যখন বাজেট অল্প থাকে তখন বিজনেসের মার্কেটিং করাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। বিশেষ করে স্মল বিজনেসের জন্য এটি আরো চ্যালেঞ্জিং। তবে বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপক জনপ্রিয়তার জন্য স্মল বিজনেসে গুলিও কিছু টেকনিক ফলো করে তাদের বিজনেস মার্কেটিং করতে পারছে, প্রোডাক্ট প্রেজেন্ট করতে পারছে হিউজ পরিমাণ বায়ার্স এবং অডিয়েন্সের কাছে এবং সেলস, বিজনেস পরিচিতি বাড়াচ্ছে।
এই ব্লগে থাকছে সাতটি ট্রেন্ডি মার্কেটিং টেকনিক যেগুলি যেকোনো ধরনের স্মল বিজনেস গুলির মার্কেটিং এর জন্য অনেক বেশি ইফেক্টিভ হবে।
ট্রেন্ডি মার্কেটিং টেকনিক
ব্র্যান্ড এস্টাবলিশ
![](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/11/ব্র্যান্ড-এস্টাবলিশ-1024x683.png)
যেকোনো স্মল বিজনেসের জন্য ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করা জরুরি। কাস্টমার সবসময় পরিচিত, ফেমাস ব্র্যান্ডের প্রতি এট্রাক্ট হয় এবং ট্রাস্টেড মনে করে। তারা কোনো একটা প্রোডাক্টস,সার্ভিস কেনার আগে ব্র্যান্ড সম্পর্কে একটি ক্লিয়ার ধারণা পেতে চায়, এজন্য প্রোডাক্ট রিলেটেড ব্র্যান্ডের ইউনিক নাম, ইমেজ এবং লগো ক্রিয়েট করুন, যেটা কাস্টমারদের ক্লিয়ার ধারণা দিবে ব্র্যান্ড সম্পর্কে। ব্র্যান্ড লগো প্রোডাক্ট থেকে শুরু করে পোস্টার, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, বিজনেস কার্ড, ওয়েবসাইট, ইমেইল সিগনেচার এবংঅ্যাডভার্টাইজমেন্টিং এও ব্যবহার করুন।
কাস্টমার সম্পর্কে জানুন
![](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/11/কাস্টমার-সম্পর্কে-জানুন-1024x683.png)
আপনার প্রোডাক্টস, সার্ভিস ঠিক কোন ধরনের কাস্টমারের জন্য তাদের আইডেন্টিফাই করুন।তাদের সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা করে তাদেরকে টার্গেট করে মার্কেটিং করুন। কাস্টমারের চাহিদা, তারা আপনার ব্র্যান্ড থেকে কি আশা করে, প্রোডাক্টস সম্পর্কে তাদের ধারণা কী, তারা কেমন সার্ভিস আশা করে, অনলাইন সার্ভিস তারা ব্যবহার করে কিনা, এসব কিছু ভালো করে এনালাইস করে সেই অনুযায়ী বিজনেস আপডেট করুন। যখন আপনি কাস্টমারের ডিমান্ড পূরন করতে সক্ষম হবেন তখম কাস্টমারের ইন্টারেস্ট আরো বাড়বে, তারা পজিটিভ রিভিউ শেয়ার করবে ফলস্বরূপ ব্র্যান্ড এবং প্রোডাক্ট তারা নিজে থেকেই প্রমোট করবে।
ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করুন
![](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/11/ওয়েবসাইট-ক্রিয়েট-করুন-1024x683.png)
বর্তমান ব্র্যান্ড,বিজনেস ওয়েবসাইট কে ‘মডার্ন ডে বিজনেস কার্ড’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওয়েবসাইট হলো প্রথম বিষয় যেটা কাস্টমার সবার আগে চেক করে। ওয়েবসাইট যদি ওয়েল ডেভেলপড হয় তাহলে সেটা কাস্টমারের মনে গুড ইম্প্রেশন ক্রিয়েট করে।
