ফেসবুক মার্কেটিং কি? কেন এবং কিভাবে করবেন – সম্পূর্ণ গাইডলাইন

ফেসবুক-মার্কেটিং
Share This Post

ফেসবুক মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা বড় অংশ জুড়ে আছে ফেসবুক মার্কেটিং। ফেসবুক নানা ধরনের কন্টেন্ট দিয়ে অডিয়েন্সের সাথে এঙ্গেইজমেন্ট তৈরী করা এবং তাদের কাছে আপনার ব্রান্ড এর ভ্যালু তৈরী করা এবং পরিশেষে তাদেরকে কাস্টমারে কনভার্ট করার কৌশলকেই বলা হয় ফেসবুক মার্কেটিং।

কেন করবেন ফেসবুক মার্কেটিং ?

এখনকার সময় আর ফেসবুক কেউ আর নিছক বিনোদনের জন্যে কিংবা সময় কাটাবার জন্যে ব্যবহার করে না। ফেসবুক এখন বিজনেস করবার জন্যে একটি প্রগতিশীল জায়গা হয়ে দাড়িয়েছে এবং দিন যত যাবে ফেসবুকে আপনার বিজনেস কম্পিটিটর তত বাড়বে। একই সাথে ফেসবুকে বিজনেস করবার এই প্ল্যাটফর্মটি আরো বেশী শক্ত পক্ত হবে।

তাই এখনি যদি ফেসবুক মার্কেটিং এ আপনি নিজের জায়গা তৈরী করতে না পারেন তাহলে ভবিষৎ পৃথিবীতে আপনার বিজনেসকে নিয়ে আর কোন বিশেষ জায়গা ধরে রাখতে সক্ষম হবেন না।

আজকের দিনে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে ফেসবুক মার্কেটিং এ নিজের জায়গা করতে না পারার অর্থ হল আপনি বেশ পিছিয়ে আছেন। আপনার বিজনেস যেই নিশেরই হোক না কেন তা অনলাইনে সার্ভিস দিয়ে থাকুক আর নাই বা দিয়ে থাকুক আপনার জন্যে ফেসবুক মার্কেটিং করা বেশ জরুরী।

ফেসবুক মার্কেটিং কি?

কেননা এতে আপনার ব্রান্ড এর ভ্যালু বৃদ্ধি হয় এবং অডিয়েন্স আপনার বিজনেস সম্পর্কে জানতে পারে।

বর্তমানে টিভি, পত্রিকা, রেডিও সোশ্যাল মিডিয়া এসব মাধ্যম গুলোর মধ্যে যে মাধ্যম গুলোতে আপনার গ্রাহক সবচেয়ে বেশী সময় কাটায়  তা হল সোশ্যাল মিডিয়া। আবার যেসব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশী যেখানে একটিভ থাকে তা হল ফেসবুক। সারা পৃথিবীতে ফেসবুক ইউজার এর সংখ্যা প্রায় ২.৯৩ মিলিয়ন এবং এদের মধ্যে প্রতিটি মানুষ গড়ে কমপেক্ষে ৫৮ মিনিট ফেসবুকে কাটায়।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন আপনি কেন ফেসবুককে মার্কেটিং এর জন্যে টার্গেট করবেন।

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আলচনা করব কিভাবে আপনি ফেসবুকে মার্কেটিং করবেন।

ফেসবুক মার্কেটিং কত প্রকার? 

১) অর্গানিক বা ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং 

২) পেইড ফেসবুক মার্কেটিং 

অর্গানিক বা ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং

অর্গানিক ফেসবুক মার্কেটিং হল কোয়ালিটি কন্টেন্ট তৈরী করে আপনার অডিয়েন্সের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকা। এই কৌশলটি একটু ক্রিয়েটিভ এবং কষ্টসাধ্য তবে অসম্ভব কিছু নয়। অর্গানিক ভাবে ফেসবুকে কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে হলে অবশ্যই কোয়ালিটিফুল কন্টেন্ট দিয়ে করতে হবে। এভাবে অনেক বিজনেস পেইজ গ্রাহকদের সাথে যুক্ত হয়ে থাকে ও সর্বোচ্চ রিচ নিয়ে আসে এবং সেলও পাওয়া সম্ভব হয়। অর্গানিক মার্কেটিং করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত পোস্ট দিয়ে পেইজে অ্যাক্টিভ থাকতে হবে।

