অ্যামাজন এফবিএ (amazon Fba) – স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন

অ্যামাজন এফবিএ
Share This Post

জনপ্রিয় ডিজিটাল বিজনেস অ্যামাজন এফবিএ (AMAZON FBA) ।

ধরুন এটা ২০২২ সাল নয় ২০০২ সাল। আপনি একটি ব্যবসা খুলতে চান। আপনার বেশ বড় অংকের পুঁজি দরকার,কোন প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন সেগুলো দরকার,কাস্টমার ঠিক করা দরকার, প্যাকিং প্রসেস,ডেলিভারি সিস্টেম সবকিছু নিয়েই আপনাকে মাথা ঘামাতে হবে।

তবে আশার কথা হচ্ছে এটা ২০০২ সাল নয় । এই সময়ে আপনি যদি ব্যবসা করতে চান,আপনাকে এত কিছু না ভাবলেও চলবে। কারন, আপনার ব্যবসায় লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়ার জন্য তৈরি আছে অ্যামাজন এফবিএ (FBA)। আপনার মাথার ব্যথা নিজের মাথায় নিয়ে যেই প্রতিষ্ঠানটি আপনার ব্যবসাকে সহজ করে দিলো আজকের লেখাটা সেই অ্যামাজন এফবিএ (FBA) নিয়ে।

অ্যামাজন এফবিএ (FBA) কি?

amazon-fba

নাম শুনে গোয়েন্দা সংস্থার মতন মনে হলেও বিষয়টি এতো ক্রিটিক্যাল না। এফবিএ’র পূর্ণরূপ হচ্ছে “ফুলফিলমেন্ট বাই অ্যামাজন”। অর্থাৎ,এর কাজ হচ্ছে আপনার এবং  আপনার মতন বিশ্বের অসংখ্য খুচরা ব্যবসায়ীর উদ্যোগকে “ফুলফিল করা” তথা পূর্ণতা দেয়া।  

কিভাবে এফবিএ এই কাজটি করে?

ধরুন আপনি একজন খুচরা ব্যবসায়ী। আপনার কাজ হবে আপনার পণ্যগুলোর নাম তালিকাসহ অ্যামাজন এফবিএ (AMAZON FBA)’তে পাঠানো। অ্যামাজন আপনার পণ্যগুলি কিনে নিবে। এর মাধ্যমে আপনার পণ্যগুলোর চিন্তা আপনি অনেকাংশেই অ্যামাজনের কাছে দিয়ে দিলেন। 

এবার যখন কাস্টমার অর্ডার আসবে তখন সেই অর্ডার রিসিভ করবে অ্যামাজন । শুধু অর্ডার রিসিভিং এই শেষ নয়। এরপর থেকে পণ্য প্যাকিং, ডেলিভারি থেকে শুরু করে পণ্যে কোন সমস্যা থাকলে সেগুলো ফেরত দেয়া কিংবা টাকা ফেরত দেয়া এইসব কাজগুলোই আসলে অ্যামাজন এফবিএ (FBA) করে থাকে। 

অ্যামাজন আপনাকে কিছুদিন পরপর তাদের গুদামে আপনার পণ্যের আপডেট জানিয়ে দিবে। এরপর আপনি সেই হিসেবে পণ্য যোগ বিয়োগ করতে পারবেন। আপনার পণ্য অ্যামাজন বিক্রি করার পর আপনার যেই লাভের অংশ থাকবে সেটা সে ঠিকই আপনার ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দিবে। সুতরাং, বুঝতেই পারছেন আপনার ব্যবসার টেনশন অনেকখানি কমিয়ে দিয়ে তাকে ফুলফিল করাই অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’র কাজ।

আপনার ব্যবসা যদি নতুন হয় ,আপনার কাছে গুদাম ভাড়া করার মতন টাকাপয়সা না থাকে আপনি অ্যামাজনের মাধ্যমে আপনার এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। এরপর ধরুন যখন কোন ব্যবসায়ী দেখবেন তার গুদামে পণ্য রাখার জায়গা হচ্ছে না। কিন্তু,প্রোডাকশনও বন্ধ করার উপায় নেই। এরকম অবস্থায় অ্যামাজনের সাহায্য নিলে তারা খুব সহজেই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। 