একটা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানি তাদের প্রোডাক্টস সম্পর্কে বেশি ইনফরমেশন প্রোভাইড করতে পারে, এবং সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে বেশি ট্রাফিক পেতে পারে। ওয়েবসাইটে প্রোডাক্টস, সার্ভিস নিয়ে ডিটেইলস কন্টেন্ট আপ্লোড করুন, প্রোডাক্টস ব্যবহার গাইডলাইন, উপকারিতা সবকিছু এড করুন। কাস্টমার রিভিউ অপশন রাখুন, যাতে করে কোনো কাস্টমার প্রোডাক্টস, সার্ভিস ব্যবহার করার পর ওয়েবসাইটে রিভিউ কমেন্ট করতে পারে,যেটা দেখে অন্যান্য কাস্টমার ও এট্রাক্ট হবে। ট্রেন্ডি মার্কেটিং টেকনিক গুলির মধ্যে ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করা, সেটা আপডেট রাখা সবচেয়ে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট।
এসইও (SEO-Search Engine Optimisation) এর ব্যবহার
![](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/11/এসইও-SEO-Search-Engine-Optimisation-এর-ব্যবহার-1024x683.png)
বিজনেস ওয়েবসাইটে হাই ট্রাফিক পাওয়ার সবচেয়ে পাওয়ারফুল ওয়ে হলো গুগল সার্চ। যেহেতু গুগল এলগরিদম গুলি চেঞ্জ হয়েছে এজন্য যেকোনো বিজনেস ওয়েবসাইটের এসইও(SEO) ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট পাব্লিশ নিশ্চিত করা জরুরি। নির্দিষ্ট কিছু কি-ওয়ার্ডস (Keywords) ব্যবহার করুন যাতে করে আপনার ওয়েবসাইটি গুগল সার্চের ফার্স্ট পেজে শো করে।
স্মল বিজনেস গুলির জন্য আরেকটা ইউসফুল টুল হলো ‘গুগল মাই বিজনেস'(Google My Businesses)। এখানে আপনার ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট লিস্ট করুন, যখন নিয়ার-বাই পিপলস কোনো প্রোডাক্টস এবং সার্ভিসের জন্য সার্চ করবে যেটা আপনার কোম্পানি প্রোভাইড করছে তখন আপনার প্রোডাক্ট, কোম্পানি টপ সার্চে শো করবে।
ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজমেন্ট
ট্রেন্ডি মার্কেটিং টেকনিক এর মধ্যে ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজমেন্ট হচ্ছে একটা গ্রেট ওয়ে কাস্টমার রিচ করার। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনার ফ্রি তেই বিজনেস পেইজ ক্রিয়েট করতে পারছেন৷ ব্র্যান্ড এর সাথে রিলেটেড, ইউনিক নেইম দিয়ে ফেসবুক পেইজ ক্রিয়েট করুন। প্রোডাক্টস, সার্ভিস সম্পর্কে ক্রিয়েটিভ কন্টেন্ট, ভিডিও,ডেমন্সট্রেশন পাব্লিশ করুন, বড় বড় ফেসবুক গ্রুপ গুলিতে শেয়ার করুন যেখানে আপনি কাঙ্ক্ষিত অডিয়েন্স পেয়ে যাবেন প্রোডাক্টসের জন্য।
এছাড়াও খুবই সামান্য টাকা খরচ করে ফেসবুক পেইজের প্রোডাক্ট পোস্ট বুস্ট করতে পারেন যাতে করে আপনার পেইজ প্রায় সকল ইউসার দের নিউজফিডে শো করবে।যেটা আপনার বিজনেসের রিচ এবং সেল দুটোই বাড়াবে। পেইজের কমেন্ট সেকশন সবার জন্য উন্মুক্ত রাখুন, অডিয়েন্সের মতামত কে গুরুত্ব দিন, তাদের প্রশ্ন, অভিযোগ সবকিছুর উত্তর আন্তরিকতার সঙ্গে দিন।