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং হল আপনি ফেসবুককে স্পন্সর করবেন আপনার কিছু অ্যাড রান করানোর জন্যে এর বিনিময়ে আপনাকে কিছু অর্থ খরচ করতে হবে। ব্যবসার প্রচারনার জন্যে ইনভেস্ট করা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। ছোট খাটো সব ধরনের ব্যবসায়ীকেই নিজের ব্যবসার প্রচারনার জন্যে কিছু না কিছু ইনভেস্ট করতে হয়। তবে ফেসবুকে নয় কেন? যেখানে অন্যসব মাধ্যমের চেয়ে গ্রাহকের দৃষ্টি আকর্ষন করা বেশী সহজ। সুতরাং, ফেসবুকে পেইড মার্কেটিং করা নির্থক কিছু নয়। ফেসবুকে সঠিক ভাবে পেইড মার্কেটিং করলে আপনি নিঃসন্দেহে যথেষ্ট সেল পাবেন। 

ফেসবুক মার্কেটিং করার নিয়ম-

বেশ কয়েকটি পদ্ধতি অবল্বন করে আপনি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন। মূল উদ্দ্যেশ্য হল ভালো কন্টেন্ট দিয়ে গ্রাহকের সাথে এঙ্গেইজমেন্ট তৈরী করা।

আপনি যখন পন্যের ভাল মানের কন্টেন্ট ফেসবুকে আপনার বিজনেস পেইজে আপলোড করবেন। গ্রাহক সেই ভিত্তিতেই আপনার পন্যে ক্রয়ের ক্ষেত্রে আগ্রহী হবে। প্রথমেই বলে রাখি ফেসবুক মার্কেটিং করতে হলে আপনার সবার আগে প্রয়োজন হবে ফেসবুকে একটি বিজনেস পেইজ ক্রিয়েট করা তারপর তার সাথে যথাযথ প্রোফাইল পিকচার এবং কভার ফটো যুক্ত করুন।

যেসব ফরমেটে ফেসবুকে আপনি পোস্ট দিয়ে মার্কেটিং করতে পারবেন সেগুলো হল –
ভিডিও

বর্তমানে ফেসবুকে ইউজাররা বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশন যে সমস্ত কন্টেন্ট দেখতে বেশী পছন্দ করে তা হল ভিডিও কন্টেন। ১৫ সেকেন্ড থেকে এক মিনিটের ভিডিও গুলো অডিয়েন্স কে বেশী আকর্ষন করে। কেননা অনেক সময়ই ক্রেতারা প্রোডাক্ট এর আপলোড করা ছবি গুলোকে আসল ছবি মনে করেন না, প্রোডাক্টের ছবি দেখার চেয়ে ভিডিও দেখে ক্রেতারা প্রোডাক্ট এর মান নিয়ে বেশী আস্বস্তবোধ করেন, এতে আপনার সেল এর পরিমান ও বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। আর তাই বাংলাদেশে অনলাইন বিজনেস এর ক্ষেত্রে ফেসবুক লাইভের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশী। কারণ ক্রেতারা ভিডিও দেখে প্রোডাক্টকে রিলায়েবল মনে করে।

সুতরাং আপনি যদি এই ১৫ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের মধ্যে কোন ভিডিও কন্টেন তৈরী করে অডিয়েন্স কে আপনার প্রোডাক্ট এর ব্যাপারে সম্পূর্ন একটি ধারনা দিতে পারেন তাহলে অডিয়েন্স আপনার প্রোডাক্টের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবে।

ইমেজ

ভিডিও কন্টেন্ট জনপ্রিয় হবার আগে ইমেজ কন্টেন্ট দিয়েই ফেসবুকে অ্যাডভার্টাইজ করা গেছে এবং এটি এখনো জনপ্রিয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রোডাক্ট এর ছবি গুলো নিজের তোলা হতে হবে। এক সময় কালেক্টেড ছবি দিয়েই সেল করা গেলেও এখন অডিয়েন্স আরও বেশী সচেতন হয়ে গেছে। তবে একটি ভাল প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে মান সম্মত কিছু ছবি তুলে সেগুলো দিয়ে অ্যাডভার্টাইজ করা গেলে অডিয়েন্স এর সাথে এঙ্গেইজমেন্ট ধরে রাখা সহ হিউজ এমাউন্ট প্রোডাক্ট সেল করা সম্ভব। ইমেজ অ্যাড এর সাথে আপনার ওয়েব সাইট কানেক্ট করেও আপনি অডিয়েন্সকে ওয়েব সাইটের দিকে ড্রাইভ করতে পারবেন। আর তাই মার্কেটাররা এখন অনেকেই কম বেশী একটা বাজেট বরাদ্দ রাখে প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফির জন্য। কেননা ভালো মানের ছবি অডিয়েন্সকে সবসময়ই আকর্ষণ করে।

