ডিজিটাল মার্কেটিং এর ফিল্ড অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। তাই এইখানে টিকে থাকলে হলে ও কম্পিটিটরদের থেকে এগিয়ে থাকতে আশ্রয় নিতে হয় পেইড মার্কেটিং এর। আর পেইড মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাধ্যম হচ্ছে গুগল অ্যাডস। গুগল অ্যাডস এর রেজাল্ট যত বেশি ইম্প্রুভড হবে আপনার বিজ্ঞাপনের রিচও তত বেশি হবে৷

কিন্তু পেইড মার্কেটিং এর বড় সমস্যা হচ্ছে এটির খরচ। আর নতুন উদ্দোক্তা কিংবা বিগিনার মার্কেটারদের জন্য পেইড মার্কেটিং একটি খরচ সাপেক্ষে বিষয়। তবে গুগল অ্যাডস এর রেজাল্ট কম খরচেও ম্যাক্সিমাইজ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনার বিজনেস স্ট্রাটেজি তে আনতে হবে কিছু পরিবর্তন। লো বাজেটে আপনি কীভাবে গুগল অ্যাডস রেজাল্ট মাক্সিমাইজ করবেন সেটা নিয়েই আজকের আলোচনা।
স্বল্প খরচে গুগল অ্যাডস রেজাল্ট ম্যাক্সিমাইজিং টিপস –
গুগল অ্যাডস মানেই পেইড মার্কেটিং। অর্থাৎ এখানে খরচ ছাড়া মার্কেটিং করা সম্ভব নয়৷ তবে, কিছুটা হলেও খরচ কমিয়ে এবং সাশ্রয়ী উপায়ে অ্যাডস এর ভিজিবিলিটি বাড়াতে কিছু কার্যকর টিপস –
১. কীওয়ার্ড রিসার্চ – কোয়ালিটি ওভার কোয়ান্টিটি:
কি-ওয়ার্ড স্ট্যাটিসটিক্স স্টাডি দিয়ে এটা প্রুভ হয় যে একটা প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড, টার্গেট কে খুব ভাল ভাবে এট্র্যাক্ট করতে পাবে এবং ক্লিক-থ্রু রেট (CTR) এবং কনভার্সন রেট উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারে। আর এক্ষেত্রে আপনার কনটেন্ট এর কি-ওয়ার্ড কত বড় হল, কত বেশি ওয়ার্ড আপনি আনতে পেরেছেন এটা মূল কথা নয়।

এখানে মূল বিষয়, আপনার কিওয়ার্ড এর কোয়ালিটি কেমন। এটা কি অডিয়েন্স এর সাথে রিলেট করে কিনা। রিলেটেবল শর্ট কি-ওয়ার্ড ও অল্প সময়ে রিচ পেতে সাহায্য করে। তাই গুগল অ্যাডস এ অল্প খরচে মার্কেটিং করতে চাইলে কি-ওয়ার্ড এ ফোকাস করুন।
কম কম্পিটিটিভ, লং-টেইল কীওয়ার্ড খুঁজে পেতে Google কীওয়ার্ড প্ল্যানারের মতো টুলস গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এগুলো, আপনাকে আপনার বাজেটের লিমিটেশন এর মধ্যেই আরও বেশি টার্গেটেড অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
২. এনগেজমেন্ট বাড়ানোর জন্য এড কপি অপ্টিমাইজ করুন:
ওয়েল ক্রাফট এড গুলোর কপি থেকে ক্লিক-থ্রু রেট এ পজিটিভ চেইঞ্জ আনতে পারে। ক্রাফট কমপেইলিং , রিলেটেবল এড কপি আপনার অডিয়েন্স এর নিড, বা ইমোশনাল পয়েন্ট গুলোকে সম্বোধন করে বা সমাধান দেয়৷ ফলে এগুলো তে ক্লিক থ্রু রেট ও বেশি। তাই অল্প খরচের মধ্যে যদি গুগল অ্যাডস রেজাল্ট ম্যাক্সিমাইজ করতে চান তাহলে এড কপি অপটিমাইজ করুন। এতে করে ডাবল এড ক্রিয়েট করার খরচ বেচে যাবে। এছাড়া ম্যাক্সিমাম রিচ পেতে ও আপনার মেসেজিং অপটিমাইজ করতে A/B টেস্ট ইউজ করুন।

৩. ইম্প্রুভ ভিজিবিলিটির জন্য এড এক্সটেনশনের সুবিধা নিন:
গবেষণায় দেখা যায় যে, এড এক্সটেনশন গুলো ইনক্লুড করলে আপনার এডস গুলোর ভিজিবিলিটি বাড়ে এবং ইউজারদের কে আরো বেশি এনগেজড থাকতে উত্সাহিত করে৷ অতিরিক্ত তথ্য প্রদানের জন্য সাইটের লিঙ্ক, কলআউট এবং স্ট্রাকচার্ড স্নিপেট এক্সটেনশন ব্যবহার করুন। ফলে কোনো এক্সট্রা খরচ ছাড়াই ক্লিক আকর্ষণ করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করুতে পারবেন৷

