ডিজিটাল বিজনেস শুরু করার ৮ টি সুবিধা

ডিজিটাল বিজনেস শুরু করার ৮ টি সুবিধা
Share This Post

বর্তমান ডিজিটাল যুগে, ট্রাডিশনাল বিজনেস শুরু করার চাইতে ডিজিটাল বিজনেস শুরু করলে আপনার অধিক সুবিধা পেতে পারেন। 

আর যদি আপনি একজন বিগিনার হয়ে থাকেন, অল্প পরিমাণ পুঁজি থাকে, তবে সেক্ষেত্রে ডিজিটাল বিজনেসকে প্রাধান্য দেওয়া আপনার জন্য লাভজনক হতে পারে। 

এটি কম খরচ থেকে শুরু করে অসংখ্যা অডিয়েন্স অর্জন, উন্নত কাস্টমার সার্ভিস, ইত্যাদি এমন অগণিত সুবিধা প্রদান করে থাকে।  

আজকে আমরা ডিজিটাল বিজনেস শুরু করার সেরা ৮টি সুবিধা নিয়ে কথা বলবো যেগুলো সত্যিই চমৎকার। 

সুবিধা ১- কম খরচ

ডিজিটাল বিজনেস শুরু করার একটি অন্যতম সুবিধা হচ্ছে কম খড়চ। 

ট্রাডিশনাল বিজনেসে প্রয়োজন প্রচুর অর্থের ইনভেস্টমেন্ট, ইনভেন্টরি, আসবাবপত্র, ইত্যাদি এমন আরও অনেক কিছু। 

অন্যদিকে খুবই স্বল্প খরচে যে কেউ সহজেই অনলাইন বিজনেস শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন শুধু একটি কম্পিউটার, ইন্টারনেট কানেকশন, এবং একটি ওয়েবসাইট। 

এছাড়াও ডিজিটাল বিজনেস বাড়িতে বসেই চালানো যায়। এক্ষেত্রে অফিস তৈরি করার খরচ হ্রাস পায়। 

তাই যারা অনলাইনে বিজনেস শুরু করার মাধ্যমে তাদের উপার্জন প্রসারিত করতে চাচ্ছে কিংবা বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে এবং আর্থিক দিক থেকে কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না, ডিজিটাল বিজনেসের এই কম খরচের সুবিধাটি সত্যিই তাদের জন্য চমৎকার। 

সুবিধা ২- ডিজিটাল বিজনেসের মাধ্যমে অসংখ্য অডিয়েন্স পাওয়া যায়

ডিজিটাল বিজনেসের মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা খুব সহজেই বিশ্বের একটি বড় সংখ্যাক অডিয়েন্সের কাছে পৌছাতে পারবে। এর মাধ্যমে বিজনেসে বৃদ্ধি, প্রসারণ, এবং লাভের একটি উঁচু সম্ভাবনা তৈরি হবে। 

বর্তমানে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া’তে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাই জন্য ডিজিটাল বিজনেসে একটি বড় সংখ্যাক ব্যবহারকারী অর্জন করার মধ্য দিয়ে সেলিং ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

ডিজিটাল বিজনেসে অসংখ্যা অডিয়েন্স অর্জনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা-

  • অনলাইন স্টার্ট-আপে অডিয়েন্সের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
  • ইন্টারনেটের কল্যাণে মিলিওন মিলিওন সম্ভাব্য গ্রাহকের সাথে যুক্ত হওয়া যায়।
  • বিপুল সংখ্যাক অডিয়েন্স এর মাধ্যমে সেল বৃদ্ধি পাবে যার মাধ্যমে একটি বিজনেস সফলতা লাভ করতে পারবে। 
  • অডিয়েন্সের থেকে বিভিন্ন বিষয়ে ফীডব্যাক নেওয়া যায় এবং বিজনেসে কোথায় কোথায় উন্নতি করতে হবে তাও বুঝা যায়। 

সুবিধা ৩- ডিজিটাল বিজনেসের থাকে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা

ডিজিটাল বিজনেস শুরু করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামুলক সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সুবিধা। 

বর্তমানের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রমাগত ব্যবসায় সবদিক দিয়ে সফল হওয়ার জন্য প্রতিযোগিদের থেকে নিজেদেরকে সবার থেকে সেরা করার কোন বিকল্প নেই। 

ডিজিটাল টুলস এবং কৌশলগুলির সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার করে, ডিজিটাল বিজনেসগুলো প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সফলতা পেতে এবং প্রতিদ্বন্ধী ব্যবসাগুলো থেকে নিজেদেরকে এগিয়ে রাখতে পারে।