অ্যামাজন অবশ্যই আপনাকে তার কোন ওয়্যারহাউস বা গুদামে আপনার পণ্য রেখেছে সেই তথ্য আপনাকে জানিয়ে দিবে।

এতক্ষণের আলোচনায় নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন অ্যামাজন এফবিএ (AMAZON FBA)’তে মূলত দু’টি পার্টি কাজ করে। অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ এবং যেসব ব্যবসায়ীরা অ্যামাজনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করেন তারা। অ্যামাজন থেকে যাঁরা পণ্য ক্রয় করেন তাদের অধিকাংশই অবশ্য মনে করেন তারা অ্যামাজন থেকে পণ্য কিনছেন। এতে অবশ্য তাদের দোষ দেয়া যা না। কারন,অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’র পেছনের মেকানিজম সম্পর্কে তারা জানেন না।

অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’তে অ্যামাজনের রোল।

আগের আলোচনায় আমরা বলেছি অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’তে মূলত দুইটি পার্টি কাজ করে। একটি অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটি হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। প্রথমেই আমরা অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’র রোল সম্পর্কে জেনে নিবোঃ-

১) প্রথমেই অ্যামাজন আপনার কাছ থেকে পণ্য নিয়ে তার ওয়্যারহাউস বা গুদামে সংরক্ষণ করবে। এর সাথে সাথে তারা আপনাকে জানিয়ে দিবে কোন ওয়্যারহাউসে আপনার পণ্য রাখা হয়েছে। 

২) অ্যামাজনের প্রোডাক্ট লিস্টে আপনার পণ্যের নাম উঠে যাবে। অর্থাৎ,অ্যামাজনের প্ল্যাটফর্মে ক্রেতারা আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখতে পাবে।

অ্যামাজন-এফবিএ

৩) অ্যামাজনের কাছ থেকে ক্রেতারা আপনার প্রোডাক্টটি কিনবে। লেনদেনের পুরো বিষয় দেখার সাথে সাথে আপনার পণ্যের কি পরিমান মজুদ গুদামে আছে সেই বিষয়টিও অ্যামাজন আপডেট করবে।

৪) অ্যামাজন অর্ডার রিসিভ করা থেকে শুরু করে প্রোডাক্ট প্যাকিং,ডেলিভারি এইসব বিষয়ও দেখভাল করবে। এর সাথে সাথে কোন পণ্য ফেরত দেয়া কিংবা রিফান্ড করা অর্থাৎ, কোন সমস্যা হলে টাকা ফেরত দেয়ার কাজটিও অ্যামাজন করবে।

৫) এর পাশাপাশি  যাবতীয় যত কাস্টমার সার্ভিসের কাজ আছে সেই কাজগুলিও অ্যামাজন করে থাকে।

৬) প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর অ্যামাজন আপনার প্রফিটের অংশ আপনার ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দিবে।

৭)  অ্যামাজন আপনাকে এই সেবা দেয়ার বিনিময়ে আপনার পণ্যের থেকে একটি লাভের অংশ নিজেদের জন্য রেখে দিবে। যেটা খুবই স্বাভাবিক। তবে পণ্য পরিবহণের জন্য যেই ফি অ্যামাজন কেটে রাখছে তা পোস্টাল সার্ভিসের ফি’র তুলনায় খুবই সামান্য।

মোটামুটি এই হচ্ছে অ্যামাজন এফবিএ (AMAZON FBA)’র কার্যক্রমে অ্যামাজন কর্তৃপক্ষের রোল। খেয়াল করলে দেখবেন যে আপনার পণ্য সংরক্ষণ, পরিবহণ এবং বিক্রয়ের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজটিই করে ফেলছে অ্যামাজন। আপনার কাজ হচ্ছে স্টক সরবরাহ করা এবং প্রফিট আয় করা।

FBA’তে সেবা গ্রহীতাদের রোল

পরিষ্কারভাবেই বুঝতে পারছেন আমি অ্যামাজনের সেবাগ্রহীতা বলতে আসলে সেইসব ব্যবসায়ীদের বোঝাচ্ছি যারা এখানে তাদের পণ্যটি রাখতে চান। এখানে আপনিও একজন পটেনশিয়াল সার্ভিস রিসিভার। অ্যামাজন আপনার জন্য কি কি সার্ভিস সেটা জানার পর এখন সময় এসেছে আপনার রোল সম্পর্কে পরিষ্কার হওয়ার। এফবিএ’তে আপনার রোলটি কি হবে? 

অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’তে একজন সেবা গ্রহীতারও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকে। যথাঃ-

১) প্রোডাক্ট চয়েজঃ-

অ্যামাজন এফবিএ (FBA) আপনার প্রোডাক্ট চেইনের ব্যাক এন্ডে কাজ করে। অর্থাৎ, গুদামজাতকরণ এবং বিক্রির কাজটি করে। এর আগের কাজগুলি কিন্তু আপনাকেই করতে হয়। এর ভেতর সবচাইতে ভাইটাল অংশটি হচ্ছে প্রোডাক্ট চুজ করা। এই ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয়ের ওপর অবশ্যই জোর প্রদান করতে হবে। যেমনঃ-

  • বিজনেস মডেল তৈরি করা।
  • প্রোডাক্ট লিস্টিং।
  • মার্কেট নিস খুঁজে বের করা। 
  • টার্গেট কাস্টমার ঠিক করা।
  • মার্কেট রিসার্চ ।

ইত্যাদি।

এইসকল ধাপ অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি কোন প্রোডাক্টটি মার্কেটে বিক্রি করতে চান তা ঠিক কর নিবেন। 

২) আপনার মজুদ (ইনভেনটরি) আপ টু ডেট রাখাঃ-

অ্যামাজন আপনাকে স্টক ইনভেনটরি সম্পর্কে সবসময় আপডেট দিতে থাকবে। আপনার কাজ হবে এই আপডেট ফলো করে অ্যামাজনের ওয়্যারহাউসে আপনার পণ্যটি যথেষ্ট পরিমানে আছে কিনা সেই নিষয়ে সচেষ্ট থাকা।

৩) ইফেক্টিভ প্রোডাক্ট লিস্টিং এবং মার্কেটিংঃ-

আপনার প্রোডাক্ট লিস্টিং এর কাজটি আপনাকেই করতে হবে। এর সাথে সাথে আপনার প্রোডাক্টের মার্কেটিং এর যেসব কন্টেন্ট অর্থাৎ,প্রোডাক্ট আর্টিকেল তৈরি, ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট প্রভৃতি কন্টেন্ট কিন্তু আপনাকেই তৈরি করে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার প্রোডাক্টটি অ্যামাজন প্রোডাক্ট লিস্টে সবার উপরে রাখার জন্য যে যে পদক্ষেপ আপনার নেয়া দরকার। সেসব নিতে হবে। 

অ্যামাজনে পণ্য বিক্রি করার উপকারিতা

amazon-fba-business
১। রেপুটেশন

 আপনি অ্যামাজনের মতন একটি বড় প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন এটাই আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের রেপুটেশন অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে। আর ব্যবসার ক্ষেত্রে রেপুটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রেপুটেশন থেকেই গুডউইল তৈরি হয়।

২। দ্রুত ডেলিভারি সিস্টেম

অ্যামাজনের মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য অত্যন্ত দ্রুত কনজিউমারের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন।

৩। আনুষঙ্গিক খরচ কমে যাওয়াঃ- 

একবার ভেবে দেখুন। ওয়্যারহাউস, প্যাকিং,ডেলিভারিং,রিফান্ডিং এবং এর সাথে সম্পর্কিত এমপ্লয়ি কস্ট যখন আপনার উপর থেকে সরে যাচ্ছে আপনার উপর আসলে খরচের এক বিশাল বোঝা যার থাকছে না। যা আপনার প্রফিট মার্জিন বাড়িয়ে তুলবে।

৪। সময় বেঁচে যাওয়া এবং প্রোডাকশন বৃদ্ধি পাওয়াঃ-

আপনার গুদামজাতকরণ,প্যাকিং,ডেলিভারিং এবং কাস্টমার সার্ভিসের দায়িত্ব অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’র উপর চলে যাওয়ায় আপনি প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টে অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন। যা আপনার ব্যবসার জন্যই ভাল হবে।

৫। ব্যবসার ফ্লেক্সিবিলিটিঃ-

আপনি অ্যামাজন এফবিএ (FBA)’র সাহায্যে বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে ২৪ ঘন্টা আপনার ব্যবসা চালাতে পারেন। আপনি অন্য কোন মাধ্যমে এই সুযোগ পাবেন না।

৬। অন্যান্য সুযোগঃ-

অ্যামাজন প্রাইম সাবস্ক্রাইবারদের জন্য আপনি ফ্রি ডেলিভারি অফার করতে পারেন। এছাড়া অ্যামাজন বাই বক্সে আপনার প্রোডাক্টটি শো করে আপনি আপনার সেলস বৃদ্ধি করতে পারেন।

নতুনরা অ্যামাজন এফবিএ’তে কিভাবে সেল করবে?