ফেসবুক পেইড মার্কেটিং
টেক্সট

এই ফরমেটে আপনি কেবল কিছু অর্থবহ লেখা দিয়ে আপনার পন্যের গুনগত মান এবং ব্যবহার বিধি নিয়ে লেখা লেখি করে ফেসবুকের স্ট্যাটাস আকারে পোস্ট করে গ্রাহকদের সাথে এঙ্গেইজমেন্ট তৈরী করতে পারবেন। তবে বাকি দুটো মাধ্যম এর চেয়ে এই পদ্ধতিতে মার্কেটিং করবার চেষ্টা করলে অডিয়েন্সের কাছ থেকে কম সাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেননা এখনকার যুগে অডিয়েন্স ভিজুয়াল কন্টেন্টকে বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

ফেসবুক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেসবুক স্টোরিস

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যে জিনিসটি সব সময় ফলো করতে হয় তা হল ট্রেন্ড। ফেসবুক স্টোরিস ২০১৭ সাল থেকেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং এখন পর্যন্ত এটি একটি ট্রেন্ডি ফিচার।ফেসবুক মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আপনি এই ফিচারটির ব্যবহারটিকে এড়িয়ে যেতে পারবেন না। ফেসবুক স্টোরিতে বেশি রিচ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে এছাড়াও স্টোরি থেকেই অডিয়ান্স সরাসরি আপনাকে মেসেজ করতে পারে। সেটি আপনাকে গ্রাহকের সাথে সরাসরি কথা বলার সুযোগ করে দেয়। ফেসবুক স্টোরিতে আপনি রেগুলার যেকোন ক্যাজুয়াল পোস্ট করতে পারেন যেমন প্রোডাক্ট প্যাকেজিং, প্রোদাক্টের ছবি, রিভিউর স্ক্রিনশট সহ আরো অনেক কিছু। নিয়মিত স্টোরি আপলোড করলে অডিয়ান্সের সাথে আপনার এঙ্গেইজমেন্ট বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা আরো বাড়বে।

ফেসবুক স্টোরি মিউজিক

সম্প্রতি উন্নত দেশ গুলোর মত বাংলাদেশেও ফেসবুক স্টোরিতে মিউজিক অ্যাড করার সুবিধা চালু হয়েছে। যেহেতু আপনি একজন মার্কেটার এবং ট্রেন্ডকে ফলো করা আপনার অন্যতম দায়ীত্ব। এই ফিচারটি ব্যবহার করে আপনি নানান মিউজিকের সাথে আপনার পন্যের ছবি বা ভিডিও অ্যাড করে স্টোরি আপলোড করুন। বিশেষত ট্রেন্ডি গানগুলোর সাথে অ্যাড করার চেষ্টা করুন। ট্রেন্ডি মিউজিক গুলো ব্যবহার করে কন্টেন্ট তৈরী করলে ফেসবুকে রিচ এবং রেস্পন্স পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে।

ফেসবুক স্টোরি মিউজিক - facebook story music
ফেসবুক রিলস ( Facebook Reels)

আপনি যদি ইন্সট্যাগ্রাম এবং টিকটকের সাথে পরিচিত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চই রিলস ফিচারটির ব্যাপারে জানেন। রিলস হল এমন একটি ফিচার যেখানে সর্বোচ্চ এক মিনিটের একটি ভিডিও আপলোড করা যায় এবং এই এক মিনিটের ভিডিওগুলোই ক্রিয়েটররা এমন ভাবে তৈরী করে যা দর্শকের আকর্ষন শেষ পর্যন্ত দেখার জন্যে ধরে রাখে। ফেসবুক সম্প্রতি রিলস ফিচারটি অ্যাড করেছে। আপনি চাইলে পন্যের এক মিনিটের ভিডিও তৈরী করে রিলস হিসেবে আপলোড করতে পারেন। যেমন আপনার পন্যের ব্যবহার বিধি, প্রোডাক্ট শো-কেসিং, আপনার পন্যের প্যাকিং এসব নিয়েই কন্টেন্ট তৈরী করতে পারেন।

কেননা ভিডিও কন্টেন্ট সকল ধরণের অডিয়েন্স সবথেকে বেশি পছন্দ করে। সব সময় চেষ্টা করুন ফেসবুকের সব ফিচার গুলোর সর্বোত্তম ব্যবহার করতে।

ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং পেইড মার্কেটিং কিভাবে করব ? 

