হাজারো হাজারো পণ্য বা সার্ভিসের মধ্যে ক্রেতা কেন আপনার ই-কমার্স সাইট থেকে পন্য বা সেবা ক্রয় করবে তা বহুলাংশে নির্ভর করে আপনার ই-কমার্স ব্র্যান্ডিং এর উপর। কম্পিটিটর থেকে আপনাকে এগিয়ে রাখতে ও ক্রেতাদের আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে ই-কমার্স বিজনেসে ব্র্যান্ডিং অপরিহার্য।
ব্র্যান্ড কথাটার সাথে আমরা সবাই কমবেশী পরিচিত। ব্র্যান্ড হচ্ছে আপনার কোম্পানির পরিচয়। বিজনেসে ব্র্যান্ডিং হল যা আপনাকে একটি খ্যাতি বা পরিচিতি দেয় এবং আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষে আপনাকে পৌঁছে দেয়।
Cambridge Dictionary defines branding as “the act of giving a company a particular design or symbol in order to advertise its products and services.”
ব্র্যান্ড ব্যবসায়ের জন্য গূরুত্বপুর্ণ অংশ। ব্র্যান্ডিং এর গুরুত্বের কারণে, ব্যবসা এবং প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকেই একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড তৈরি করা উচিত যাতে তারা বৃদ্ধির সাথে সাথে এটিকে ধারাবাহিকভাবে বজায় রাখতে পারে।বর্তমানে ই-কমার্স বিজনেস ব্যাপক জনপ্রিয়। ই-কমার্স বিজনেস দিন দিন বেড়েই চলছে, যা আরো বাড়বে। তাই ই-কমার্স ব্র্যান্ডিং ও অনেক জরুরী। কেন ই-কমার্স ব্র্যান্ডিং জরুরী তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
ই-কমার্স ব্র্যান্ডিং একটি পরিচয় বহন করে
ই-কমার্স বিজনেসে ব্র্যান্ডিং হলে তা আলাদা পরিচয় বহন করে। ব্র্যান্ড আপনার পরিচয় তুলে ধরে সবার কাছে। এটি ই-কমার্স বিজনেসের নৈতিকতা, মূল্যবোধ এবং উদ্দেশ্য সংজ্ঞায়িত বা বিশ্লেষন করে। উচ্চারনে সহজবোধ্যতা, চিনতে এবং মনে রাখা সহজ ব্রান্ডের নাম এমন হওয়া উচিত। এটি ই-কমার্সে প্রোডাক্ট বা প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজস্ব জায়গা তৈরি করে।
![ই-কমার্স ব্রান্ডিং](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/06/ই-কমার্স-বিজনেস-1024x683.png)
ব্র্যান্ডিং হলে অন্যান্য বিজনেস থেকে আপনার বিজনেস জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। একটি ব্যবসা যেটির সত্যিই কোনো সমন্বিত ব্র্যান্ডিং নেই তা কারো মনে খুব বেশিদিন থাকবে না। সর্বপরি ক্রেতারা যা জানে না, তারা সেটা ক্রয় করে না।
ব্র্যান্ডিং বিশ্বাস গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে
ই-কমার্স বিজনেসে ব্র্যান্ডিং এর মাধ্যমে কোম্পানির পেশাদারিত্ব প্রকাশ পায়। ব্র্যান্ডিং প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের বিশ্বাস গরে তুলতে সাহায্য করে ও কাস্টমারদের প্রতি তাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি প্রকাশ পায়। ফলে কোম্পানির প্রতি ক্রেতাদের আস্থা তৈরি হয় এবং নিয়মিত গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
ভালো ইমেজ তৈরি করে
ভালো ইমেজ আছে এমন বিজনেস প্রতিষ্ঠান অন্যান্য বিজনেস প্রতিষ্ঠান থেকে বেশ কিছু বেশি সুবিধা ভোগ করে। তারা তাদের সদিচ্ছার মাধ্যমে আরো বেশি কাষ্টমারদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়।
![ই-কমার্স বিজনেসে ব্র্যান্ডিং](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/06/ই-কমার্স-বিজনেসে-ব্র্যান্ডিং-1024x683.png)
ব্র্যান্ড ইমেজ ২/১ দিনে তৈরি হয়না । এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। প্রতিষ্ঠানের ইমেজ এবং গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখতে ব্যাংক খাতে ব্র্যান্ডিংয়ের বিকল্প নেই। আর এই ব্র্যান্ডি ব্র্যান্ডিং ই প্রতিষ্ঠানের ইমেজ তৈরি করে।
আপনি চাইলে আমাদের ই-কমার্স বিজনেস শুরু করুন – স্টেপ বাই স্টেপ কমপ্লিট গাইড এই ব্লগটি পড়ে আস্তে পারেন।
রিলেশনশিপ বিল্ডআপ
