৯টি মার্কেটিং টিপস যা আপনার বিজনেস গ্রোথে সাহায্য করবে

মার্কেটিং টিপস
Share This Post

মার্কেটিং টিপস তো অনেক আছে, কিন্তু কিছু টিপস আপনার বিজনেসের গ্রোথে সাহায্য করবে। ইন্টারনেটের এই যুগে মার্কেটিং বলতে ডিজিটাল মার্কেটিং-কেই বোঝানো হয়। তবে ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং-ই বলুন আর ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য দরকার হয় একটি পারফেক্ট মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির। কন্টেন্ট মার্কেটিং,সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রভৃতি ডিজিটাল মার্কেটিং টিপস এবং টেকনিক ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্যবসা বাড়িয়ে নিতে পারেন। আমাদের আজকের লেখাটি মার্কেটিং টিপস এন্ড ট্রিকস নিয়ে যা একজন উদ্যোক্তাকে তার সেলস বাড়াতে সাহায্য করবে।

Table of Contents

    ১) মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিঃ-

    যেকোন মার্কেটিং প্রসেসের শুরু হওয়া উচিত একটি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক করার মধ্য দিয়ে। একটি পরিষ্কার লিখিত স্ট্র্যাটেজি থাকলে কোন কোম্পানিকে তাঁর কাজ এগিয়ে নিতে সুবিধা হয়। গবেষণায় এটি প্রমানিত যাঁরা সুনির্দিষ্ট মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কাজে এগিয়ে যায় তাঁদের সেলস অন্যদের চাইতে বেশি হয়।

     একটি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকা উচিত তা হচ্ছে-

    প্রবলেম এন্ড সল্যুশনঃ-

    সত্যিকার অর্থে একটি ব্যবসা শুরুই হয় সেটি সমাজের বা কাস্টমারদের কোন সমস্যার সমাধান দিতে পারছে কি না তাঁর উপর নির্ভর করে। মার্কেটিং প্রসেস শুরু করার আগে উদ্যোক্তাদের ভাবনায় এটি গুরুত্ব পাওয়া উচিত । তাঁদের আইডিয়াটি সোসাইটির কোন সমস্যার সমাধান দিতে পারছে কি না সেই বিষয়টি মাথায় নিয়েই মার্কেটিং শুরু করা উচিত। যদি কোন সমাধান দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে আইডিয়া যত ভালই হোক তা মার্কেটে টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই এটি একটি গুরত্বপূর্ণ মার্কেটিং টিপস।

    মার্কেটিং
    লক্ষ্য ঠিক করাঃ- 

    আপনি নিজে যখন কনভিন্স হবেন যে আপনার আইডিয়াটি বাজারে চলার মতন তখন আপনার কাজ হবে এই আইডিয়ার মার্কেটিং করে আপনি কি লক্ষ্য বা গোল অর্জন করতে চান তা ঠিক করে নেয়া। 

    সেক্ষেত্রে আপনি শর্ট টার্ম এবং লং টার্ম এই দুই সেক্টরে আপনার কোম্পানি গোলকে ভাগ করে ফেলবেন। 

    ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করে এগিয়ে যাওয়া ভাল। যেমনঃ-

    • ১ মাস পর আপনি কতটা সেলস করতে চান?
    • মাসে আপনার ওয়েবসাইটে কত ট্র্যাফিক দেখতে চান?

    এভাবে আস্তে আস্তে প্রথম তিনমাসে হয়তো আপনার টার্গেট হবে প্রফিট না দেখে শুধু রিচ বাড়ানোর দিকে নজর দেয়া। আবার, ১ বছর পর টার্গেট নিতে পারেন যে আপনি এই মাত্রায় প্রফিট চান।

    টার্গেট অডিয়েন্স এবং নীশ মার্কেট ঠিক করাঃ-

    আপনি কোন ধরনের পণ্য বিক্রি করতে চান এবং আপনার কোন শ্রেণীর কাস্টমারদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে চান তা ঠিক করাই হচ্ছে এই ধাপের কাজ। আপনি যদি পণ্য এবং কাস্টমার ঠিক না করেই ব্যবসায় নামেন তাহলে খুব বেশি সম্ভাবনা আছে আপনার কোম্পানি লসের মুখ দেখার।