অ্যামাজনের এফবিএ সার্ভিসের ফুল মিনিং হচ্ছে ফুলফিলমেন্ট বাই অ্যামাজন। এটি এমন একটি সেবা যা আপনার পণ্য গুদামজাতকরণ থেকে শুরু করে,কাস্টমার অর্ডার রিসিভ করা,প্যাকিং,ডেলিভারিং,লেনদেনের যাবতীয় কাজ,ইনভেনটরি আপডেট করা এইসব কাজ করে থাকে। এইক্ষেত্রে আপনার কাজ হয়ে থাকে অ্যামাজনে আপনার পণ্যটি দেয়া ,নিয়মিত প্রোডাক্টের সরবরাহ করা এবং প্রফিট রিসিভ করা।

সারাবিশ্বে অ্যামাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টার কিংবা ওয়্যারহাউসের মাধ্যমে অ্যামাজন তার এফবিএ সার্ভিস পরিচালনা করে। 

সহজে বোঝানোর জন্য যদি বলি,আপনার ব্যবসাকে ফুলফিল বা পরিপূর্ণ করার কাজটি করছে অ্যামাজন এফবিএ। আপনার কাছে যদি ওয়্যারহাউসিং এবং পণ্য ডেলিভারির জন্য যথেষ্ট অর্থ কিংবা অবকাঠামো নাও থাকে আপনি অ্যামাজনের এফবিএ সার্ভিস ব্যবহার করে আপনার ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারেন। অর্থাৎ, অ্যামাজনের “ফুলফিলমেন্ট বাই অ্যামাজন” সার্ভিস আপনার ব্যবসাকে ফুলফিলমেন্ট বা পূর্ণতা দিচ্ছে।

অ্যামাজনের এই উদ্যোগ সারাবিশ্বের ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম অনেক সহজ করে দিয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন আপনার খরচ কমছে ঠিক তেমনভাবেই সময়ও বাঁচছে। আবার, অ্যামাজনের মতন একটি প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিক্রি করে আপনি আপনার কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের জন্য যেই গুডউইল আনতে পারছেন তা অন্য কোথাও পাবেন না। 

অর্থাৎ,এককথায় অ্যামাজন এফবিএ আপনার ব্যবসাকে অত্যন্ত সহজ করে দিচ্ছে। এখন ব্যবসা করতে আপনার বিশাল আয়োজন না হলেও চলবে।

এখন একটি বড় প্রশ্ন বা কনফিউশন যাই বলেন না কেন সেটি নিয়ে আলোচনা করবো। নতুনদের ভেতর এই প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক যে ,”অ্যামাজন এফবিএ কিভাবে সেল করে কিংবা কিভাবে আমাদের পণ্যটি আমরা অ্যামাজনের প্ল্যাটফর্ম থেকে বিক্রি করতে পারবো?”

আমাদের আজকের ব্লগটি এই বিষয় নিয়েই। আজকের আর্টিকেলে আমরা জানানোর চেষ্টা করবো ,”কিভাবে নতুনরা অ্যামাজন এফবিএ’তে তাদের সেল শুরু করবে।

কেন আপনি অ্যামাজন এফবিএ চুজ করবেন?

