪.৫ ট্রিলিয়ন কে ছাড়িয়েছে৷ আমরা দেখতে পাচ্ছি কাস্টমার তথ্য ও তাদের পার্সোনালাইজেশন মার্কেটিং কে অবিশ্বাস হারে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷
যেহেতু AI অলরেডি ডিজিটাল মার্কেটিং এ ইনক্লুড হয়ে গিয়েছে। আশা করা হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ও মাইক্রো ইন্টেলিজেন্স এর কল্যাণে ডাটা-ড্রাইভেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মার্চেন্ট, মার্কেটার, বিজনেসম্যান ও কাস্টমার সকলের জন্য আরো ইফেক্টিভ ও এডভান্সড অপর্চুনিটি নিয়ে আসবে।