এছাড়াও এর মাধ্যমে আপনি যা সুবিধা পেতে পারেন- 

  • কাস্টমারের প্রয়োজন এবং পছন্দকে সর্ব্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে টার্গেট করা।
  • কর্মদক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি।
  • বিশ্ববাজারে প্রবেশ।
  • ব্র্যান্ড সচেতনতা এবং খ্যাতি বৃদ্ধি।
  • ডেটা বিশ্লেষণের আরো কার্যকর ব্যবহার প্রয়োগ।
  • মার্কেট ট্রেন্ডের সাথে দ্রুত উদ্ভাবনে ও মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা রাখা।
  • কাস্টমার এনগেজমেন্ট এবং বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি।
  • কম উৎপাদন খরচ এবং বেশি প্রফিট মার্জিন।

সুবিধা ৪- কর্ম-জীবনের ভারসাম্য

একটি ডিজিটাল ব্যবসা শুরু করার অন্যতম প্রধান একটি সুবিধা হলো একটি ভারসাম্যপূর্ণ কর্ম-জীবন অর্জন করা। 

যে কোন সময়, যে কোন জায়গায় কাজ করার সুবিধার সাথে ডিজিটাল ব্যবসার মালিকগণ তাদের ব্যক্তিগত জীবনকে অগ্রাধিকার দিতে পারে এবং ফলস্বরুপ পরিবারকে যথাযথ সময় দিতে পারে এবং কর্মক্ষেত্রে + পারিবারিক ক্ষেত্র মিলিয়ে একটি সুন্দর জীবন পরিচালনা করতে সক্ষম হয়। 

আর এই বিষয়গুলিই তাদের উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং কাজের প্রতি সন্তুষ্ট থাকার দিকে পরিচালিত করে। 

এগুলো ছাড়াও একটি ভারসাম্যপূর্ণ কর্ম-জীবন আরো কত ভালো ফলাফল দিতে পারে তা হলো:  

  • মানসিক চাপ হ্রাস।
  • পরিবার ও বন্ধুদের সাথে অত্যধিক সময় অতিবাহিত করা।
  • ভ্রমণ ও নতুন নতুন শখ পূরণের সুযোগ বৃদ্ধি।
  • কর্ম-পরিকল্পনার উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ।
  • পরিপূর্ণ জীবন অনুভব করার ক্ষমতা অর্জন করা।

সুবিধা ৫- পাওয়ারফুল ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস

ডিজিটাল বিজনেসের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বৃদ্ধি একটি বেশ দারুন সুবিধা। যেহেতু এটি ব্যবসাকে অনলাইনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি দিতে সাহায্য করে এবং বেশি বেশি কাস্টমারকে আকর্ষিত করে। 

অনলাইনের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান এবং ইমেল মার্কেটিংয়ের মতো ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলগুলি ব্যবহার করে, ব্যবসাগুলি তাদের ব্যবসায়িক উপস্থিতি বাড়াতে এবং ব্র্যান্ডের পরিচিতি তৈরি করতে পারে। 

ডিজিটাল ব্যবসার জন্য ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধির কিছু প্রধান সুবিধার মধ্যে রয়েছে:

  • কাস্টমারের বিশ্বাস ও  ভরসার জায়গা বৃদ্ধি।
  • ব্র্যান্ড খ্যাতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা উন্নত করে।
  • বেশি পরিমাণে কাস্টমার এনগেজমেন্ট এবং ইন্টারেকশন করা।
  • ক্রেতার মৌখিক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির জন্য আরও সুযোগ বৃদ্ধি। 
  • নিজস্ব চেষ্টায় গ্রাহক অর্জন এবং ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি।
  • বিক্রয় এবং রাজস্ব বৃদ্ধি।

 সুবিধা ৬- ওভারহেড খরচ হ্রাস

ট্রাডিশনাল ব্যবসার তুলনায় ডিজিটাল ব্যবসাগুলি অনেক কম খরচে পরিচালিত হতে পারে, যা উচ্চতর মুনাফা অর্জন এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণে রূপান্তরিত হয়। 

উদাহরণস্বরূপ: ডিজিটাল ব্যবসা ভাড়ার খরচ, ইউটিলিটি এবং অফিস সরবরাহের খরচ বাঁচিয়ে দেয়। তারা বেতনের খরচ বাঁচাতে পারে ফুল-টাইম অফিস কর্মীর পরিবর্তে রিমোট কর্মী, ফ্রিল্যান্সার বা অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ দিয়ে। 

বরং ডিজিটাল ব্যবসার ক্ষেত্রে যে অধিক মার্কেটিং খরচ তা কমিয়ে আনা সক্ষম হয় ডিজিটাল এডভারটাইজিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে। 

সর্বোপরি, ওভারহেড খরচ হ্রাস ব্যবসাকে কর্মচঞ্চল, সচল এবং লাভজনক করে যা মার্কেটপ্লেসে একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করে। 

