ইকমার্স এর আদ্যোপান্ত; ২০২২ সালে ইকমার্স বিজনেস এর অবস্থান

ইকমার্স বিজনেস
Share This Post

ব্যস্ততার মধ্যে কখনও কি একটু খেয়াল করেছেন যে ইকমার্স বিজনেস-এর উপস্থিতি হুট করেই আমাদের আজকের দিন গুলোকে কিভাবে বদলে দিল? এইতো ৫-১০ বছর আগের কথা, যখন ভালো কিছু কেনাকাটার জন্য আপনাকে যেতে হত বড় কোন শপিংমলে। সময় ক্ষেপণ, জ্যাম পেরিয়ে যাওয়া সহ আরও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হত আপনাকে। অফিসে যাওয়ার জন্য দিনের নির্দিষ্ট সময়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হত আপনাকে। কিন্তু বর্তমানে, আপনি চাইলেই অনলাইনে যে কোন কিছুর অর্ডার করতে পারছেন যেকোন সময়। মুহূর্তের মধ্যে সেটা চলে যাবে আপনার দরজায়। কোথাও যাওয়ার জন্য, বাসা থেকে বের হওয়ার আগেই চাইলে গাড়ি ভাড়া করে নিতে পারবেন কয়েক ক্লিকের মাধ্যমেই। কত সহজ তাই না?

আসলে দৈনন্দিন জীবন এতো সহজ ও সুন্দর হওয়ার পিছনে ই-কমার্স (ecommerce) সেক্টরের অবদান অপরিসীম। ব্যবসার এই পদ্ধতি আপনার জীবনকে করেছে গতিময়। তবে এর এই বহুল ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা এত সহজে আসেনি। আজকে আলোচনা করব ২০২২ সালের ই-কমার্স ব্যবসা সম্পর্কে এবং কি কি পরিবর্তন এই খাতকে সমৃদ্ধশালী করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে তা নিয়ে।

কমার্স কি?

সোজা কথায় ই-কমার্স (ecommerce) কি সেটা বলতে মূলত ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করে যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পণ্য ক্রয় বিক্রয় করা হয় তাকে বুঝায়। এই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইলেকট্রিক সিস্টেম যেমন ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা যেমন পন্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয়, অর্থ স্থানান্তর, তথ্য স্থানান্তর ইত্যাদি করা হয়। এছাড়াও এর মাধ্যমে আরও অনেক ধরনের কার্যক্রম অনলাইন নিলাম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অনলাইন টিকিটিং, অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ইত্যাদি করা যায় যেখানে পণ্য বেচাকেনা করা এর সহজ উদাহরণ।

ই-কমার্স কি?

ইলেকট্রিক কমার্স এর মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে মাত্র কয়েক ক্লিকের মাধ্যমে আপনার পন্য ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন। এক কথায় বলতে গেলে ইন্টারনেট ভিত্তিক যে ব্যবসা-বাণিজ্য সেটাই হচ্ছে ই-কমার্স। 

ই-কমার্স এর ইতিহাস 

এটি নিয়ে চিন্তাভাবনা নতুন কিছু না। ১৯৬০ এর দশকেই বড় বড় অর্থনীতিবিদরা এ নিয়ে চিন্তা করেছিলেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে আস্তে আস্তে করে ই-কমার্স সেক্টরের (ecommerce sector) উন্নতি সাধিত হয়েছে।

১৯৭৯ সালে ইংরেজ ইনভেনটার মাইকেল অ্যালড্রিচ যাকে ই-কমার্স এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তিনি ইলেকট্রনিক শপিং আবিষ্কার করেন। তিনি এর নাম দেন টেলিশপিং যাতে একটি টেলিফোন সংযোগের মাধ্যমে একটি পরিবর্তিত টিভির সাথে একটি লেনদেন-প্রসেসিং কম্পিউটার সংযোগ করে কাজ করা হত।

ই-কমার্স এর ইতিহাস 

১৯৮২ সালে প্রথম অনলাইন মার্কেটপ্লেস বস্টন কম্পিউটার এক্সচেঞ্জের যাত্রা শুরু হয় যা কম্পিউটার বিক্রি ও বাণিজ্যের সুবিধার্থে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

