সোশ্যাল মিডিয়া-বর্তমানের সবচেয়ে একটিভ, ডায়নামিক আর এনগেজড প্লাটফর্ম! সেটা ফেসবুক হোক কিংবা ইউটিউব – ইন্সটাগ্রাম, মার্কেটিং ও ট্রাফিক গ্যাদার করার জন্য এগুলো মোস্ট ইফেক্টিভ মাধ্যম। যেকোনো ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর কনভার্শন বৃদ্ধি করতে সোশ্যাল মিডিয়ার হিউজ এই ল্যান্ডস্কেপ এর থেকে কার্যকর সমাধান খুব কম আছে।
আপনি জানলে অবাক হবেন, ফেসবুকে প্রতি মাসে ২.৮ বিলিয়ন একটিভ ইউজার থাকেন। আর এর মধ্যে ৬৭ শতাংশ ই অনলাইন এ শপিং করে। আর ইন্সটাগ্রাম ও ইউটিউব ও পিছিয়ে নেই। ১-২ বিলিয়ন একটিভ ইউজার এর ৫৯ ভাগই অনলাইন শপিং করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন অনলাইন প্লাটফর্মে কি পরিমান অডিয়েন্স আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। তবে অডিয়েন্স এর পাশাপাশি, কম্পিটিশন ও আকাশচুম্বী। তাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে কনভার্শন বৃদ্ধি করতে এপ্লাই করতে হবে কিছু ইউনিক স্ট্র্যাটেজি। যেগুলো আপনার ওয়েবসাইট কে অন্যদের থেকে আলাদা করবে।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে কনভার্শন বৃদ্ধি :
সোশ্যাল মিডিয়ার হিউজ অডিয়েন্স কে আপনার কাস্টমার হিসেবে দেখতে চাইলে ও এই কনভার্শন বৃদ্ধি করতে চাইলে, পাঁচটি বিশেষ স্ট্রাটেজি মেইনটেইন করার চেষ্টা করুন –
১. কনসিস্টেন্সি এবং অ্যাপিল এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল অপ্টিমাইজ করুন:
প্রথমেই এটা নিশ্চিত করুন যে, আপনার ই-কমার্স ব্র্যান্ড আপনার সব গুলো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম জুড়ে একটি সিস্টেমেটিক উপস্থিতি বজায় রাখে৷ অর্থাৎ নিয়মিত অডিয়েন্স এর সাথে কানেক্টেড থাকে। তাছাড়া ব্র্যান্ডের রিকগনিশন বাড়াতে একটি ইউনিফাইড প্রোফাইল পিকচার, কভার ফটো এবং বায়ো দিয়ে প্রোফাইল অপটিমাইজ করুন।
আপনার অডিয়েন্সদের পছন্দ অপছন্দ বোঝার জন্য লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারের মতো এনগেজমেন্ট মেট্রিক গুলো ইউজ করুন৷ কারণ, ইনস্টাগ্রাম ইনসাইটস বা ফেসবুক অ্যানালিটিক্সের মতো প্ল্যাটফর্ম গুলো ই কিন্তু অনেক মূল্যবান ডেটা প্রোভাইড করে।
বিভিন্ন কনটেন্ট স্টাইল, পোস্টিং টাইম এবং ক্যাপশন সহ বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে A/B টেস্টিং করার ট্রাই করুন। এই ডেটা এনালাইসিস আপনাকে হিউজ অডিয়েন্স আনতে এবং কনটেন্ট ম্যানেজ করতে গাইড করবে।
২. ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কে স্ট্র্যাটেজিকালি ব্যবহার করুন:
এমন কিছু সোশ্যাল মিডিয়ায় ইনফ্লুয়েন্সার দের টার্গেট করুন যাদের কনটেন্ট এর সাথে আপনার ব্রান্ড প্রোডাক্ট গুলো রিলেট করে। এক্ষেত্রে সোশ্যাল ব্লেড বা হুটসুইটের মতো টুলস গুলো একজন ইনফ্লুয়েন্সার এর এনগেজমেন্ট এবং ক্লারিটি মূল্যায়নে বেশ হেল্পফুল হতে পারে।
আপনি প্রতিটি জন্য ইউনিক এবং একটি ট্র্যাকযোগ্য ডিসকাউন্ট কোড ফিক্স করে রাখতে পারেন। এবং তাদের কে বিভিন্য পণ্য প্লেসমেন্ট বা স্পনসর করার জন্য কিংবা পেইড পোস্টের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন। এই স্ট্রাটেজি আপনাকে কনভার্শন বৃদ্ধি করতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে।
তাছাড়া আপনার হায়ার করা ইনফ্লুয়েন্সার এর রিচ কতদূর, তাকে হায়ার করার পর ওয়েবসাইট এ ট্রাফিক কতটুকু বেড়েছে এটা ট্র্যাক করুন। রেগুলারলি ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর মাধ্যমে কনভার্শন বৃদ্ধি এর হার মনিটাইজ করুন।
৩. Shoppable পোস্ট এবং সোশ্যাল কমার্স ইমপ্লিমেন্ট করুন:
