ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি ক্রিয়েট করার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিৎ?

ব্র‍্যান্ড-স্ট্র‍্যাটেজি
Share This Post

ব্র‍্যান্ড কি?

ব্র‍্যান্ডকে অনেকে অনেক ভাবে ডিফাইন করে গেছে। কেউ কেউ ব্র‍্যান্ড বলতে একটা মার্ক অথবা লোগো কে বুঝেন, আবার অনেকে এমন কোনো পিকচার কে বুঝেন যেটা একটা বিজনেস কে রিপ্রেজেন্ট করে। তবে ব্র‍্যান্ড শুধু মাত্র পিকচার এবং লোগো-ই নয় এটা হলো আপনার আইডেন্টিটি, কে আপনি? আপনি বিজনেসের মাধ্যমে অডিয়েন্সকে কি সেবা দিচ্ছেন, এসব কিছুই ব্র‍্যান্ডের একেকটা পার্ট। 

যেকোনো বিজনেসের সাক্সেসের জন্য ব্র‍্যান্ড রেপুটেশন থাকাটা বেশ জরুরি। শুধুমাত্র রেপুটেশনের অভাবে অনেক ব্র‍্যান্ড মোস্ট ডিমান্ডিং প্রোডাক্ট ও সেল করতে ব্যর্থ হয়। এজন্য যেকোনো বিজনেস ব্র‍্যান্ড কে রেপুটেড করে তুলতে এবং সেল বাড়াতে প্রোপার ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি  তৈরি করা উচিত। ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি ছাড়া কখনোই ভালো বিজনেস পরিচিতি পাওয়া সম্ভব না। নিচে বেশ কয়েকটি কার্যকরী টিপস এক্সপ্লেইন করা হলো যেগুলি আপনাকে বিজনেসের জন্য ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি তৈরি করতে হেল্প করবে।

‘৭ টি হেল্পফুল ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি ক্রিয়েশন টিপস’

আইডেন্টিফাই রাইট কাস্টমার 

ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি তৈরির সর্বপ্রথম ধাপ হলো রাইট কাস্টমার আইডেন্টিফাই করা। যদি প্রোডাক্টসের জন্য রাইট কাস্টমার-ই আইডেন্টিফাই করতে না পারেন, তাহলে যতোই মার্কেটিং করেন না কেন, সাক্সেস্ফুল হবেন না। আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস গুলি কোন কাস্টমারদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, কোন কাস্টমারদের কাছে এই প্রোডাক্টসের চাহিদা বেশি তাদের আইডেন্টিফাই করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি হয়তো মেকআপ আইটেম সেল করছেন, সেক্ষেত্রে আপনার টার্গেটেড, রাইট কাস্টমার হচ্ছে গার্লস। এরকম ভাবেই প্রোডাক্ট অনুযায়ী রাইট কাস্টমার আইডেন্টিফাই করুন, তাহলে ভুল অডিয়েন্সের কাছে মার্কেটিং করে টাইম ওয়েস্ট হবেনা।

কালেক্ট ইনফরমেশন এন্ড রিসার্চ 

রাইট কাস্টমার আইডেন্টিফাই করার পরের ধাপ হলো কাস্টমার ইনফরমেশন কালেকশন এবং রিসার্চ করা। টার্গেটেড কাস্টমারের ইনফরমেশন গেদার করা এবং রিসার্চ করার মাধ্যমে আপনি কাস্টমারের এক্সাক্ট চাহিদা টা বুঝতে পারছেন, তাদের এই মুহূর্তে কি দরকার,তাদের প্রোয়োরিটি লিস্টে কোন প্রোডাক্ট গুলি আছে, তাদের মতামত, আপনার ব্র‍্যান্ড সম্পর্কে তারা কি ভাবছে, কোন সার্ভিস টা তারা আশা করে এসব কিছু ভালো করে রিসার্চ করে সেই অনুযায়ী প্রোডাক্ট, সার্ভিস আপগ্রেড করুন। এবং মার্কেটিং এর মাধ্যমে অডিয়েন্সকে জানিয়ে দিন। ইনফরমেশন গেদার করা এবং রিসার্চ এর জন্য বেশ কয়েকটি  টিপস ফলো করতে পারেন। যেমনঃ

