সংক্ষেপে ড্রপশিপিং- আপনার যা কিছু জানা দরকার

drop shipping
Share This Post

Table of Contents

এই ডিজিটাল যুগে এসে অনলাইন বিজনেস কে না করতে চায়? অনেক ধরণের সুযোগ রয়েছে অনলাইন বিজনেস করে নিজেকে স্বাবলম্বী করার। কিন্তু কোন বিজনেস খুব জনপ্রিয়, সবাই করছে তাই আপনি কোন সঠিক ধারণা না নিয়ে শুরু করলেন তাহলে আপনি সে বিজনেসে কখনো সাফল্য অর্জন করতে পারবেন না। এজন্য আপনাকে সেই বিজনেস করার সঠিক পদ্ধতি এবং সকল সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে জানতে হবে। ড্রপশিপিং ঠিক তেমনি একটি বিজনেস মডেল যার মাধ্যমে কোন ঝামেলা ছাড়াই বিজনেস পরিচালনা করা যায়।

অনলাইন বিজনেসের মধ্যে এমন কিছু বিজনেস আছে যা আপনি খুবই কম বিনিয়োগে করতে পারবেন। এই কম বিনিয়োগে অনলাইন বিজনেস এর নাম শুনলেই খুব জনপ্রিয় এই বিজনেস এর কথা বলতে হয় যার নাম “ড্রপশিপিং”।

ড্রপশিপিং আজকাল খুব জনপ্রিয় একটি বিজনেস। এ সম্পর্কে শুনেনি এমন খুব কম মানুষ পাওয়া যাবে। কিন্তু ড্রপশিপিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানে এমন মানুষের সংখ্যাও খুব কম। এটি নিয়ে বিস্তারিত জানার আগে যা জানা দরকার তা হল “ড্রপশিপিং কি?”। 

ড্রপশিপিং কি?

ড্রপশিপিং

ড্রপশিপিং হচ্ছে এমন একটি খুচরা মডেল যেখানে বিক্রেতারা কোন পন্য স্টক করে না বা নিজস্ব ইনভেন্টরি রাখে না। যখন কোন পন্য বিক্রি হয় তখন সেই বিক্রেতা তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে জিনিসটি ক্রয় করে যা সরাসরি কাস্টমারের কাছে পাঠায়। 

যখন অর্ডার পাঠানোর কথা আসে বা প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেয়ার কথা আসে সম্পুর্ন বিষয়ই তৃতীয় পক্ষ দেখেন। কোন প্রোডাক্ট বিক্রেতার স্টক করে রখার প্রয়োজন হয়না। তারা তাদের মত যেকোন উপায়ে প্রোডাক্টটি কাস্টমার এর কাছে পাঠিয়ে দেয় বিক্রেতার পক্ষ হয়ে। তাই এখানে বিক্রেতাকে সরাসরি পণ্যটি পরিচালনা করতে হয়না।

ড্রপশিপিং এর কি কি সুবিধা আছে?

ড্রপশিপিং এর

১। বিজনেস সেটাপ করা সহজঃ আপনার  ড্রপশিপিং বিজনেস করার জন্য পূর্বের কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। শুরু করার আগে শুধু মাত্র এটার বেসিক গুলো জেনে নিতে হবে। আপনি যদি একটু সময় নিয়ে এটার বিস্তারিত সবকিছু জেনে নিন আপনার জন্যই ভালো। আপনি খুব জলদি বিজনেস শুরুও করতে পারবেন এবং জানতেও পারবেন কিভাবে সাকসেসফুল হবেন।  এটার সেটাপ এর খরচ খুবই কম অন্যান্য বিজনেস এর তুলনায়। মানে চাইলে আপনি এখনই এই বিজনেস শুরু করতে পারবেন। শুধু দরকার বেসিক ধারণা, কিছু রিসোর্স জানা এবং কিছু টুল সম্পর্কে জানা। 

২। কম বিনিয়োগে শুরু করাঃ আপনি যে কোন বিজনেস করতে গেলে আপনি একা পারবেন না। সেখানে আপনার আরও ইমপ্লয়ি দরকার হবে। এরপর প্রোডাক্ট রাখার জন্য স্টোর দরকার। এই রকম কোন খরচ ই আপনার হবেনা  ড্রপশিপিং বিজনেসে। আপনার কোন প্রোডাক্ট স্টক করার চিন্তা থাকবেনা। কোন পন্য প্যাকেজিং, সংরক্ষন, বা শিপিং এর ব্যয় নেই। 

