PPC, বা পে-পার-ক্লিক হল একটা ডিজিটাল মার্কেটিং মডেল। এখানে বিজ্ঞাপনদাতারা প্রতিবার তাদের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার সময় একটি ফি প্রোভাইড করে। অনলাইন অ্যাডস বা বিজ্ঞাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলিমেন্ট এই পিপিসি। এই স্ট্রাটেজি টা ব্র্যান্ডের ভিজিবিলিটি এবং লিড জেনারেশনে উল্লেখযোগ্য ভাবে ডিরেক্ট অবদান রাখে। যদিও পিপিসি সাধারণত Google অ্যাডস এর মতো প্ল্যাটফর্মে পেইড সার্চ অ্যডস এর সাথে কানেক্টেড। কিন্তু এখন এটা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন এবং ভিসিবল বিজ্ঞাপনের মতো বিভিন্ন চ্যানেলের ক্ষেত্রেও অ্যাপ্লিকেবল।
আর এই পিপিসর সবচেয়ে বড় অবদান লিঙ্ক-বিল্ডিং এ! SEO ছাড়া যেখানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিবর্তন কল্পনা করা সম্ভব না, সেখানে এসইও এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা পার্ট হচ্ছে লিঙ্ক-বিল্ডিং। আর পাওয়ারফুল লিঙ্ক-বিল্ডিং এর জন্য PPC কিভাবে কাজ করে, পিপিসি এর বেসিক বিষয় নিয়েই আজকের আলোচনা।
পিপিসির মূল বিষয়:
পিপিসি মুলত একটা বিডিং সিস্টেমে কাজ করে, যেখানে বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের টার্গেটেড অডিয়েন্স কে আকর্ষণ করার জন্য রিলেটেবল কীওয়ার্ড গুলোতে বিড করে। যখন ইউজাররা এই কীওয়ার্ড গুলো সার্চ করে বা এই কি- ওয়ার্ড আছে এমন ওয়েবসাইট গুলোতে ভিজিট করতে যান, তখন এই বিজ্ঞাপন গুলো শো করা হয়৷
বিজ্ঞাপনদাতারা শুধুমাত্র তখনই টাকা পে করে যখন ইউজার রা তাদের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন। মোট কথা পিপিসি হল একটা পারফর্মেন্স বেইসড মডেল।
লিঙ্ক-বিল্ডিংয়ের শক্তি:
লিঙ্ক-বিল্ডিং হল এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন) এর একটি ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট। এটা একটা ওয়েবসাইটের অথোরিটি এবং সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিং কে অ্যাফেক্ট করে। হাই প্রোফাইল বা হাই অথোরিটি এপ্রুভ সাইটগুলি থেকে হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিঙ্ক গুলো সার্চ ইঞ্জিন গুলোকে সংকেত দেয় যে আপনার ওয়েবসাইট টি রিলেটেবল, এবং ক্রেডিবল। এইভাবে লিংক বিল্ডিং আপনার কি ওয়ার্ড এর সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট ইম্প্রুভ করে৷
পাওয়ারফুল লিঙ্ক-বিল্ডিং এ PPC:
শক্তিশালী কানেকশন তৈরি করা, অসংখ্য ব্যাক লিংক করা এবং সর্বোপরি লিঙ্ক-বিল্ডিং এ PPC যেভাবে কাজ করে –
১৷ ব্র্যান্ড এক্সপোজার এবং ক্রেডিবিলিটি:
পিপিসি ক্যাম্পেইন ব্র্যান্ড এক্সপোজার বাড়াতে সরাসরি সাহায্য করে। আপনার ওয়েবসাইটে আরও বেশি ইউজার ড্রাইভ করতে হেল্প করে। মূলত ইউজাররা ভ্যালুয়েবল এবং ইন্টারেস্টিং জিনিস গুলো বেশি রিলেটেড ফিল করে এবং এগুলো শেয়ার করতে আগ্রহী হয়। ফলে এগুলো আপনার ওয়েবসাইট এ অর্গানিক ট্রাফিক বা ভিজিট নিয়ে আসে এবং ন্যাচারাল লিঙ্ক-বিল্ডিং এ সাহায্য করে।
২। ল্যান্ডিং পেইজের কোয়ালিটিতে লিঙ্ক-বিল্ডিং:
PPC ইউজারদের ডিরেক্ট করে বিভিন্ন ল্যান্ডিং পেইজের কাছে নিয়ে আসে। অর্থাৎ আপনি যখন একটা এড দেখেন এবং ক্লিক করেন তখন ওই বিজ্ঞাপনটা আপনাকে একা পেইজে নিয়ে আসে। ফলো ওই পেইজটার ভিজিবিলিটি ও কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট হয়।
ভিজিবিলিটি বৃদ্ধির কারণে সার্চ ইঞ্জিন এর রেজাল্টেও ওয়েবসাইট টা এগিয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে গুগল নিজেই ওই পেজ কে রিকগনাইজ করে বা দ্রুত আইডেন্টিফাই করে। আলটিমেটলি ওই পেইজ টা হাই কোয়ালিটি ল্যান্ডিং পেইজ হিসেবে ডিটেক্ট হয় এবং এর লিঙ্ক-বিল্ডিং আরো স্ট্রং হয়।
৩। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডস:
