Influencer Marketing কী ? কিভাবে শুরু করবেন ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

Share This Post

ব্রান্ড প্রোমোশনে Influencer Marketing এখন দারুণ সম্ভাবনার একটি নাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় মুখ গুলো দিয়ে পণ্যের প্রচারণা এখন ব্যবসায়ীদের প্রথম পছন্দ। কারণ বিগত ৪-৫ বছরে ইন্ফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর রেভিনিউ বেড়েছে $ 15 বিলিয়নের ও বেশি। এর ROI রেভিনিউ টোটাল ১ ডলারের অপজিটে ৫ ডলার। 

সেলিব্রিটি কিংবা পপুলার ফেস গুলো খুব দ্রুত ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আর এদেরকে জনতা তুলনামূলক বেশি ক্রেডিবল মনে করে। তাই রিচ স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি হয়। এই সূযোগটিই লুফে নিচ্ছে ব্রান্ড প্রোমোটার রা। সফল ভাবে পন্য প্রচারণার জন্য চলুন জেনে নেই ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কী ? আর কিভাবেই বা শুরু করবেন Influencer Marketing। 

Influencer Marketing কী?

ইনফ্লুয়েন্সার শব্দটি সম্পর্কে আমরা সবাই পরিচিত। আর সোশ্যাল মিডিয়া ইন্ফ্লুয়েন্সার হল সেইসব ব্যক্তি, যাদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাল জনপ্রিয়তা রয়েছে। লোকজন যাদেরকে নিয়মিত ফলো করে এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে করে। আর এই জনপ্রিয়তা ও আস্থাকে কাজে লাগিয়ে করা হয় Influencer Marketing. 

যখন কোনো ব্রান্ড তাদের কোনো পণ্যের প্রচারণার জন্য এই সব ইন্ফ্লুয়েন্সার এর আশ্রয় নেয়, সেটিই ইন্ফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং। অর্থাৎ যখন একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি আপনার প্রোডাক্টের প্রমোশন করে, এটির ডিটেইলস আলোচনা করে ও সাজেস্ট করে কিংবা রিভিউ করে। এবং এর বিনিময়ে কমিশন কিংবা ডিসকাউন্ট, বিভিন্ন অফার পেয়ে থাকেন। 

আরেকটু পরিষ্কার উদাহরণ দেই, ধরুন সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একজন ব্যক্তিত্ব রয়েছে যে একজন এক্সপার্ট মেকাপ আর্টিস্ট। তাকে লোকজন পছন্দ করে, তার কাজ এপ্রিশিয়েট করে। আর এদিকে 

আপনারও একটি মেকাপ ব্র্যান্ড রয়েছে। এখন আপনি যদি ওই আর্টিস্ট কে দিয়ে আপনার মেকাপ প্রোডাক্টের প্রমোশন করেন তাহলে স্বাভাবিকভাবেই রিচ অনেক বেশি হবে। অনেক বেশি ক্রেতা সেটি কিনতে আগ্রহী হবে। 

ব্যাস! এটিই ছিল Influencer Marketing।

Influencer Marketing কেন বেছে নিবেন? 

একটি কোম্পানি, বিশেষ করে নতুন কোম্পানি যখন মার্কেটে প্রবেশ করে তখন তাদের পরিচিতি থাকে একদম কম। হাতেগোনা মানুষ তাদের চিনে। তাই কোম্পানির দ্রুত প্রসারের জন্য দরকর হিউজ এমাউন্টের অডিয়েন্স। তাছাড়া বড় বড় ব্রান্ডের প্রমোশনের বিপুল সংখ্যক ভিজিটর দরকার পারে। আর এই দ্রুত পরিচিত পাওয়ার সবচেয়ে ইফেক্টিভ উপায় হচ্ছে ইন্ফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং।  

আরো সহজ ভাবে, আপনি একটি জানসমাগমে গিয়ে নিজের প্রশংসা করলেন। তাতে কতজন আপনার প্রতি আকৃষ্ট হবে? আর যদি বিশেষ কিছু ব্যক্তিত্ব নিজে থেকে আপনার কাজের প্রশংসা করে। সেটির প্রসার কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি হবে। এখাইনেই ইন্ফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর দরকার পরিষ্কার।  

Influencer Marketing এর ভবিষ্যতে 

বর্তমানে, ৭০ শতাংশ ব্র্যান্ড তাদের প্রোডাক্ট প্রমোশন করার জন্য Influencer Marketing ব্যবহার করে। গুগলে Influencer, Influencer marketing এর মত কি-ওয়ার্ডের সার্চ ৫০০ %। 

আর এরই পথ ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইন্ফ্লুয়েন্সার এর সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৩৭.৮ মিলিয়নে৷ কয়েক বছর আগেই তা ছিল ৩.২৷ 

বড় বড় কম্পানি গুলোর  সফলতার পেছনে অনেক বড় অবদান এই ইন্ফ্লুয়েন্সার মার্কেট এর। বর্তমানে ব্রান্স অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও যায়গা হচ্ছে ফেমাস সব সেলিব্রিটি দের। দিন দিন জনপ্রিয় হওয়া এই মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির বর্তমান যতটা বিস্তৃত, ভবিষ্যৎ ততটাই সুপ্রসন্ন। 

কিভাবে শুরু করবেন ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং? 