৩। সহজে ম্যানেজ করা যায়ঃ যেহেতু প্রোডাক্ট সরাসরি কিনতে হচ্ছে না। কোন প্রোডাক্ট স্টক করতে হচ্ছে না তাই স্টোর ম্যানেজ ঝামেলা নেই। তাই ড্রপশিপিং স্টোরগুলো খুব সহজে সামলানো সম্ভব। 

৪। যে কোন জায়গায় পরিচালনা করা যায়ঃ যে কোন জায়গায় বসে এই ধরণের বিজনেস পরিচালনা করা সম্ভব। শুধুমাত্র আপনার ইন্টারনেট কানেকশন প্রয়োজন। যাতে সাপ্লায়ারদের সাথে যোগাযোগ করা যায়। এমন কি সাকসেস্ফুল ড্রপশিপিং স্টোরগুলো বাসায় বসেই পরিচালনা করা হচ্ছে। আস্তে আস্তে বিজনেস বড় হলে কিছুটা ব্যয় বাড়তে থাকে কিন্তু তারপরেও ট্রেডিশনাল বিজনেসের চেয়ে তা কম হয়ে থাকে।

৫। স্কেল করা সহজঃ আপনার বিজনেস এখানে স্কেল আপ করলেও মডেল তেমন চেঞ্জ হবেনা। আপনার সেলস এবং মার্কেটিং এ আরও জোড় দিয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু অর্ডার প্রসেসিং টাইম কিছুটা কমবে বা বাড়বে হয়ত। এই বিজনেস সম্প্রসারিত করতে আপনার খরচ কখনও আকাশ ছোয়া হবে না। তাই আপনি বিজনেসের মার্কেটিং এর দিকে আরও বেশি ফোকাস করতে পারেন।

ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করার জন্য ইনভেস্টমেন্ট

কোন বিজনেস শুরু করার জন্য তার নির্দিষ্ট কত খরচ হবে তা বলা মুশকিল। কিন্তু  ড্রপশিপিং বিজনেস করার জন্য কিছু ব্যয় নির্ধারণ। যেগুলো একটি  ড্রপশিপিং বিজনেস করার জন্য আপনার করতে হবে।

  • অনলাইন স্টোরঃ একটি অনলাইন স্টোর সেটাপ করার জন্য মাসে আনুমানিক ভাবে ২৯ ডলার খরচ পরে। আপনার একটি ইকমার্স প্ল্যাটফর্ম লাগবে বা আপনার অনলাইন স্টোরেরে জন্য হোস্টিং এবং ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য কাউকে লাগবে। আমরা রেকমেন্ড করবো শপিফাই এ অনলাইন স্টোর শুরু করারা জন্য। আপনি অনেক এডভান্স এবং ভালো কিছু ফিচার পাবেন শপিফাইয়ে।

  • ডোমেইন নেমঃ আনুমানিক হিসাব করে ধরা যায় ৫ডলার থেকে ২০ ডলার খরচ পরে। আপনি নিজের ডোমেইন ছাড়া কাস্টমারদের বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন না। প্রথমে এমন ডমেইন নেইম খুঁজে বের করতে হবে যেটা আপনার ব্র্যান্ড এর সাথে যায়।

  • অনলাইন এডভার্টাইজিংঃ আপনার অনলাইন এডভার্টাইজিং এ আনুমানিক ভাবে ৫০০ ডলার খরচ পড়বে। ই কমার্স বিজনেস অবশ্যই অর্গানিক ভাবে কাস্টমার খুঁজে নিবে সেটা হোক তাদের কন্টেন্ট মার্কেটিং দিয়ে বা এসিও দিয়ে। যাইহোক প্রোডাক্ট বেইজড বিজনেসের জন্য  এডভার্টাইজনিং অনেক গুরত্বপূর্ন। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, ডিসপ্লে এডস, সোশ্যাল মিডিয়া এডস এবং মোবাইল অ্যাডস এগুলো সবচেয়ে কমন মাধ্যম।

কিভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস করে আয় করা যায়?

  • আপনার প্রথমে টার্গেট অডিয়েন্স রিসার্চ করতে হবে।
  • সঠিক নিশ সিলেক্ট করতে হবে।
  • সঠিক প্রোডাক্ট নিতে হবে।
  • কোন ড্রপশিপিং সাপ্লায়ার এর সাথে কাজ করবেন তা ডিসাইড করতে হবে। 
  • কাস্টমার যাতে সেটিস্ফাই থাকে সেদিক নিশ্চিত করতে হবে।

সঠিক সাপ্লায়ার অনলাইনে খুঁজে নেয়া খুবই জরুরি অনলাইনে আপনার সাকসেস এর জন্য। আপনার প্রয়োজন এমন কোম্পানি যা নির্ভরযোগ্য, কার্যকর এবং দক্ষ।