একটা সময়ে PPC গুলো শুধু মাত্র ওয়েবসাইট ও গুগলের সার্চ ইঞ্জিন এ সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু পিপিসি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ও ইন্ট্রডিউস হয়েছে। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিঙ্ক-বিল্ডিং আরো এডভান্স হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া PPC ক্যাম্পেইন গুলো সার্চ ইঞ্জিনের বাইরেও যেতে পারে, এবং Facebook, Instagram, বা Twitter এর মত প্ল্যাটফর্মে এর ইউজারদের কাছে পৌঁছাতে পারে। ফলস্বরূপ আপনার বিজনেস এডস এর সাথে রিলেটেবল মনে করা অডিয়েন্সরা এটা শেয়ার করে। এবং আলটিমেটলি শক্তিশালী লিঙ্ক তৈরী হয়।
৪। ইনফ্লুয়েন্সার পার্টনারশিপ:
বর্তমানে পিপিসি এর সাথে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের কানেক্টেড করার অপর্চুনিটি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আপনার এই বিজ্ঞাপন গুলো জনপ্রিয় বা ট্রেন্ডি ইনফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে করালে বা তাদের প্রোফাইল এ শেয়ার করলে এগুলোর ক্লিক থ্রু রেট আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া, এদের ফলোয়ারাও অনেক বেশি আপনার কনটেন্ট এর বিজ্ঞাপন এ ক্লিক করে এবং শেয়ার করে। এগুলো আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে ও লিঙ্ক-বিল্ডিং এর জন্য সাহায্য করে।
৫। ডেটা ড্রাইভেন অপ্টিমাইজেশানে লিঙ্ক-বিল্ডিং:
PPC আপনাকে সুযোগ দিবে ডাটা ড্রাইভেন অপ্টিমাইজেশনে, মূলত এই পিপিসি মডেলে ইউজারদের বিহেভিয়ার এবং পছন্দের ওপর নজর রাখা হয়। অর্থাৎ ইউজারদের ডাটা গুলো পার্সোনালাইজড করে ফেলা হয় এবং বিজ্ঞাপন দাতাকে সাজেস্ট করা হয়। ফলে আপনি কোনো পেইড টুলস ছাড়া পার্সোনালাইজড ডাটা ইউজ করে অ্যাডস তৈরীতে মনোযোগী হতে পারবেন৷
তাছাড়া পিপিসি আপনাকে এই অপটিমাইজেশন অপর্চুনিটি গুলোর মাধ্যমে আপনার স্ট্র্যাটেজি মোডিফিকেশন এর সুযোগ করে দিবে। ফলে বিভিন্ন প্লাটফর্মে লিঙ্ক-বিল্ডিং আরো বেশি ইফেক্টিভ হবে।
৬। পিপিসি রি-মার্কেটিং :
পিপিসি লিঙ্ক-বিল্ডিং এর পেছনে কাজ করতে আরো একটি উল্লেখযোগ্য স্ট্র্যাটেজি এপ্লাই করে। সেটা হচ্ছে রি-মার্কেটিং। PPC আসলে পূর্বে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করা এমন ইউজারদের সামনে রি-মার্কেটিং করার সুযোগ দেয়। অর্থাৎ যারা আপনার অ্যাডস এর সাথে রিলেটেড ফিল করে, তাদের সামনে বার বার ওই রিলেটেড এডস গুলো চলে যায়। ফলে ক্লিক হওয়ার সম্ভাবনা ও অসংখ্য ব্যাক লিংক পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়৷
PPC চ্যালেঞ্জ এবং কন্সিডারেশন:
যদিও পিপিসি লিঙ্ক-বিল্ডিং এ বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। তবুও পিপসি মার্কেটিং এর একটা ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। কনটেন্ট এবং কোয়ালিটি এর ওপর গুরুত্ব না দিয়ে PPC প্র্যাকটিসে যাওয়া খুবই ঝুকিপূর্ণ। এতে করে ফলোয়ার, লিঙ্ক-বিল্ডিং, এবং ভিজিটর ঠিকই ডেভেলপ করতে পারবেন। তবে কনভার্সন রেট খুবই কম থাকবে। কিংবা ক্রেডিবিলিটি কমে গিয়ে পরবর্তীতে ট্রাফিক ও সেলস দুটই কমে যাবে।
তাই PPC এর সাহায্যে লিঙ্ক-বিল্ডিং এ মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি ফোকাস থাকতে হবে কনটেন্ট ও কোয়ালিটি তে। তাহলেই, লিঙ্ক-বিল্ডিং এর সাথে মার্কেটিং ও আরো বেশি ইফেক্টিভ হবে।
উপসংহারে, পিপিসি ব্র্যান্ডের ভিজিবিলিটি তৈরিতে এবং টার্গেটেড ট্র্যাফিক ড্রাইভ করার ক্ষেত্রে ও সর্বোপরি লিঙ্ক-বিল্ডিং এর মাধ্যমে ব্র্যান্ড রেপুটেশন বৃদ্ধি করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এই পিপিসি মার্কেটিং কে যদি আপনি পাওয়ারফুল কনটেন্ট, কোয়ালিটি প্রোডাক্ট ও ফ্লেক্সিবিলিটির সাথে কম্বাইন করতে পারেন তাহলে সাকসেসফুল লিঙ্ক-বিল্ডিং এর সাথে একটা পাওয়ারফুল মার্কেটিং রেভ্যুলেশন তৈরী করতে পারবেন।