এবার আপনার প্রশ্ন হতে পারে আপনি তো অন্যভাবেও কিংবা অন্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও আপনার ব্যবসা চালিয়ে নিতে পারেন। এফবিএ’র সেলিং প্রসেস নিয়ে আলোচনা শুরু করার আগে অ্যামাজনের গুরুত্ব নিয়ে আপনাকে ব্রিফ করে যাচ্ছি। 

অ্যামাজন
  • ট্রাস্ট এন্ড গুডউইলঃ- অ্যামাজন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যার উপর মানুষের আস্থা প্রমানিত। ই-কমার্সের দিকে যদি আপনি লক্ষ্য করেন দেখতে পাবেন অসংখ্য এমন কোম্পানি আছে যারা ফ্রডের দায়ে অভিযুক্ত। সারাবিশ্বের মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এমন প্ল্যাটফর্ম বিশ্বে খুব কমই আছে। এফবিএ’র মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ লেনদেন করছেন। অর্থাৎ, বিজ্ঞজনেরা যে বলেন ব্যবসার আসল পুঁজি হচ্ছে ট্রাস্ট বা ব্যবসা সেটি আপনি AMAZON FBA’ তে  পেয়ে যাচ্ছেন। এখন ,যখন আপনার প্রোডাক্ট আপনি এফবিএ’র মতন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিক্রি করবেন সেটা আপনার কোম্পানিতে নতুন ভ্যালু অ্যাড করবে। এই “গুডউইল” আপনার ব্যবসাকে ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
  • সময় এবং খরচ বাঁচানোঃ-  একবার ভেবে দেখুন অ্যামাজন এফবিএ আপনার সময় এবং খরচ দু’টিই কিভাবে বাঁচিয়ে দিচ্ছে। প্রথমে খরচের দিকটি চিন্তা করে দেখা যাক। আপনাকে গুদাম ভাড়া দিতে হচ্ছে না, গুদামের মেইনটেনেন্স নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। প্যাকিং,ডেলিভারিং এর দুশ্চিন্তাও থাকছে না। এর পেছনে যে লজিস্টিক্যাল খরচ আছে এবং এমপ্লয়ি নিয়োগ করার যে খরচ আছে সেটাও আপনাকে করতে হচ্ছে না। এমনকি আপনার ব্যাংক একাউন্টে প্রফিটের অংশও পাঠিয়ে দিচ্ছে অ্যামাজন। দেখুন আপনার খরচের পাশাপাশি কত খরচ বেঁচে যাচ্ছে। এই সময়টা আপনি প্রোডাক্টের ডেভেলপমেন্ট কিংবা নতুন প্রোডাক্ট লাইন খুঁজে বের করার পেছনে দিতে পারেন। যা আল্টিমেটলি আপনার ব্যবসাকেই উন্নত করবে।
  • ফিউচার সাস্টেইনিবিলিটিঃ- কোভিড-১৯ মহামারীকালীন অর্থনীতি প্রমান করেছে যে ভবিষ্যৎ পৃথিবী ই-কমার্সের। আগামীতে যুদ্ধ,মহামারী যাই হোক না কেন ব্যবসা থেমে থাকবে না এবং ব্যবসা হবে অনলাইনে। সোজা ভাষায় বললে ,”ই-কমার্স ইজ দ্যা ফিউচার”। আর ই-কমার্সের মধ্যে সবচাইতে শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে অ্যামাজন এফবিএ। ২০২১ সালে মহামারীকালীন সময়ে প্রতি সপ্তাহে বিশ্বের মোট ক্রেতার ৫১% কেনাকাটা করেছে অ্যামাজন এফবিএ থেকে । আবার, ১৫% ক্রেতা আছেন যারা মাসে অন্তত দুইবার এফবিএ থেকে পণ্য কিনেছেন। সুতরাং, বুঝতেই পারছে অ্যামাজন এফবিএ কতটা লাভজনক। 

এইসব কারনে আপনি যদি আপনার প্রোডাক্টটি সেল করতে চান তাহলে অ্যামাজন হতে পারে একটি দারুন প্ল্যাটফর্ম। 

অ্যামাজন এফবিএ’র বিজনেস মডেল 

অ্যামাজন এফবিএ’তে কিভাবে সেল করবেন তা বুঝতে হলে প্রথমেই আপনাকে এফবিএ’র বিজনেস মডেল নিয়ে ধারনা রাখতে হবে। এর বিজনেস মডেল সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা না রাখা পর্যন্ত আপনার কাছে পুরো বিষয়টি জটিল মনে হতে পারে। চলুন  এফবিএ’র বিজনেস মডেল দেখে নেয়া যাক।

