স্ট্যাটিসটিশিয়ার একটি রিসার্চে দেখা যায়, প্রোপার ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ও ব্যলেন্স কস্ট একটি বিজনেস এর ROI ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে। একটা বিজনেস শুরু করা এবং সাকসেসফুলি রান করা মোটেও সহজ কথা নয়৷ আর বিজনেস গ্রোথ এবং ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট যেহেতু একে অপরের সাথে কো রিলেটেড, তাই দুটি জিনিস একসাথে ম্যানেজ করা টাফ৷ তবুও বিজনেস সাসটেইনেবল করতে অর্থসম্পদ ও ফিন্যান্সিয়াল সিকিউরিটি এর দিকে আলাদা করে নজর দিতে হবে।
যেকোনো বিজনেস এ দ্রুত সফল হতে ও সাসটেইনেবিলিটি ধরে রাখতে এমনই ৭ টি ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট টিপস নিয়ে আজকে আলোচনা করবো।
৭টি ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট টিপস
আপনার কোম্পানি অর্থনৈতিক কার্যকলাপ গুলোর স্ট্যাবিলিটি ধরে রাখতে ফলো করুন এই টিপস গুলো –
১. কমপ্রিহেনসিভ বাজেট তৈরি করুন:
আপনি যেই বিজনেস ই শুরু করুন না কেন, একটা ওয়েল ডিফাইন্ড বাজেট হল একটা সাউন্ড ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট এর ফাউন্ডেশন এর মত। তাই প্রথমেই আপনার বিজনেস এর প্রতিটি খরচের একটি আউটলাইন তৈরি করুন এবং এর ওপর ভিত্তি একটি করে বাজেট তৈরি করুন৷ যেমন, রেভিনিউ স্ট্রিম, খরচ, আপনার ফিন্যান্সিয়াল গোল ইত্যাদি বিষয় ইনক্লুড করতে পারেন৷
একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে, বাজেট গুলো অবশ্যই রিয়ালিস্টিক হতে হবে। আর এগুলো অবশ্যই শর্ট টার্ম কিংবা লং টার্ম ফিন্যান্সিয়াল অবজেক্টিভ ফুলফিল করবে। তাছাড়া সময়ের সাথে তাল মিলানোর জন্য প্রতিনিয়ত আপনার বাজেট রিভিউ করুন এবং প্রয়োজনে আপডেট করুন।
২. খরচ কন্ট্রোল ও প্রায়োরিটি স্পেন্ডিং:
সাসটেইনেবল বিজনেস মেইনটেইন করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট হচ্ছে, খরচ নিয়ন্ত্রণ করা। এজন্য কন্টিনিউয়াসলি কস্ট গুলো মনিটর করতে হবে। এবং খুঁজে বের করতে হবে কোথায় খরচ কমানো যায়। অর্থাৎ প্রায়োরিটি স্পেন্ডিং মেথডে খরচ করতে হবে।
বাজেট নির্ধারণের সময়ে করা আউটলাইন টা থেকে খুঁজে বের করুন আপনার বিজনেস এ বেশি গুরুত্বপূর্ণ খাত কোন গুলো। এবং সেখানে তুলনামূলক বাজেট বেশি রাখুন। অপরদিকে কম গুরুত্বপূর্ণ বা আর্জেন্ট নয় এমন বিষয় গুলোতে খরচ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করুন।
৩. ইমার্জেন্সি ফান্ড বিল্ড করুন:
বিজনেস যত ভালই রান করুক না কেন, ফিন্যান্সিয়াল এমারজেন্সি যেকোনো সময়ে দেখা দিতে পারে। তাই আপনার বিজনেস সাসটেইনেবিলিটির সেইফ গার্ডিং এর জন্য একটি ইমার্জেন্সি ফান্ড বিল্ড করুন। আপনার প্রোফিট থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমানের অর্থ সেভ করে রাখুন সাডেন এক্সপেন্স গুলোর জন্য।
উদাহরণস্বরূপ, রিপেয়ারিং কস্ট, সাডেন এক্সিডেন্ট, মার্কেট ডাউনটার্ন, বা আকস্মিক ক্রাইসিস। এ ধরনের সিচুয়েশনে বিজনেস স্ট্যাবল রাখতেই জরুরি ফান্ড রাখা প্রয়োজন।
৪. ক্যাশ ফ্লো মনিটর করুন:
