অনলাইন মার্কেটিং শুরু করার ১০ টি টিপস

অনলাইন মার্কেটিং শুরু করার ১০ টি টিপস
Share This Post

অনলাইন মার্কেটিং শুরু করার ১০ টি টিপস  

বর্তমান ডিজিটাল এবং অনলাইন ভিত্তিক বিশ্বে, যেকোনো ধরণের বিজনেসে সফলতার ক্ষেত্রে অনলাইন মার্কেটিং বিশাল জায়গা দখল করে নিয়েছে এবং এতে কোনো সন্দেহ নেই!

কিন্তু কেন?

বর্তমানে কাস্টমারদের কাছে প্রোডাক্ট পৌছে দেওয়ার সবচেয়ে সহজ এবং চমৎকার একটি প্রক্রিয়ে হচ্ছে এই অনলাইন মার্কেটিং। যার কারনে বর্তমানে হাজার হাজার ব্যবসায়ীর কাছে অনলাইন মার্কেটিং ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। 

তবে বিগিনার হিসেবে কীভাবে অনলাইন মার্কেটিং শুরু করা যায়? অনলাইন মার্কেটিং শুরু করার সেরা ১০ টি টিপস নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে, যা ফলো করলে আপনি অনলাইন মার্কেটিং অভিজ্ঞ হয়ে উঠতে পারবেন। 

অনলাইন মার্কেটিং শুরু করার ১০ টি টিপস 

১। অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে জানা

আপনি যদি অনলাইন মার্কেটিং এ বিগিনার হয়ে থাকেন, তবে এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে অনলাইন মার্কেটিং এর ব্যাসিক থেকে শুরু করে সব কিছু নিয়ে রিসার্চ করতে হবে, জানতে হবে। 

শুরুতে আপনাকে যা জানতে হবে-

  • অনলাইন মার্কেটিং কী এবং কেন?

ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যম, যেমন ফেসবুক, ইন্সটা, ইউটিউভ, ওয়েবসাইট, ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট প্রমোট এবং সেল করা।

বর্তমানে অনলাইন মার্কেটিং খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যে কেউ ইচ্ছে করলে খুবই কম পরিমাণ অর্থ ইনভেস্ট করে সঠিকভাবে মার্কেটিং করে অনলাইনে বিজনেস করতে পারে। 

  • এটি কতটুকু বিশাল এবং এর পরিধি

অনলাইন মার্কেটিং এর বিভিন্ন সেক্টর রয়েছে, যা নিয়ে আমরা পরের টিপ্সে কথা বলবো। 

  • সার্চ ইঞ্জিনের যথাযথ ব্যবহার

শুধু অনলাইন মার্কেটিং না, যেকোনো কিছু নিয়ে জানার জন্য, রিসার্চ করার জন্য এবং আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিনের প্রয়োজন পড়ে।

অনলাইনে মার্কেটিং এ সার্চ ইঞ্জিনের ব্যপক প্রয়োজন রয়েছে। তাই জন্য, সার্চ ইঞ্জিন কীভাবে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা জানা জরুরি। 

  • এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন) 

এসইও ছাড়া অনলাইন মার্কেটিং এ উন্নতি করা প্রায় অসম্ভব বলা যেতে পারে। যদি সহজ করে বলি, নিজের কন্টেন্ট বা প্রোডাক্ট সার্চ ইঞ্জিনে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখার প্রক্রিয়াই হচ্ছে এসইও। 

  • ওয়েবসাইট, ডোমেইন, হোস্টিং

প্রোডাক্ট প্রোমোশনের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমের থেকে ওয়েবসাইট অন্যতম। অনলাইন মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এসইও ওয়েবসাইট থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য ওয়েবসাইট, ডোমেইন, হোস্টিং নিয়ে জানতে হবে। 

এগুলো ছাড়া আরও অনেক কিছু রয়েছে, অনলাইন মার্কেটিং জগতে পা রাখার সাথে সাথে যেগুলো আয়ত্য করতে হবে। 

২। নির্দিষ্ট একটি চ্যানেল বাছাই করা 

অনলাইন মার্কেটিং মূলত খুবই বড় একটি সেক্টর! আপনাকে এই পুরো সেক্টরে এক্সপার্ট হতে হবে, এমন নয়। আপনি এর যেকোনো নির্দিষ্টি একটি চ্যানেল বাছাই করে সেটা নিয়ে জার্নি শুরু করতে পারেন। 

অনলাইন মার্কেটিং এর জনপ্রিয় কিছু চ্যানেল-

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং
  • ওয়েবসাইট মার্কেটিং
  • ই-মেইল মার্কেটিং
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং
  • ইনবাউন্ড মার্কেটিং 
  • পে-পার-ক্লিক
  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন
  • মোবাইল মার্কেটিং
  • ই-কমার্স মার্কেটিং 
  • ভিডিও মার্কেটিং ইত্যাদি। 