কয়েক মডেলে আপনি অ্যামাজনের সাথে ব্যবসা করতে পারেন।

১) প্রাইভেট লেবেলঃ এইক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে পণ্য কিনে তা অ্যামাজনের কাছে বিক্রি করা। এতে প্রোডাক্টে আপয়ানার ব্র্যান্ড লোগো থাকবে। প্যাকেজিং ও হবে আপনার।

২) হোলসেল বা পাইকারীঃ আপনি কোন একসাথে অনেক প্রোডাক্ট পাইকারী মূল্যে তা এফবিএ’র ওয়্যারহাউসে স্টকের জন্য পাঠাবেন। সেখান থেকেই খুচরা মূল্যে আপনার প্রোডাক্টটি অ্যামাজন এফবিএ’র মাধ্যমে বিক্রিত হবে।

৩) রিসেল করাঃ- রিসেল করা মানে হচ্ছে পুনরায় বিক্রি করা। এইক্ষেত্রে আপনার কাজ হচ্ছে কোন অনলাইন বা ফিজিক্যাল স্টোর থেকে পণ্য কিনে নিয়ে অ্যামাজনে আবারো বিক্রি করা।

৪) ড্রপশিপিংঃএই মডেলে আপনি কোন কাস্টমারের হয়ে অ্যামাজন থেকে পণ্য অর্ডার দিয়ে কিনতে পারেন। এরপর সরাসরি ক্রেতার বাসায় অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারেন।

৫) হ্যান্ডমেডঃ- এতে আপনি আপনার তৈরি কোন ডিজাইন বিক্রি করতে পারবেন। 

অ্যামাজন এফবিএ’তে আপনি কি বিক্রি করবেন?

অ্যামাজনে কেন বিক্রি করবো তা আমরা জানলাম। অ্যামাজনে কোন কোন মডেল অনুসরণ করে আমরা বিক্রি করতে পারি তা জানলাম। এবার আমরা জানার চেষ্টা করবো অ্যামাজন এফবিএ’তে কোন প্রোডাক্ট আমাদের বিক্রি করা উচিত। অর্থাৎ, প্রোডাক্ট চয়েজ। যে কোন প্রোডাক্ট মনে চাইলো আর আমরা এফবিএ’তে বিক্রির জন্য তুলে দিলাম তাহলে কিন্তু হলো না। আমারা যেই কারনে কোন ব্যবসা করি অর্থাৎ প্রফিট সেটা জেনারেট করতে পারছি কিনা তা কিন্তু একটি বড় প্রশ্ন। প্রোডাক্ট চয়েজ করতে হলে আমাদের কিছু বিষয় বিবেচনা করে তবেই আগানো উচিত। 

এখানে ,একটি প্রোডাক্ট অ্যামাজনে বিক্রি করার আগে এই সংশ্লিষ্ট দুইটি প্রশ্ন নিয়ে আমাদের আলোচনা করা উচিত। 

অ্যামাজন-এফবিএ-বিজনেস

১) অ্যামাজনে এই পণ্যটি বিক্রি করা কি লাভজনক?

২) প্রোডাক্টের মার্কেট ডিমান্ড কতটুকু?

১) অ্যামাজনে কোন পণ্য বিক্রি করা লাভজনক হবে কিনা কিভাবে বুঝবো?

আপনি অ্যামাজনের প্রোডাক্টের সবচেয়ে প্রফিটেবল ক্যাটাগরিতে যাবেন। এরপর একটি প্রোডাক্ট চুজ করবেন। 

এবার আপনার কাজ হবে প্রোডাক্টের প্রফিটাবিলিটি নিয়ে কিছু গবেষণা করা। আপনি এই প্রোডাক্টে ইনভেস্ট করে লাভ করতে পারবেন কিনা সেই বিষয় নিয়ে আপনি কিছু কাজ করবেন। 

এইক্ষেত্রে, আপনি সম্পূর্ণ তিন ভাগে প্রোডাক্টের টাকাকে ভাগ করতে পারেন।

ক) ল্যান্ডিং কস্ট – এর ভেতর পড়বে আপনার প্রোডাকশন এবং শিপিং কস্ট ,বিজ্ঞাপনের খরচও এর ভেতর আপনাকে হিসাব করতে হবে।

খ) অ্যামাজন ফি –  এখানে অ্যামাজনের ওয়্যারহাউসিং এবং কাস্টমার সার্ভিসের জন্য যেই খরচ সেই খরচ আপনাকে হিসাব করতে হবে।

গ) আপনার প্রফিট – এইভাগে থাকবে আপনার প্রফিট। আপনি তিনভাগে ভাগ করার পর একভাগ লাভের জন্য রাখবেন। একটি পণ্যে যদি ১৮ টাকা খরচ হয় তাহলে তিনভাগের একভাগ অর্থাৎ ৬ টাকা আপনি আপনার লাভ রাখতে পারেন এমন হিসাব করে প্রোডাক্ট চুজ করবেন। 

২) আপনার প্রোডাক্টের মার্কেট ডিমান্ড কেমন?