ফেসবুকে ফেমাস ইনফ্লুয়েন্সার দের কেও কাজে লাগাতে পারেন। কেননা তাদের কথায় অডিয়েন্স খুব সহজেই ইনফ্লুয়েন্স হয়। যেকোনো ফেমাস এবং অডিয়েন্স বেশি ফলো করে এমন কাউকে দিয়ে ব্র্যান্ড, প্রোডাক্ট প্রমোট করাতে পারেন।
ইমেইল মার্কেটিং
![](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/11/ইমেইল-মার্কেটিং-1024x683.png)
ইমেইল মার্কেটিং এর অনেক এডভান্টেজ রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো আপনি ডিরেক্টলি আপনার পটেনশিয়াল কাস্টমারের সাথে কমিউনিকেট করতে পারছেন, সঠিকভাবে ইমেইল ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমেও আপনার ব্র্যান্ড পরিচিতি এবং সেল বাড়াতে পারেন। সেক্ষেত্রে ইমেইলের সাবজেক্ট সিম্পল রাখুন, খুব অল্প লাইনে ইমেইল এর বিষয়বস্তু কভার করুন। ওয়ার্ম গ্রেটিংস দিন, এবং ব্র্যান্ড লগো, সিগনেচার এড করতে ভুলবেন না।
তবে ঘন ঘন ইমেইল সেন্ড করবেন না, কেননা এটি কাস্টমারের মনে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে। প্রতি উইকে একটা ইমেইল সেন্ড করতে পারেন, এবং মাসে চার থেকে পাঁচটি। যেখানে আপনার ব্র্যান্ড, প্রোডাক্ট সম্পর্কিত তথ্য থাকবে, পুরাতন কাস্টমারদের নতুন নতুন অফার, ডিসকাউন্ট এর ইনফরমেশন জানিয়ে ইমেইল করতে পারেন। নিউ কাস্টমারদের ওয়েলকাম মেইল, তারা আপনার ব্র্যান্ড থেকে কি কি সুবিধা পাচ্ছে এসব ইনফরমেশন দিয়ে মেইল করতে পারেন।
গুগল এডওয়ার্ডস (Goolge Adwords) ব্যবহার করুন
![](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/11/গুগল-এডওয়ার্ডস-Goolge-Adwords-ব্যবহার-করুন-1024x683.png)
সবচেয়ে সহজেই মানুষ আপনার ব্র্যান্ড খুঁজে পেতে পারে গুগল সার্চের মাধ্যমে। এবং গুগল এডওয়ার্ডস ব্যবহার করে আপনার ব্র্যান্ড কে সার্চের সর্বপ্রথমে শো করাতে পারবেন। অন্যান্য পপুলার বিজনেস টেকনিক গুলির চেয়ে এটা কিছুটা এক্সপেন্সিভ, তবে অনেক বেশি কাজের। এমনকি গুগল এডওয়ার্ডস কে মার্কেটিং এর কী (Key) বলা হয়। এটা কে মার্কেটিং এর একটি পাওয়ারফুল টুল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এজন্য আপনার ব্র্যান্ড ওয়েবসাইট যাতে সহজেই মানুষ খুঁজে পায় সেজন্য অবশ্যই গুগল এডওয়ার্ডস ব্যবহার করুন।
পরিশেষে,
বর্তমানে যেকোনো বিজনেস গ্রো করার জন্য মার্কেটিং ফার্স্ট প্রায়োরিটি। যেকোনো ব্র্যান্ড যদি প্রপারলি তাদের প্রোডাক্টসের মার্কেটিং করতে পারে তাহলে তাদের সেল বাড়বেই। যে সাতটি ট্রেন্ডি মার্কেটিং টেকনিক উপরে আলোচনা করা হলো এই টেকনিক গুলি ফলো করুন, তাহলে খুব কম খরচে মার্কেটিং করতে পারবেন, এবং বিজনেসের সেল বাড়াতে পারবেন অল্প সময়েই। মনে রাখবেন অনেক ট্রেন্ডি মার্কেটিং টেকনিক গুলি ঠিক তখনই কাজে লাগবে যখন আপনি স্মার্টলি কাজ করবেন। আপনার ক্রিয়েটিভি কে কাজে লাগান, হার্ডলি নয় স্মার্টলি কাজ করুন, হ্যাপি মার্কেটিং।