৩। কোর্স এর মাধ্যমে সার্টিফিকেট অর্জন 

কোর্স এর মাধ্যমে সার্টিফিকেট অর্জন

কোনো একটি ফিল্ডে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কোর্স এর বিকল্প নেই। আর সেটা অনলাইন কেন্দ্রিক হলে তো কোনো কথাই নেই। 

তাই, আপনার মার্কেটিং যাত্রার পথটুকু আরও সহজ করতে অনলাইন মার্কেটিং এর যেকোনো একটি বা একের অধিক কোর্সে এনরোল করতে পারেন।

কোর্স এর মাধ্যমে একটি সার্টিফিকেট অর্জন করে নিতে পারলে, এটি আপনার অনলাইন মার্কেটিং এ উন্নতি নিয়ে আসতে অনেকভাবে সাহায্য করবে।  

অনলাইনে আপনি ফ্রী এবং পেইড- দুই ধরণের কোর্সই পাবেন। সার্টিফিকেট সাধারণত পেইড কোর্সগুলোর সাথে থাকে, তবে বর্তমানে অনেক ফ্রী কোর্সের সাথেও সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। 

৪। এসইও নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন

এসইও নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন

এসইও’র মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কীভাবে এমন ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয় যা কাস্টমার বা ব্যবহারকারী এবং গুগল- উভয়ে পছন্দ করে। 

এসইও’র এই একই অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে গুগল এড এবং ফেসবুক এড ক্যাম্পেইন উন্নতি করা যায়। 

৫। মার্কেটিং সম্পর্কিত বিভিন্ন টুলস এর ব্যবহার 

অনলাইনে বর্তমানে অসংখ্যা মার্কেটিং টুলস রয়েছে, যেগুলো মার্কেটারদের টাস্ক সহজ করে দিচ্ছে। সেই সাথে সময় বাঁচাতেও সাহায্য করছে। 

যে কাজটি আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডেস্কে বসে থেকে, ব্রেইন খড়চ করে, কী-বোর্ড টাইপ করে করতে থাকবেন, টুলস সেই কাজগুলোকে নিমিষেই সম্পন্ন করে ফেলতে সক্ষম হবে। 

জনপ্রিয় কিছু অনলাইন মার্কেটিং টুলস-

  • HubSpot
  • Ubersuggest
  • Trello
  • MailChimp
  • MobileMonkey
  • Google Analytics
  • Buzzsumo
  • InfusionSoft
  • Canva
  • Ahrefs ইত্যাদি। 

৬। অনলাইন মার্কেটিং পোর্টফলিও তৈরি করা

অনলাইন মার্কেটিং পোর্টফলিও তৈরি করা4

আপনি ধীরে ধীরে যখন মার্কেটিং এর অনেক কিছু আয়ত্য করে ফেলতে পারবেন, তখন কিছু রিয়াল মার্কেটিং প্রজেক্ট নিয়ে পোর্টফলিও তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে। 

নিজের অর্জন এবং স্কিলগুলো হাইলাইট করার জন্য পোর্টফলিও’র অনেক গুরুত্ব রয়েছে। 

অনলাইন মার্কেটিং পোর্টফলিওতে যা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন-

  • শর্ট বায়ো
  • সিভি
  • কন্টান্ট ইনফরমেশন
  • সেরা কাজগুলোর স্যাম্পল ইত্যাদি। 

যেভাবে একটি পোর্টফলিও তৈরি করা যায়-

  • একটি নির্দিষ্ট অনলাইন প্লাটফর্ম বাছাই করা
  • আকর্ষণীয় একটি হোমপেইজ ডিজাইন করা 
  • সঠিক তথ্যযুক্ত “এবাউট” পেইজ তৈরি করা 
  • সেরা স্যাম্পলগুলো হাইলাইট করা
  • কাজের প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত
  • ক্লাইন্ট বা যে কেউ খুব সহজেই আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে তা নিশ্চিত করা 

৭। অনলাইন মার্কেটিং ইন্টার্নশীপ

অনলাইন মার্কেটিং ইন্টার্নশীপ

আপনার স্কিল এবং অভিজ্ঞতা খুবই দ্রুত উন্নত করার জন্য অনলাইন মার্কেটিং এসিস্ট্যান্ট হিসেবে ইন্টার্নশীপ করতে পারেন। 

এর মাধ্যমে আপনি মডার্ণ অনলাইন মার্কেটিং এজেন্সি নিয়ে জানতে পারবেন, বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন, এবং পরবর্তীতে নিজস্ব এজেন্সি তৈরি করতে চাইলে সেগুলো প্রয়োগ করতে পারবেন। 

৮। কাস্টমারদের সঠিকভাবে বুঝা 

কাস্টমারদের সঠিকভাবে বুঝা

ই-কমার্স মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে টার্গেট অডিয়েন্সকে সঠিকভাবে বুঝতে পারার অভিজ্ঞতা এবং ক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কারা? তাদের মূলত কী চায়? তাদের আগ্রহ, প্রয়োজন, এবং চাহিদাগুলো কী? কোনো কিছু ক্রয় করার ক্ষেত্রে তারা কোথায় সবথেকে বেশি সময় দেয়? 