প্রডাক্ট প্রমোশন এর দায়িত্ব Influencer এর হাতে তুলে দেয়ার জন্য মানতে হবে কিছু মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি- 

  • টার্গেট অডিয়েন্স ফিক্স করুন

ইফেক্টিভ প্রমোশনের প্রথম শর্ত হল টার্গেট অডিয়েন্স ফিক্স করা। আপনি কি পণ্য বিক্রি করছেন, লেডিস নাকি জেন্টস, ফুড নাকি ট্রাভেল রিলেটেড? আনার পণ্যের ক্রেতা কারা হবে, কারা বেশি আকৃষ্ট হবে সেইসব অডিয়েন্স কে আপনার টার্গেট করতে হবে। যেই প্লাটফর্মে তাদের পাওয়া যাবে, প্রমোশন ও ওখানে করতে হবে। 

  • ব্রান্ডের সাথে মিল রেখে Influencer ঠিক করুন

ধরুন আপনার বিজনেস ক্যামেরা নিয়ে, তাই আপনি ফটোগ্রাফি লাভার দের টার্গেট করবেন। জনপ্রিয় ফটোগ্রাফারদের দিয়ে আপনার ক্যামেরার প্রমোশন করবেন। তার ফলোয়ারদের মধ্যেই আপনার টার্গেট কাস্টমার পেয়ে যাবেন। পণ্যের সাথে অপ্রাসঙ্গিক কোনো ইন্ফ্লুয়েন্সার হলে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর উদ্দেশ্য সফল হবে না। 

  • অডিয়েন্সের কাছ প্রোডাক্ট পৌঁছানো

অডিয়েন্স এর কাছে প্রোডাক্টের ধারনা পৌঁছে দিন। শর্ট ভিডিয়, ক্যাম্পেইন, প্রোডাক্ট লঞ্চ সেরিমনি এরেঞ্জ করুন যেখানে এসব ইন্ফ্লুয়েন্সার রা উপস্থিত থাকবে। ও সরাসরি আপনার প্রডাক্টের প্রমোশন করবে। তাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব আপনার প্রডাক্ট সাজেস্ট করছে তা অডিয়েন্স দের মধ্যে প্রচার করুন। 

  • ইন্ফ্লুয়েন্সার দিয়ে অডিয়েন্স কে প্রভাবিত করুন

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং শুধু রিভিউ করা নয়। এখানে প্রয়োজন মোটিভেশান ও ইন্ফ্লুয়েন্স এর। আপনার হায়ার করা ইন্ফ্লুয়েন্সার কে অবশ্য ই আপনার কাস্টমার ধরে রাখতে হবে। তার ফলোয়ারদের প্রভাবিত করতে হবে এবং পণ্য কিনতে আগ্রহী করতে হবে। তবেই এই মার্কেটিং এ সফল হবেন। 

যেভাবে একজন Ideal Influencer সিলেক্ট করবেন?

যে কাউকে আপনি চাইলে ইন্ফ্লুয়েন্সার বানাতে পারবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই যেসব কোয়ালিটি একজন Influencer এর থাকতেই হবে- 

  • জনপ্রিয়তা

 আপনার হায়ার করা ইন্ফ্লুয়েন্সার এর ফলোয়ার কেমন? সে কি পরিমান মানুষের কাছে প্রডাক্টের আইডিয়া পৌঁছে দিতে পারবে? এটাই সবচেয়ে মুখ্য বিষয়। তাই যে ইন্ফ্লুয়েন্সার এর যত বেশি রিচ থাকবে, সে তত বেশি প্রাধান্য পাবে। 

  • ক্রিয়েটিভিটি

ক্রিয়েটিভ কন্টেন্ট তৈরী করতে পারবে, এমন ব্যক্তি সিলেক্ট করতে হবে। নিজস্ব সৃজনশীলতায় যেন অডিয়েন্স ধরে রাখতে পারে। কারণ একঘেয়ে কিংবা গতানুগতিক ধাঁচে প্রডাক্ট প্রমোশন এখন আর ক্রেতা টানতে পারে না। 

  • প্রাসঙ্গিক নিশ

আপনার পণ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে Influencer সিলেক্ট করবেন। একজন ব্যক্তি যে কিনা খেলাধূলায় এক্সপার্ট, মেকাপের সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই, তাকে যদি মেকাপ ব্রান্ডের প্রমোশনের দায়িত্ব দেয়া হয়, সেটি কখনও সফল হবে না। তাই যার কন্টেন্ট আপনার পণ্যের সাথে রিলেটেবল, তাকে বাছাই করুন। 

