কিভাবে একটি পারফেক্ট মার্কেট নিস সিলেক্ট করবেন

মার্কেট নিস
Share This Post

আপনি যেকোন ধরনের ব্যবসা শুরু করতে চান কিংবা মার্কেটিং শুরু করতে চান আপনাকে অবশ্যই প্রথম “মার্কেট নিস” বা আপনি মার্কেটের যেই অংশটি নিয়ে কাজ করতে চান তা সিলেক্ট করতে হবে। আপনি যদি মার্কেট নিস সিলেক্ট করতে না পারেন পুরো মার্কেট নিয়ে কোনভাবেই আপনি আপনার কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। সেইক্ষেত্রে আপনার ব্যর্থতার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। 

আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে আমরা একটি পারফেক্ট মার্কেট নিস সিলেক্ট করতে পারি সেই বিষয় নিয়ে।

১। প্যাশন এবং দক্ষতা বিচার করে এগিয়ে যাওয়াঃ-

এমন কোন পণ্য বা সেবার ব্যবসা শুরু করা উচিত নয় যাঁর ভেতর আপনি প্যাশন বা আগ্রহ  খুঁজে না পান। তাই আপনার পছন্দের যেই দিকটি আছে তাঁকে আপনার প্রফেশনে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করা উচিত। 

যেমন ধরুন আপনার মিউজিকে বেশি আগ্রহ। এখন অবশ্যই আপনি যদি ব্যবসা করতে চান আপনার মিউজিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি রিলেটেড ব্যবসাতেই নামা উচিত। হতে পারে সেটি প্রোডাকশন কিংবা রেকর্ডিং হাউস, হতে পারে মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট অথবা মিউজিক্যাল টিচিং-এ। কাপড়ের ব্যবসা যত লাভজনকই হোক না কেন আপনার জন্য তা না।

নিস

প্যাশনের ভিত্তিতে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস চুজ করা হয়ে গেলে এবার আপনার কাজ হবে এইখাতে দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এই দক্ষতা যেমন প্রোডাক্ট সম্পর্কিত সেইসাথে ব্যবসা পদ্ধতি সম্পর্কেও জ্ঞান এবং দক্ষতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। 

আপনাকে অবশ্যই আপনার ইন্টারেস্টের লেটেস্ট টেকনোলজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে জানতে হবে। ভাল নেটওয়ার্কিং এবং ইনভেস্টর থাকতে হবে। আপনার যাঁরা পটেনশিয়াল কাস্টমার তাঁদের মাইন্ডসেট সম্পর্কে একটি ভাল ধারনা আপনাকে নিয়ে রাখতে হবে। বিজনেস স্কেলিং অর্থাৎ কিভাবে একটি ব্যবসা সাজালে সেটিকে প্রফিটেবল করা যায় । ইনভেস্টমেন্ট এন্ড রিটার্ন , এক্সিট পলিসি ইত্যাদির ওপর আপনাকে স্কিল ডেভেলপ করে তবেই এগিয়ে যেতে হবে। 

২। মার্কেটে নিসের ডিমান্ড যাচাই করাঃ-

আপনার প্যাশন অনুসারে আপনার ব্যবসার জন্য একটি নিস সিলেক্ট করলেন। এরপর সেই ব্যবসা বাড়ানোর জন্য নিজের বৃদ্ধি করলেন। এবার আপনার কাজ হবে আপনার নিসের মার্কেট ডিমান্ড চেক করা। অর্থাৎ ,আপনার প্রোডাক্টটি আদৌ কোন সমস্যার সমাধান দিতে পারছে কিনা সেটি যাচাই করা। 

আপনার প্রোডাক্টটি যতই ভাল হোক না কেন ,আপনার মার্কেটিং আইডিয়া যতই চমৎকার হোক না কেন সেটার যদি মার্কেট ডিমান্ড না থাকে অথবা আপনার পণ্যটি যদি মানুষের কোন সমস্যার সমাধান দিতে না পারে তাহলে আপনার প্রোডাক্টটি মার্কেটে না চলার সম্ভাবনাই বেশি।

মার্কেট-নিস-সিলেক্ট

যেমন , ধরুন আপনি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবসা করতে চান আপনার সিডি নিয়ে একধরনের নস্টালজিয়া আছে। আপনি আপনার প্যাশনের থেকে সিডি ব্যবসায় নামলেন। কিন্তু,২০২২ সালে এসে ১০০% সম্ভাবনা আছে আপনার ব্যবসাটি ব্যর্থ হওয়ার। কারন,এখন মিউজিক কন্টেন্ট কাস্টমারদের কাছে খুবই সহজে ইউটিউব ব্যবহার করে পৌঁছে দেয়া সম্ভব । 

সুতরাং, আপনার নিসটি আপনাকে এমনভাবে সাজাতে হবে যেন সেটি মার্কেট ডিমান্ড পূরণ করতে পারে।

৩) নিসের ভেতর সেক্টর স্পেসিফিক করাঃ-

 এবার নিসের ভেতর আপনি স্পেসিফিক কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে কাজ করবেন তা ঠিক করবেন । 

যেমন, পাঠাও যখন ঠিক করলো যে তাঁরা ট্রান্সপোর্টেশন সেক্টরে তাঁরা তাঁদের ব্যবসা শুরু করবে এই “ট্রান্সপোর্টেশন” সেক্টর হচ্ছে তাঁদের নিস। এবার যখন তাঁরা ঠিক করলো যে তাঁরা স্পেসিফিকভাবে মটর সাইকেলে যাত্রী পরিবহন করা নিয়ে কাজ করবে এটা হয়ে গেলো তাঁদের নিসের ভেতর আরো একটি নিস সিলেক্ট করা অর্থাৎ,স্পেসিফিক করা।