আপনি একজন সফল ফেসবুক মার্কেটার হতে চাইলে আপনাকে দুটি মার্কেটিংই করতে হবে। কেননা আপনি যখন ফেসবুক মার্কেটিং করে আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করতে চাইবেন তখন আপনার যেমন পেইড রিচ এর দরকার আছে একই সাথে আপনার অর্গানিক রিচের ও  প্রয়োজন আছে। আপনি শুধুমাত্র পেইড মার্কেটিং করে বেশি দিন ফেসবুক মার্কেটিং এ টিকে থাকতে পারবেন না। অথবা আপনি নিজেই একসময় নিজের পয়সা খরচ করে করে অ্যাডভার্টাইজ করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাবেন।

সেক্ষেত্রেই আপনার উচিত হবে কিছু অর্গানাকি কাস্টমার হাতে রাখা অর্থাৎ ফেসবুকে পেইড মার্কেটিং করার পাশাপাশি অর্গানিক মার্কেটিং করা।

কিভাবে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করবেন ? 

শুরুর দিকে আপনি ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং দিয়েই শুরু করুন। আপনার ফেসবুক পেইজটি সুন্দর ভাবে সাজিয়ে উপস্থাপন করুন। সুন্দর একটি প্রোফাইল ফটো, কভার ফটো দিয়ে আপনার পেইজে নিয়মিত পোস্ট দেয়া শুরু করুন। নিয়মিত ২-৩ টি করে পোস্ট দিয়ে গ্রাহকদের সাথে এঙ্গেইজমেন্ট তৈরী করুন। অবশ্যই আপনি ফ্রি মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এত বেশী রিচ আশা করতে পারেন না। কেননা পেইড মার্কেটিং-এ যে সমস্ত ফেসবুক টুলস ব্যবহার করার সুযোগ থাকে ফ্রি মার্কেটিং এ তা থাকে না। তাই যতটুকু সুযোগই ফেসবুক আপনাকে দিচ্ছে চেষ্টা করুন তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করার।

কিভাবে পেইড মার্কেটিং করব?  

ফেসবুকে এই সেকশনটি বিশাল অর্থাৎ আপনি পেইড মার্কেটিং করে ফেসবুক অনেক ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ অডিয়েন্স নিয়ে আসতে পারবেন। ফেসবুক পেইড মার্কেটিং মূলত ফেসবুকের অ্যাডভার্টাইজমেন্ট রান করাকেই বলা হয়। ফেসবুকে অ্যাড রান করার ক্ষেত্রে ফেসবুক আপনাকে অনেক ধরনের পদ্ধতি অফার করবে। আপনাকে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের বিজনেস নিশ বিবেচনা করে নির্ধারন করতে হবে যে আপনি কোন পদ্ধতিতে ফেসবুক অ্যাড রান করতে চান? আপনি যেহেতু নিজের পয়সা খরচ করে অ্যাড রান করছেন আপনার উদ্দেশ্য অবশ্যই এমন হওয়া উচিত যে পুরো পয়সাটা উসুল করে নিয়ে আসা। অর্থাৎ সঠিক ভাবে ফেসবুক অ্যাড রান করে সর্বোচ্চ সেল নিয়ে আসা। কেননা অনেকেই ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞ্যান না রেখে অর্থ খরচ করে পেইড মার্কেটিং করে ঠিকই কিন্তু কোন রিচ পায়না। কেননা তারা সঠিক স্ট্রেটেজি ফলো করে না। পেইড মার্কেটিং নিয়ে আরো বিস্তারিত শেখার আগ্রহ থাকলে নিচে “ফেসবুক গডফাদার ফর্ম”-এ ক্লিক করে আপনার নিজস্ব ফর্ম-টি ফিলআপ করুন।

