গ্রুপ মার্কেটিং এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে কাস্টমারদের গ্রুপের প্রতি সচেতনতা বা নিয়মাবলী প্রদান বা আচরণ গুলোকে তুলে ধরে। আর তাই উদ্যোক্তাকে প্রোপার গ্রুপ মার্কেটিং করতে হলে আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশাবলী পালন করে চলতে হয়।
আপনি যদি গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সঠিকভাবে তথ্য প্রদান করতে না পারেন তবে তা ব্যাড প্রাক্টিসে পরিণত হবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কাস্টমারদের কথা চিন্তা করে সে অনুসারে কাজ করতে হবে। তাহলেই আপনি গ্রুপ মার্কেটিং এর সফলতা লক্ষ্য করতে পারবেন নতুবা আপনাকে ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হবে।
গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এমনি ৬টি কাজ যা কিনা ব্যাড প্রাক্টিস হিসেবে গণ্য।
১। কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া
গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কাস্টমার দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা অতন্ত্য জরুরি একটি কাজ। আপনি যদি কাস্টমার দের সাথে ভালো যোগাযোগ না রাখতে পারেন তবে এটিই হবে আপনার সফলতার পথের ব্যর্থতার কারন। তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা ছাড়াও আপনাকে আপনার গ্রুপ মার্কেটিং এর কন্টেন্টের সাথে অবশ্যই আপনার কাস্টমার দের সম্পৃক্ত রাখতে হবে।
আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আপনার কাস্টমার আপনার থেকে কি চাচ্ছে। যেমন ধরুন তারা সব সময়ই একটি অথেন্টিক, ক্রিয়েটিভ, এডুকেটিভ, বিনোদনমূলক অথবা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে লাইফ স্টাইলকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
তাই এসব জিনিসকে মাথায় রেখেই আপনাকে একটি ইউনিক পোস্ট বা ক্যাপশন তৈরি করতে হবে তা না হলে আপনি আপনার কাস্টমারদের সাথে আপনার গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবেন না অথবা তাদেরকে আপনার মার্কেটিং এর বিষয় বস্তুর সাথে সম্পৃক্ত করতে পারবেন না।
তাই এটিকে একটি বড় ধরনের ভুল হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে যখন একটি গ্রুপ মার্কেটিং এর কাজ করা হয়।
২। কন্টেন্ট এর সাথে বিষয় বস্তুর মিল না থাকা
আপনি যে নিশ নিয়ে গ্রুপ মার্কেটিং করছেন অবশ্যই আপনাকে তার সাথে মিল রেখে কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে নতুবা এটি একটি বড় ধরনের ভুল হিসেবে গণ্য হবে।
অনেক সময়ই দেখা যায় একই কন্টেন্টকে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন গ্রুপ মার্কেটিং এর জন্যে। এটি যেমন অপ্রাসঙ্গিক তেমনি সম্পুর্ন ভবে আপনার মার্কেটিং এর বিষয় বস্তুকে তুলে ধরতে পারে না। যেটি আপনার কাস্টমার দের বোঝার ক্ষেত্রেও কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। কস্টমাররা যদি আপনার মার্কেটিং এর বিষয় বস্তু সম্পর্কে ধারণা নিতে না পারে তবে এ ধরনের পোস্ট বা কন্টেন্ট গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কোন উপকারই করবে না।
তাই অবশ্যই আপনাকে মার্কেটিং এর বিষয়বস্তুর সাথে কনটেন্ট বা পোস্ট বা প্রমোশনের মিল রাখতে হবে তা না হলে এ ধরনের ব্যাড প্রাক্টিসের কারনে আপনার গ্রুপ মার্কেটিং এ ব্যর্থতার দেখা দিতে পারে।
৩। সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারা
গ্রুপ মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি আপনার কাস্টমারদের যে তথ্য প্রদান করতে চাচ্ছেন তা সঠিকভাবে পৌঁছাতে না পারার মূল কারন হচ্ছে লক্ষ্য সঠিক না থাকা। কোন উদ্দেশ্যে সাধনের লক্ষ্যে আপনি প্রমোটিং করছেন আপনার কাস্টমারদের কাছে তা যদি সঠিকভাবে তুলে ধরতে না পারেন তবে এটি একটি ব্যাড প্রাক্টিস হিসেবে গণ্য হবে।
যখনই আপনি গ্রুপ মার্কেটিং এর কথা চিন্তা করবেন প্রথমে অবশ্যই আপনাকে এর জন্যে সঠিক উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে। অবশ্যই আপনাকে কাস্টমারদের প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে উদ্দেশ্য তৈরি করতে হবে। এর সাহায্যে আপনি আপনার বিষয়বস্তুর সাথে মিল রেখে সঠিক কনটেন্ট বা পোস্ট অথবা প্রমোশন করতে পারবেন খুব সহজেই।
এছাড়া প্রয়োজনীয়তার তাগিদ পূরণ করার লক্ষ্যে আপনি খুব সহজেই আপনার কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা রাখতে পারবেন। তাই বললেই চলে উদ্দেশ্যহীনতা গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে একটি অন্যতম ব্যাড প্রাকটিস।