  • টপিক রিসার্চ 

আপনার বাছাইকৃত ইন্ফ্লুয়েন্সারকে অবশ্যই আপনার প্রডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত রিসার্চ করা জানতে হবে। যে ব্যাক্তি কখনও আপনার পণ্য ব্যবহার করে নি, এর গুনাবলি, ব্যবহার পদ্ধতি জানে না, সে কখনও আপনার পণ্যকে সুন্দর করে জনসম্মুখে তুলে ধরতে পারবে না। 

তাই যারা প্রোডাক্ট, নিশ নিয়ে পর্যাপ্ত রিসার্চ করে, তাদেরকে বাছাই করুন। 

  • উপস্থাপনা

প্রোমোটার এর প্রেজেন্টেশন এর ওপরে অর্ধেক ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ডিপেন্ড করে। যত ভাল ও বিশ্বাসযোগ্য ভাবে অডিয়েন্স এর সামনে প্রডাক্ট কে দেখানো হবে, জনগণ তত বেশি আগ্রহী হবে।  তাই বিভিন্ন ইন্ফ্লুয়েন্সার দের উপস্থাপনা গুলো ফলো করুন। ও সবচেয়ে বেশি কনভিন্স করতে পারে এমন ব্যাক্তিত্ব সিলেক্ট করুন। 

কোথায় পাবেন আদর্শ ইন্ফ্লুয়েন্সার? 

  • Celebrity দের মধ্যে থেকে সবচেয়ে বেশি ইন্ফ্লুয়েন্স করার স্কোপ থাকে। তাই প্রোডাক্ট এর ধরন অনুযায়ী সেলেব্রিটি দের মধ্য থেকে হায়ার করতে পারবেন 
  • ফেসবুক হল ইন্ফ্লুয়েন্সার দের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম। এখানে হাজার হাজার জনপ্রিয় প্রোফাইল আছে যাদের বিপুল সংখ্যক ফলোয়ার থাকে। তাই ফেসবুক থেকে সহজে Influencer পেতে পারেন।
  • ইউটিউব ও আদার সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও ফলোয়ার ও রিচ এর ওপর ভিত্তি করে প্রোমোটার হায়ার করতে পারেন।
  • Google Alert এর মাধ্যমে খুব সহজে খুঁজে পেতে পারেন কারা কোন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে। আপনার পণ্যের সাথো রিলেটেড কোন কোন ইন্ফ্লুয়েন্সার আছে। তাদেরকে খুঁজে বের করুন।
  • Blogger রা তাদের কনটেন্ট ক্রিয়েশন স্কিল দিয়ে অনেক বেশি ভিজিটর আনতে সক্ষম। তাই জনপ্রিয় ব্লগারদেরও হায়ার করতে পারেন। 

কিভাবে Influencer Marketing  এ সফলভাবে হবেন

  • ক্রিয়েটিভ কন্টেন্ট তৈরী করুন। 
  • ইন্ফ্লুয়েন্সার এর মোটিভেশন এর মাধ্যমে অডিয়েন্স কে কনভিন্স করুন 
  • প্রচারণা তে অনেক বেশি ফোকাস করুন
  • Give Away এর আয়োজন করুন 
  • প্রতিযোগিতা এর ব্যাবস্থা রাখুন। এতে কাস্টমার দের এনগেজমেন্ট বাড়বে
  • ইনফ্লুয়েন্সার কে সাথে নিয়ে অনলাইন বা অফলাইন ক্যাম্পেইন এর আয়োজন করুন। এতে সরাসরি কাস্টমারের সাথে ব্রান্ডের একটা ভাল পরিচিতি হবে।
  • ইনফ্লুয়েন্সার এর রেফরেন্স এ বিশেষ ডিসকাউন্ট এর ব্যাবস্থা রাখুন। 

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বাইয়ার্সদের সাথে আপনার প্রোডাক্ট এঙ্গেজমেন্ট বৃদ্ধির উপায়
Marketing

বাইয়ার্সদের সাথে আপনার প্রোডাক্ট এঙ্গেজমেন্ট বৃদ্ধির উপায়

একটা কঠিন সত্য হল, যদি বায়ার্সাদের সাথে আপনার প্রোডাক্ট এঙ্গেজমেন্ট না থাকে, সেটা কোনো সফল বিজনেস এর পর্যায়ে পরে না। মার্কেটে সহস্র প্রোডাক্টের ভীড় থাকা,

বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্টের ৭টি উপায়
Marketing

বিজনেস রানিং অবস্থায় টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ৭টি উপায়

একজন উদ্দোক্তার ক্ষেত্রেও তাই। সময়ের সঠিক ব্যবহার ছাড়া, অর্থাৎ একটা প্রোপার টাইম ম্যানেজমেন্ট ছাড়া সফল হওয়া অসম্ভব। একটা সুনির্দিষ্ট ওয়ার্কিং শিডিউল ছাড়া কখনই বিজনেস গোল