ফেসবুক গডফাদার ফর্ম

পেইড মার্কেটিং বেশ কিছু পদ্ধতিতে করা যায়। যেসব কৌশল ব্যবহার করে একটি সাকসেসফুল ফেসবুক অ্যাড রান করা যায় সেগুলো হল –

১) কাস্টম অডিয়েন্স

এই পদ্ধতিতে আপনি আপনার নিশের অডিয়েন্সদের সিলেক্ট করতে পারবেন। যেমন আপনার পন্যটি কারা ব্যবহার করবে, কোন বয়েসের, কোন অডিয়েন্সের কোন লিঙ্গের, কোন দেশের, কোন শহরের মানুষের কাছে আপনি আপনার অ্যাডটি শো করতে চান তা এই পদ্ধতিতে আপনি সিলেক্ট করে নিতে পারবেন। অন্যথায় আপনার অ্যাড র‍্যান্ডমলি যে কারো কাছেই যাবে এবং সেই অডিয়েন্স যদি আপনার নিশের না হয় অর্থাৎ ঐ ব্যক্তিবর্গ যদি উক্ত নিশে আগ্রহী না হন তাহলে তারা কোন এঙ্গেইজমেন্টই তৈরী করবে না এবং এভাবে না জেনে পেইড মার্কেটিং করে মানুষের অনেক অর্থও নষ্ট হয়। তাই অনেক সময়েই দেখা যায় যে কেউ কেউ দাবী করে থাকেন ফেসবুক পেইড মার্কেটিং আসলে কাজ করে না। এই ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল, কেননা সঠিক ভাবে অ্যাড রান করলে ফেসবুক পেইড মার্কেটিং অবশ্যই কাজ করে।

২) লুক এলাইক অডিয়েন্স

এই পদ্ধতিতে আপনি আপনার নিশ এর সাথে রিলেটেড আরো কিছু অডিয়েন্সকে সিলেক্ট করতে পারেন অর্থাৎ আপনার যারা নিশ ছিল তাদের রুচি, বয়স এবং লোকেশনের সাথে সিমিলার যারা অডিয়েন্স আছে তাদেরকে সিলেক্ট করে আপনি অ্যাড রান করতে পারেন এটি অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতি এই পদ্ধতিতে আরো নতুন এবং আরো বেশী অডিয়েন্সকে গ্রাব করা সম্ভব।

এইগুলো ছাড়াও ফেসবুকে আরো অনেক ধরনের পদ্ধতি আছে যে সব গুলো আপনাকে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে ব্যবহার করতে হবে

 ফেসবুক গ্রুপ মার্কেটিং কী এবং কীভাবে করবেন ?

বাংলাদেশে এই মূহুর্তে ফেসবুক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেসবুক গ্রুপ মার্কেটিং খুব বেশী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা ফেসবুক গ্রুপ মার্কেটিং এর উপর খুব বেশী নির্ভরশীল। শুধুমাত্র ফেসবুক গ্রুপে মার্কেটিং করে লাখ লাখ টাকা সেল করা সম্ভব। 

ফেসবুকের যে “ফেসবুক গ্রুপ” নামের ফিচারটি আছে। সেই ধরনের নানান গ্রুপে বা নিজের তৈরী কোন গ্রুপ থেকে মেম্বারদেরকে কাস্টমারে পরিণত করার প্রক্রিয়াকেই ফেসবুক গ্রুপ মার্কেটিং বলা হয়।

ফেসবুক মার্কেটিং

সুতরাং, আপনাকে ফেসবুক গ্রুপে এমন কিছু অ্যাক্টিভিটি করতে হবে যেগুলো দেখে মেম্বাররা আপনার প্রোডাক্টে আগ্রহ প্রকাশ করে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, এখানে আপনাকে কোন পেইড অ্যাডভার্টাইজমেন্ট করতে হবে না। আপনি অরগানিক ওয়েতে আপনার কাস্টমার পাবেন। একই সাথে ফেসবুক গ্রুপ থেকে রিপিটেড কাস্টমার পাওয়ারব সম্ভাবনা বেশী থাকে।

নিজের তৈরী করা গ্রুপে আপনি মার্কেটিং করতে পারেন পাশাপাশি ফেসবুকে বেশী কিছু কমিউনিটি গ্রুপ আছে যেগুলো বেশ বড় এবং সবাই মিলে সেখানে ফেসবুক গ্রুপ মার্কেটিং করে থাকে। আপনি এমন কিছু গ্রুপ খুজে বের করে সেই গ্রুপ গুলোতে নিজের পন্যের মার্কেটিং করতে পারেন।

ফেসবুক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেসবুক পেইজ এর চাইতেও আপনি ফেসবুক গ্রুপ মার্কেটিং করে বেশী অর্গানিক রিচ পাবেন।

ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে শিখবেন?