৪। গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে অথেন্টিসিটি কম থাকা
খাঁটি জিনিসের প্রতি মানুষের ঝোঁক বরাবর বেশি বললেই চলে তাই অথেন্টিক জিনিসের মার্কেটিং না করার একটি বড় ধরনের ব্যাড প্রাক্টিস। গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি যে প্রোডাক্ট বা কোম্পানির জন্য পোস্ট বা প্রমোশন দিচ্ছেন তা যদি অথেন্টিক না হয় তবে সে পোস্ট বা প্রমোশন অথবা কনটেন্ট গুলোকে কাস্টমাররা গ্রহণ করেনা।
বর্তমানে কাস্টমাররা অথেন্টিসিটি উপর বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। অথেন্টিসিটি যেমন আপনার সফলতার কারণ হবে তেমনি অথেন্টিসিটি কম থাকলে সেটি আপনার কোম্পানীর গ্রুপ মার্কেটিংয়ের জন্যে ব্যর্থতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
তাই গ্রুপ মার্কেটিংয়ের সফলতার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে আপনার কোম্পানি বা প্রোডাক্টের অথেন্টিসিটি উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
৫। ওভার প্রমোটিং এবং পোস্টিং সেসব বিষয় বস্তুর প্রতি যেগুলো মানুষ কম গুরুত্ব দিয়ে থাকে
গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে যেকোন বিষয়কে ওভার প্রমোটিং না করা এটি একটি ব্যাড প্র্যাকটিস। এছাড়াও এ ওভার প্রমোটিং কাস্টমারদের জন্যে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অন্যদিকে যেসব বিষয়বস্তু সম্পর্কে মানুষ গুরুত্ব কম দিয়ে থাকে সে গুলো থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি এমন কোন জিনিস, প্রোডাক্ট বা কোম্পানি প্রমোট করলেন মানুষের কাছে যেগুলোর চাহিদা কম। সেসব জিনিস, প্রোডাক্ট বা কোম্পানির প্রতি মানুষের আগ্রহ কম থাকবে।
এসব জিনিসের ক্ষেত্রে আপনি যতই ওভার প্রমোটিং বা পোস্টিং করেন না কেন তা আপনার কাস্টমারদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এসব তথ্য মাথায় রেখেই আপনাকে কাস্টমারদের কথা চিন্তা করে সে সব জিনিসকে প্রমোটিং বা পোস্টিং করার যার প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি।
তাই গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে মানুষের গুরুত্বকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং এসব গুরুত্বকে প্রাধান্য না দিয়ে যেকোনো ধরনের প্রমোটিং বা পোস্টিং ব্যাড প্রাক্টিসের পরিনত হবে।
৬। আত্মকেন্দ্রিকতাকে বা সেল্ফ ফোকাসকে বেশি প্রাধান্য দেয়া
গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আর একটি ব্যাড প্রাক্টিস হচ্ছে আত্তকেন্দ্রিকতা বা সেল্ফ ফোকাস। আপনি গ্রুপ মার্কেটিংয়ের জন্য অথবা আপনার কোম্পানির প্রোমোশনের ক্ষেত্রে যেসব পোস্ট বা ক্যপশনে তথ্য দিয়ে থাকেন সে সব তথ্যের সাথে মিল রেখে অন্য বাড়তি কোনো তথ্য প্রদান না করে থাকলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে আপনার পোস্ট বা ক্যাপশন এর ১০% হবে আপনার কোম্পানি বা আপনার মার্কেটিং এর তথ্য নিয়ে। ৩০% পার্সেন্ট হবে আপনার অরজিনাল কন্টেন্ট অর্থাৎ যার জন্য আপনি এটি তৈরি করছেন যেমন এডুকেশনাল বা বিনোদন বিষয় তথ্য দিতে চাচ্ছেন এবং বাকি ৬০% পার্সেন্ট হবে কাস্টমারদের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য তথ্য নিয়ে।
উপরের তথ্যগুলো দেয়া হলে এর সাথে সম্পৃক্ত রাখে ছবি, ভিডিও বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক জিনিস গুলোকে যুক্ত করতে ভুলবেন না। কাস্টমারদের সাথে সম্পৃক্ত রেখে এসব তথ্য প্রদান করতে পারলে গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। আত্মকেন্দ্রিকতা দূর করা যা কিনা গ্রুপ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে অসাধারণ একটি ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে আত্মকেন্দ্রিকতাকে দূর করে কাস্টমারদের প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে কিছু ভালো প্রাক্টিস তৈরি করতে হবে । তা না হলে এটি একটি ব্যাড প্রাক্টিসে পরিনত হবে।
গ্রুপ মার্কেটিংয় এর ক্ষেত্রে আরও বিভিন্ন ধরনের কাজকে ব্যাড প্রাক্টিস অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তবে আজ আমরা এমনই 6 টি প্রধান কাজ সম্পর্কে জানাতে চেয়েছি যা কিনা গ্রুপ মার্কেটিং এর জন্যে ব্যাড প্রাক্টিস হিসেবে গণ্য হয়। এসব ব্যাড প্রাক্টিস গুলোকে এড়িয়ে চলতে পারলেই গ্রুপ মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করা সম্ভব।