  • কোল্ড কল করতে পারেন;
  • সোশ্যাল মিডিয়া কমেন্ট বক্স থেকে অডিয়েন্সের মতামত নিতে পারেন;
  • ফিজিক্যাল মার্কেটিং করতে পারেন;
  • ইমেইল মার্কেটিং;
  • ওয়েবিনার/ওয়ার্কশপ হোস্ট।

ব্র‍্যান্ড লোগো

ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি

একটা ব্র‍্যান্ডকে প্রেজেন্ট করতে ব্র‍্যান্ড লোগো থাকা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট। লোগোর মাধ্যমে সহজেই অডিয়েন্স আপনার ব্র‍্যান্ড কে আইডেন্টিফাই করতে পারে। অনেক সময় প্রোডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে অডিয়েন্স লোগো কে গুরুত্ব দেয় বেশি, লোগো নেই এমন প্রোডাক্ট কে  ফেইক প্রোডাক্ট হিসেবেই কনসিডার করে। সেক্ষেত্রে, লোগো ডিজাইন করার সময় মনে রাখবেন যে, লোগোটা হতে হবে আপনার বিজনেস নেইম এবং প্রোডাক্ট, সার্ভিসের সাথে মানানসই এবং ব্র‍্যান্ড লোগো অবশ্যই ইউনিক হতে হবে। প্রত্যেকটা প্রোডাক্ট, বিজনেস ব্যানার, ওয়েবসাইট, ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লোগোর ব্যবহার করতে হবে অবশ্যই।

ইউনিক ডিজাইন 

যে প্রোডাক্ট আপনি সেল করছেন ওই একই প্রোডাক্ট মার্কেটে আরো অনেক থাকতে পারে। এজন্য প্রোডাক্ট এমন ভাবে ডিজাইন করুন যেন অডিয়েন্স প্রোডাক্টসের ইউনিকনেস দেখেই ইন্টারেস্টেড হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাজারে অনেক হেয়ার ওয়েল আছে, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট ব্র‍্যান্ডের তেলের প্রতি অডিয়েন্স বেশি ইন্টারেস্ট ফিল করে শুধু মাত্র ওই প্রোডাক্টসের ইউনিক কোয়ালিটির জন্য। এমন না তারা অনেক কম দামে দিচ্ছে। প্রোডাক্ট এর কোয়ালিটি, ডিজাইন, কালার, প্রোডাক্ট গাইডলাইন এসব কিছুর কম্বিনেশন যখন পার্ফেক্ট ভাবে করা হয় তখন অটোমেটিক ভাবেই ওই প্রোডাক্টসের কাস্টমার বেশি হয়। অনেক সময় দেখা যায়, ইউনিক কোয়ালিটিফুল প্রোডাক্ট কাস্টমার একটু বেশি দাম দিয়েও কিনে ফেলে।

মেমোরিবেল ব্র‍্যান্ড নেইম

ব্র‍্যান্ডের একটা ইউনিক নেইম অডিয়েন্সের মনে বেশ ইম্প্যাক্ট ফেলে৷ ব্র‍্যান্ডের এমন নাম দিন যেটা ইন্সট্যান্ট অডিয়েন্সের ইন্টারেস্ট ক্যাচ করতে পারে। যেমন Apple এর iPhone, iPod, iMac। Apple এরকম প্রোডাক্ট নেইমে স্মল লেটারের i ব্যবহার করে বেশ সাক্সেস্ফুল হয়েছে।

ইউনিক নামকরণ ব্র‍্যান্ড বিল্ট করতে এবং প্রোডাক্ট প্রেজেন্ট করতে অনেক ইম্পর্ট্যান্ট। এজন্য পার্ফেক্ট কালার এবং লেটার কম্বিনেশন করে ব্র‍্যান্ডের জন্য ইউনিক নাম ফিক্স করুন।