এটা শেখা খুব কঠিন কিছু নয়। তবে না জেনে করাটা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজও নয়। সুতরাং করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে কিছু পড়াশোনা করতে হবে। এখন অনেক প্রতিষ্ঠানই ফেসবুক মার্কেটিং কোর্স করিয়ে থাকে এছাড়াও বাজারে এটি নিয়ে বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে। এসবের বাইরেও ইউটিউবে অনেক এক্সপার্টরাই টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরী করছেন। আপনার যদি মন থেকে ইচ্ছা থাকে তবে একটু পড়াশোনা করলে আপনিও আয়ত্ত করে ফেলতে পারবেন মার্কেটিং এর এই গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশলকে।

বিশেষ করে পেইড মার্কেটিং করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে জেনে বুঝে মার্কেটিং করতে হবে নইলে আপনি সেল নিয়ে আসতে ব্যর্থ হবেন। একই সাথে ফেসবুক মার্কেটিং-এ আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।

নতুনদের জন্যে ফেসবুক মার্কেটিং –

নতুনদের ক্ষেত্রে শুরুটা অর্গানিক ভাবেই করা উচিত। অর্থাৎ, শুরুতেই পেইড মার্কেটিং নিয়ে ঝাপ না দিয়ে আগে আপনার বিজনেস পেইজটির একটি মান তৈরী করুন। সঠিক কভার ফটো, বায়ো এবং নিয়মিতভাবে পোস্ট আপলোড করা এসবের প্রতি মনোযোগ দিন। তারপর পেইড মার্কেটিং নিয়ে একটু পড়াশোনা করে ধীরে ধীরে অল্প অল্প বিনিয়োগ করুন ফেসবুক অ্যাডের উপর। শুরুতেই বেশী বেশী টাকা ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজের উপর ইনভেস্ট করার দরকার নেই। কেননা অল্প অল্প টাকা দিয়ে ছোট ছোট অ্যাড রান করে টেস্ট করে আপনি বুঝতে পারবেন কোন পদ্ধতি আপনার জন্যে বেশী কার্যকর। 

কিভাবে সঠিক সময় নির্বাচন করবেন?

ফেসবুকে অ্যাড রান করার জন্যে কিছু নির্দিষ্ট সময় থাকে যখন পোস্ট করলে আপনি সব চেয়ে বেশী রেস্পন্স পাবেন। এই সময়টা নির্ভর করে আপনার অডিয়েন্স ঠিক কোন সময়ে সবচেয়ে বেশী ফেসবুকে অ্যাক্টিভ থাকে। আমাদের দেশে বেশীরভাগ সময় মানুষ সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ফেসবুকে অ্যাক্টিভ থাকে। সুতরাং আপনার অডিয়েন্স যদি শুধু এই দেশের মানুষেরা হয় তাহলে আপনি এই সময়টাতে পোস্ট করলে সর্বোচ্চ এঙ্গেইজমেন্ট পাবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হলে আপনি কোন ভাবেই ফেসবুক মার্কেটিং কে স্কিপ করতে পারবেন না। কেননা আজকের দিনে ফেসবুক মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বড় অংশ দখল করে আছে। 

পুরো লেখাটি কেমন লাগলো তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে সত্যিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

যদি মনে হয় লেখাটি নতুন উদ্যোক্তাদের সাহায্য করবে পরবর্তী দিক নির্দেশনা পেতে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।

এই ধরনের আরও অনেক ইনফো কন্টেন্ট এর জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন
Marketing

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং গাইডলাইন

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর এক অন্যতম পাওয়ারফুল টুলস। ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে মার্কেটিং যত সহজ হয়েছে, কম্পিটিশন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিউজ

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন
Marketing

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন?

আপনার বিজনেস নিশ কি হবে? কি নিয়ে কাজ করবেন? বা কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিই এপ্লাই করবেন। সব কিছু সিলেক্ট করার আগে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্ট হচ্ছে কম্পিটিটর