আপনার ব্যবহারকারীদের সরাসরি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলি থেকে কেনাকাটা করতে দেওয়ার জন্য Instagram এবং Facebook এর মতো প্ল্যাটফর্ম গুলোতে সোশ্যাল কমার্স টুলস গুলো ইউজ করুন৷ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপনার ওয়েবসাইটের ক্লিক-থ্রু রেটগুলো অপটিমাইজেশন করুন।
এছাড়াও জনপ্রিয় প্রোডাক্ট গুলো সনাক্ত করতে ডেটা বিশ্লেষণ করে এবং সেই অনুযায়ী আপনার সোশ্যাল কমার্স কৌশল অপ্টিমাইজ করুন। যারা আপনার shoppable পোস্টের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করেছেন কিন্তু রূপান্তর করেননি তাদের জন্য রিটার্গেটিং বিজ্ঞাপনের ট্রিকস ট্রাই করুন। এটি সম্ভাব্য গ্রাহকদের পুনরায় ইন্টারঅ্যাক্ট করে কনভার্শন বৃদ্ধি তে উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমিকা রাখতে পারে।
৪. সোশ্যাল মিডিয়ায় টার্গেটেড অ্যাড ক্যাম্পেইন চালু করুন :
সোশ্যাল মিডিয়ার এডভার্টাইজিং প্ল্যাটফর্ম গুলো র দ্বারা পাওয়ারফুল টার্গেটিং অপশন গুলো ইউজ করুন৷ অডিয়েন্স, ইন্টারেস্ট এবং অনলাইন বিহেভিয়ার এর উপর ভিত্তি করে আপনার দর্শকদের ডিফাইন করুন এবং আলাদা করুন।
এপর কনভার্সন ট্র্যাকিং টুল ব্যবহার করে নিয়মিতভাবে আপনার এডভার্টাইজিং প্রচারণার কর্মক্ষমতা এনালাইসিস করুন।
Facebook Ad Manager-এর মতো প্ল্যাটফর্ম গুলো ক্লিক-থ্রু রেট, কনভার্শন বৃদ্ধি এবং প্রতি কনভেনশন এর খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত ইনসাইট প্রোভাইড করে। তাই আপনার অতিরিক্ত ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না।
আপনার বিজ্ঞাপন এর ক্রিয়েটিভিটি, কপি, এবং টার্গেট এর মানদণ্ড যাচাই করাট জন্য A/B টেস্টিং এপ্লাই করুন। এছাড়াও স্ট্যাটিস্টিকাল সিগনিফিক্যান্স টুলস ইউজ করে আপনার বিজ্ঞাপন এর রিলায়েবলিটি ও ক্রেডিবিলিটি নিশ্চিত করুন।
৫. ইউজার জেনেরেটেড কনটেন্ট এবং সোশ্যাল প্রুফ কে প্রায়োরিটি দিন:
গ্রাহকদের রিভিউ, টেস্টিমনি এবং ইউজার জেনেরেটেড কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আপনার পণ্যের সাথে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে উৎসাহিত করুন এবং আপনার সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলিতে এই কনটেন্ট গুলো পাবলিশ প্রদর্শন করুন। যেসব গ্রাহকরা সোশ্যাল প্রুফ, রিভিউ দিতে পছন্দ করে, তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে এনকারেজ করুন। অফার কিংবা ডিসকাউন্ট এর মাধ্যমে এসব কাস্টমার কে রেগুলার কাস্টমার এ কনভার্ট করুন।
ইউজার বা কাস্টমার এর টেস্টিমনি, বা ইউজ করার ছবি, লাইভ রিভিউ এগুলো কিন্তু আপনার কনভার্শন বৃদ্ধি করতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে। কারণ, অনলাইন প্লাটফর্ম এত বেশি কম্পিটিটিভ আর বিস্তৃত হয়েছে যে ক্রেডিবিলিটি ছাড়া উঠে দাড়ানো সম্ভব নয়।
শেষ কথা,
মনে রাখবেন, সোশ্যাল মিডিয়া হল অসংখ্য অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। আর অপনার মত লক্ষ লক্ষ ই-কমার্স উদ্দোক্তা রয়েছে সেইম প্লাটফর্মে কম্পিট করার জন্য। তাই, আপনি যদি এদের মধ্যে থেকে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কে কাস্টমারের রুপান্তর করতে চান ও কনভার্শন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে একটি সিস্টেমিক ওয়ে তে আগান।
ডেটা-ড্রাইভেন ইনসাইট এর উপর ভিত্তি করে আপনার স্ট্র্যাটেজি গুলো ধারাবাহিকভাবে পর্যবেক্ষণ করুন এবং নতুনত্বের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কনভার্শন বৃদ্ধি করার জার্নি টা নিঃসন্দেহে সাকসেসফুল হবে।