কিভাবে সাকসেসফুলি ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন করবেন

Share This Post

মার্কেটিং কে যেকোনো বিজনেসের মেরুদন্ড বলা হয়। মার্কেটিং ছাড়া কোনো বিজনেস-ই পরিচিতি বাড়াতে পারেনা, প্রফিট লাভ করতে পারেনা। মার্কেটিং বিভিন্ন টাইপের হয়। মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যেকোনো বিজনেস পার্সন-ই কমবেশি আউটবাউন্ড মার্কেটিং এবং ইনবাউন্ড মার্কেটিং শব্দের সাথে পরিচিত। বর্তমানে আউটবাউন্ড মার্কেটিং এর চেয়েও বেশি কার্যকরী হলো ইনবাউন্ড মার্কেটিং। ইনবাউন্ড মার্কেটিং বিজনেসের জন্য ট্রাস্টেবল অডিয়েন্স পেতে হেল্প করে এবং বিজনেসের রেপুটেশন বাড়ায়। এই ব্লগে কার্যকরী কিছু টেকনিক আলোচনা করবো যেগুলি আপনাকে সাক্সেসফুলি ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন করতে হেল্প করবে। তার আগে চলুন জানা যাক ইনবাউন্ড মার্কেটিং কি?

ইনবাউন্ড মার্কেটিং কি? 

ইনবাউন্ড মার্কেটিং হলো এমন একটি মার্কেটিং সিস্টেম যেখানে প্রোডাক্টসের জন্য উপযুক্ত কাস্টমার কে টার্গেট করেই মার্কেটিং করা হয়। এই মার্কেটিং সিস্টেমে কাস্টমারের জন্য প্রয়োজনীয় এবং মূল্যবান কন্টেন্ট, ইনফরমেশন,সার্ভিস প্রোভাইড করা হয়। এই মার্কেটিং সিস্টেম কাস্টমারের সাথে একটা লং টার্ম রিলেশন ক্রিয়েট করতে হেল্প করে। 

আরো সহজ করে যদি বলি, ইনবাউন্ড মার্কেটিং এর মেইন উদ্দেশ্য থাকে অডিয়েন্স কে এডুকেট করা, এওয়ারনেস দেওয়া। আর এই এওয়ারনেস দেওয়ার মাঝেই তারা তাদের প্রোডাক্টসের মার্কেটিং করে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ, যেকোনো টপিকের উপর ফ্রি ওয়েবিনার হোস্ট করা, যেখানে আপনি শেখাচ্ছেন রেগুলার লাইফকে কিভাবে একটা ল্যাপটপ সহজ করে দিচ্ছে, সেই সাথে আপনার নিজস্ব ব্র‍্যান্ডের ল্যাপটপের ফিচার আলোচনা করলেন, এটাই হলো ইনবাউন্ড মার্কেটিং।

ফেমাস ব্লগারদের ব্লগে কন্ট্রিবিউট করা, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এংগেইজ থাকা,ইনফরমেটিভ কনটেন্ট পাব্লিশ করা, ইউটিউব ভিডিও বানানো, লাইভ শেয়ার করা সবকিছুই ইনবাউন্ড মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত। ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন শুরু করার আগে নিচের স্টেপ গুলি ফলো করুন।

৭ টি ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন টিপস

আইডেন্টিফাই রাইট অডিয়েন্স 

ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এর সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট স্টেপ হলো কাদের আপনি আপনার প্রোডাক্টের জন্য টার্গেট করছেন সেটা আইডেন্টিফাই করা। কারা আপনার বায়ার্স, তাদের ফাইনান্সিয়াল সিচুয়েশন, ইন্টারেস্ট, বয়স, তাদের চাহিদা, রেগুলার লাইফে আপনার প্রোডাক্ট এর প্রয়োজনীয়তা সবকিছু আইডেন্টিফাই করা জরুরি ক্যাম্পেইন শুরু করার আগে।

যখন আপনি এসব কিছু আইডেন্টিফাই করতে পারবেন তখন অডিয়েন্সের সাথে রিলেটেবল, আরো বেশি ফ্রেন্ডলি এবং ইনফরমেটিভ কনটেন্ট পাব্লিশ করতে পারবেন, যাতে করে অডিয়েন্সের মনোযোগ ক্যাচ করা ইজি হবে। কেননা যেকোনো প্রোডাক্ট কেনার আগে অডিয়েন্স অলওয়েজ ট্রাস্ট ইস্যু নিয়ে কনফিউজড থাকে৷ আপনি যখন অডিয়েন্সের সাথে রিলেটেবল কনটেন্ট পাব্লিশ করবেন তখন এটা ট্রাস্ট বিল্ট করতে হেল্প করবে। 

