সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম (ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, লিংক ডিন) ব্যবহার করে কোনো ব্যান্ড অথবা বিজনেসকে প্রমোট করা এবং ব্র্যান্ডকে অনেক বেশি অডিয়েন্সের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। বর্তমানে বিজনেস এবং ব্র্যান্ড মালিকদের কাছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অনেক বেশি পপুলার এবং গুরুত্বপূর্ণ।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing) এর মাধ্যমে কিভাবে বেনিফিটেড হবেন?
বর্তমানে সব বড় বড় কোম্পানি এবং ব্র্যান্ডের Social media marketing profile রয়েছে। তারা ফেসবুক (Facebook) পেইজ, ইউটিউব চ্যানেল, টিকটক (TikTok) এডভার্টাইস এর মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট, সার্ভিস, ব্র্যান্ডকে প্রমোট করছেন এবং এসব প্ল্যাটফর্মে এক্টিভ থাকা লোকদের মধ্যেই পেয়ে যাচ্ছেন তাদের টার্গেটেড কাস্টমার। Facebook, TikTok, YouTube এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং করাটা অনেক লাভজনক প্রমাণিত হয়েছে। আসুন জেনে নেই কিভাবে আপনার ব্র্যান্ড, বিজনেসকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রমোট করবেন এবং লাভবান হবেন।
১. ব্র্যান্ড রিকগনিশন (Brand Recognition) ক্রিয়েট করতে হেল্প করে
ব্র্যান্ড অথবা বিজনেসের স্বীকৃতি অর্জন করা প্রত্যেক কোম্পানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং উদ্দেশ্য কারণ ক্রেতারা কোনো পরিচিত, ফেমাস এবং অনুমোদিত ব্র্যান্ড থেকে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন।
এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া আপনার ব্র্যান্ড বিল্ডিং খুব সহজ এবং ইফেক্টিভ করতে হেল্প করে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের একটা এডভান্টেজ হল এটা সহজে এবং খুব তারাতাড়ি আপনার ব্র্যান্ডকে সারা বিশ্বের সামনে নিয়ে আসতে পারে৷ অনেক বেশি লোকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে। আপনার ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব চ্যানেলে যেকোনো প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস কে ফোকাসড করে পোস্ট বুস্ট করলে এটা অনেকবেশি ফেসবুক ইউটিউব ইউসারদের নিউজফিডে শো করবে এবং আপনার ব্র্যান্ড পরিচিতি পাবে। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার পেইজ থেকে বিভিন্ন গ্রুপে ইউনিক পোস্ট করতে পারেন৷ ভিডিও শেয়ার করতে পারেন।
২. আপনার প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিসের সেলস বাড়ায়
আপনি যখন ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব ভিডিও, টিকটক এডভার্টাইসিং এর মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ডকে অনেক লোকের সাথে পরিচয় করাতে সক্ষম হন তখন অটোমিটেক্যালি আপনার প্রোডাক্ট/সার্ভিসের সেলস বৃদ্ধি পায়, বর্তমানে মানুষ শপিংমল গিয়ে শপিং করার চাইতে অনলাইন শপিংয়ে বেশি কম্ফোর্ট ফিল করে।
আপনার যদি এক্টিভ ফেসবুক পেইজ থাকে এবং ওয়েল ডেকোরেট ডাক্ট ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনার সেল অবশ্যই আগের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। অবশ্যই আপনার পেইজ, ওয়েবসাইট আপ টু ডেট রাখবেন, আপনার পণ্য এবং সার্ভিসের সুন্দর বিবরণ দিবেন এবং পাব্লিক ফিগার কাউকে দিয়ে প্রোডাক্ট প্রমোটিং ভিডিও ক্রিয়েট করে ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে আপ্লোড করুন এবং ওই পোস্ট ফোকাস করে পোস্ট বুস্ট করুন।
৩. বাজেট ফ্রেন্ডলি
বর্তমানে গতানুগতিক মার্কেটিংয়ের তুলনায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অনেক বেশি কস্ট্ ইফেক্টিভ (Cost effective)। কেননা প্রায় প্রত্যেক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ফ্রি একাউন্ট ওপেন করার সুযোগ রয়েছে।
মাত্র কয়েক ডলার খরচের মাধ্যমেই আপনি সাক্সেস্ফুলি ব্র্যান্ড প্রমোট করতে পারছেন। কিছু ট্রিকস যেমন সঠিক হ্যাশট্যাগের ব্যবহার এর মাধ্যমেও আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারছেন ব্র্যান্ড প্রমোট হয়ে যাচ্ছে।
৪. কাস্টমার সাটিস্ফ্যাকশন রিভিউ পোস্ট