একটি প্রোডাক্টের প্রফিটাবিলিটি নির্ভর করে তার মার্কেট ডিমান্ড বা বাজার চাহিদার ওপর। একটি প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য চুজ করার আগে আপনাকে অবশ্যই এর মার্কেট ডিমান্ড যাচাই করে নিতে হবে।   মার্কেট ডিমান্ড যাচাই করার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

ক) পণ্যের আকৃতি এবং ওজন। ছোট থেকে মাঝারি সাইজের এবং হালকা পণ্য অ্যামাজনে বিক্রির জন্য ঠিক করা উচিত।

খ) পণ্যটি সবসময় পাইকারী বা খুচরা মার্কেটে এভেইলেবেল কিনা সেই বিষয়টি যাচাই করে নেয়া ভাল।

গ) সিজনাল প্রোডাক্ট চয়েজ না করাই উচিত। 

অ্যামাজন এফবিএ (AMAZON FBA) ’তে আপনি কিভাবে পণ্য বিক্রি করবেন?

এবার অ্যামাজন এফবিএ’তে আপনি কিভাবে একটি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন সেই বিষয়ে আলোকপাত করছি। পুরো বিষয়টিকে আমরা ৭ টি ধাপে ভাগ করছিঃ-

১) প্রথমে কি পণ্য বিক্রি করবেন সেটি ঠিক করে নেয়া ।

সবার আগে কি পণ্য বিক্রি করবেন সেটি ঠিক করে নেয়া উচিত। প্রোডাক্ট চয়েজের ব্যাপারে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখা উচিত সেই বিষয়ে আমরা আগের প্যারায় আলোচনা করেছি।

২) বিনিয়োগ এবং লাভের হিসাব ঠিক রাখা। 

প্রোডাক্ট লিস্টের থেকে একটি প্রোডাক্ট চুজ করার পর আমাদের কাজ হবে মোট তিনভাগে প্রোডাক্ট সংশ্লিষ্ট মোট টাকাকে ভাগ করে নেয়া। ল্যান্ডিং কস্ট,অ্যামাজন ফি এবং প্রফিট। এই বিষয় নিয়েও আগে আলোচনা হয়েছে।

amazon
৩) পণ্য সংগ্রহ করা।

যেই সোর্সের থেকে  আপনি পণ্য সংগ্রহ করবেন মাথায় রাখতে হবে যেন তারা ধারাবাহিকভাবে যথাসম্ভব কম মূল্যে আপনাকে প্রোডাক্ট দিতে পারে। যেন আপনি প্রফিট মার্জিন রাখতে পারেন।  আবার,কোন পণ্যে সমস্যা থাকলে সেটি যেন ফেরত দিতে পারেন সেই বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।

৪) একাউন্ট তৈরি করা।

আগের তিনটি স্টেপ পার করার পর আপনার কাজ হবে AMAZON FBA ’তে একাউন্ট তৈরি করা। এফবিএ’তে রেজিস্ট্রেশন করার পরপর আপনি কিছু সুবিধা পেতে যাচ্ছেন।

  • দুইদিনের ফ্রি অ্যামাজন প্রাইম শিপিং সার্ভিস।
  • অ্যামাজন ফুলফিলমেন্ট সেন্টার বা ওয়্যারহাউসে পণ্য শিপিং এর ব্যবস্থা। 
  • ২৪ ঘন্টা কাস্টমার সার্ভিস।
  • আপনার প্রোডাক্টের রিফান্ড এবং রিটার্নের কাজও করে দিচ্ছে অ্যামাজন।
৫) প্রোডাক্ট লিস্টিং ঠিক করা।