৪. জিওটার্গেটিং কৌশল এপ্লাই করুন:
স্টাডিজ এ দেখা যায় যে জিওটার্গেটিং উল্লেখযোগ্যভাবে মার্কেটিং এর দক্ষতা বাড়াতে পারে। আপনার এডস গুলোতে একটা নির্দিষ্ট স্থানকে ফোকাস করুন। যেখানে আপনার টার্গেট অডিয়েন্সরা সবচেয়ে বেশি আছে।

অর্থাৎ আপনি চাইলে একটি সিটি বা একটা এড়িয়াকেও টার্গেট করে অ্যাডস মোডিফাই করতে পারেন। এতে করে আপনি অতিরিক্ত মার্কেটিং কস্ট থেকে বেঁচে যাবেন।
৫. ডেটা প্যাটার্নের উপর ভিত্তি করে এড শিডিউলড:
ব্যবহারকারীর আচরণের পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ পরামর্শ দেয় যে শীর্ষ ব্যস্ততার সময়ে বিজ্ঞাপনের সময় নির্ধারণ কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। আপনার দর্শক কখন সবচেয়ে বেশি সক্রিয় তা শনাক্ত করতে Google বিজ্ঞাপন ডেটা ব্যবহার করুন এবং সেই অনুযায়ী আপনার বিজ্ঞাপনের সময়সূচী সামঞ্জস্য করুন, আপনার বাজেট যখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তখন বরাদ্দ করা হয়েছে তা নিশ্চিত করুন।

৬. Responsive Search Advertising (RSAs) কৌশল এপ্লাই করুন:
রেসপন্সিভ বা প্রতিক্রিয়াশীল রেজাল্ট শো করে এমন বিজ্ঞাপন গুলো ডায়নামিক ভাবে ইউজারদের প্রশ্নের সাথে খাপ খাইয়ে এডস এর কার্যকারিতা ইমপ্রুভ করতে পারে। সহজ কথায়, এডস এর মাধ্যমেই রেসপন্স বা সল্যুশন পেয়ে যায় এমন এডস গুলো তুলনামূলক বেশি কার্যকর হয়।

বিভিন্ন টাইটেল এবং ন্যারেশন অটোমেটিক ভাবে পরীক্ষা করতে RSAs প্রয়োগ করুতে পারেন। এতে করে অডিয়েন্স রা ইন্সট্যান্ট রিয়্যাকশন পাবে, আপনার এডস এর ভিজিবিলিটি বাড়বে এবং অতিরিক্ত খরচ করে রেসপন্স করতে হবে না।
৭. কোয়ালিটি স্কোরের উন্নতিতে ফোকাস করুন:
হাই রেটেড স্কোর এবং ক্লিক প্রতি লোয়ার কস্ট পার ক্লিক (CPC) এর মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক আছে। কোয়ালিটি স্কোর আপনার এডস গুলো প্রাসঙ্গিকতা বা রিলেটিভিটি বৃদ্ধি করে। ল্যান্ডিং পেইজ গুলো অপ্টিমাইজ করে এবং হাই কোয়ালিটি কী ওয়ার্ড ইনক্লুড করে আপনার এডস গুলোর ভিজিবিলিটি বাড়ায়। ফলে আপনি অতিরিক্ত খরচ ছাড়া আপনার গুগল অ্যাডস এর রেজাল্ট ম্যাক্সিমাইজ করতে পারবেন।

৮. নিয়মিত মনিটরিং এবং অ্যাডজাস্টমেন্ট:
Key Performance Indicators (KPIs), আপনার এডস গুলোর CTR, কনভার্সন রেট, এবং কস্ট পার ক্লিক নিয়মিত মনিটর করুন। আপনার এডস গুলোর বিজনেস ড্রাইভ করার ক্যাপসিটি কতটুকু সেটা পরীক্ষা করুন এবং সেই অনুযায়ী নতুন নতুন এডাপটেশন আনুন। নয়ত ভুল বিজ্ঞাপনের পেছনে সময় ও টাকা ব্যায় হবে।

তাই রেগুলার মনিটরিং ও অ্যাডজাস্টমেন্টের ব্যাপারে ওপেন মাইন্ডসেট রাখুন এবং প্রয়োজন অনুসারে এড গুলোর কনটেন্ট অপটিমাইজ বা মডিফাই করুন।
উপসংহার:
লো বাজেটে গুগল অ্যাডস এর রেজাল্ট ম্যাক্সিমাইজ করার জন্য, ডেটা-ড্রাইভেন ইনসাইটের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পদ্ধতি এপ্লাই করতে হবে। ক্লিয়ারলি আপনার কীওয়ার্ড টার্গেটিং করে, অ্যাডস কপি অপ্টিমাইজ করে, আ্যডস এক্সটেনশন ব্যবহার করে এবং জিওটার্গেটিং প্রয়োগ করে, আপনি আপনার বাজেটের লিমিট কে অতিক্রম না করেই আপনার মার্কেটিং এর ইফেক্টিভিটি বাড়াতে পারেন।