আপনার কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট, সার্ভিস ব্যবহারের পর যে পজিটিভ রিভিউ দেয় সেটার স্ক্রিনশট নিয়ে আপনি ফেসবুক পেইজে পোস্ট করার মাধ্যমে আরও ট্রাস্টেড কাস্টমার পেতে পারেন।
৫. Insight Marketplace পেতে হেল্প করে
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেনিফিট হল Marketplace Insight অর্জন করা। কাস্টমার কি ভাবছে, তাদের স্যাটিস্ফ্যাকশন লেভেল, তাদের চাহিদাগুলো কি তা জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে তাদের সাথে ডিরেক্টলি কমিউনিকেট করা।
আপনার ফেসবুক পেইজের কমেন্ট বক্স সবার জন্য উন্মুক্ত রাখুন, যাতে সবাই তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। কমেন্টবক্স ডিপলি অবসার্ভ করে আপনি বুঝতে পারবেন কাস্টমার কি চায়, তাদের চাহিদা কি, সেই অনুযায়ী প্রোডাক্টের গুণগত মান বৃদ্ধি করে, এট্রাক্টিভ অফার দিয়ে আপনার প্রোডাক্টের সেল বাড়াতে পারেন।
৬. ব্র্যান্ডের লয়্যালিটি ইম্প্রুভ
আপনি যখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে একটা ট্রাস্টেড কাস্টমার বেস তৈরি করতে সক্ষম হন তখন আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কিত পজিটিভ রিভিউ বাড়ে, এতে করে ব্র্যান্ডের লয়্যালিটি ইম্প্রুভ হয়, যেটা আপনার ব্র্যান্ডকে আরো এক ধাপ সামনে এগিয়ে নিতে হেল্প করে।
৭. হিউজ ফ্যান বেসড ফেমাস ব্র্যান্ড
আপনার ব্র্যান্ডকে একটা বিশাল অডিয়েন্সের ফ্যান গ্রুপ পাওয়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের, ব্যাকগ্রাউন্ডের ইউসার রয়েছে।
যখন আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করেন তখন আপনি আপনার ব্র্যান্ডকে এই সকল ধরনের মানুষের সামনে তুলে ধরেন এবং এর ভেতর থেকেই টার্গেটেড কাস্টমার পেয়ে যান যারা নিয়মিত আপনার প্রোডাক্ট সার্ভিস ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন গ্রুপে পজিটিভ রিভিউ দেয়, যা আপনার ব্র্যান্ড বড় হওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৮. ব্র্যান্ডের বিহাইন্ড স্টোরি শেয়ার করুন
আপনার ব্র্যান্ডের মিশন এবং বিহাইন্ড স্টোরি শেয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা একটা এক্সিলেন্ট উপায় ব্র্যান্ড প্রমোশন করার। নিজের ব্র্যান্ড সম্পর্কিত ডকোমেন্টারি ভিডিও তৈরি করুন এবং সাক্সেসের স্টোরি শুনান,
আপনার ব্র্যান্ড যে শুধুমাত্র একটা কমার্শিয়াল বিজনেস নয় সেটা প্রমাণ করুন, কাস্টমারদের ছোট ছোট হেল্প টিপস শেয়ার করুন, তাদেরকে এওয়ারনেস দিন, নকল পণ্য, প্রোডাক্ট বর্জন করতে উৎসাহিত করুন, এতে করে কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট, সার্ভিসের প্রতি বেশি ইন্টারেস্টেড হবে।
৯. ডাটা কালেক্ট, রিসার্চ এবং আপডেট
আপনার অডিয়েন্সের থেকে ডাটা সংগ্রহ করে রিসার্চ করুন এবং ডে বাই ডে প্রোডাক্ট আপডেট করুন।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর বড় ফায়দা হল এখানে সহজেই আপনি আপনার কাস্টমারদের সাথে কমিউনিকেট করতে পারছেন, তাদের কাছে থেকে আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস সম্পর্কে ডাটা সংগ্রহ করুন এবং রিসার্চ করুন কিভাবে প্রোডাক্টটা আরো বেটার করা যায়, যাতে করে সময়ের সাথে সাথে আপনার প্রোডাক্টের চাহিদা আরো বাড়ে।
১০. অডিয়েন্সকে রিমার্ক করতে সোশ্যাল মিডিয়া
যখন কেউ আপনার ফেসবুক পেইজ, ওয়েবসাইট থেকে কেউ কেনাকাটা করে তখন তাদের একটা লিস্ট তৈরি করুন এবং পরবর্তীতে যখন তারা অন্যান্য সাইট ব্রাউজ করে তখন তাদের ব্রাউজারে Anonymous “cookies” পাঠান। তাদের ফেসবুক, কন্টাক্ট নাম্বারে আপনাদের রেগুলার অফারগুলো সেন্ড করে তাকে আপনার ব্র্যান্ডের রিমাইন্ডার দিন। কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখা আপনার সেলস এর প্রবাহ ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা বিজনেসে খেয়াল রাখা আবশ্যক।
গ্লোবালাইজেশনের কারণে এখন সবকিছুই ইন্টারনেট ভিত্তিক, মানুষ ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বেশি এক্টিভ। যার কারণে এখন টপ ব্র্যান্ড এবং বিজনেস গুলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ছাড়া গতানুগতিক মার্কেটিং এর কথা চিন্তাও করেন না। বিজনেসকে আপ টু ডেট রাখতে এবং সারা বিশ্বে পরিচয় করাতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর বিকল্প নেই।