    বাজেট এলোকেশনঃ-

    আপনার কোম্পানির ইনভেস্টমেন্ট সম্পর্কে স্ট্র্যাটেজিতে পরিষ্কার উল্লেখ থাকতে হবে। আপনি কত ইনভেস্ট করে কত রিটার্ন আশা করছেন সেই সম্পর্কে যদি আপনার ক্লিয়ার কনসেপ্ট না থাকে তাহলে হয়তো একসময় আপনি খরচের বিপরীতে ঠিকমতো লাভের অংশ তুলতে পারবেন না। লাভ তুলতে না পারলেও খরচের মাত্রা যদি আপনি না বোঝেন আপনার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার। 

    ২) কন্টেন্ট মার্কেটিং টিপসঃ 

    মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি সম্পন্ন হয়ে গেলে এইবার আপনার মনোযোগী হওয়া উচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের ব্যাপারে। কন্টেন্ট মার্কেটিং খুবই গুরত্বপূর্ণ। কন্টেন্ট কয়েক প্রকারের হতে পারে। যথাঃ-

    মার্কেটিং-টিপস
    • লিখিত কন্টেন্ট বা ব্লগ। 
    • ছবি।
    • ভিডিও।
    • পডকাস্ট। 

    কন্টেন্টের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্ট এবং কোম্পানি সম্পর্কে আপনার কাস্টমারদেরকে অবগত করবেন। এটি হবে আপনার পটেনশিয়াল কাস্টমারদের সাথে আপনার যোগাযোগ করার একটি মাধ্যম। 

    ৩) সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ-

    ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরের সবচাইতে  ভাইটাল পার্টগুলির  একটি হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। আপনি আপনার কোম্পানি সাইটে সবচাইতে বেশি লিড জেনারেট করতে সক্ষম হবেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং দ্বারা।

    টুইটার,ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম,ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার প্রভৃতি সোশ্যাল মিডিয়া সাইটকে ব্যবহার করে এই মার্কেটিং চালানো হয়। এখানে –

    • ফেসবুক পোস্ট।
    • ম্যাসেঞ্জার কিংবা ইনস্টাগ্রাম স্টোরিজ।
    • পডকাস্ট।
    • ইমেজ কিংবা ভিডিও পোস্টিং।
    • লাইভ ব্রডকাস্ট।

    এইসব মাধ্যম ব্যবহার করে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারেন।

    ৪) এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ-

    সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে এমন একটি প্রসেস যাঁর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্ট প্রোফাইল কিংবা কোম্পানি প্রোফাইলকে আপনি গুগল সার্চ লিস্টে উপরের দিকে এনে রাখতে পারেন। 

    মার্কেটিং-এর জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা আপনার কম্পিটিটররাও কিন্তু তাঁদের প্রোডাক্টটি বিক্রি করে সর্বোচ্চ লাভের খোঁজে আছেন। তাঁরাও চাইবে কাস্টমাররা যেন তাঁদের পণ্যটিই আগে দেখে। সেইক্ষেত্রে এসইও’র কাজ খুব ভালভাবে করার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্টটি সবার আগে কাস্টমারদের সামনে উপস্থাপন করতে পারেন। 

    ৫) ই-মেইল মার্কেটিংঃ-

    ডিজিটাল মার্কেটিং-এর সবচেয়ে পুরাতন মাধ্যম হলেও এখনো ই-মেইল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।

    marketing-tips

    সেলস ইনফরমেশন থেকে কাস্টমারের ই-মেইল পাওয়ার পর এর মাধ্যমে তাকে বারবার নতুন প্রোডাক্ট এবং প্রোভিশন সম্পর্কে অবগত করার পদ্ধতিই হচ্ছে ই-মেইল মার্কেটিং। ই-মেইল মার্কেটিং-এ আপনি নিয়মিত কাস্টমারকে ই-মেইল এবং নিউজলেটার পাঠিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করবেন।

    এতে একসময় আপনি একটি স্ট্রং কাস্টমার কম্যুনিটি তৈরি করতে সক্ষম হবেন। যা আপনাকে নতুন লিড এনে দেওয়া এবং লিডকে সেলসে কনভার্ট করতে সাহায্য করবে।

    ৬) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ-

    অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি প্রসেস যেখানে অন্য কেউ আপনার কোম্পানির মার্কেটিং-এর কাজটি করে দিবে। এর বিপরীতে সে যে প্রোডাক্টের মার্কেটিং করেছে আপনাকে তাঁর একটি প্রফিট শেয়ার এফিলিয়েট মার্কেটারকে দিতে হবে। 

    অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং যাঁর মাধ্যমে কোন সোশ্যাল মিডিয়া সেলিব্রিটি বা জেনারেশনের মাইন্ডসেটে ইমপ্যাক্ট করতে পারে এমন কারো মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্টের প্রোমোশনটি করবেন। 

    ৭) গিফট ,প্রাইজ এন্ড কম্পিটিশনঃ-

    আপনার কোম্পানির ফেসবুক পেইজ কিংবা অন্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইট অথবা ওয়েবসাইটের থেকে স্পেশাল ডে গুলোতে কিংবা আপনার কোন ল্যান্ডমার্ক ( ১০,০০০ ফেসবুক পেইজ লাইক ইত্যাদি) সেলিব্রেট করার জন্য আপনি কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারেন কিংবা কোন গিভ আওয়ে গিফটের ব্যবস্থা করতে পারেন।

    মার্কেটিং-স্ট্রাটার্জি

    এর মাধ্যমে আপনি অবশ্যই অনেক বেশি কাস্টমার লয়্যালিটি অর্জন করতে পারবেন ,যা আপনাকে বিজনেস সাসটেইনেবল করতে সাহায্য করবে। 

    ৮) মিডিয়া কাভারেজ এন্ড পাবলিক রিলেশনঃ-

    মার্কেটিং-এর এই পার্টটি ওইরকমভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং-এর ভেতর পড়ে না। মিডিয়া হাউস দিয়ে কোম্পানির প্রচারের কাজটি বেশ পুরাতন আইডিয়া হলেও বিশ্বে ডিজিটাল বিপ্লবের পর এতেও ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে ।

    এর মূল কাজটি হচ্ছে , কোন মিডিয়া হাউস হতে পারে পত্রিকা কিংবা টিভি চ্যানেল ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার কোম্পানির প্রচারণা চালানো।

    ৯) কর্পোরেট সোশ্যাল রেস্পন্সিবিলিটি বা সিএসআরঃ-

    যেসব কোম্পানি চ্যারিটি বা অন্যান্য ভাবে সমাজের এবং মানুষের সেবা করে থাকে তাঁদের প্রতি মানুষের এক ধরণের “সফট কর্নার” তৈরি হয়। যা ওই কোম্পানির সেলসে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। নতুন লিড আনা এবং লিডকে সেলসে কনভার্ট করতে এই প্রসেস খুবই হেল্পফুল।

    শেষকথা

    এই ছিলো অসাধারণ কিছু মার্কেটিং টিপস নিয়ে আমাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। 

    পুরো লেখাটি কেমন লাগলো, তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে সত্যিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

    যদি মনে হয় লেখাটি নতুন উদ্যোক্তাদের সাহায্য করবে পরবর্তী দিক নির্দেশনা পেতে, তবে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।

    এই ধরনের আরও অনেক ইনফো কনটেন্ট এর জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

    Don't wait!
    Get the expert business advice You need in 2022

    It's all include in our newsletter!

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    More To Explore
    ক্যাম্পেইন ট্র্যাক করার লক্ষ্যে ৭টি এসেনশিয়াল ডিজিটাল মার্কেটিং KPI
    Marketing

    ক্যাম্পেইন ট্র্যাক করার লক্ষ্যে ৭টি এসেনশিয়াল ডিজিটাল মার্কেটিং KPI

    ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই হিউজ ল্যান্ডস্কেপ এ ক্যাম্পেইন ট্র্যাক করা, সাকসেস পরিমাপের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। Key Performance Indicators (KPI) গুলো কিন্তু আপনাকে এই ক্যাম্পেইন

    কিভাবে আপনার স্টার্টআপ বিজনেসের মার্কেটিং শুরু করবেন
    Marketing

    কিভাবে আপনার স্টার্টআপ বিজনেসের মার্কেটিং শুরু করবেন

    একটা স্টার্টআপ বিজনেস শুরু করা একদিকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। আবার এর অন্যদিকে আছে সাফল্যের হাতছানি, অসংখ্য অপরচুনিটির সম্ভাবনা। মোট কথা স্টার্টআপের টোটাল পার্ট একটা  উত্তেজনাপূর্ণ যাত্রা।