লেখালেখি যদি আপনার নেশা অথবা পেশা হয়ে থাকে আপনি আপনার সেই স্কিলকে কাজে লাগিয়ে উপার্জন করতে পারেন খুব সহজেই। বর্তমানে কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার অসাধারণ সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কন্টেন্ট রাইটিং সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। অনলাইন ভিত্তিক কাজের ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় কিছু শব্দের মাঝে কন্টেন্ট রাইটিং অন্যতম। আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে আপনার লেখার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে একটি সাকসেসফুল ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।
কিভাবে কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব অথবা কন্টেন্ট রাইটিং ই বা কি এসব বিষয় সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন তবে আজকের লেখাটি আপনাদেরই জন্য। আজকের লেখার মাধ্যমে আপনাদেরকে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব কন্টেন্ট রাইটিং সম্পর্কে এবং আপনি কিভাবে এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিং বলতে কি বুঝায়?
কন্টেন্ট হচ্ছে কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য, ঘটনা, অথবা অভিজ্ঞতাগুলোকে খুব সাবলীল ভাবে অডিয়েন্সের কাছে তুলে ধরা। আর সেটি প্রকাশ করা যায় বিভিন্ন ধরনের লেখা, অডিও, ভিডিও, অথবা ছবির মাধ্যমে। আর কন্টেন্ট রাইটিং হচ্ছে কোন বিষয়বস্তুর উপরে আপনার ধারণা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে লেখার মাধ্যমে তা অডিয়েন্সদের কাছে তুলে ধরা।
বর্তমানে এই কন্টেন্ট রাইটিং এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বিভিন্ন সেক্টরে এর কাজের পরিধি দিন দিন বেড়ে ওঠা। বর্তমানে যেকোনো ধরনের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অথবা কোম্পানিগুলো তাদের প্রোডাক্ট সেল বা প্রমোট করার ক্ষেত্রে কন্টেন্ট ব্যবহার করে থাকে। তাদের যেকোন ধরনের প্রোডাক্ট সম্পর্কে কাস্টমারদের ধারণা প্রদান করার জন্য তারা আর্টিকেল তৈরি করে থাকে। যা কিনা কাস্টমারদেরকে খুব সহজে সেই পণ্য সম্পর্কে ধারণা দিতে সাহায্য করে।
কোন কোন উপায়ে কন্টেন্ট রাইটিং করে ক্যারিয়ার গড়বেন?
বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কন্টেন্ট রাইটিং এর ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব। তাহলে চলুন জেনে আসা যাক এমন বেশ কিছু কন্টেন্ট রাইটিং সম্পর্কে যার উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।
কপিরাইটিং :
বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য সম্পর্কে কাস্টমারদেরকে ধারণা প্রদান করার জন্য কন্টেন্ট রাইটার খুঁজে থাকে। এই ধরনের কন্টেন্ট রাইটিং এর মূল বিষয় হচ্ছে প্রচার প্রচারণা করা। লেখার মাধ্যমে কোন কোম্পানি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পণ্য সম্পর্কে কাস্টমারদেরকে ধারণা প্রদান করা। তাই আপনি যদি লেখালেখিতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে এই কপিরাইটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।
ব্লগিং :
ব্লগিং হচ্ছে মূলত কোন একটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আর্টিকেল লেখা। এ ধরনের আর্টিকেল হতে পারে অনেক তথ্যবহুল, অল্প পরিমাণ ধারণা অথবা অভিজ্ঞতার আলোকে। তাই এই আর্টিকেলগুলো লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কিছুটা রিসার্চ করে তৈরি করতে হবে। এ ধরনের আর্টিকেল যেকোনো প্লাটফর্মেই পাওয়া যায়। যেমন : গুগল কিংবা অন্যান্য যে কোন প্লাটফর্মের সার্চ অপশনে আপনি যখন কোন বিষয়ে সার্চ করে থাকেন, তখন সেই রিলেটেড যে আর্টিকেলগুলো আপনাকে দেখানো হয় এটি মূলত তাই। তাই বিভিন্ন ব্লগিং প্লাটফর্মে আপনি আপনার ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।