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হচ্ছে এই প্রোডাক্ট লিস্টিং। এই স্টেপটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারলে আপনি আপনার পণ্যকে অ্যামাজন প্রোডাক্ট লিস্টে উপরের দিকে রাখতে সক্ষম হবেন। এর ভেতর যা যা থাকবে-

  • প্রোডাক্ট টাইটেল –  আপনি চেষ্টা করবেন আপনার পণ্যের একটি আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য নাম দেয়ার।
  • প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন ( বর্ননা)এই পয়েন্টে আপনি চেষ্টা করবেন আপনার প্রোডাক্টটি কাস্টমারের কেন দরকার সেই বিষয়টি তুলে ধরার। পণ্যের বর্ননা একটি প্রবলেমের উল্লেখ দিয়ে শুরু করলে ভাল হয়। এরপর সমস্যার সমাধানটি যে আপনার প্রোডাক্টে আছে সেই বিষয়টি উল্লেখ করে আপনি আপনার প্রোডাক্টের ডেসক্রিপশন শেষ করবেন।
  • প্রোডাক্ট ইমেজ আপনার পণ্যের আকর্ষণীয় কিছু ছবি তুলে আপনাকে ডেসক্রিপশনের সাথে দিতে হবে। যেন নতুন কেউ দেখার সাথ সাথে আপনার পণ্যের প্রতি ইন্টারেস্টেড হয়।
  • প্রোডাক্ট রিভিউ –  যেসব কাস্টমার আগে আপনার পণ্যটি ব্যবহার করেছেন তাদেরকে দিয়ে আপনার পণ্যের পজেটিভ রিভিউ করতে হবে। এতে নতুন কাস্টমাররা আপনার প্রোডাক্টের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেব।
৬) প্রোডাক্ট শিপিং

অ্যামাজন ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে আপনার প্রোডাক্টটি পাঠানোর আগে চেক করে দেখুন তার কোন ডিফেক্ট বা সমস্যা  আছে কিনা । আপনার প্যাকেজিং প্রসেসও বারবার চেক করে দেখুন।

৭) আয় করুন

উপরোক্ত সকল ধাপ সম্পন্ন হলে এবার আপনি অ্যামাজন এফবিএ থেকে আয় করার জন্য রেডি। নিয়মিত এফবিএ ওয়্যারহাউসে আপনার স্টক চেক করুন। ব্যাংক একাউন্ট তদারক করুন।

অ্যামাজনের ফি

অ্যামাজন সাধারণত দুই ধরনের ফি নিয়ে থাকেঃ-

  • ফুলফিলমেন্ট ফিঃ- ফুলফিলমেন্ট কস্টের ভেতর আছে প্যাকিং,ডেলিভারিং ইত্যাদির খরচ।
  • স্টোরেজ ফিঃ- এটি আপনার পণ্যের গুদাম বা ওয়্যারহাউসের ভাড়া ।
শেষকথা

পরবর্তী পৃথিবীর ব্যবসা পুরোটাই অনলাইন ব্যবসার ওপর দাঁড়িয়ে। এইক্ষেত্রে ভাল করতে হলে অ্যামাজন এফবিএ (FBA) সম্পর্কে আপনাকে ধারণা রাখতেই হবে। আশা করি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাকে অ্যামাজন এফবিএ (FBA) সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা দিতে সক্ষম হবে। 

পুরো লেখাটি কেমন লাগলো, তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে সত্যিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

যদি মনে হয় লেখাটি নতুন উদ্যোক্তাদের সাহায্য করবে পরবর্তী দিক নির্দেশনা পেতে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।

এই ধরনের আরও অনেক ইনফো কনটেন্ট এর জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন
Marketing

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন?

আপনার বিজনেস নিশ কি হবে? কি নিয়ে কাজ করবেন? বা কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিই এপ্লাই করবেন। সব কিছু সিলেক্ট করার আগে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্ট হচ্ছে কম্পিটিটর

প্যাশনকে প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড সাকসেস এ পরিণত করুন
Marketing

প্যাশনকে প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড সাকসেস এ পরিণত করুন

জীবনে সাকসেসফুল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে আপনার যেকোনো ধরনের কাজের প্রতি দৃঢ় প্যাশন গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সকলের কিছু ভালো লাগার জিনিস রয়েছে যেমন ছবি আঁকা।