যেকোনো বিজনেস এর জন্যই ইফেক্টিভ ক্যাশ ফ্লো মনিটর করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার বিজনেস এর ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্টের ওপর গভীরভাবে নজর রাখুন। ক্যাশ ইনফ্লো এবং আউটফ্লো বোঝার ট্রাই করুন।
নিশ্চিত করুন যে আপনার একাউন্ট রিসিভাবল গুলো আপ টু ডেট আছে এবং একাউন্ট পে এবল যেন ওভার এক্সপেন্ডেবল না হয়ে যায়।
৫. রেভিনিউ স্ট্রিম ডাইভার্সিফাই করুন:
যেকোনো একটা রেভিনিউ স্ট্রিম এর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়া কিন্ত বিজনেস এর জন্য খুবই রিস্কি একটা বিষয়। এজন্য আপনার কোম্পানির ইনকাম সোর্স গুলোর ডাইভার্সিটি বজায় রাখুন। অর্থাৎ শুধুমাত্র একটি প্রোডাক্ট সেল বা একটি সার্ভিস এর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকার ট্রাই করবেন।
এজন্য প্রোডাক্টের ডাইভার্সিটি বাড়াতে পারেন, নতুন নতুন সার্ভিস ইনক্লুড করা, অফার তৈরি করা, নতুন মার্কেট এক্সপ্লোর করা অথবা কম্পিমেন্টারি প্রোডাক্ট অফার করার মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করতে পারেন। এতে করে বিজনেস এর সাসটেইনেবিলি বজায় থাকবে।
৬. ট্যাক্স প্লান রাখুন:
কর বা ট্যাক্স যেকোনো ব্যবসার জন্য একটি বড় আর্থিক বোঝা হতে পারে। আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য যথাযথ কর পরিকল্পনা এবং কম্পেলিয়েন্স অপরিহার্য। আপনার বিজনেস এর জন্য প্রযোজ্য ট্যাক্স,আপনার বাধ্যবাধকতা, ডিসকাউন্ট এবং ক্রেডিটগুলো বোঝার ট্রাই করুন।
এছাড়াও একজন ট্যাক্স স্পেশালিষ্ট এর সাথে কাজ করার কথাও মাথায় রাখতে পারেন, যিনি আপনাকে আপনার ট্যাক্স স্ট্র্যাটেজি অপ্টিমাইজ করতে এবং আইনগতভাবে আপনার ট্যাক্স লায়াবিলিটি কমাতে সাহায্য করতে পারবে।
৭. ওয়াইজলি ইনভেস্ট করুন:
আপনার ব্যবসার লক্ষ্য এবং রিস্ক টলারেন্স এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন ওয়াইজ ফিল্ডে বিনিয়োগ করুন। আপনার লাভের একটি অংশ বিনিয়োগে বরাদ্দ করার চেষ্টা করুন যা সময়ের সাথে সাথে একটি ইউজফুল রিটার্ন জেনারেট করতে পারবে।
এর মধ্যে থাকতে পারে টুলস আপগ্রেড করা, নতুন মার্কেটে পরিচিত হওয়া বা আপনার কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এটাও নিশ্চিত করুন যে আপনার বিনিয়োগগুলি ভালভাবে গবেষণা করে করা হয়েছে এবং বিনিয়োগ গুলোর একটি ইতিবাচক রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷
শেষ কথা,
ব্যবসায় স্থায়িত আনতে পরিবেশ-বান্ধব অনুশীলন এবং কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার বাইরেও প্রচারণা করা গুরুত্বপূর্ণ।
কার্যকর ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট একটি টেকসই ব্যবসা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সাতটি আর্থিক ব্যবস্থাপনা টিপস অনুসরণ করে, আপনি একটি পাওয়ারফুল ইকোনমিক ভিত্তি তৈরি করতে পারবেন যা আপনার ব্যবসার দীর্ঘমেয়াদে উন্নতি করতে সাহায্য করবে। বাজেটিং, খরচ নিয়ন্ত্রণ, জরুরী তহবিল, ক্যাশ ফ্লো, রেভিনিউ ডাইভার্সিটি, ট্যাক্স পরিকল্পনা এবং ওয়াইজ বিনিয়োগ গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া নিশ্চিত করবে যে আপনার ব্যবসা আর্থিকভাবে স্থিতিস্থাপক এবং একটি পরিবর্তনশীল ব্যবসায়িক ল্যান্ডস্কেপে মানিয়ে নিতে পারে।