যদিও এই সেক্টরে আসল সফলতা আসে একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে। এই সময় থেকেই সারা পৃথিবী জুড়ে বড় বড় ইলেকট্রিক কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হতে শুরু করে। ২০০০ সালে Google AdWords, ২০০৫ সালে অ্যামাজন প্রাইম, ২০১১ সালের দিকে গুগল তার অনলাইন ওয়ালেট পেমেন্ট অ্যাপ, ২০১৪ সালে অ্যাপল মোবাইল পেমেন্ট এবং ডিজিটাল ওয়ালেট টুল ‘অ্যাপল পে’ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে এই সেক্টর ধীরে ধীরে উন্নত ও জনপ্রিয় হতে থাকে।

ইকমার্স বিজনেসের বর্তমান প্রেক্ষাপট

২০১৬ সালে করা এক জরিপ থেকে জানা যায় সেই বছর সারা বিশ্বে ইকমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবসা হয়েছিল প্রায় ১.৯১৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপর থেকে প্রতিবছর এই ইন্ডাস্ট্রিতে আয়ের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। Statista এর তথ্য মতে, ই-কমার্স (ecommerce) খাতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ১.৬৬ বিলিয়ন গ্রাহক বা ক্রেতা সক্রিয় হয়েছে। অনুমান করা হয়েছিল, এই সংখ্যা ২০২১ সাল পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়াবে ২.১৪ বিলিয়নে। অর্থাৎ গত বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩ শতাংশের এক শতাংশ মানুষই অনলাইন দ্বারা কেনাকাটা করবে বলে ধারনা করা হয়েছিল।

মহামারীকালে সারা পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা বেচে ছিল কেবল এই ই-কমার্সের জন্য। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় যে, বিশ্ব যখনই একটা মহামারীর সম্মুখীন হয়েছে, তখন অর্থনৈতিক মহামন্দা ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিত। আমি বলবো না করোনা কালীন সময়ে এবং এরপরে বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো রয়েছে, কিন্তু অর্থনীতি যতটুকুই শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, তার পিছনে অন্যতম বড় কারন এই ই-কমার্স। 

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট

ই-ক্যাব (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) এর মতে, প্যানডেমিকের সময়কালে ২০২০ সালে এই সেক্টরে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে ৭০ শতাংশ। 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আসলে দেখা যায়, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর মতে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ই-কমার্স মার্কেটের সাইজ ছিল ৫৬০ কোটি টাকা। পরের বছর ২০১৭ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৬৩২ কোটি টাকায়, ২০১৮ সালে ১০৫০৪ কোটিতে এবং ২০১৯ সালে ১৩১৮৪ কোটি টাকায় এসে দাঁড়ায়। এরপর করনাকালীন সময়ে ২০২১ সালে এটি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬ হাজার ৬১৬ কোটি টাকায়।

২০২২ সালে ই-কমার্স বিজনেস এ পাঁচ পরিবর্তন

আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি ইকমার্স বিজনেস এ আমূল পরিবর্তন এসেছে এবং এর জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার ধীরে ধীরে বাড়ছে। বর্তমানে এটি মানুষের জীবনে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনিও চাইলে স্টেপ বাই স্টেপ ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে পারবেন। কিন্তু এই পরিবর্তন কি রাতারাতি এসেছে? যে পরিবর্তনগুলো ই-কমার্স বিজনেস কে নতুন মাত্রা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরো পরিবর্তন আনবে-

পণ্যের লাইভ স্ট্রিম প্রচার

নির্দিষ্ট পণ্যের প্রচারের পাশাপাশি গ্রাহকদের সাথে জড়িত হওয়ার জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে পণ্যের লাইভ স্ট্রিম করা। গ্রাহকদের মধ্যে পণ্যকে সরাসরি দেখার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। আর এই লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে বিক্রেতা তার পন্যগুলো গ্রাহকদের কাছে লাইভ প্রদর্শন করতে পারেন। গ্রাহক সেই পণ্যের সম্পর্কে সরাসরি প্রশ্ন করতে পারে এবং অনুসন্ধান করতে পারে। এটি ই-কমার্স বিজনেসকে আরও বেশি ফলপ্রসূ করেছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেমন facebook, instagram ইত্যাদি পন্যের লাইভ স্ট্রিম প্রচার চালু করার জন্য জনপ্রিয়। গবেষণা বলে, 2022 সালে চীনে লাইভ স্ট্রিম বাণিজ্য ৪৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে।

কাস্টমাইজড প্রোডাক্ট এর সুবিধা বৃদ্ধি

দোকানের প্রদর্শিত পণ্য আপনার ভালো লাগতেছে না? দরকার নেই সেটি কেনার। আপনি চাইলে নিজের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে নিতে পারবেন। কি দারুন তাইনা?