রিসার্চ এবং সঠিক কী ওয়ার্ডস (Keywords) 

ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন শুরু করার আগে প্ল্যান করুন প্রোডাক্ট রিলেটেড কেমন কনটেন্ট আপনি পাব্লিশ করতে যাচ্ছেন, যেটা একইসাথে অডিয়েন্স কে এওয়ারনেস দিবে, এবং আপনার প্রোডাক্ট মার্কেটিং ও হবে। রিসার্চ করে কনটেন্ট পাব্লিশ করুন। এক্ষেত্রে সঠিক কী ওয়ার্ডস (Keywords) ব্যবহার করা জরুরি। 


রিসার্চ-এবং-সঠিক-কী-ওয়ার্ডস

সুতরাং,কী ওয়ার্ডস (Keywords) প্ল্যান তৈরি করে ফেলুন। যে প্রোডাক্টের উপর কনটেন্ট পাব্লিশ করতে যাচ্ছেন ওই প্রোডাক্ট নিয়ে অডিয়েন্সের মনে কি প্রশ্ন থাকতে পারে। কোন কী ওয়ার্ডস (Keywords) দিয়ে অডিয়েন্স বেশি সার্চ করছে সেই অনুযায়ী কী ওয়ার্ডস সিলেক্ট করুন।

ক্রিয়েট অফার 

কনটেন্ট এর মাধ্যমে অফার দিন। এবং নিশ্চিত করুন অফারের মাধ্যমে আপনি যে ইনফরমেশন দিচ্ছেন সেটা অডিয়েন্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অফারগুলি এমন হতে পারেঃ আপনি কনটেন্ট এর মাধ্যমে ফুল গাইডলাইন অফার করছেন। যেমন, 

ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন
  • কিভাবে একটা প্রোডাক্ট সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে হয়
  • প্রোডাক্ট ট্রায়াল
  • কোর্স এবং ক্লাস
  • প্রোডাক্টস ডেমোন্সট্রেশন
  • ইনফোগ্রাফি ইত্যাদি। 

ফ্রি ওয়েবিনার/ ওয়ার্কশপে হোস্ট্

ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এর একটা সেরা উদাহরণ হলো ওয়েবিনার বা ওয়ার্কশপ। আপনি ওয়েবিনার, ওয়ার্কশপ আয়োজন করছেন যেখানে অডিয়েন্স অনেক কিছু ফ্রি তে জানতে পারছে, শিখতে পারছে। যেটা অবশ্যই তাদের জন্য হেল্পফুল, এটা আপনার জন্যও হেল্পফুল। কারণ, ফ্রি তে অডিয়েন্স যখন আপনার থেকে শিখছে তখন খুব সহজেই তারা আপনার কথা বিলিভ করে, আপনার প্রোডাক্টের প্রতি ইন্টারেস্টেড হয়। 

ফ্রি ওয়েবিনার ওয়ার্কশপে হোস্ট্

এজন্য ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এর ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট হিসেবে ওয়েবিনার কে কনসিডার করুন। মান্থলি ক’টা ওয়েবিনার হোস্ট করবেন, ওয়েবিনার টপিক, সময়, অডিয়েন্স কে জানানো এসব কিছু কে স্টেপ বাই স্টেপ সাজিয়ে ওয়েবিনার প্ল্যান সেট করুন।

ব্লগ পোস্ট 

আপনার ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আরো অডিয়েন্সকে জানাতে ব্লগ পোস্ট করার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য ব্লগ লিখুন এবং ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আপনার রিডার্স দের অবগত করুন, যারা আসলেই বেনিফিটেড হবে ক্যাম্পেইন থেকে। ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে রিডার্স দের আপনার ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এর ইম্পর্ট্যান্ট, ইনফরমেটিভ কনটেন্ট এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। মোটকথা, ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আপনার ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন কে প্রমোট করুন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার 

সোশ্যাল মিডিয়া হলো গ্রেট প্ল্যাটফর্ম যেকোনো বিজনেস প্রমোটের জন্য। ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন কে আরো অনেক বেশি অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে সোশ্যাল মিডিয়া হতে পারে পার্ফেক্ট একটা প্ল্যাটফর্ম। 