আপনি যদি আপনার কাস্টমারকে সহজে বুঝার ক্ষমতা রাখেন, সেক্ষেত্রে আপনি আপনার মার্কেটিং ক্যাম্পেইন খুব সহজেই শুরু করতে পারবেন। 

৯। প্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট তৈরি করা

মার্কেটিং এর প্রাণ হচ্ছে- কাস্টমার। আর সেই কাস্টমারকে হাতের মুঠোই নিয়ে আসার সেরা রাস্তা হচ্ছে- আকর্ষণীয়, তথ্যবহুল, এবং প্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট তৈরি করা। 

আপনার কন্টেন্ট এর মানের উপরই মূলত নির্ভর করবে আপনার সাইটে কতজন কাস্টমার আসতে যাচ্ছে। 

কন্টেন্টের ধরণ-

  • ব্লগ পোস্ট
  • ভিডিও
  • সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট
  • ইনফোগ্রাফিক্স ইত্যাদি। 

অনলাইন মার্কেটিং এর জন্য কার্যকরী কন্টেন্ট তৈরির কিছু টিপস-

  • রেগুলার কন্টেন্ট তৈরি করা এবং পোস্ট করা
  • কপিরাইটমুক্ত, ১০০% ইউনিক, এবং মানসম্মত কন্টেন্ট নিশ্চিত করা
  • কাস্টমার বিরক্তি বোধ করবে, এমন কন্টেন্ট পরিহার করা
  • প্রোডাক্টের সাথে কন্টেন্ট বিষয় মিল রাখা
  • কন্টেন্টে সরাসরি প্রোডাক্ট প্রমোট না করে কোনো তথ্য উপস্থাপন এর মাধ্যমে, কোনো সমস্যা সমাধানের টিপস দিয়ে, কিংবা গল্পের মাধ্যমে প্রমোট করা যেতে পারে ইত্যাদি।  

১০। গুগল এনালাইটিক্স এ অভিজ্ঞতা অর্জন 

আপনি যদি একজন প্রফেশনাল অনলাইন মার্কেটার হতে চান, তবে গুগল এনালাইটিক্স নিয়ে আপনাকে ভালোভাবে জানতে হবে। 

কতজন আপনার ক্যাম্পেইন দেখেছে, আপনার এডে কতজন ক্লিক করেছে, প্রোডাক্টে কতজন ক্লিক করেছে, ইত্যাদি- মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এগুলোতে আপনার প্রতিনিয়ত নজর রাখতে হবে আর এগুলোই গুগল এনালাইটিক্স এর অন্তর্ভুক্ত। 

প্রতিদিনকার বিভিন্ন ডেটার উপর ভিত্তি করে তথ্যবহুল সিদ্ধান্ত নিতে হয়, আর এক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের পরিমাপ সম্পর্কে জানতে হবে এবং সেগুলো এনালাইজিং করতে হবে। 

আর এগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে গুগল এনালাইটিক্সে একজন এক্সপার্ট হতে হবে। 

পরিশেষে

আপনি যদি আপনার বিজনেসে সফলতা পেতে চান, তবে অনলাইন মার্কেটিং কে অবশ্যই বিবেচনায় রাখবেন এবং আমরা আশা করছি অনলাইন মার্কেটিং শুরু করার এই ১০ টি টিপস আপনাকে সঠিক পথা দেখাবে। 

আপনি যদি সঠিকভাবে এই টিপ্সগুলো কাজে লাগাতে পারেন এবং আয়ত্য করতে পারেন, অনলাইন মার্কেটিং আপনার হাতের নাগালে চলে আসবে। 

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
সিজনাল ক্যাম্পেইন বৃদ্ধি করার জন্য ৫টি ট্রেন্ডস এন্ড টিপস
Marketing

সিজনাল ক্যাম্পেইন বৃদ্ধি করার জন্য ৫টি ট্রেন্ডস এন্ড টিপস

বিগত কয়েক বছরে বিজনেস কম্পিটিশন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যে টিকে থাকতে এবং এগিয়ে যেতে সিজনাল ক্যাম্পেইন গুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে উৎসব, ছুটির

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স (EI)  কি এবং কিভাবে নিজের EI ইম্প্রুভ করবেন
Marketing

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স (EI)  কি এবং কিভাবে নিজের EI ইম্প্রুভ করবেন

আপনার কর্মক্ষেত্রে কি কখনো এমন হয়েছে যে একটি কাজ একাধিক বার করার পরও আপনাকে কথা শুনতে হচ্ছে। একটা কাজ বার বার এডিট করার অর্ডার আসছে।