কাস্টমাইজড প্রোডাক্ট নিয়ে ইকমার্স বিজনেস

বর্তমানে এই কারণেই এর জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বাড়তেছে। তাই ই-কমার্স বিজনেসও বিষয়টির ব্যবহার বাড়ছে। সারা বিশ্বে ইতিমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানই কাস্টমাইজ প্রোডাক্টের সেবা প্রদান শুরু করে দিয়েছে। যেমন: ‘নাইকি বাই ইউ‘ যেটি নাইকির একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে ক্রেতা তার পছন্দমত জুতো তৈরি করে নিতে পারবেন। এছাড়াও বিশ্বের আরো অনেক জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা প্রদান শুরু করে দিয়েছে। বাংলাদেশও অনেক প্রতিষ্ঠানে হিসেবে দিয়ে থাকে। আপনি চাইলেই অতি সহজে আপনার স্মার্টফোনের কভারটি নিজের পছন্দসই ডিজাইনে বানিয়ে নিতে পারবেন। দেশের অনেকগুলো ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আপনি এটি করতে পারবেন।

অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR) ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি

এই অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ভোক্তাদের পণ্যের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি করার খুব ভালো একটি উপায়। আগেই বলেছি, দৃশ্যমান জিনিসের প্রতি ভোক্তাদের টান একটু বেশি থাকে এবং এর মাধ্যমে ভোক্তাদের বিশ্বাসও অর্জন করা যায় সহজেই।

এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যেকোনো পণ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেন এবং কেনাকাটার সময় একটি ইন্টারেক্টিভ অভিজ্ঞতা পেতে পারেন যা গ্রাহকদের সঠিক পণ্য নির্বাচনে ও ক্রয় করতে সাহায্য করে এবং ফলস্বরূপ পন্যের কম রিটার্ন হয়। গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ৭১% ভোক্তাই অগমেন্টেড রিয়ালিটির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং দিন দিন এর ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। ধারণা করা হয়, এই অগমেন্টের রিয়েলিটির বাজার মূল্য ২০২২ সালের মধ্যে ১৫.৪৯৭ মিলিয়ন ডলার হবে‌।

চ্যাটবট ব্যবহার

একজন গ্রাহক পন্য সম্পর্কিত কোন তথ্য জানার জন্য প্রতিষ্ঠানে মেসেজ করলে, যদি সেই মেসেজের উত্তর পেতে তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতি গ্রাহকের নেতিবাচক মনোভাব জন্মায়। অপরদিকে পন্য সম্পর্কিত অনুসন্ধান বা প্রশ্নের দ্রুত সমাধান বা উত্তর পাওয়া, ক্রেতাদের অংশগ্রহণ দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি করতে পারে। আর এই কারণেই বিক্রয় ও ব্যাস্ততা চালনের জন্য চ্যাটবট এর ব্যবহার বাড়িয়ে দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। চ্যাটবটগুলো মানুষের সেলসম্যানের মতোই গ্রাহকদের সাথে কথোপকথন করতে পারে, যা অতি দ্রুত ক্রেতাদের জিজ্ঞাসা অনুযায়ী উত্তর সরবরাহ করতে পারে। ব্যাবসায়ীদের মতে ২০২৩ সালের মধ্যে চ্যাটবট ভিত্তিক ই-কমার্স বাজার ১১২ মিলিয়ন ডলার হবে। 

বিটকয়েন এর আদান-প্রদান বৃদ্ধি

ই-কমার্সে বিটকয়েন ব্যবহারের সুবিধা কম না। বিটকয়েন ব্যবহারের মাধ্যমে ক্রেতা সরাসরি বিক্রেতার সাথে লেনদেন চালাতে পারে‌। যেটি অনলাইন পেমেন্ট গেটেওয়ে সার্ভিসকে বার বার কমিশন দেওয়ার ভোগান্তি থেকে আমাদের রক্ষা করে। এছাড়াও এর মাধ্যমে অনেক বেশি নিরাপদে লেনদেন করা যায়। যার ফলে আজকাল অনেক ইকমার্স ব্যবসায়ীরাই বিটকয়েনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ২০২২ সালের মধ্যেই বিটকয়েনের ব্যাপক প্রচলন শুরু করতে আগ্রহী এই বিজনেস প্রতিষ্ঠানগুলো এবং ইতিমধ্যেই অনেক প্রতিষ্ঠানে বিটকয়েনের ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। 