ই-কমার্স বিজনেসে ব্র্যান্ডিং এর মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে একটা রিলেশনশীপ বিল্ডআপ হয়। কোন পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং ভালো হলে ক্রেতাদের আস্থা তৈরি হয়। এর ফলে ক্রেতা বারবার আসে। উদাহরন স্বরুপ বলা যায় যারা বাটা কিংবা এপেক্স জুতো যারা ব্যবহার করে তারা জুতো কিনতে গেলে তাদের প্রথম চয়েজ কিন্তু বাটা কিংবা এপেক্স কেননা ব্রান্ডের মাধ্যমে তাদের রিলেশন বিল্ডআপ হয়েছে।
বিক্রি বৃদ্ধিতে সহায়তা
ই-কমার্স বিজনেসে ব্র্যান্ডিং ফলে বিক্রয় বৃদ্ধি হয়। ব্র্যান্ডিং মার্কেটিং কৌশলগুলি কীভাবে কাজ করে তার উপর ভিত্তি করে আপনার আপনার বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। ব্র্যান্ডিং করার মাধ্যমে আমাদের পন্য বা সেবাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরি এর ফলে মানুষের মধ্যে পন্য সম্পর্কে ধারনা তৈরি হয়। যা বিক্রি বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করে। এছাড়া ও ব্রান্ডিং এর ফলে ই-কমার্স থেকে ক্রেতা পন্য ক্রয় করতে আস্থা খুঁজে পায় যা ক্রেতাকে পন্য ক্রয়ে উৎসাহিত করে । কেননা ব্র্যান্ড এর মাধ্যমে কোম্পানির পুরো সত্বা প্রকাশ পায়।
লয়্যালিটি
একটি ভালো ব্র্যান্ডিং গ্রাহকের লয়্যালিটির সহিত পরিষেবা প্রদান করে। ফলে এসব গ্রাহকরা ভালো এবং খারাপ সময়ে আপনাকে সাফোর্ট করবে। তারা তাদের পরিচিত লোকেদের কাছে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দেবে।তাদের এই প্রচার আপনার কোম্পানির সাথে নতুন লোকদের পরিচয় করিয়ে দেবে। যেমন, একজন ই-কমার্স থেকে পন্য ক্রয় করলে এবং তা ভাল হলে সোশ্যাল প্লাটফর্মে শেয়ার করে পজেটিভ রিভিউ দিয়ে এতে করে কোম্পানির প্রচার হয়। আর প্রচারই প্রসার। একজন ক্রেতা যখন প্রচার করে তখন তা অন্য গ্রাহক রা ভালো ভাবে গ্রহন করে ।
গ্রাহকরা আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানলে তারা আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করবে। ব্যতিক্রমী গ্রাহক সেবা, পণ্য/পরিষেবার অভিজ্ঞতা এবং সামাজিক নেটওয়ার্কে ইতিবাচক অনলাইন যোগাযোগ ও এই বিশ্বস্থতা তৈরিতে সহায়তা করে। আর যখন আপনি ই-কমার্স বিজনেসে বিশ্বস্থতা অর্জন করবেন তখন আপনার গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং রিভিনিউ আসবে।
ভালো মানের ব্র্যান্ড কখনোই হারিয়ে যায় না বরং বিকশিত হয়
প্রতি বছর বিপুল পরিমান ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। মারাত্বক অর্থনৈতিক প্রভাবে ও একটা ভালো ব্র্যান্ড টিকে থাকে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে কাষ্টমারদের চাহিদার কথা চিন্তা পন্য নতুন রুপ দেয় ফলে দিন দিন একটা ভালো ব্র্যান্ড আর বেশি বিকশিত হয়।
![ই-কমার্স ব্র্যান্ডিং](https://uddoktahoi.com/wp-content/uploads/2022/06/ই-কমার্স-1024x683.png)
তারা তাদের পন্যের গুনগত মান ঠিক রেখে তাদের গ্রাহকদের উন্নত পরিষেবা প্রদান করে।
ব্র্যান্ড আপনাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে
বিজনেসে ব্র্যান্ড আপনাকে আপনার পরিচয় প্রদান করছে এবং গ্রাহকদের বিশ্বস্থতা তৈরিতে সাহায্য করছে। এবং কাষ্টমার দ্বারাই আবার নতুন নতুন কাষ্টমার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাষ্টমারের সন্তুষ্টি অর্জনের কারনে তারা বারবার ফিরে আসছে এবং বিজনেসের রিভিনিউ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে করে পর্যায়ক্রমে বিজনেস তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন পূরন করতে সক্ষম হয়।
পরিশেষে বলা যায়, কাঙ্ক্ষিত সাফল্যে ই-কমার্স বিজনেসে ব্র্যান্ডিং এর গুরুত্ব অনেক। তাই প্রতিটা উদ্যোক্তার ব্র্যান্ডিতে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।
পুরো লেখাটি কেমন লাগলো তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে সত্যিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
যদি মনে হয় লেখাটি নতুন উদ্যোক্তাদের সাহায্য করবে পরবর্তী দিক নির্দেশনা পেতে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।
এই ধরনের আরও অনেক ইনফো কনটেন্ট এর জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।