ডিজিটাল ব্যবসায় ওভারডেহ খরচ হ্রাস এর সুবিধাগুলো:

  • কম ভাড়া এবং ইউটিলিটি খরচ।
  • রিমোট ওয়ার্কিং পরিবশে তৈরির মাধ্যমে বেতনের খরচ হ্রাস করে।
  • অফিস সরবরাহ ও সরঞ্জামের কম প্রয়োজনীতা।
  • ডিজিটাল এডভারটাইজিং এবং কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কম খরচে মার্কেটিং।
  • প্রতিযোগিতামূলক এবং ব্যবসার লাভজনক হার বৃদ্ধি।

সুবিধা ৭- কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি

কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি একটি ডিজিটাল ব্যবসা শুরু করতে মুখ্য সুবিধার মধ্যে একটি। ডিজিটাল টুলগুলো এবং সফ্টওয়্যারের সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার – ডিজিটাল ব্যবসাগুলি পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলিকে স্বয়ংক্রিয় করতে, কাজগুলিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে, সময় এবং অর্থ বাঁচাতে পারে। 

এটি ব্যবসার মালিকদের তাদের ব্যবসার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলিতে মনোযোগ দিতে সুযোগ করে দেয়, যেমন পণ্য বিকাশ, গ্রাহক পরিষেবা এবং মার্কেটিং ইত্যাদি। 

ডিজিটাল ব্যবসায় দক্ষতা বৃদ্ধির কিছু প্রধান সুবিধার মধ্যে রয়েছে:

  • উন্নত উৎপাদনশীলতা।
  • কম খরচ।
  • উন্নত কাস্টমার পরিষেবা।
  • গ্রাহককে স্বল্প সময়ের মধ্যে রেসপন্স করা।
  • নির্ভুলতা বৃদ্ধি করা।

সুবিধা ৮- উন্নত গ্রাহক সেবা

চ্যাটবট, ই-মেইল, এবং অন্যান্য ডিজিটাল চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার কাস্টমারদের ২৪/৭ সেবা দিতে পারবেন এবং তাও দ্রুত গতিতে। এটি ডিজিটাল বিজনেসের চমৎকার একটি সুবিধা। 

উল্লেখ করার মতো এখানে ডিজিটাল ব্যবসার জন্য উন্নত গ্রাহক পরিষেবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে:

  • কাস্টমারের বিশ্বস্ততা এবং সন্তুষ্টি উন্নত করে।
  • অধিক কাস্টমার ধরে রাখার হার বৃদ্ধি।
  • ব্র্যান্ড খ্যাতি ও মৌখিভাবে পণ্য বিক্রির প্রক্রিয়া উন্নত করে।
  • কাস্টমার এনগেজমেন্ট এবং ফিডব্যাক বৃদ্ধি করে।
  • কাস্টমার সাপোর্ট এবং পরিষেবার খরচ হ্রাস করে।
  • গ্রাহকের বিভিন্ন ফীডব্যাক এবং পোলের মাধ্যমে পছন্দ- অপছন্দের উপর ভিত্তি করে বাস্তবসম্মত ডেটা তৈরি করা যায় এবং সেগুলো এনালাইসিস করে বিজনেসে উন্নতি করা যায়।

সর্বোপরি, ডিজিটাল ব্যবসাগুলি কাস্টমার পরিষেবাকেই সর্ব্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় যেন তারা প্রতিযোগিতামূলক বাজারের সর্ব্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারে এবং একটি বিশ্বস্ত গ্রাহক বেস তৈরি করতে পারে, যা ব্যাবসাগুলিকে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের দিকে পরিচালিত করে।

উপসংহার 

ডিজিটাল বিজনেস শুরু হওয়া বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে একটি স্মার্ট এবং পুরষ্কৃত সিদ্ধান্ত হতে পারে। 

আপনি সবে মাত্র বিজনেস শুরু করার কথা চিন্তা করেন কিংবা একজন প্রতিষ্ঠিত বিজনেস মালিক হয়ে থাকেন, ডিজিটাল বিজনেস শুরু করার এই ৮টি সুবিধা আপনাকে আপনার বিজনেসের লক্ষ্য অর্জনে এবং ভবিষ্যৎ ভিজন সম্পর্কে বুঝতে সহায়তা করবে। 

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন
Marketing

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং গাইডলাইন

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর এক অন্যতম পাওয়ারফুল টুলস। ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে মার্কেটিং যত সহজ হয়েছে, কম্পিটিশন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিউজ

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন
Marketing

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন?

আপনার বিজনেস নিশ কি হবে? কি নিয়ে কাজ করবেন? বা কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিই এপ্লাই করবেন। সব কিছু সিলেক্ট করার আগে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্ট হচ্ছে কম্পিটিটর