এছাড়াও অনলাইন কেনাকাটায় ভয়েস সার্চের সুবিধা বাড়ানো, ক্রেতাদের পণ্যের প্রতি আগ্রহী করার জন্য ফেসবুক বিজ্ঞাপন, গুগল শপিং বিজ্ঞাপন ইত্যাদির মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া, এছাড়া বিভিন্ন মার্কেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে ডিজিটাল কৌশল অবলম্বন করেএই বিজনেসে গ্রহণযোগ্যতা ও প্রসারতা বাড়ানো সম্ভব।

দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট সাইজ

২০১৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশের জ্যামিতিক হারে ই-কমার্স গুলো বাড়তে শুরু করে।  বর্তমানে বাংলাদেশে ২৫০০ এরও বেশি ই-কমার্স রয়েছে যার মধ্যে এক শতাংশ বড় প্রতিষ্ঠান, ৪ শতাংশ মাঝারি এবং ৯৫ শতাংশই ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে প্রায় ১৬০০টি  প্রতিষ্ঠান ই-ক্যাব সদস্য। এছাড়াও বর্তমানে ফেসবুক ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার প্রসার দেখা যাচ্ছে খুব বেশি। মূলত ফেসবুকে লাইভ ফিচার যুক্ত হওয়ার পর থেকেই এইসব ফেসবুক ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে দেশে পাঁচ লক্ষেরও বেশি ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসায়িক পেইজ আছে।

ই-কমার্স

বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২৫ শতাংশ হারে এই প্ল্যাটফর্ম গুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে। Financial express এর মতে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের ই-কমার্সের মার্কেট সাইজ ছিল ২ বিলিয়ন ডলারের। এবং ধারণা করা হচ্ছে ২০২৩ সাল আমাদের দেশের ইকমার্স মার্কেট সাইজ তিন বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।  

ই-কমার্স বিজনেসের ভবিষ্যৎ

বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশের ই-কমার্স খাত অনেক উন্নতি করলেও এখনও দেশে এই সেক্টর প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। কেননা দেশের মাত্র ৪% মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করছে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। কিন্তু দেশে এই সেক্টর খুব দ্রুত উন্নতি সাধন করবে। Financial express এর মতে বাংলাদেশের ইলেক্ট্রনিক কমার্স খাত প্রতি বছর ৫০% করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সহজেই বুঝা যায় দেশের ই-কমার্স বাণিজ্যের সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ অনেক ভালো।

আমাদের দেশের জনসংখ্যা বর্তমানে ১৬০ মিলিয়ন প্রায়। এদের মধ্যে প্রায় ৫০% মানুষ ইন্টারনেট সেবার আওতাভুক্ত এবং এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ইন্টারনেট সেবা গ্রহণকারী জনসংখ্যা যত বাড়বে তত মানুষ অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটার প্রতি ঝুঁকবে। দেশের অন্যতম বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজের দেওয়া এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালে তাদের সেলার সংখ্যা বেড়েছে ১০ গুন, অর্ডার বেড়েছে ১২ গুন। আন্দাজ করা যাচ্ছে দেশের ই-কমার্স খাত ভবিষ্যতে আরো বেশি সমৃদ্ধশালী হবে।

ই-কমার্স বিজনেসে এনেছে নতুন ধারা। এর ফলে সহজ হয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য করা। এখন কেউ নতুন ব্যবসা করতে চাইলে তাকে দোকান তৈরি, গুদাম তৈরি বা কর্মচারীর বেতনের জন্য বিশাল অর্থ ব্যয় করতে হবে না। সপ্তাহে সাত দিন আর দিনের ২৪ ঘন্টাই চালানো যায় এই ব্যবসা পদ্ধতি। ই-কমার্স বিজনেস একজন ব্যবসায়ী চাইলেই দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারেন খুব সহজেই। যা অফলাইন ব্যবসায় সম্ভব নয়।   ‌

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন
Marketing

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং গাইডলাইন

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর এক অন্যতম পাওয়ারফুল টুলস। ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে মার্কেটিং যত সহজ হয়েছে, কম্পিটিশন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিউজ

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন
Marketing

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন?

আপনার বিজনেস নিশ কি হবে? কি নিয়ে কাজ করবেন? বা কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিই এপ্লাই করবেন। সব কিছু সিলেক্ট করার আগে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্ট হচ্ছে কম্পিটিটর