সফলভাবে একটি বিজনেস ডেভেলপ করতে যেই ব্যবসায়িক দক্ষতাগুলো প্রয়োজন

ব্যবসায়িক দক্ষতা
Share This Post

নিজের প্যাশনকে একটি সফল বিজনেস মডেলে পরিণত করতে গিয়েই অনেক বিজনেস প্ল্যানই শেষ হয়ে যায় সঠিক দক্ষতটার অভাবে। একটি ছোট বিজনেসকে একটি বিশাল রূপ দিতে দরকার হয় ইচ্ছা এবং দক্ষতা। কিন্তু আসল সত্যি হচ্ছে যে, অর্ধেকের চেয়েও বেশী বিজনেস এ ব্যর্থ হয় কারন তার প্যাশনকে প্রাক্টিক্যাল ব্যবসায়িক দক্ষতা দিয়ে গোছাতে পারে না। বিজনেস ডেভেলপমেন্ট করতে সবসময় কঠোর পরিশ্রম, কন্সিস্টেনসি এবং দক্ষতার চেয়েও বেশি কিছু দরকার । তাই দিনশেষে সফলতার দ্বারপ্রান্তে যেতে হলে, আপনাকে বুঝতে হবে এবং সেই গুরুত্বপূর্ন বিজনেস স্কিলের উপর দক্ষ হয়ে উঠতে হবে।

সর্বপ্রথম আপনাকে ছোট বিজনেস ডেভেলপমেন্ট করতে জানতে হবে যে আপনার মধ্যে কোন স্কিল আছে এবং কোন স্কিলগুলো নেই। যদি সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে সেই দক্ষতা সম্পর্কে শিখে নিন অথবা আপনি চাইলে কোন কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারেন সেই নির্ধারিত জায়গাতে। এছাড়াও চাইলে প্রফেশনাল বিজনেস এডভাইজরদের কাছে দ্বারস্ত হতে পারেন। এখানে কিছু প্রয়োজনীয় স্কিলের কথা উল্লেখ করা হলো (যা কিনা কোন ধরনের টেকনিক্যাল স্কিল নয় ব্যক্তিগত স্কিল হিসেবে পরিচিত) যা আপনার বিজনেসের সফলতা অর্জন করতে সহায়তা করবেঃ

কমিউনিকেশন স্কিল

কমিউনিকেশন হচ্ছে এমন একটি ফর্ম যা কিনা আপনার কর্মক্ষেত্রের আচরনের উপর নির্ভর করে থাকে। ব্যবসায়িক দক্ষতাগুলোর মধ্যে কমিউনিকেশন স্কিল আপনাকে বিশ্বস্ত কর্মী হিসেবে তৈরী করতে এবং দীর্ঘ সময় ধরে কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়াও নতুন সাপ্লাইয়ার ও নিরাপদ ইনভেস্টমেন্টে কমিউনিকেশন সাহায্য করবে।

কার্যকর কমিউনিকেশন তৈরী করতে আপনাকে সর্বপ্রথম লিখিত, মৌখিক কমিউনিকেশনে ভালো হতে হবে। লিখিত কমিউনিকেশন কিছুটা জটিল, যেমনঃ একটি ছোট মেইল বা কোম্পানি মেমো, যা কিনা খুব সহজেই অপব্যবহার হতে পারে। সঠিক প্রসঙ্গে সঠিক শব্দ ব্যবহার করতে সক্ষম হওয়াই কমিউনিকেশনের মূল বিষয়।

কমিউনিকেশনের সবচেয়ে বড় অংশ হচ্ছে মৌখিক। একটি ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকার মানে হচ্ছে আপনি অন্যান্য মানুষের সাথে কথা বলছেন যেখানে আপনি একজন লিডার অন্যদিকে সহকর্মী। যেখানে আপনাকে দুইটি চরিত্রেই সম্মানের সহিত আচরণ আশা করে থাকবে। বেশি কথা বলার চেয়ে মনযোগ দিয়ে কথা শোনার উপর বেশি জোর দিন।

লিডারশিপ স্কিল

ব্যবসায়িক দক্ষতা

নেতৃত্ব হল নির্ধারিত লক্ষ্য ও অবজেক্টিভ অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে মানুষকে বোঝানো ও পরিচালনার শিল্প। আপনার কর্মীদের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে আপনাকে অবশ্যই অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম হতে হবে। আপনার কর্মীরা খুশি কিনা তা নিশ্চিন্ত করতে (কমপক্ষে ছয় মাস অন্তর) রেগুলার এসেসমেন্ট বা প্রগ্রেস মিটিং এর ব্যবস্থা রাখুন। তাদের সমস্যা সম্পর্কে জানতে সময় দিন এবং তাদেরকে সেই সমস্যা থেকে বের করতে সাহায্য করুন। মানুষ তখনই বেশি পরিশ্রম করে যখন সে খুশি থাকে।

যদি আপনি চেয়ে থাকেন যে আপনার টিম বা ব্যবসায়ের উন্নতি হোক তাহলে আপনাকে আরো মানুষ নিয়ে আগাতে হবে যেখানে ব্যবসায়িক দক্ষতাগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘লিডারশিপ স্কিল’ আপনাকে সাহায্য করবে বেস্ট ট্যালেন্ট খুঁজে বের করতে এবং প্রয়োজনীয় মুহূর্তে তাদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করতে। আপনার দল এবং ব্যবসায়ের মধ্যে ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য লোকদের তাদের নিজস্ব দক্ষতা বিকাশ করতে সহায়তা করুন। মানুষের শক্তিগুলো শনাক্ত করার চেষ্টা করুন এবং এটি ব্যবসায়ের সুবিধার্থে ব্যবহার করুন।