টেকনিক্যাল রাইটিং :
আমরা প্রায়ই আমাদের পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন ধরনের টপিক সম্পর্কে ধারণা পেতে গুগলে সার্চ করি। এই পড়াশোনা রিলেটেড অথবা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক ধারণা প্রদান করে যেসব আর্টিকেল তাই টেকনিক্যাল রাইটিং। আপনি যদি নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তবে টেকনিক্যাল রাইটিং হতে পারে আপনার ক্যারিয়ার গড়ে তোলার অন্য একটি মাধ্যম। আপনি যেকোন বিষয়ে দক্ষ হলে লেখালেখির প্রতি ভালোলাগাকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই আয়ের একটি মাধ্যম তৈরি করতে পারেন। এজন্য আজই আপনার দক্ষতা অনুযায়ী প্ল্যাটফর্ম খুঁজে লেখালেখি শুরু করুন।
সোশ্যাল মিডিয়া রাইটিং :
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই অসংখ্য মানুষের কাছে যেকোনো বিষয় সম্পর্কে তথ্য, ধারণা অথবা অভিজ্ঞতা তুলে ধরা সম্ভব। এ কারণে সোশ্যাল মিডিয়া জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বেশি। ফেইসবুক, টুইটার, লিংকড-ইন এর মত আরো নানা ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট পোস্ট করতে হয়। তাই বর্তমানে এসব প্লাটফর্মে কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনি যদি আপনার ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে কন্টেন্ট রাইটিংকে বেছে থাকেন, তবে সেক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া রাইটিং আপনাকে অনেকাংশে সাহায্য করবে।
নিউজ রাইটিং :
বর্তমানে বিভিন্ন নিউজ আমরা খুব সহজেই অনলাইনে পেয়ে থাকি। আর এইসব নিউজ আর্টিকেল লেখার জন্য কন্টেন্ট রাইটারদের প্রয়োজন হয়। তাই বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল রাইটার হায়ার করে থাকে তাদের নিউজ লেখার জন্য। যেহেতু প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের ছোট আর্টিকেল, সমসাময়িক ঘটনা, বিনোদন, খেলাধুলা অথবা লাইফ স্টাইল সহ নানা বিষয় সম্পর্কে আর্টিকেল লিখতে হয়। এই কারণেই বিভিন্ন নিউজ পেপার, টিভি চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়া বা ম্যাগাজিনে কনটেন্ট রাইটারদের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। তাই আপনি আপনার রাইটিং ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এ ধরনের বিভিন্ন প্লাটফর্মের সাথে সংযুক্ত হতে পারেন।
ফিচার রাইটিং :
আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন একটি বিষয়কে বেছে নিয়ে সে সম্পর্কে যা লিখছেন তাই হচ্ছে ফিচার রাইটিং। ফিচার রাইটিং সাধারণত নন ফিকশন লেখার মত হয়ে থাকে। লেখাটি হতে পারে যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট থেকে শুরু করে ভ্রমণ অভিজ্ঞতার মত নানা ধরনের বিষয় সম্পর্কে। অর্থাৎ আপনার কন্টেন্টের একটি বিষয় থাকতে হবে যাকে কেন্দ্র করে আপনি অডিয়েন্সদের কাছে সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবেন। বিভিন্ন ধরনের নিউজ পেপার, ম্যাগাজিন ও ওয়েবসাইট গুলোতে ফিচার রাইটিং অনেক বেশি সারা ফেলেছে। তাই এটি আপনার ক্যারিয়ার গড়ার অন্য একটি পন্থা হতে পারে।
ক্রিয়েটিভ রাইটিং :
একজন লেখক যখন তার নিজস্ব ক্রিয়েটিভ থিঙ্কিং কে কাজে লাগিয়ে কোন বিষয় সম্পর্কে লিখে থাকে তাই ই ক্রিয়েটিভ রাইটিং। এ ধরনের লেখায় রাইটারের নিজস্ব সক্রিয়তা রয়েছে। আপনি চাইলেই যে কোন বিষয় সম্পর্কে আপনার ক্রিয়েটিভ থিঙ্কিং এর মাধ্যমে যেকোনো কিছু অডিয়েন্সদের সামনে তুলে ধরতে পারেন। বর্তমানে এই ধরনের রাইটিং এর চাহিদা তুলনামূলকভাবে বাড়ছে । তাই লেখালেখির ভালো লাগাকে এভাবেই কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই আপনার ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।