মার্কেট-নিস

আবার,তাঁরা যখন ঠিক করলো প্রথম ব্যবসা শুরু হবে ঢাকা শহরকে কেন্দ্র করবে তখন তাঁরা জিওগ্রাফিক্যাল রিজিয়নের ভেতরও একটি নিস তৈরি করে ফেললেন। অর্থাৎ সব কাস্টমারকে টার্গেট না করে ঢাকা শহরে যেখানে জ্যামের সমস্যা সবচাইতে বেশি সেখানে তাঁদের সার্ভিসটি দেয়ার চেষ্টা করলেন।

এভাবেই আপনার ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার প্রোডাক্ট এবং কাস্টমারদের মধ্যে একটি সেক্টর করে ফেলতে হবে। এভাবে ছোট ছোট পয়েন্টে টার্গেট করে আপনাদেরকে ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে ।

কাস্টমার হোক কিংবা প্রোডাক্ট কোন কিছুরই পুরোটা নিয়ে আপনি আপনার ব্যবসায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে পারবেন না। 

৪)আপনার কম্পিটিটরদের সম্পর্কে রিসার্চ করুনঃ-

এবার আপনার কাজ হবে আপনি যে ব্যবসায় নামছেন সেখানে অন্যদের অর্থাৎ আপনার যাঁরা কম্পিটিটর আছে তাঁদের কি অবস্থান সেটি সম্পর্কে গবেষণা করে নিতে হবে। এখন আপনি খুব সহজেই তাঁদের সম্পর্কে জানতে পারবেন।

কারণ, বর্তমানে সব কোম্পানিই তাঁদের প্রোমোশন ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মাধ্যমে করে থাকে। আর ডিজিটাল মার্কেটিং করতে গেলে তাঁকে কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে হবেই । আপনি খেয়াল রাখবেন আপনার অন্যান্য কম্পিটিটররা তাঁদের কন্টেন্টগুলিতে কোন বিষয়গুলির উপর জোর দিচ্ছে। আপনাকেও সেভাবেই আপনার কন্টেন্ট সাজাতে হবে। কারন,ইন্টারনেটে মানুষ যখন কোন প্রোডাক্টের জন্য খোঁজ করে তখন ওইসব বিষয়ের উপর জোর দিয়ে থাকে।

market-niche

বিভিন্ন কন্টেন্টের যে কি-ওয়ার্ড গুলো আছে সেগুলো রিসার্চ করেই আপনার কন্টেন্ট সাজানো উচিত এর মাধ্যমে কোন কাস্টমার যখন নির্দিষ্ট পণ্যের কিংবা সেবার জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করবে তখন যেন প্রথমেই আপনার কোম্পানির প্রোডাক্টটি দেখতে পায়। এতে আপনার প্রচারনা ভালভাবে হবে। আপনি কাস্টমারদের কাছে ভালভাবে রিচ করতে পারবেন।

অন্যান্য যেসব কোম্পানির ওয়েবসাইট উপরের দিকে আছে তাঁদের কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করে আপনাকে আপনার কোম্পানির ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।

৫) মার্কেট নিস টেস্টিংঃ-

এতক্ষণ আপনি বিভিন্ন তথ্যের উপর ভিত্তি করে আপনার বিজনেস এবং বিজনেস ওয়েবসাইট ডেভেলপ করেছেন । এবার আপনার কাজ হবে প্র্যাক্টিক্যালি এটা ফিজিব্যাল কিনা সেটা টেস্ট করা।

এটা আমরা খুব সহজেই করতে পারি ল্যান্ডিং পেইজ ব্যবহার করে। ল্যান্ডিং পেইজ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি দেখতে পারেন আপনার ওয়েবসাইতে ট্র্যাফিক কেমন আসছে। আপনার ওয়েবসাইটটি যদি ভাল ওয়েব ট্র্যাফিক গ্যাদার করতে পারে এর অর্থ হচ্ছে আপনার নিসটির বাজার চাহিদা ভাল।

শেষ কথা

এই ছিলো একটি পারফেক্ট মার্কেট নিস কিভাবে খুঁজে পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে আমাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

পুরো লেখাটি কেমন লাগলো, তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে সত্যিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

যদি মনে হয় লেখাটি নতুন উদ্যোক্তাদের সাহায্য করবে পরবর্তী দিক নির্দেশনা পেতে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।

এই ধরনের আরও অনেক ইনফো কনটেন্ট এর জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

Don't wait!
Get the expert business advice You need in 2022

It's all include in our newsletter!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore
বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং- এর গাইডলাইন
Marketing

বিগিনার্সদের জন্য ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং গাইডলাইন

ফেইসবুক অ্যাডভার্টাইজিং, টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর এক অন্যতম পাওয়ারফুল টুলস। ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে মার্কেটিং যত সহজ হয়েছে, কম্পিটিশন তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিউজ

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন
Marketing

ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিশ বেজড কম্পিটিটর রিসার্চ কিভাবে করবেন?

আপনার বিজনেস নিশ কি হবে? কি নিয়ে কাজ করবেন? বা কোন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিই এপ্লাই করবেন। সব কিছু সিলেক্ট করার আগে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্ট হচ্ছে কম্পিটিটর