কেননা, এখানে আপনি চাইলেই টার্গেটেড অডিয়েন্সের সাথে কানেক্ট থাকতে পারছেন, লাইভে যেতে পারছেন, কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে সরাসরি কাস্টমারের প্রব্লেম সলভ করতে পারছেন। শুধু তাই নয়, আপনি এখানে মেসেঞ্জারে কাস্টমাইজড চ্যাটবক্সের মাধ্যমে পার্সোনালি কাস্টমারের সাথে কমিউনিকেট করতে পারছেন। সুতরাং ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলির ব্যবহার করুন। ক্যাম্পেইনের ভ্যালুয়েবল কনটেন্ট গুলি এখানে পোস্ট করুন। বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার দিন। ওয়েবিনারে জয়েন লিংক, ওয়েবসাইট লিংক, প্রোডাক্টসের এভ্রিথিং এখানে শেয়ার করুন। 

মনে রাখবেন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলি এখন মার্কেটিং এর জন্য বেস্ট প্ল্যাটফর্ম। বর্তমান বিশ্বে যতো বড় বড় ফেমাস ব্র‍্যান্ড রয়েছে ম্যাক্সিমাম ব্র‍্যান্ড-ই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সাক্সেস্ফুল হয়েছে। কেননা, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলিতে মিলিয়ন মিলিয়ন এক্টিভ ইউসার রয়েছে যারা সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই তাদের যাবতীয় সবকিছু কালেক্ট করে৷ 

সেলিব্রেট ইউর সাকসেস

একটা ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন শেষ করার পর রেজাল্ট এনালাইসিস করতে এবং সেলিব্রেট করতে ভুলবেন না। আপনার হার্ড ওয়ার্ক, ক্যাম্পেইন থেকে সাক্সেস সবকিছু অডিয়েন্সের সাথে শেয়ার করা ইম্পর্ট্যান্ট। অডিয়েন্স কে ইনফর্ম করুন ক্যাম্পেইন থেকে কি পরিমান ট্রাস্টেবল কাস্টমার গেইন করেছেন। টপ সেল প্রোডাক্ট কোনটি, কাস্টমারের অনেস্ট রিভিউ শেয়ার করা জরুরি। এতে করে আরো বেশি ট্রাস্টেড কাস্টমার পাওয়ার অপরচুনিটি ক্রিয়েট হয়।

সেলিব্রেট ইউর সাক্সেস

ক্যাম্পেইন শেষ হয়ে গিয়েছে তার মানে এই না যে আপনার কাজ শেষ। ক্যাম্পেইন থেকে কেমন সাক্সেস পেয়েছেন, কি ধরনের সমস্যা ফেইস করেছেন সেগুলি এনালাইসিস করুন এবং সমস্যা গুলি ফিক্স করে পরবর্তী ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এর জন্য প্রস্তুতি নিন। অডিয়েন্সকে জানাতে ভুলবেন না আপনার আপ-কামিং ক্যাম্পেইন সম্পর্কে। 

শেষকথা যদি আপনার ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন নিয়ে সলিড প্ল্যান না থাকে তাহলে ক্যাম্পেইন এ ফেইল হবেন। উইদাউট প্ল্যান কোনো কিছুই পসিবল না। এজন্য, ইনবাউন্ড মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো করে জেনে, মার্কেট রিসার্চ করে সঠিক মার্কেটিং প্ল্যান ক্রিয়েট করে তবেই মার্কেটিং করুন। হোপফুলি, উপরের ইনবাউন্ড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন টিপস গুলি আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে।

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্টের ৭টি উপায়
Marketing

বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ৭টি উপায়

একজন উদ্দোক্তার ক্ষেত্রেও তাই। সময়ের সঠিক ব্যবহার ছাড়া, অর্থাৎ একটা প্রোপার টাইম ম্যানেজমেন্ট ছাড়া সফল হওয়া অসম্ভব। একটা সুনির্দিষ্ট ওয়ার্কিং শিডিউল ছাড়া কখনই বিজনেস গোল

মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? - ৭টি টিপস
Marketing

মাদার্স-ডে সেল টার্গেট কিভাবে অ্যাচিভ করবেন? – ৭টি টিপস

মা’কে ভালবাসার জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু প্রতিদিনই কি মাকে ভালবাসি বলা হয়? কিংবা অতটা প্যাম্পার করা হয় যতটা সে ডিজার্ব করে?  আসলে,