ব্র‍্যান্ড স্লোগান 

ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি তৈরি করার সময় ব্র‍্যান্ড স্লোগান কি হবে সেই ব্যাপার ও মাথায় রাখা জরুরি। আপনার ব্র‍্যান্ড কি সার্ভিস দিচ্ছে অডিয়েন্সের জন্য কতোটা উপকারী এসব কিছুর কম্বিনেশনে এক লাইনের ব্র‍্যান্ড স্লোগান ক্রিয়েট করুন। এক লাইনের স্লোগান পড়েই যেন অডিয়েন্সের মনে এমন ইম্প্যাক্ট পরে যে, আপনি আপনার অডিয়েন্সের ব্যাপারে কেয়ার করেন। যেমন বিখ্যাত একটা ব্র‍্যান্ড addidas এর ব্র‍্যান্ড স্লোগান হলো “Impossible Is Nothing.”

ভ্যালুয়েবল কন্টেন্ট

ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা পার্ট হলো প্রোডাক্টস এবং সার্ভিস রিলেটেড কোয়ালিটি কন্টেন্ট। প্রোডাক্ট ফিচার, কিভাবে ব্যবহার করতে হয়, কতোটা ইউসফুল এসব কিছুর ভিডিও কন্টেন্ট, ইমেজ এবং রাইটিং কন্টেন্ট ব্র‍্যান্ড ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে আপ্লোড করুন। কারণ এখন যে কোনো প্রোডাক্ট কেনার আগে অডিয়েন্স ও প্রোডাক্ট সম্পর্কে রিসার্চ করে নেয়, রিভিউ দেখে ব্যবহারের প্রোপার গাইডলাইন চায়। সেক্ষেত্রে যখন পর্যাপ্ত ইনফরমেশন আপনার থেকেই পেয়ে যাচ্ছে তখন তারা অটোমেটিক ভাবেই ইন্টারেস্টেড হয়ে প্রোডাক্ট কিনতে চায়। ইমেজ কন্টেন্ট এর ক্ষেত্রে প্রোডাক্টসের ফটোগ্রাফি ভালো ভাবে করুন। যেন পিকচার দেখে অডিয়েন্স প্রোডাক্ট সম্পর্কে অনেকটা আইডিয়া করতে পারে। ভিডিও কন্টেন্ট এর ক্ষেত্রেও সেইম, এমন ভাবে প্রোডাক্ট প্রেজেন্ট করুন যেন অডিয়েন্সের বুঝতে সুবিধা হয়।

রাইটিং কন্টেন্ট এর ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অডিয়েন্সের রিভিউ হুবহু তুলে ধরতে। প্রোডাক্ট সম্পর্কে ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট লিখে পোস্ট করুন।

অবশেষে, আপনার বিজনেস কি রিলেটেড, কেমন প্রোডাক্ট নিয়ে আপনি কাজ করছেন, সবকিছু বিবেচনা করে তারপর আপনাকে ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি তৈরি করতে হবে। উপরে যে কয়েকটি টিপস শেয়ার করেছি এগুলি থেকে আইডিয়া নিয়ে আপনি আপনার মতো করে ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি তৈরি করুন। মনে রাখবেন, প্রোপার স্ট্র‍্যাটেজি ছাড়া কখনোই একটা ব্র‍্যান্ডকে ফেমাস করে তুলা যায়না। এজন্য ব্র‍্যান্ড রেপুটেশন এবং সেল বাড়াতে প্ল্যান করে ফেলুন ব্র‍্যান্ড স্ট্র‍্যাটেজি।

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্টের ৭টি উপায়
Marketing

বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ৭টি উপায়

একজন উদ্দোক্তার ক্ষেত্রেও তাই। সময়ের সঠিক ব্যবহার ছাড়া, অর্থাৎ একটা প্রোপার টাইম ম্যানেজমেন্ট ছাড়া সফল হওয়া অসম্ভব। একটা সুনির্দিষ্ট ওয়ার্কিং শিডিউল ছাড়া কখনই বিজনেস গোল

মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? - ৭টি টিপস
Marketing

মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? – ৭টি টিপস

মা’কে ভালবাসার জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু প্রতিদিনই কি মাকে ভালবাসি বলা হয়? কিংবা অতটা প্যাম্পার করা হয় যতটা সে ডিজার্ব করে?  আসলে,