লিডারের গুনাবলী একজন মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্যারিয়ার জীবনকে করে সৌন্দর্যপূর্ণ ও সাফল্যমন্ডিত। মানুষের জীবনে প্রতিটা ক্ষেত্রেই এর প্রয়োজনীয়তা অনেক। নিজের ব্যাক্তিত্বে বৈচিত্রতা, সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্রে সাফল্য সবক্ষেত্রেই লিডারের গুনাবলী এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ভিনসে লমবার্ডি বলেন, নেতারা কখনো এমনি এমনি জন্মায় না বরং তাদের তৈরি করিয়ে নিতে হয়। একজন আদর্শ লিডার হতে হলে তাকে অনেকগুলো গুণাবলীর অধিকারী হতে হয়। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ
১. দূরদর্শিতা
দুরদর্শিতা মানবজীবনে অন্যতম বড় একটা গুন। দূরদর্শিতার আবিধানিক অর্থ হল ভবিষ্যতের বিষয় ভাবার বা বোঝার গুণ। এর ফলে অনেক সমস্যা থেকে রক্ষা পায় এবং নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়ন করতে সহজ হয়।
২. সৃজনশীলতা
একজন লিডারের সব ক্ষেত্রেই সৃজনশীল স্কিল থাকা প্রয়োজন। নতুন ভাবনা আনার জন্য সৃজনশীল মনন এর প্রযোজন হয়। সৃজনশীল ব্যক্তির প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ধারনা আবির্ভাব হয়। একজন ভালো লিডার হতে হলে সব সময় নিজের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন চিন্তাচেতনার মানসিকতা থাকতে হবে ।লিডারের গুনাবলী এর মধ্যে সৃজনশীলতা অন্যতম।
৩. ঝুঁকি নেওয়া
সাফল্য পেতে হলে অবশ্যই ঝুঁকি নেওয়ার সক্ষমতা থাকতে হবে। ইংরেজি একটা প্রবাদ আছে “ No Risk, No Gain” অর্থাৎ ঝুঁকি না নিলে লাভ হয়না। সকল বড় সাফল্যের পেছনে রয়েছে ঝুঁকি। তাই একজন আদর্শ নেতা ঝুঁকি নিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে। তবে ঝুঁকিটা হতে হবে অবশ্যই সঠিক যায়াগায় সঠিকভাবে।
৪. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহন লিডারের গুনাবলী
সঠিক সময়ে সিদ্ধান্তহীনতার কারনে অনেক সময় আমাদের ভালো কিছু আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যায়। তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত অত্তাবসশকিয়।তাই একজন লিডার সর্বদা দ্রুত ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সর্বদা সচেতন থাকে।
৫. উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষমতা
এক একটা উদ্যোগই এক একটা সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। উদ্যোগ গ্রহন করার ফলে নতুন নতুন কাজের সৃষ্টি হয়। একজন নেতা সবসময়ই উদ্যোগী হয়।
৬. নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন
বর্তমান সময়ে প্রতিদিনই আপডেট হচ্ছে , তাই নিজেকে আপডেট রাখতে ও অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা ভাবে উপস্থাপন করতে অবশ্যই নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে হবে। লিডারশিপ স্কিল বাড়াতে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন অতীব জরুরী। বর্তমানে যে যত বেশি আপডেটেড থাকবে, সে তত দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারবে। কেননা প্রতিটি নতুনত্বের কথা চিন্তা করেই নতুন নতুন পরিকল্পনা সাজাতে হবে।
৭. নিয়মাবর্তিতা হওয়া
নিজেকে নিজের কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে একজন লিডার কে অবশ্যই নিয়মানুবর্তী হতে হবে। এর ফলে সময়ের কাজ সময়ে করতে পারবে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে সফলতা অর্জন করবে। তাই একজন আদর্শ লিডারের নিয়মাবর্তিতা হওয়া অপরিসীম। মোটকথা, কেউ সফল হতে চাইলে অবশ্যই তাকে সময়ের প্রতি দায়িত্ববান হতে হবে।
৮। যোগ্য কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন
যোগ্য কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করলে প্রতিষ্ঠানে কাজের পরিধি বৃদ্ধি পায়। কর্মীদের মাঝে উন্নত প্রেষনা তৈরি হয়। কর্মীরা উদ্যমী হয়ে কাজ করে। ফলে প্রতিষ্ঠানের সফলতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তাই একজন আদর্শ লিডার যোগ্য কর্মীদের মূল্যায়ন করেন।
৯। পরিশ্রমী
পরিশ্রম হলো সফলতার অন্যতম মাধ্যম। একজন মানুষ সফল হলে অবশ্যই তাকে পরিশ্রমী হতে হবে। প্রতিটা সফলতম ব্যক্তির জীবনেই রয়েছে কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়। যেকোনো ক্ষেত্রে সফলতার প্রথম শর্ত হল প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রম। মানুষ যদি তার লক্ষ্যে অটুট রাখে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে, তবে একদিন সে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে পারে।
পরিশ্রমের দ্বারা ভাগ্যের চাবিকাঠি এমনভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব, যা অলস মানুষের কাছে অলৌকিক বলে মনে হয়। তাই একজন লিডারের গুনাবলী অর্জন করতে হলে অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হতে হবে।
১০। ধৈর্য্যশীলতা
ধৈর্যের আভিধানিক অর্থ: আনন্দ, দুঃখ, অনুকুল, প্রতিকূল এবং উদ্বেগের সময়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা। একজন আদর্শিক লিডারকে অবশ্যই ধৈর্য্যশীল হতে হবে। ধৈর্য্য এর সাথে সকল সমস্যা মোকাবেলা করা অন্যতম গুন। ধৈর্যের পরিণতি প্রশংসনীয়।
সর্বোপরি একজন আদর্শ লিডারের গুনাবলী অর্জন উপরের গুনগুলো থাকা অপরিহার্য। তাই লিডারের গুনাবলী অর্জনে উপরের বিষয়গুলো অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুরো লেখাটি কেমন লাগলো, তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে সত্যিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
যদি মনে হয় লেখাটি নতুন উদ্যোক্তাদের সাহায্য করবে পরবর্তী দিক নির্দেশনা পেতে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।
এই ধরনের আরও অনেক ইনফো কনটেন্ট এর জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।