ড্রপশিপিং নিয়ে আরো কিছু টিপস – 

১। ড্রপশিপিং এর জন্যে যখন কোন ই-কমার্স সাইট তৈরী করতে যাবেন ,চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব আপনার ওয়েব সাইটটিকে আকর্ষনীয় এবং প্রফেশনাল ওয়েব সাইট এর লুক দেয়ার। অন্য সব শপিং প্লাটফর্ম থেকে যেন কোন অংশে কম মনে না হয়। সেক্ষত্রে জনপ্রিয় কিছু শপিং প্লাটফর্মের ওয়েব সাইট গুলো নিয়ে রিসার্চ করতে পারেন। এর ডিজাইন, ডোমেইন এবং হোস্টিং যেন সব কিছু পারফেক্ট থাকে। 

২। ড্রপ শিপিং বিজনেসের ক্ষেত্রে আপনার মূল কাজ হল মার্কেটিং করা। অর্থাৎ আপনি যে ধরনের পন্য সামগ্রী নিয়ে কাজ করতে চান। সেসব পন্য সম্পর্কে গ্রাহকের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। এমন ভাবে মার্কেটিং করবেন গ্রাহক যেন বুঝতেই না পারে পন্যটি আপনার নিজের না। সুতরাং সঠিক মার্কেটিং স্ট্রেটেজি ব্যবহার করে গ্রাহকের কাছে আপনার বিশ্বস্ততা প্রমান করতে হবে। সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনাকে সমান ভাবে বিস্তার করতে হবে এবং বেশী বেশি প্রমোট করতে হবে। 

৩। প্রডাক্ট সেলের জন্যে যে সাপ্লাইয়ারকে আপনি বাছাই করে নেবেন এ আগে অবশ্যই সেই সাপ্লাইয়রের পন্যেরর গুনগত মান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন। কেননা পন্যের মানের উপর আপনার ই-কমার্স সাইটের রেপুটেশন নির্ভর করবে। টাই প্রডাক্ট সম্পর্কে সম্পূর্ন যাচাই বাছাই করুন। সম্ভব হলে ২-১ টি প্রডাক্ট এর স্যাম্পল নিজে অর্ডার করে যাচাই করে নিন। অনলাইনে যা খুশী টাই কাস্টমারের কাছে সেল করে দিয়ে প্রথম বার পার হয়ে গেলেও আপনার ই-কর্মাস সাইটের সুনাম যদি নষ্ট হয় আপনি কোন রিপিটেড কাস্টমার পাবেন না। ফলস্রুতি তে আপনার সাইটের সেল কমে যাবে। সুতরাং বিশ্বাস্ত সাপ্লাইয়ার খুজে বের করা আপনার অন্যতম দায়ীত্বের মধ্যে পরে। 

 ৪। আপনার ই-কমার্স সাইটে যে সব ছবি ব্যবহার করবেন চেষ্টা করবেন সেগুলো যেন কাস্টমারের চোখে গ্রহন যোগ্যতা লাভ করবে এমন ছবি ব্যবহার করা হয়। ছবির কোয়ালিটি যেন আকর্ষনীয় হয়।পন্যের ছবি ই মূলত পন্যের প্রতি মূল আগ্রহ সৃষ্টি করে। 

শেষ কথা

বড় ইনভেস্টমেন্ট এর  অভাবে বিজনেস করতে পারছিনা এটা এখন শুধু মাত্র একটি অজুহাত মাত্র। ড্রপশিপিং বিজনেস করে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব । কম ইনভেস্টমেন্টে , কম পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়া যাবে এমন একটি বিজনেস ড্রপশিপিং। সুতরাং আপনার কাছে কেবল একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই আপনি আজকে থেকেই শুরু করতে পারেন আপনার অনলাইন বিজনেস। তাই বেকারত্ব থেকে নিজেকে মুক্তি দিতে চাইলে ঘরে বসে না থেকে আজ থেকেই শুরু করুন ড্রপশিপিং বিজনেস নিয়ে পড়াশোনা এবং উপরক্ত টিপস গুলো মাথায় রেখে নেমে পড়ুন বিজনেসে। 

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন
Marketing

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং গাইডলাইন

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর এক অন্যতম পাওয়ারফুল টুলস। ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে মার্কেটিং যত সহজ হয়েছে, কম্পিটিশন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিউজ

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন
Marketing

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন?

আপনার বিজনেস নিশ কি হবে? কি নিয়ে কাজ করবেন? বা কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিই এপ্লাই করবেন। সব কিছু সিলেক্ট করার আগে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্ট হচ্ছে কম্পিটিটর