সেরা পরিচালিত ব্যবসায়গুলো কেবল মার্কেটিং এর উপর নজর দেয় না তবে শীর্ষস্থানীয় শক্তিশালী নেতা রয়েছে যারা জানেন যে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য কী প্রয়োজন তা জানেন।

প্রতিনিধিত্ব

ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে, প্রতিনিধিত্ব সহকর্মীদের কাছে দায়িত্ব ও কর্ম স্থানান্তরিত করে। আদর্শভাবে বলতে গেলে, এটি প্রতিটি ব্যবসায়িক কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হওয়া উচিত, যেখানে আপনার ব্যবসা বা টিম আপনার পক্ষে কাজ করে ও লক্ষ্য অর্জনে আপনাকে সাহায্য করে থাকবে।

মানুষদের পাশে থাকা অথবা সহকর্মীদের সাথে কাজ করে যাওয়ার মানে এই না যে সকল কাজ শুধু আপনি করে যাবেন। ব্যবসায়ের ভিতর একে অপরের প্রতি সহায়তার মনোভাব প্রত্যেকের জন্য উপকারী এবং এই সহযোগিতার মধ্যে একটি অংশ হচ্ছে প্রতিনিধিত্ব। যার মানে অন্যদেরকে সুযোগ দেয়া এবং সেই সাথে নিজেকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া।

ম্যানেজমেন্ট স্কিল

প্রতিটি ব্যবসায়িক সেট আপে, এমন কিছু ব্যক্তির প্রয়োজন রয়েছে যিনি প্রকল্পগুলো পরিকল্পনা ও সম্পাদন করতে পারেন, কর্মীদের কাজগুলো পরিচালনা করতে এবং সমস্যা দেখা দিলে সে বিষয়ে দায়িত্ব নিতে পারবে। প্রতিনিধি না দেওয়ার ব্যর্থতা অনেকটা ফাঁদের মতন যেখানে ব্যবসায় মালিক এবং পরিচালকরা ফেঁসে যান, যার মূল কারণ তারা নিয়ন্ত্রণে যেতে নারাজ।

কার্যকরভাবে আপনার সময় পরিচালনার অর্থ ব্যবসায়ের অন্য কারো কাছে দায়িত্ব অর্পণ করা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো, বা আপনি যে কাজগুলো সেরা সেগুলো শনাক্ত করুন এবং বাকী কাজগুলো অন্যদের দিয়ে করার চেষ্টা করুন।

টাইম ম্যানেজমেন্ট

যে ব্যক্তিরা সময়কে যথাযথভাবে পরিচালনা করেন তারা সাধারণত বেশি উৎপাদনশীল এবং সময়সীমাতে সতর্ক থাকেন। কার্যকর সময় পরিচালন দক্ষতার সহিত একজন ব্যক্তি যে কোনও সংস্থার জন্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। এই ধরনের মানুষেরা জানে যে কোন কাজগুলো আগে করতে হবে যা কিনা সর্বপ্রথম করলে প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো হয়। সংগঠিত থাকার এবং কার্যগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষমতা আপনাকে এবং আপনার দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক দীর্ঘ পথে যাত্রাতে সাহায্য করবে। বিশ্লেষণ দ্বারা বসে না থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সুযোগগুলো নিয়ে কাজ করাও গুরুত্বপূর্ণ।

তাই বিজনেসের দক্ষতাগুলোর মধ্যে টাইম ম্যানেজমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এই টাইম ম্যানেজমেন্টে আমরা যেসব ভুলগুলো করে থাকি তার কিছু লিস্ট এখানে দেয়া হলোঃ

  • কর্ম-তালিকা না রাখা।
  • গোল, টার্গেট, লক্ষ্য সেট না করা।
  • টাস্ককে গুরুত্ব না দেয়া।
  • কাজের গতিতে বাধা দেয়া।
  • অপ্রয়োজনীয় কথা বলা।
  • কারো চেষ্টাকে অবহেলা করা।
  • মাল্টিটাস্কিং।
  • সামনে কী হবে তা প্ল্যান না করা।
  • ভুল জিনিসে ফোকাস করা।
  • সবকিছুতে পারফেক্ট হবার চেষ্টা। 

তাই আপনার ব্যবসায় নিয়ে যদি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকলে উল্লেখিত বিষয় বিবেচনা করলে আপনি ব্যবসায়ে গ্রো করতে সক্ষম হবেন। ইহা এমন এক প্রকার দক্ষতা যা আপনাকে দিন দিন আপনার ব্যবসায় অথবা কর্মক্ষেত্রে আরো দক্ষ করে তুলবে। 

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন
Marketing

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন?

আপনার বিজনেস নিশ কি হবে? কি নিয়ে কাজ করবেন? বা কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিই এপ্লাই করবেন। সব কিছু সিলেক্ট করার আগে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্ট হচ্ছে কম্পিটিটর

প্যাশনকে প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড সাকসেস এ পরিণত করুন
Marketing

প্যাশনকে প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড সাকসেস এ পরিণত করুন

জীবনে সাকসেসফুল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে আপনার যেকোনো ধরনের কাজের প্রতি দৃঢ় প্যাশন গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সকলের কিছু ভালো লাগার জিনিস রয়েছে যেমন ছবি আঁকা।